গল্প-একটি দরিদ্র মেয়ের বড় হওয়ার গল্প(পর্ব ২)||
আসসালামু আলাইকুম
আমি একজন বাংলাদেশী। আমার স্টিমিট আইডির নাম @maria47 আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" সম্প্রদায়ে আমার তৈরি একটি ক্রাফট শেয়ার করতে যাচ্ছি। আপনারা সবাই কেমন আছেন।আশা করি সকলে ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" সম্প্রদায়ে আমার তৈরি একটি গল্প শেয়ার করতে যাচ্ছি।গল্প লিখতে বা পড়তে ভীষণ লাগে আমার।কিন্তু সময়ের অভাবে হয়তো সেটা হয়ে উঠে না।আজ আমি একটি দরিদ্র মেয়ের বড় হওয়ার গল্প (পর্ব ২) লিখতে যাচ্ছি। আশা করি সকলের কাছে ভালো লাগবে।
একটি দরিদ্র মেয়ের বড় হওয়ার গল্প(পর্ব ২):
Source
এরপর ছাবিনা প্রাইমারি স্কুল পাস করে মাধ্যমিক স্কুলে যায়। ছাবিনা খুব ভালো একটা রেজাল্ট করেছিল। সে উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিল। এই জন্য প্রত্যেক স্কুলের শিক্ষকরা তাদের স্কুলে ছাবিনাকে ভর্তি করানোর জন্য ব্যাকুল হয়েছিল।তাই তার নামটি ভর্তির খাতায় প্রথম ছিল। কিন্তু সে তার পছন্দমত স্কুল বেছে নিয়েছিল।কারণ সে কোন ভালো স্কুলে যেতে চায় না। কারণ তার বাবার কিংবা তার পরিবারের তেমন সামর্থ্য ছিল না। তাকে কোনো ভালো স্কুলে পড়াবে।তাই সে সাধারণ একটা স্কুলেই ভর্তি হয়।
ছোট্ট ঘরের মেয়ে ছাবিনা সে তার জীবনটাকে সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।সে চায় তার বাবা-মায়ের অভাব অনটন দূর করতে। এজন্য সে খুবই মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে। এরপর সে তার পছন্দমত একটি সরকারি স্কুলেই ভর্তি হয়ে যায়। সেখানে উপবৃত্তির ব্যবস্থা ছিল। এইজন্য সে ভর্তি হওয়ার আগে শিক্ষকদের অনুরোধ করেছিল তাকে যেন উপবৃত্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। কারণ অনেক স্কুলে রয়েছে যারা নিজেদের ইচ্ছেমতো উপবৃত্তির জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের বাছাই করে এতে করে যারা অসহায় দরিদ্র তাদের নামটাই বাদ পড়ে যায়।
এরপর ছাবিনা যেদিন প্রথম স্কুলে গিয়েছিল। সে সাদামাটা পোশাক পরে ক্লাসে প্রবেশ করেছিল। এই জন্য সকলে একটু তাকে নিয়ে মজা করছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তার ব্যবহারে সকলে বেশ খুশি ছিল।পড়াশোনায় সে এতটা মেধাবী ছিল।সকলে তার সাথে বন্ধুত্ব করার জন্য নিজেই হাত বাড়িয়ে দিত। একজন ভালো মানুষের সাথে সব সময় ভালো কিছু হয়ে থাকে। ছাবিনার সাথেও তেমনটাই হয়েছিল অল্প দিনের ব্যবধানে আরো অনেক বন্ধু বান্ধবী হয়ে উঠেছিল। সকলেই তাকে ভীষণ ভালোবাসতো তার আচার আচরণ ছিল খুবই নম্র।
একে একে স্কুলের প্রথম সামরিক, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সামরিক সকল পরীক্ষা শেষ হয়ে যায় সে আবারো স্কুলের মধ্যে প্রথম অধিকার করেছিল। এইভাবেতে একটা একটা ক্লাস পার করে ক্লাস এইটে উঠে যায়। ক্লাস এইটে উঠার পর সে বেশ বড় হয়ে যায়। আর দেখতে খুবই সুন্দরী হয়ে ওঠে। কিন্তু তার পোশাকের কিংবা ব্যবহারের কোন পরিবর্তন ঘটে না। এদিকে তার বাবা সুস্থ হয়ে যায়। আবারো নিজের কাজ শুরু করে দেয়। এরপর তার মা হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর তার ভাইরা সেখান থেকে ছাবিনার মাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। অসুস্থ মাকে তাদের যে কোন প্রয়োজন নেই। একদিকে সাবিনা খুবই চিন্তায় পড়ে যায়। একদিকে নিজের পড়াশোনা অন্য দিকে তার মায়ের এই অবস্থা। কারণ সে তো কোন রোজগার করতে পারে না তার বাবাও অল্প কিছু টাকা রোজগার করে নিয়ে আসে।যা দিয়ে কোন রকম দিন চলে যায। তার মা টাকা পেত তাতে তার পড়াশোনার খরচ চলত।
