শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি- শৈশবের সেই ঈদ যদি ফিরে পেতাম II written by @maksudakawsar II

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই বেশ ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালো আছি। আর সব সময়ই চাই ভালো থাকতে। কারন নিজে ভালো না থাকলে পাশের মানুষগুলো কে ভালো রাখাটা মুশকিল হয়ে পড়ে। আর তাই তো সব সময়ে ভালো থাকার কাজ করে যেতে হবে। আর ভালো থাকতে বা নিজেকে ভালো রাখতে যে জিনিস গুলো বেশী প্রয়োজন তা হলো নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে সমস্ত অসুস্থ্যতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা। দোয়া করি সবাই যে সুস্থ এবং সুন্দর জীবন যাপন করতে পারেন।

শৈশব আমাদের জীবনের সাথে এমন করে মিশে আছে যে আমরা হাজার চাইলেও সেই শৈশব কে ভুলতে পারি না। পারি না শৈশব কে দূরে ঠেলে দিতে। শৈশব আমাদের কে বার বার হাতছানি দেয়। চোখের সামনে মেলে ধরে হাজারও স্মৃতি। আর সেই শৈশব কে আকঁড়ে ধরে আজও আমরা বেঁচে আছি।বন্ধুরা আজও চলে আসলম সুন্দর সেই শৈশবের কিছু দূরন্ত পানার স্মৃতি নিয়ে আপনাদের মাঝে।

ai-generated-8649571_1280 (1).jpg

Source

শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি
শৈশবের সেই ঈদ যদি ফিরে পেতাম

দেখতে দেখতে চলে এলে পবিত্র ঈদুল- উল- ফিতর। চলে গেল রহমত বরকত আর নাজাতের মাস। জানিনা কতটুকু গোনাহ মুক্ত করতে পেরেছি নিজেকে। এখন চারদিকে চলছে ঈদের আমেজ। চারদিকের সবাই এখন ব্যাস্ত পরিবার আর নিজেদের জন্য শেষ কেনাকাটা করার জন্য। আর এমন একটি সময়ে আমারও দিন যাচ্ছে বেশ ব্যাস্ততায়। তবুও বার বার মনে হচেছ আপনাদের সাথে কিছু মজার স্মৃতি শেয়ার করি। মানে ছেলেবেলার ঈদ কেমন কেটেছে? কেমন করে আমরা ছেলেবেলার ঈদে মজা করতাম? ইত্যাদি ইত্যাদি।

সত্যি বলতে এবার ঈদের তেমন কোন অনুভূতি আমার মধ্যে দেখলাম না। আর পেলাম না কোন ঈদের আনন্দ। আসলে দিন যতই যাচেছ ততই যেন আনন্দ ঘন সময় গুলোর দিকে হতে মন ঘুরে যাচেছ। সময়ের বিবর্তনে ঘুরে ঈদের আনন্দ গুলো জীবন থেকে মলিন হয়ে যাচ্ছে। আজ বার বার মন ছুটে যাচ্ছে সেই ছেলেবেলার ঈদ গুলোতে । যখন ঈদ মানে ছিল আনন্দ আর উদ্দীপনা। ঈদ মানে ছিল সাজুগুজো আর নতুন জামা লুকিয়ে রাখা। আসলে সেই ঈদ গুলোই বেশ মজার ছিল।

ছেলেবেলায় ঈদ আসলেই বায়না ধরতাম খুব ফ্যাশনেবল ড্রেস কিনে দেওয়ার জন্য। আর বান্ধবীদের মধ্যে সবচেয়ে দামী জুতা আর জামা আমার হওয়া চাই। আর আমার চাওয়ার মত করেই আমি পেয়ে জেতাম আমার দামী জুতা আর জামা। তবে সেই জুতা আর জামা ঈদের দিনের আগে কেউ দেখতে পেত না। তারপর দিনের আগের রাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়তাম হাতে মেহেদী পড়ায়। খুব সুন্দর করে মেহেদী আমার পড়া চাই চাই। আর অপেক্ষা করতাম কার মেহেদী বেশী কালার ফুল হয়। তাই সারারাত হাতে মেহেদী দিয়ে গুমিয়ে থাকতাম।

