ট্রাভেল পোস্ট- " হঠাৎ ছাত্র-ছাত্রী হোস্টেল পরিদর্শন" II written by @maksudakawsarII
বন্ধুরা কেমন আছেন আপনারা? আশা করি সবাই বেশ ভালো আছেন। আমি কিন্তু ভালো মন্দ মিলিয়েই আছি। আজকাল কেন জানি পরিস্থিতি আমার সাথে বেশ শত্রুতা করছে। শত্রুতা করছে আমার ইচ্ছে গুলোর সাথে। কেন জানি মনে হয় মা হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে আমার জীবনটাই হয়ে গেছে যন্ত্রণাময়। কাজ করার কোন রকম শক্তিই যেন আমি পাই না।
আমি @maksudakawsar, বাংলাদেশ হতে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন নিয়মিত ইউজার।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে নতুন নতুন এবং ভিন্ন কিছু পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হতে। আমি চাই আপনাদের মাঝে আমার পোস্ট গুলো শেয়ার করে আপনাদের কে কিছুটা আনন্দ দিতে। সেই সাথে নিজেও কিছুটা আনন্দ নিতে। সে জন্য প্রতিনিয়ত আপনাদের মাঝে না আসলে যেন আমার চলে না।তাই তো আজও আবার চলে আসলাম আপনাদের মাঝে।
জীবনটাই দায়িত্বের। আমরা কেউ কিন্তু হাজার চেষ্টা করলেও আমাদের দায়িত্ব বা কর্তব্যগুলোকে এরিয়ে যেতে পারবো না বা পারি না। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কোন না কোন দায়িত্ব থেকেই যায়। যেমন একজন গৃহীনির উপর তার পরিবারের দায়িত্ব। একজন চাকুরিজীবির উপর তার অফিসের দায়িত্ব। যে যাই বলুক না কেন কেউ কিন্তু তার দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে পারে না বা পারবেও না।
Canva দিয়ে তৈরি
এইতো কয়েকদিন আগের কথা। মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে আমাদের প্রিন্সিপাল স্যার সহ আমরা গেলাম মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী হোস্টেল ভিজিট করার জন্য।সেদিন প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে থেকে নিজেকে বেশ রাজা রাজাই মনে হচ্ছিলো। যাই হোক আমরা প্রথমে ছাত্র হোস্টেল ভিজিট করলাম। আর সেখানে যেয়ে দেখলাম হোস্টেলে অবস্থানরত ছাত্রছাত্রীদের জন্য খাবারের আয়োজন চলেছে। কিন্তু যেহেতু খোলা জায়গায় খাবার তৈরির ব্যবস্থা করা করা হয়েছে তাই পরিদর্শন কমিটি একটু রাগ করে তাদের কে পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন জায়গায় খাবারের সব কিছু তৈরি করতে বলেছেন।
তারপর আমরা যখন ছাত্রছাত্রদের ডাইনিং রুমে ভিজিট করলাম তখন তাদের খাবারের টেবিল গুলো যাতে পরিস্কার রাখা হয়, সেই দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য সবাইকে নির্দেশনা প্রদান করলেন। তারপর হোস্টেলের ভিতর জমানো সব আবর্জনা, হোস্টেলের বাহিরে রাখা মটর বাইক এবং আশে পাশের সকল স্থাপনা পরিস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সহ আমাদের কে নির্দেশনা প্রদান করলেন। এরপর আমরা গেলাম স্যারের সাথে ছাত্রদের জন্য প্রস্তুত করা মসজিদ টি পরিদর্শন করতে এবং মসজিদ যাতে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রখা হয় সেদিকে নজর রাখতে বললেন।
এরপর আমরা যখন ছাত্রী হোস্টেল পরিদর্শন করতে যাচ্ছিলাম তখন একটি কবুতরের খুপরি দেখতে পেলাম। সেখানে আবার অনেক গুলো কবুতরও হাটাহাটি করছিল। যদিও কবুতর শান্তির প্রতীক, তবুও আমাদের স্যার বললেন কবুতরের ঘর সেখান থেকে সরিয়ে নিতে। কারন এমন একটি হোস্টেলে ঢোকার পথে নাকি কবুতরের বাসা দেখতে তেমন ভালো লাগছে না। আর যিনি এখানে কবুতর পালন করেন তিনি মনে হয় ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সেগুলো পালন করেন।
