নাটক রিভিউ- শেষ বসন্ত নাটকের রিভিউ

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নাটক রিভিউ-শেষ বসন্ত

আসসালামু আলাইকুম

ব্যস্ত জীবন। ব্যস্ততার কারেন জীবনের সকল আনন্দগুলো যেন দিন দিন মলিন হয়ে যাচেছ। জীবনের আনন্দ ঘন সময় গুলো কখন যে কি ভাবে শেষ হয়ে যাচ্ছে সেটাও যেন বুঝার সময় পাচিছ না। তবে মাঝে মাঝে মনে হয় ব্যস্ত এই সময় গুলো কে ছুটি দিয়ে উড়ে বেড়াই মুক্ত বিহঙ্গে ডানা মেলে। কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব নয়। তাই তো মাঝে মাঝে একটু আকটু উকিঁ ঝঁকি মারি ইউটিউবের স্কিনে। একটু মনটাকে হালকা করার জন্য দুই একটি নাটক দেখি। আর আজ আমি আপনাদের মাঝে তেমনই একটি নাটকের রিভিউ করার জন্য চলে আসলাম। আশা করি আমার মত আপনাদের কাছেও নাটকটি বেশ ভালো লাগবে।

নাটক.png

প্রাপ্তি: YouTube

নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য

নামশেষ বসন্ত
পরিচালকরাকেশ বসু
রচনারাকেশ বসু
অভিনয়জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, সাবিলা নূর, মিলি বাসার এবং আরও অনেকে
দৈর্ঘ্য৪৭মিনিট ২০সেকেন্ড
মুক্তির তারিখ৪ই জুলাই/২০২৩
ধরননাটক
ভাষাবাংলা
দেশবাংলাদেশ
প্রচারএনটিভি

চরিত্রেঃ

★ জিয়াউল ফারুক অপূর্ব
★সাবিলা নূর-সেজুতি

কাহিনী সংক্ষেপ

Screenshot_10.png

Screenshot_11.png

Screenshot_12.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

নাটকের প্রথম দৃশে দেখা যায় অপূর্ব রেললাইনের মাঝে বসে সিগারেট খাচ্ছে আর তার পরিবারের কথা চিন্তু করচেছ। হঠাৎ অপূর্ব ট্রেনের আওয়াজ পেয়ে হাতের সিগারেট ফেলে দিয়ে ট্রেনের দিকে এগুতো থাকে। এরই মধ্যে সে দেখতে পায় তার সামনে একটি মেয়ে ট্রেনে ঝাপ দিতে যাচেছ। সে সাথে সাথে দৌড়ে যেয়ে তাকে বাচাঁয়। তখন সেজুতি কাঁদতে থাকে। এরপর অপূর্ব সেজুতি কে টিসু দিলে সেজুতি অপূর্ব কে জিজ্ঞেস করে তাকে বাঁচালো কেন। তারপর অপূর্ব সেজুতির মন ভালো করার জন্য তার সাথে গল্প করে। এক পর্যায়ে অপূর্ব সেজুতির নাম জানতে পারে এবং সেজুতি কে বুঝায় যে মরে যাওয়া মানে কিন্তু হেরে যাওয়া। আর যাদের জন্য আপনি মরে যেতে চাচ্ছেন তারা জিতে গেল আর আপনি হেরে গেলেন। আর এমন যদি হয় তারা যদি জানতে পারে আপনি ভালো ভাবে বেচেঁ আছেন তখন তারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে। এসব শুনে সেজুতির মন ভালো হয়ে যায়। এরপর অপূর্ব এবং সেজুতির খিদে লাগায় তারা খেতে যায়। তখনই অপূর্ব লক্ষ্য করে যে সেজুতি একটু খুড়িয়ে হাটছে। এ অবস্থা দেখে অপূর্ব জিজ্ঞেস করে পায়ে ব্যথা পেয়েছে কিনা। কিন্তু সেজুতি বলে যে না তার পা জন্ম থেকেই এরকম।

Screenshot_13.png

Screenshot_14.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

এরপর তারা একত্রে স্টেশনের ওয়েটিং টেবিলে বসে খাবার খেতে খেতে গল্প করতে থাকে। এক পর্যায়ে অপূর্ব সেজুতি কে জিজ্ঞেস করে কেন সে সোসাইড করতে চাচেছ। এরপর সেজুতি অপূর্ব কে সব খুলে বলে। যা নাটকটিতে কল্পনায় দেখায়। সেজুতি একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে থাকে। জন্ম থেকেই তার এক পা সামান্য খোরা। সে মাত্র এইচ এস সি পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। এদিকে বাবা রিটায়ার্ড। তাদের সংসার চলে একমাত্র বোন আর বোন জামাইয়ের টাকার উপর। তাই তার বোন তাকে অনেক অপমান করে কথা বলে। তার বোন তাকে বলে তোর জন্য তো এ পর্যন্ত ১৬-১৭ টা বিয়ে এসেছে কেউ তো তোকে বিয়ে করতে চায না। শেষ পর্যন্ত না তোকে আমাদের গারেই পড়ে থাকতে হয়। আর বলে আমি হলে তো কবে বাসা থেকে বেরিয়ে যেতাম। আর অনেক অপমান করে সেজুতির বোন তাকে। কিন্তু এসব অপমান দেখেও সেজুতির বাবা মায়ের খারাপ লাগলেও তারা কিছু বলতে পারে না। কারন তারা মেয়ের টাকার উপর নির্ভরশীল।