ঈদের দিন সকালে সুগন্ধি সাবান দিয়ে ঘষে মেজে মা গোসল করিয়ে দিতো। গোসল শেষে নতুন কাপড় চোপড় বের করতাম। ততক্ষনে আশে পাশের সব বান্ধবীরা ঈদের কাপড় পড়ে চলে আসতো আমাদের বাসায়। কারন আমার বোনের কাছে সবাই সাজতে আসতো। আমার বোন বেশ সুন্দর করে সাজাতে পারতো। তাই এক একজন করে সাজিয়ে দিতে। মাঝে মাঝে লিপিস্কি দিতে গেলে মুখ কে যেদিকে করতে বলতো সেদিকে করতে পারতাম না। তাই লিপিস্টিকও যেত নষ্ট হয়ে। আবার চোখে কাজল দিতে গেলেও কাজল যেতে ছড়িয়ে। মাঝে মাঝে অনেক কান্নাকাটিও করেছি এমন সাজগোজের জন্য।

তারপর সাজগোজ করে ফিটফাট হয়ে চলে যেতাম যে বাসায় গেলে সালামী পাওয়া যাবে সেই বাসায়। সালামী নিতে নিতে হাতের ব্যাগ ভরে যেত । তারপর সেই সালামী নিয়ে ঘুরে ফিরে বেশ মজা করতাম। এক সময়ে ঘেমে টেমে বাসায় চলে আসলাম। আর ব্যাগের থেকে বের করে সালামী হিসাব করতাম। তারপর সেই সালামী জমা রাখতাম আমার বোনের কাছে। কিন্তু সেই জমা করা সালামী আর ফিরে পেতাম না। হি হি হি। আর আজ সেই দিনগুলোর জন্য বেশ আফসোস করি।

শেষ কথা

আমরা চাইলেও কিন্তু আমাদের অতীত কে জীবন থেকে মুছে ফেলতে পারবো না। আর তাই তো আজ আবার জীবন থেকে কিছু স্মৃতি আপনাদের মাঝেও ছড়িয়ে দিলাম। আশা করি আমার শৈশবের এমন ঘটনা আপনাদেরও বেশ ভালো লাগবে।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

Screenshot_1.png

Sort:  
 4 months ago 

বাহ আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শৈশবের স্মৃতি নিয়ে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। ঠিক বলেছেন আপু আপনি আসলে শৈশবের ঈদে আমরা সবাই বাড়িতে বায়না ধরতাম সব থেকে দামি ড্রেস কিনব বলে। কিন্তু তখন পরিবারের আর্থিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করতাম না। যাই হোক শৈশবের ঈদ হয়তো আর আমাদের জীবনে কখনো ফিরে আসবে না। আপনি ঈদের সালামি আপনার বোনের কাছে জমা রাখতেন কিন্তু সালামি আর ফিরে পেতেন না সত্যি এটি কিন্তু বেশ মজার একটি ব্যাপার। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

আপনি তো দেখছি একদম আমার মত। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 4 months ago 

শৈশবের ফেলে আসা দিন গুলির স্মৃতি মনে পড়লে এখনো হৃদয়ের মাঝে অন্যরকম অনুভূতি সৃষ্টি হয়। আসলে অনুভূতি গুলো কখনো ভুলা যায় না। ‌শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি সত্যি বেশ অসাধারণ। সবাই মিলে কতই না আনন্দ করতাম। নতুন জামা কাপড় কিনে সবাইকে বারবার সালাম করতাম সেলামি পাওয়ার জন্য। এই মুহূর্ত গুলো এখনো খুব মনে পড়ে। আপনার শৈশবের ফেলে আসা দিন গুলির স্মৃতির অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 4 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া এমন সুন্দর করে উৎসাহ মূলক মন্তব্য করার জন্য।

 4 months ago 

হুম আপু বেশ মজার ছিল ছেলেবেলার ঈদ গুলো। আমরা কতই না মজা করতাম। দল বেধেঁ বেধেঁ সালামী তুলতে যেতাম। আর সালামীর টাকা দিয়ে কত কিছুই না খেতাম। তবে জীবনে সবচেয়ে দামী কাপড় গুলো কিন্তু আপনিই পড়েছেন। ধন্যবাদ এমন সুন্দর স্মৃতিময় পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