এরপর সে ভাবে তার বন্ধু বান্ধবীদের নিজেই টিউশনি করাবে। সে নিজে কখনো কোন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়েনি।নিজের মেধায় যতটুকু পেরেছে ততটুকু কাজে লাগিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে গেছে। সকলে তার কাছে পড়ার জন্য খুবই আগ্রহী হয়েছিল। এই জন্য সে সকাল বেলায় তার কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবীকে পড়াতো।এতে করে মায়ের চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দিত আর কিছু নিজের পড়াশোনার জন্য কাজে লাগাত। এরপর তার মা আস্তে আস্তে দুই মাস পর অনেকটা সুস্থ হয়ে যায়। এরপর তার ভাইয়েরা তার মায়ের কাছে আবারো ফিরে আসে। যখন তাদের মা অসুস্থ ছিল তারা মাত্র একবার তাকে দেখতে এসেছিল। এরপর যখন তারা শুনতে পায় তাদের মা পুরাপুরি সুস্থ হয়ে গিয়েছে তখন তারা আবারও তাদের মাকে নিতে চলে আসে। এরপর তাদের মা যেতে চায়।কিন্তু ছাবিনা তার মাকে অনেক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মা কিছুতেই তা মেনে নেয় না। ছাবিনাকে তার মা বলে তুই যতদিন না পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হচ্ছিস ততদিন আমি তোর জন্য শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত করে যাব।তারপর যখন তুই চাকরি করবি তখন থেকে আমার ছুটি। এরপর ছাবিনার মা আবারও নিজের কাজের উদ্দেশ্যে শহরের পথে রওনা হয়।এমন ভাবে ছাবিনা ক্লাস এইট পাশ করে। আর খুবই ভালো রেজাল্ট করে।এরপর যখন তার মাধ্যমিক দেওয়ার সময় চলে আসে আর সেই সময়টা তার জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। এরপর ছাবিনার জীবনে কি অন্ধকার নেমে আসে সেটা জানার জন্য অবশ্যই সকলকে পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।আজ এই পর্যন্ত থাকলো।ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি মারিয়া মুক্তি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @maria47. আমি রান্না করতে ভালোবাসি। নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে আমার ভালো লাগে। আমি ঘুরতে জেতে অনেক পছন্দ করি।
অনেক রহস্যময় লাগলো আসলে সত্যি কি সাবিনার জীবনে অন্ধকার নেমে আসবে। গল্পটি পরবর্তী পর্ব না পড়লে বুঝতে পারব না আসলে গল্পটি কেমন হতে চলছে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আপনি শেয়ার করেছেন আজকে খুব ভালো লাগলো আপনার এই গল্পটি পড়ে ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার লেখা গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
যেহেতু ছাবিনার সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু ইতিমধ্যে ছাবিনার জীবনে কি অন্ধকার নেমে আসলো জানার আগ্রহ অনেক বেড়ে গেল।দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।ধন্যবাদ আপু।