শুভ রাত্রি প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সকলকে। সেই সাথে অবিরাম ভালোবাসা সকলের প্রতি। সকলের সুস্থ্যতা এবং সুন্দর জীবন কামনা করেই আজ আবার শুরু করতে যাচ্ছি আমার ব্লগটি। মানুষের মন এক এক সময়ে এক এক রং এ সাজে। কখনও মেঘ, কখনও বৃষ্টি , আবার হয়তো বা কখনও রোদ। আর এই রং বদলানোর খেলায় নতুন করে খুজেঁ ফিরে নিজেকে। ছুটে যায় প্রকৃতির মাঝে নিজেকে প্রশান্তি দেওয়ার তাগিদে। আর প্রকৃতির রঙে নিজেকে করে তুলে প্রানবন্ত।

ছুটির দিনের তেমনি একটি বৃষ্টি ভেজা বিকেলে চলে গেলাম রমনার বটমূলে নিজেকে স্নিগ্ধ করতে। বাসার সামনে থেকে রিক্সা নিয়ে নিলাম। ঝিরঝির বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মেলে দিয়ে খোলা আকাশের নীচে প্রিয় কারো সাথে রিক্সায় ঘুরে বেড়ানো যে কি রোমান্টিক সেটা হয়তো অনেকেই বুঝে। বেশ ভালো শীতল বাতাস বয়ে যাচিছলো চারদিকে। গল্প করতে করতে পৌছে গেলাম রমনার বটমূলে। সেখানে পৌছেই নিয়ে নিলাম প্রিয় চকবার। ঠান্ডা লাগে লাগুক গিয়ে।

রমনার সবুজ ঘেরা প্রকৃতিতে ঘুরতে কিন্তু কোন টিকেট কাটা লাগে না। খুব সহজেই ভিতরে প্রবেশ করে উপভোগ করা যায় প্রকৃতির দৃশ্যগুলো। আমরা যখন রমনায় পৌছাই তখন ঠিক বিকেল। আমরা প্রকৃতির সাথে আলাপচারিতা করতে করতে ঘুরে দেখতে শুরু করলাম পুরো রমনা। বিশাল বিশাল নানা রং এর গাছ গাছালি দিয়ে ভরে রেখেছে বিশাল এই রমনা। অবশ্য বেশ ছোট বেলায় একবার গিয়েছিলাম এই রমনায়। আরও কয়েকবার যাওয়া হয়েছিল। তাও আমার বিয়ের অনেক আগে। সেটা বলা যাবে না কেন গিয়েছিলাম। হি হি হি।

তো প্রতিটি গাছের কাছে যেয়ে যেয়ে কিছুটা অক্সিজেন নেওয়ার চেষ্টা করলাম। যাতে দেহ মন প্রানবন্ত হয়ে উঠে। তারপর চেষ্টা করলাম গাছগুলোর সাথে পরিচিত হতে। কিন্তু কিছুটা নিরাশ হলাম। পরিচিত হবো কি করে গাছ তো আর নিজের নাম বলতে পারে না। তাই নিজের মত করে যতটুকু চেনার চিনে নিলাম। কিছুকক্ষনের মধ্যে প্রকৃতির ফটোগ্রাফি করার জন্য প্রকৃতির সাথে মিশে একাকার হয়ে গেলাম। এত সুন্দর প্রকৃতি পেলে তো একাকার হওয়াই যায়।তবে যেটা ‍বুঝেতে পারলাম এখানে ঔষুধি গাছ থেকে শুরু করে সব রকমের গাছই লাগানো আছে।

বেশ কিছুক্ষন হাটা হাটি করার পর একটু বসার জন্য জায়গার খোঁজ করতে লাগলাম কিন্তু সেখানে কোন একটিও সিট খালি নেই। সব জায়গায় জোড়ায় জোড়ায় বসে আছে। কি যে মধুর দৃশ্যগুলো। বৃষ্টিও তাদের কাছে কোন বাধাঁ হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। একটু খেয়াল করে দেখলাম, এখানে সব বয়সের মানুষের পদচারনা রয়েছে। কেউ আসছে প্রকৃতিকে ভালোবাসতে, কেউ আসছে প্রিয় মানুষটিকে ভালোবাসতে, কেউ আসছে ভিডিওগ্রাফি আর ফটোগ্রাফি করতে এবং কেউ বা আসছে নিজের মত করে একান্তে সময় কাটাতে।

ঢাকা শহরের মধ্যে যে এত সুন্দর সবুজ প্রকৃতি আছে, আর এখনও যে এসব প্রকৃতিকে ধ্বংস করে দেয়নি এটা ও অনেক কিছু। চারদিকে যে হারে গাছপালা কেটে ফেলা হচেছ। যাক আমরা চলে গেলাম রমনার সেই বিখ্যাত লেকের ধারে। কিন্তু এ কি দেখলাম? রমনার লেক তো পুরোটাই চেঞ্জ হয়ে গেছে। নতুন করে ভাসমান সেতু করা হয়েছে রমনার লেকের উপর। আগের মত কোন নৌকা চলে না সেই লেকে। হায়রে কি যে ভিড় লেকের উপর। দাড়ানোর জন্য তিল ঠাইঁ নাই। মানুষ যেন মানুষের মাথা খায়। তো একবার একটু সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করে ফিরে আসলাম। তারপর দূর থেকে কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম।

এবার তো প্রকৃতির মাঝে কিছুটা সময় বসতে হয়। কিন্তু কি আর করার কোথাও তো আর বেঞ্চ খালি নেই। সব জায়গায় কপোত কপোতিরা জোড়ায় জোড়ায় বসে মনের ভাব আদান প্রদান করছে। আরও যে কত কি। তো এখন কি করা যায়। বেশ কিছু সময় হাটার পর চোখে পড়লো মহিলা অঙ্গন। কিন্তু হায় এ কি অবস্থা সেখানেও দেখি পুরুষ বসে আছে। তবে মহিলা যে নাই তাও কিন্তু নয়। ঐ যে জোড়ায় জোড়ায় তারাই আছে। তো এক জোড়ার পাশের একটি বেঞ্চ খালি পেয়ে সেখানে যেয়ে আমরা জোড়া বসলাম। কিছুক্ষন পর আর বসতে পারলাম না। উঠেই চলে আসতে হলো। আর এবার একেবারে গেইট দিয়ে বাসার দিকে যাওয়ার পায়তারা। অবশেষে রমনার সেই সবুজ শ্যামল পরিবেশের মায়া কাটিয়ে বাসার দিকে রওনা দিয়ে দিলাম।

আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন ব্লগ নিয়ে নতুন ভাবে আপনাদের কাছে। কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের ব্লগটি ? আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের আশায় রইলাম। সবাই ভালো থাকবেন এবং সাবধানে থাকবেন।