এবার আমরা ধীরে ধীরে চলে গেলাম ছাত্রী হোস্টেলের দিকে। সেখানে যেয়ে ছাত্রীদের কে ডেকে স্যার সব সমস্যার কথা জানতে চাইলেন। ছাত্রীরা স্যার কে তাদের সকল সমস্যা গুলো তুলে ধরলেন। এই গরমের মধ্যে তাদের একমাত্র সমস্যা হলো হোস্টেলের সিলিং ফ্যানগুলো বেশীর ভাগই নষ্ট। তাদের এমন করুন অবস্থার কথা শুনে আমাদের স্যার তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন। তবে স্যার বেশ খুশি হলেন ছাত্রী হোস্টেলের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা দেখে বেশ খুশি হলেন।
তারপর আমরা যখন হোস্টেল পরিদর্শন করে বের হচ্ছিলাম তখন কিন্তু আমাদের স্যার হোস্টেলের চারদিকের সবুজ প্রকৃতিকে বেশ উপভোগ করছিলেন। আর স্যারের সাথে সাথে আমরাও কিছুক্ষন প্রকৃতি উপভোগ করতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ তো স্যার বেশ ক্ষেপে গেলেন। কেন জানেন? হোস্টেলের সামনে একটি ছোট টং দোকান দেখে। স্যারের কথা কলেজ ক্যাম্পাসে কোন দোকান থাকবে না। সাথে সাথে পরিদর্শন টিম থেকে লোক নিয়ে দোকানটি কে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সরিয়ে নিতে নির্দেশ প্রদান করেন। তারপর আমরা সবাই পরিদর্শন শেষে কলেজের অফিসে ফিরে আসি। আমাদের স্যার হোস্টেলের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য আমাদের সকলকে ধন্যবাদ জানান।
শেষ কথা
শেষ কথা
সত্যি বলতে দায়িত্ব খুব জটিল একটি বিষয়। সেটা যদি সঠিক ভাবে পালন করা না যায় তাহলে সেই দায়িত্বের ভোগান্তি অনেক। তাই আমাদের সবারই উচিত নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব গুলো সঠিকভাবে পালন করা। কেমন লাগলো আমার আজকের পোস্টটি? জানার অপেক্ষায় রইলাম।
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন আপু মানব জীবনটাই দায়িত্বের দায়িত্ববোধের। আমরা ইচ্ছা করলেই দায়িত্ব গুলো এড়িয়ে যেতে পারি না। তবে মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা দরকার। যেখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আসছেন সেখানে অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন জায়গায় যদি রান্না করা হয় তাহলে তো পরিদর্শন কমিটি রাগারাগি করবেই। যাইহোক প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে পরিদর্শনে গিয়ে আপনি নিজেকে বেশ কিছুক্ষণ রাজা রাজা মনে করেছেন জেনে ভালো লাগলো। সব কিছু মিলিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।
ধন্যবাদ ভাইয়া এমন সুন্দর করে মন্তব্য করে আমাকে দায়িত্ব পালনে আরও উৎসাহ প্রদান করার জন্য।
আপনার অভিজ্ঞতা এবং আপনার দায়িত্ববোধের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। এত সুন্দরভাবে এবং বিস্তারিতভাবে হোস্টেল পরিদর্শনের বর্ণনা পড়ে সত্যিই ভালো লাগল। বিশেষ করে, শিক্ষার্থীদের কল্যাণ এবং হোস্টেলের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার জন্য আপনাদের প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। প্রিন্সিপাল স্যারের নেতৃত্বে আপনারা যে কাজগুলো করেছন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। আশা করি, ভবিষ্যতে এমন আরো অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। আপনার পোস্ট থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। ধন্যবাদ, এত সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
[@redwanhossain]
বাহ্ আপনি তো দেখছি বেশ দারুন একটি মন্তব্য করেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার এমন সুন্দর মন্তব্যের জন্য।