Screenshot_15.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

কিন্তু সেজুতির বোনের জামাই ছিল বেশ ভালো। একদিন সে সেজুতির জন্য একটি শাড়ি কিনে আনে এবং সেজুতিকে আড়ালে ঢেকে শাড়ীটি দেয়। সেজুতি শাড়িটি পেয়ে বেশ খুশি হয়। তখন তার বোনের জামাই তাকে ছোট বোনের স্নেহে কাছে ঢেকে নেয়। আর এমন সময় সেজুতির বোন দেখে ফেলে।এমন দৃশ্য দেখে সেজুতির বোন সেজুতি কে অনেক অপমান করে। তারপর সেজুতির বোন যেমন করে হউক তার বোন কে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর একটি পাত্র পক্ষ আসে সেজুতিকে দেখতে। পাত্রের বাবার প্রচুর ধন সম্পদ। কিন্তু পাত্র থাকে হাবলা। সে শুধু খাই খাই করে। কিন্তু তাতেও সেজুতির বোনের কোন সমস্যা নেই। সেই ছেলের সাথেই সেজুতিকে বিয়ে দিবে। কিন্তু অবশেষে সেজুতির পা খোরা দেখে ছেলের বাবা বিয়ে ভেঙ্গে দিয়ে চলে যায়। তখন সেজুতির বোন সেজুতিকে একটি চড় মারে আর বলে আমি হলে তো ট্রেনের তলে মরতাম। তুই মরতে পারিস না। তখন সেজুতির মা তার বোন কে বলে আমার মেয়ে কে তোর বিয়ে দিতে হবে না। তুই চলে যা। তখন সেজুতির বোন আর বোনের জামাই বাড়ি হতে বের হয়ে যায়। এদিকে সেজুতি কিছু খাওয়া দাওয়া করে না । আর এসব নিয়ে তার বাবা মা অনেক চিন্তিত। সেজুতির বাবা এ বিষয়ে তার বোনের জামাই কে ফোন দিলে তার বোন জামাই তার বোন কে সব খুলে বলে। কিন্তু সেজুতির বোন তার বোনের জামাই কে সন্দেহ করে। এসব দেখে সেজুতি কাউকে কিছু না বলে একা একা ঘর হতে বের হয়ে চলে আসে।

Screenshot_16.png

Screenshot_17.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

এরপর সেজুতি অপূর্বের কাছে তার বিষয়ে জানতে চায়। তখন অপূর্ব বলে সে গ্রামের ছেলে। সে ঢাকায় আসে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে। ঢাকায় এসে সে ভালো একটি চাকুরীও পায়। বড় বড় কোম্পানীতে বিদেশী মেশিন কেনার এজেন্ডা। এই চাকুরীর বদলতে কিছুদিনের মধ্যে তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। এমনকি বাড়িতেও অনেক উন্নতি করে। আর এসব কিছু তার একজন কলিগ দেখে হিংসা করে। সে অপূর্বের নামে কোম্পনীকে উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে অপূর্বকে চাকুরীচূত্য করে । এমন কি অপূর্ব কে মামলার ও ভয় দেখায়। এদিকে অপূর্ব এর বাড়িতে তার বোনের বিয়ে। বিয়েতে অনেক টাকা পয়সার প্রয়োজন। যার জন্য বাড়ি হতে বারে বরে ফোন আসছে। সব মিলিয়ে অপূর্ব বেশ সমস্যায় আছে।

Screenshot_18.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

এরপর সেজুতি অপূর্ব কে জিজ্ঞেস করে যে সে এখন কি করবে। অপূর্ব বলে বাড়ি ফিরে যাবো। আবার নতুন করে সব শুরু করবো। এই ফকি বাজির ঢাকায় আর থাকবো না। অপূর্ব সেজুতি কে বলে আপনি থাকেন আর ৪০ মিনিট পড়ে গাড়ী আসবে। আপনি যখন মরতে চাইছেন তখন মরেন। এ কথা বলে অপূর্ব চলে যেতে চায়। কিন্তু সেজুতি অপূর্ব কে ডেকে বলে আপনি না আমাকে বাঁচালেন তাহলে আমাকে একা ফেলে কোথায় যাচেছন। তখন অপূর্ব সেজুতিকে তার বাড়ি পৌছে দিতে চায়। কিন্তু সেজুতি অপূর্ব কে বলে যে সে তার বাড়িতে ফিরে যাবে না সে অপূর্বের সাথে তার বাড়িতে যাবে। তখন অপূর্ব সেজুতিকে বলে সত্যি আপনি যাবেন আমার সাথে। এ বলে অপূর্ব সেজুতিকে হাত ধরে নিজের সাথে নিয়ে যায়। আর এখানেই নাটকটি শেষ হয়ে যায।

Screenshot_19.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

ব্যক্তিগত মতামত

নাটকটির মধ্যে পরিচালক মানুষ যখন অসহায় হয়ে পড়ে তখন তার আপনজনরাও তার অসহায়েত্বর সুযোগ নিয়ে অনেক কষ্ট দেয়। আসলে সেজুতি তো দেখতে বেশ সুন্দরই ছিল শুধু মাত্র পা একটু খরা হওয়ায় তার বিয়ে দিতে কষ্ট হচ্ছিল। আর সেজুতিদের জীবনে কিন্তু শেষ টা ভালোই হয়, যদি তারা মানুষের কথায় আঘাত না পেয়ে ঘুরে দাড়াঁতে জানে। আর যদি ভালো কোন জীবন সঙ্গী পেয়ে যায় তাহলে তো কথায় নেই।

ব্যক্তিগত রেটিং

১০/১০

নাটকের লিংক

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️