জেনারেল রাইটিং-পিঠা চুরির গল্প|

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামু আলাইকুম


আমি @maria47।আমি একজন বাংলাদেশী। আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন।আমিও ভালো আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। আজকে আমি পিঠা চুরির গল্প নিয়ে লিখতে যাচ্ছি। আশা করি সকলের কাছে ভালো লাগবে।


পিঠা চুরির গল্প:


fried-food-3606942_1280.jpg

Source

বেশ কয়েক বছর আগে আমি আমার নানির সাথে গিয়েছিলাম আমার মায়ের মামার বাড়িতে। আমার মায়ের মামার বাড়িতে জয়েন ফ্যামিলি। আমার মায়ের মামা ছিল সাতটি সকলে এক সাথে থাকলেও তাদের ভাতের হাড়ি ছিল আলাদা।কিন্তু কোন আয়োজন হলে সকলে একসাথে একসাথে খাওয়া দাওয়া করে। বেশ দারুন ভাবে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়। সেই বারো ঠিক তেমনটাই হয়েছিল। পিঠের দাওয়াত ছিল সকলের।পিঠের দাওয়াত খেতে আমি আগের দিন বিকেল বেলায় আমার নানির সাথে চলে গিয়েছিলাম মায়ের মামার বাড়িতে। পরের দিন সকালে সবারই পিঠে খাওয়ার দাওয়াত ছিল।


আমি যখনই আমার মায়ের মামার বাড়িতে যাই তখনই আমার ভীষণ আনন্দ হয়। আমার সমবয়সী আমার খালা, মামা ও বোন ছিল। আমি যখনই যাই তাদের সাথেই ঘুরে বেড়াই। আমাদেরকে খুঁজে পাওয়া বড়ই মুশকিল হয়। তাই আমার মা আমাকে খুব একটা বেশি যেতে দিতে না।কারন আমি যদি একবার সেখানে যাই আসতে চাই না তাদেরকে ছেড়ে। কারণ আমি সবসময় এভাবে আনন্দ করতে খুবই ভালোবাসি। আর এরকম একসাথে অনেকগুলো লোক একই বাসায় থাকলে বেশ মজা হয়। পাশাপাশি অনেকগুলো বাড়ি পুরা এলাকাটা যেন আমার মায়ের মামাদের হয়ে গিয়েছে।


অনেক কথাই বলে ফেললাম এবার চলুন আসল ঘটনায় যাই। পরের দিন যেহেতু সকলের দাওয়াত ছিল তাই রাতের বেলায় সব গুলো পিঠা বানানোর আয়োজন শুরু করা হয়। যাতে সকালবেলায় সকলে আসলে তাড়াতাড়ি খেতে পারে।সকলের মাঝে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল।একেক জনকে একেকটা পিঠা বানানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমার যেহেতু গুড় ও নারিকেল দিয়ে তৈরি পিঠাটা ভীষণ পছন্দ। তাই আমি ও আমার একটা বোনকে নিয়ে গিয়েছিলাম ওই নানির ঘরে যে নানির ঘরে এই পিঠাটির আয়োজন করা হয়েছিল। রাতে সেই নানির ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। বলতে গেলে সন্ধ্যা থেকে প্লান করে সেখানে ঘুমাচ্ছিলাম। যাতে পরবর্তীতে কেউ আমাদের এখান থেকে সরিয়ে না দিতে পারে। ঠিক তেমনটাই হল। রাতে আমাদের এখান থেকে আর উঠতে হয়নি। আমরা যে বিছানায় শুয়ে ছিলাম তার পাশের টেবিলে পিঠার হাড়ি রেখেছিল। আমি এবং আমার বোন দুজনে বুদ্ধি করি। একবার ও উঠে কিছু পিঠা চুরি করে আনবে এরপর সেগুলো খাওয়া শেষ হলে আবার আমি উঠে আবারো পিঠা চুরি করে আনবো। পিঠাটা


ঠিক তেমনটাই হলো এভাবে আমরা বেশ কয়েকবার পিঠা নিয়ে এসে খেয়েছিলাম। এরপর আমরা ফজরের আযানের সময় ঘুমিয়ে ছিলাম। যখন পিঠার হাড়ি অর্ধেক হয়েছিল তখন আমরা আর চুরি করতে সাহস পাচ্ছিলাম না। সেই সময় দুজনে ভয় পেয়ে গেছিলাম যদি আমাদের কেউ সন্দেহ করে। তাই আমরা সকালে উঠে ওইখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলাম। যাতে কেউ ধরতে না পারে। আমরা তো ঘুমিয়ে ছিলাম সন্ধ্যারাতে যদি বেশি বেলা করে ঘুমাই তাহলে তো আমাদের ধরে ফেলবে। এইজন্য আমরা খুব সকালে উঠে নিজেদের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। এরপর এসে আবার নানির কাছে খাবার চাচ্ছিলাম।পিঠাগুলো খেতে কিন্তু খুব মজাদার হয়েছিল। হাড়ির পিঠা অর্ধেক হওয়ার পরেও আবারও খেতে ইচ্ছা করছিল। যেহেতু হাড়ির পিঠা অর্ধেক হয়েছে ধরা পড়লে অবস্থা খারাপ হবে তাই আমরা আর সে পিঠাগুলো খাইনি। আমরা এমন ভাব করেছিলাম কেউ আমাদের বুঝতে পারেনি। আজও প্রতি কেউ জানে না সে হাঁড়ির খবর।এখনো আমরা প্রকাশ করিনি সেই পিঠা চোর কেউ না আমরা ছিলাম। দোষ হয়েছিল মামাদের কারণ তারা রাতে বলেছিল পিঠা চুরি করবে।তাই আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম।এটাই ছিল আমার পিঠা চুরির গল্প।আশা করি সকলের কাছে ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ সবাইকে।



