লাইফ স্টাইল- খাজনার চেয়ে বাজনা বেশী || lifestyle by @maksudakawsar ||

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু আলাইকুম

মন আমার দেহ ঘড়ি, সন্ধান করি, বানাইয়াছেন কোন মিস্ত্রী- গানটির কথা গুলো এতটাই যুক্তিযুক্ত যে যা কিনা আমরা অস্বীকার করতে পারি না বা পারবো না। আমরা প্রতিনিয়ত ছুটে চলছি আর চলছি। ছুটে চলছি অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। কিন্তু জীবনের আসল মানে কি আমরা সত্যিকারের অর্থে কখনও বুঝতে চেয়েছি? নাকি বুঝতে পেরেছি? হয়তো পেরেছি, আবার হয়তো পারিনি। কিন্তু একটি জিনিস আমরা সত্যিই কিন্তু পেরেছি। সেটা হলো অজানার উদ্দেশ্যে ছুটে চলা।

বন্ধুরা কেমন আছেন আপনারা? আশা করি সবাই বেশ ভালো এবং সুস্থ আছেন। আপনাদের সুস্থতা কামনা করেই আজ আবার চলে আসলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে। চলে আসলাম আমার সাথে সাথে আপনাদের কেও কিছু ভালো লাগা আর খারাপ লাগার অনুভূতির ছোঁয়া দিতে। আশা করি আজকের অনুভূতি গুলোও আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে।

image.png

image.png

খাজনার চেয়ে বাজনা বেশী

image.png

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

কথায় বলে না মরার উপর খারার ঘাঁ। আমার অবস্থাও না ঠিক তেমনটাই হয়েছিল কিছুদিন আগে। আর হবেই না কেন? অন্যের উপর বেশী নির্ভর করলে যা হয় এই আর কি। ঈদের দুদিন আগের কথা। আমি প্রতি ঈদ আসলেই আমার ঘর দুয়ার বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করি। এমন কি ঘরের সব কিছু ধোয়া পাকলা করি। সেদিনও তাই করছিলাম। আমার বাসার খালা সেদিন রাতেই গ্রামের বাড়ি চলে যাবে। তাই শত ব্যাস্ততার মাঝে ভাবলাম যে পানির ফিল্টারটি খালার হাতেই ভালো করে পরিস্কার করে নেই। এই দিকে খালা সব কাজেই বেশ তাড়াহুড়া করছে। খুব অনুরোধের কবলে পড়ে খালা আমার পানির ফিল্টারটি ধুয়ে দিলো। তো আমি ভাবলাম আমি পড়ে ফিল্টার ফিট করে নিবো । তাই কাজ শেষে খালাকে বিদায় করে দিলাম। রাতে যখন ফিল্টার ফিট করলাম এবং পানি দিলাম তখন দেখলাম যা অঘটন ঘটার সেটাই ঘটেছে।আমার ফিল্টার ভেঙ্গে দিয়ে খালা গ্রামের বাড়ি ঈদ করতে গেছে। যেটা কিনা আমি কেন কারও বাবার ও সাধ্য নেই ঠিক করার। কি আর করার? বসে বসে মাথা চাপড়াচ্ছিলাম কিছুক্ষণ।

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

কিন্তু মাথা চাপড়ালে তো আর পানির পিপাসা দূর হবে না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম নতুন ফিল্টার কেনার। কিন্তু সেই মূহূর্তে হাতে তেমন টাকাও নেই। কি করবো ভাবছিলাম।হঠাৎ ভাবলাম আমার ওয়ালেট থেকে একশত স্টিম বেঁচে দিলে কেমন হয়। যেই ভাবনা সেই কাজ। দিলাম একশত স্টিম সেল করে। পানি তো খেয়ে বাঁচতে হবে। টাকা বিকাশে আসার সাথে সাথে বের হয়ে গেলাম তালতলা মার্কেটের উদ্দেশ্যে। রাত তখন প্রায় ১০. ৩০ বাজে। অবশ্য তখন সব দোকানই খোলা। আমরা ধীরে ধীরে সবকটি দোকানেই সন্ধ্যান করেছি। পিওর ইট এর ফিল্টার টি কেনার জন্য। কারন আমার সাধ্যের মধ্যেই তো কিনতে হবে।

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

তো আমরা প্রায় সব গুলো দোকানেই ঘুরে ঘুরে দেখলাম কোন দোকানে দাম কত। সব গুরো দোকানেই ৫০০০/- টাকা করে চায়। খুব কম হলে ২০০ টাকা ডিসকাউন্ট দিবে। কিন্তু আমার মনে হলো আর একটু কমে হলে আমার জন্য ভালো হতো। কারন আমার বিকাশে তখন ৪৫০০/- টাকা আছে। আর এর মধ্যেই আমাকে কিনতে হবে। সেই জন্যেই আমি সব গুলো দোকানেই দেখলাম। কিন্তু কেউ কমে দিতে রাজি হচ্ছে না। এমন কি পরিচিত যে দোকানদার ছিল তারাও না। অবশেষে এই ভাইয়া আমাকে বলে দিলো একদাম ৪৩৫০ টাকা হলে নিতে পারবো। আমরা দুজন মিলে ভেবে দেখলাম এর চেয়ে কমে যেহেতু কেউ দিতে চায় না তাহেল এখান থেকেই নেওয়া যাক।