আর আপনি কি সব কম দামী কাপড় পড়েছেন? ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।

 4 months ago 

ঠিক বলেছেন আপু শৈশবের সাথে আমাদের জীবনের এমন কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো আমরা চাইলেও কখনো ভুলে যেতে পারব না। আর সেই সুন্দর মধুর স্মৃতিগুলো সারা জীবন মনে থাকবে। দারুন লিখেছেন আপু। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

 4 months ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর এবং সাবলীল মন্তব্যের জন্য।

 4 months ago 

শৈশবে আমাদের জীবনের ভালো সময় কেটেছিল। শৈশবে আমরা অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম। যদি পারতাম তাহলে আবারো সেই সময়ে ফিরে যেতাম। কিন্তু আফসোস একটাই আমরা চাইলেও সেই দিনগুলোকে জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারব না। সব সময় স্মৃতির পাতায় থেকে যাবে দিনগুলো। খুবই চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু।যা দেখে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

এটা ঠিক যে জীবনের সে সমস্ত সময় গুলো আর ফিরিয়ে আনতে পারবো না। তবে স্মৃতি গুলো নিয়ে তো বেচেঁ থাকতে পারবো। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 4 months ago 

শৈশবের স্মৃতিগুলো বেশ দারুন ভাবে আমাদের মাঝে লিখে উপস্থাপন করেছেন। আসলে শৈশবের স্মৃতি ভুলার মত নয়।আর আমরা ইচ্ছা করলেও সেই শৈশবে আর ফিরে যেতে পারবো না শুধু তার স্মৃতিগুলো সারা জীবন মনে থাকবে। আপনার পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল ঈদে কত না আনন্দ করতাম। সালামির জন্য দল বেঁধে চলে যেতাম আর সেই টাকা পেয়ে কি যে আনন্দ হতো। ধন্যবাদ আপু দারুন একটু পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 4 months ago 

যাক তাহলে আপনার জীবনেও এমন সব ঘটনা রয়েছে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 4 months ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার সব স্মৃতিগুলো যেন চোখের সামনে ভেসে উঠলো। আসলে ছোটবেলায় যেভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতাম এখন কেন যেন তার কোনটাই উপভোগ করি না তাছাড়া আমরা যেরকম নতুন ড্রেস নিয়ে খুব বেশি উৎসাহিত ছিলাম বাচ্চাদের মধ্যে এখন তেমন একটা উৎসাহ দেখি না। হয়তো প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পায় এজন্যই এমন অবস্থা। তারপরও সালামি নিয়ে সবারই একটা উৎসাহ কাজ করে। ভালো লাগলো আপু পোস্টটি পড়ে।

 4 months ago 

আপু দারুন তো। আপনার মন্তব্য গুলো পড়ে তো বেশ ভালোই লাগলো। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর এবং সাবলীল মন্তব্যের জন্য।

 4 months ago 

একদম ঠিক বলেছেন আপু এখনকার ঈদে আগের মতো মজাটা খুঁজে পাই না । আগে যখন সবাই মিলে ঈদ উপভোগ করতাম সেদিন গুলো আসলে অন্যরকম ছিল ।সকালবেলা উঠে গোসল সাজগোজ করা সত্যিই সেদিন গুলো যদি ফিরে পেতে পারতাম অনেক ভালো হতো । আমরাও এই কাজটা করতাম কয়েকবোন মিলে একসাথে সাজুগুজু করতাম তারপর ঘুরতে বের হতাম সারাদিন ঘোরাফেরা করে সেই সন্ধ্যায় বাসায় ফিরতাম ।আসলে সেই সময়কার ঈদের আনন্দটাই ছিল অন্যরকম ।

 4 months ago 

তাহলে দেখছি আপনারা আমার মত করেই ঈদ পালন করতেন। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58397.49
ETH 2619.60
USDT 1.00
SBD 2.42