আমার পরিচয়

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20231220_171352.jpg

আমি মারিয়া মুক্তি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @maria47. আমি রান্না করতে ভালোবাসি। নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে আমার ভালো লাগে। আমি ঘুরতে যেতে অনেক পছন্দ করি।

Sort:  
 last month 

দুই পিঠা চোর মিলে দারুণ বুদ্ধি বের করেছিলেন পছন্দের পিঠা খাওয়ার জন্য 😂😂😂 আবার মিশন সাকসেসফুলি কমপ্লিট ও করেছেন! কারোর সন্দেহ সাধারণত মেয়েদের উপর কমই যায় এসব ক্ষেত্রে! তার উপর মামারা আগে থেকেই ফাইজলামি করে পিঠা চুরির কথা জানিয়েই দেয়ায় তো পোয়াবারো হয়েছিল আপনাদের জন্য! আর কে বলে মেয়েরা পেটে কথা চেপে রাখতে পারে না৷ তারা আপনাদের দুজনকে দেখুক এসে! 😂😂

 last month 

ঠিক বলেছেন আপু আমরা বেশ দারুন ভাবে বুদ্ধি করে পিঠাগুলো চুরি করেছিলাম এবং আমাদের পরিকল্পনা সফল হয়েছিল। আমাদের এখনো পর্যন্ত কেউ সন্দেহ করতে পারেনি।

 last month 

দুজন মিলে পিঠা চুরি করে প্রায় অর্ধেক করে ফেললেন।হায় আল্লাহ,বাকিরা তো তবে ভাগেই পেলো না।যাক মামারা চুরি করে খাবে বলেছিল বলে আপনারা দুজন বেঁচে গেলেন।আপনাদেরকে কেউ সন্দেহ করতে পারলো না। এটা কিন্তু সত্যি চুরি করে খাওয়া জিনিস গুলো একটু বেশীই ভালো লাগে।

 last month 

দুজনে মিলে হাড়ির অর্ধেকটা পিঠা খেয়ে ফেলেছিলাম। বাকিদের ভাগ্যে কোনরকম করে পিঠা জুটে ছিল।তাও সবাই পাইনি। চুরি করা জিনিসগুলো খেতে সত্যি ভীষণ ভালো লাগে।

 last month 

বাহ্ ,আপনার মায়ের মামাদের ফ্যামিলি দেখছি খুবই বড়। আসলে এরকম বড় ফ্যামিলি আমার ভীষণ পছন্দ। সবাই মিলে পিঠার আয়োজন করেছে শুনে আরো ভালো লাগলো। পিঠা খেতে কিন্তু আমরা সবাই পছন্দ করি। আপনার গল্পটা পড়তে পড়তে আমার নিজেরই পিঠা খেতে ইচ্ছা করছিল। আপনারা কি সুন্দর বুদ্ধি করে একজনের পর একজন গিয়ে হাড়িতে পিঠা চুরি করলেন। এমনকি চুরি করতে করতে হাঁড়িটাকে অর্ধেক করে ফেললেন। কিন্তু একটা বিষয়ে ভালো লাগতেছে আপনারা ধরা খেলেন না। চুরির দায় পরল আপনার মামাদের উপরে। সত্যি গল্পটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।

 last month 

আমার মায়ের মামাদের ফ্যামিলি অনেক বড়।তাদের দেখলে মনে হয় ছোটখাটো একটা বিয়ে বাড়ি। সকলে মিলে বেশ আনন্দ করে। আর বড় ফ্যামিলি গুলো দেখতে যেমন ভালো লাগে। আর সেখানে গেলে নিজেরও মনটা ভালো হয়ে যায়।

 last month 

দুজন মিলে পিঠা চুরি করে প্রায় অর্ধেক করে ফেললেন। তবে চুরি করে কোন কিছু খাওয়ার মজাই আলাদা। তবে আপনারা চুরি করে পিঠা খাওয়ার মিশনটি সাকসেস করেছেন। আপু আপনার পিঠা চুরির গল্পটি আমার কাছে বেশ দারুন লেগেছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 61888.55
ETH 3400.93
USDT 1.00
SBD 2.50