image.png

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

তাই ফিল্টারটি বের করে চেক করে দিলো তারা। আমরাও বেশ চেক করেই নিলাম। না কোথাও কোন সমস্যা নেই। লক্ষ্য করে দেখলাম যে ভাইয়ার দোকানে বিকাশে পেমেন্টের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ভাইয়াই তো নেই। আমি কাকে টাকা পেমেন্ট করবো। জানতে পারলাম যে উনি নাস্তা করতে গেছে। আমরা কি এত সময় দাঁড়িয়ে থাকবো? আরে না দাড়িঁয়ে থাকবো না। তাই আমরা চলে গেলাম বিকাশের দোকানে। কিন্তু বিকাশের দোকানে যাওয়ার পথে পাশের পরিচিত দোকানদার আমাকে জিজ্ঞেস করলো যে আমরা ফিল্টার কিনেছি কিনা? আমি হ্যাঁ বললাম এবং দামও বললাম। উনি বললেন যে হুম উনিই দিতে পারবে। কারন উনার বাচ্চা অসুস্থ্য তাই উনার টাকা দরকার। আমি আবার উনার কথা শুনে ভাবলাম যে ফিল্টার নষ্ট কিনা। যাক উনার কথায় বেশ ভালো লাগলো।

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

আমরা যখন দোকানে ফিল্টার আনতে গেলাম, তখনও দোকানের মালিক ছিল না। তখন দোকানে দুজন কর্মচারী ছিল। সেই কর্মচারীদের কে পেমেন্ট করতে গেলে তারা আমাকে বলে আমাদের কে ১০০ টাকা দেন আপনাকে ম্যামো করে দিচ্ছি। আমি তো হতবাক। কি বলে এসব। বুঝতে পারলাম মালিক না থাকলে এরা এমনই করে। তাই আমি একটু বুদ্ধি খাটিয়ে বলললাম যে, আমি যে এতক্ষন ফটোগ্রাফি করেছি সেটা তো দেখেছো। এছাড়াও আমি এই এলাকার মেয়ে। ম্যামো তো তুমি এমনিতেই দিবা, আবার আমাদের কে নাস্তাও খাওয়াবা। আমার এমন কথা শুনে তো বেশ ভয় পেয়ে গেল। আর সাথে সাথে ম্যামো করে দিলো। আমিও এতগুলো টাকা বাজনা দিয়ে ফিল্টার নিয়ে চলে আসলাম। আর বাসায় এনে সুন্দর করে ফিট করে নিলাম।

শেষ কথা

দেখলেন তো সবাই কেমন করে আমার খাজনার চেয়ে বাজনা বেশী হলো। সেদিন যদি আমি খালাকে দিয়ে আমার ফিল্টার না ধোয়াতাম তাহলে তো আমার ফিল্টারটি ভাঙ্গতো না। আর খাজনার চেয়ে বাজনাও বেশী হতো না। হি হি হি

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে।

image.png

Screenshot_1.png

Sort:  
 6 months ago 

এখন সব জায়গাতে ঠিক এমনটাই চলছে আপু। এ সমস্ত বিষয়গুলো আমার কাছে বেশ খারাপ লাগে। কোন কিছু কিনতে গেলে আনতে গেলে বকশিশ দাও এই দাও সেই দাও এসব গুলা খুবই বিরক্তিকর। ঠিক এখানে যেমন কর্মচারীরা ওই কথাটা বলল আপনিও হতবাক হলেন। যেন দুনিয়াটা মগের মুল্লুক।

 6 months ago 

হতভাগ হওয়ারই তো কথা ছিল না ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 6 months ago 

ঠিক আছে। যেমন কুকুর তেমন মুগুর। নিজের কাজ নিজে করলে আজ এমন টা হতো না। এতগুলো টাকা গরচা গেল। যাই হোক এখন থেকে সাবধানে পরিস্কার করবেন এমন টাই আশা করি । ধন্যবাদ সুন্দর এই পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

হয়ে গেছে আর কি করার? ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 6 months ago 

আসলে আপনার পোস্টটি আমি খুব নখদর্পণ করে পড়ছিলাম। আপনি সামান্য একটু বুদ্ধির জন্য আপনার অনেক টাকা বেঁচে গেল। আর বর্তমান সময়ে সব জায়গায় কিন্তু খাজনা চেয়ে বাজনা অনেক বেশি থাকে। আসলে আজকে আপনার পোস্টে ফ্রন্ট সাইজটা একটু বেশি বড় হয়েছে । এজন্য পড়তে অনেকটা অসুবিধা হচ্ছিল।

 6 months ago 

দাদা অনেক অনেক ধন্যবাদ উপদেশ মূলক মন্তব্য করার জন্য।

 6 months ago 
 6 months ago 

পিওর ইট ফিল্টার আমি ২০২১ সালের শেষের দিকে কিনেছিলাম এবং এখনও খুব ভালোভাবে ইউজ করছি। ফিল্টার আমি নিজে পরিষ্কার করি এবং কিট লাগাই। আবার অনেক সময় কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে পিওর ইটের লোক নিয়ে আসি। তাদেরকে মাত্র ৫০ টাকা দিলেই পরিষ্কার করে কিট লাগিয়ে দিয়ে যায়। যাইহোক কাজের বুয়া আপনার জরিমানা লাগিয়ে দিলো। স্টিমের টাকা দিয়ে নতুন ফিল্টার কিনেছেন,এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 6 months ago 

ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 81242.61
ETH 3198.79
USDT 1.00
SBD 2.79