ভ্রমন পোস্ট- অপরূপ রূপে ঘেরা সোনারগাঁ জাদুঘর ||Sonargaon Museum surrounded by beautiful forms||

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম

অপরূপ রূপে ঘেরা সোনারগাঁ জাদুঘর

image.png

❤️শুভ বিকেল আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সকলকে❤️। প্রকৃতি হলো মানুষের পরম বন্ধু। আর এই প্রকৃতির মাঝেই মানুষ তার ‍সুখ খোঁজে পায়, পায় প্রশান্তি। তবে মাঝে মাঝে মনে হয় এই মনটাও যেন প্রকৃতির মত করে ক্ষনে ক্ষনে রং বদলায়। কখন যে মনের মাঝে ঐ নীল আকাশের মত করে কালো মেঘ গুলো জমা হতে থাকে সেটা কিন্তু বোঝার উপায় নেই। শুধু মনের মধ্যে জমে থাকা কিছু কষ্টকেই আমরা অনুভব করতে পারি। আর তখনই মনটা চায় উড়ে যেতে কোন দূর দিগন্ত। হয়তো কখনও পাখি হয়ে, কখনও বা মেঘের ভেলায় ভেসে, আবার কখনও বা রাতের আকাশের তারা হয়ে। আচ্ছা আপনাদেরও কি আমার মত মনে হয়?

image.png

আজও আবার সকলের সুস্থ্যতা কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ❤️। এই তো ক’ দিন আগের কথা চলে গেলাম অপরূপ রূপের সাজানো প্রকৃতির এক মায়া নগরে। হুম আমি সোনারগাঁ এর কথা বলছি। ঈসা খাঁ এর রাজধানী সোনাগাঁ। বেশ সুন্দর আর মনোরম সৌন্দর্য ঘেরা শহরটি। তো চিন্তা করলাম ঈসা খাঁ এর রাজধানীতে আসলাম আর সোনারগাঁ জাদুঘর একটু ঘুরে দেখবো না তাকি হয়? তাই কিছুটা সময় কাটিয়ে আসলাম সোনারগাঁ জাদুঘরে। আর আজ আমি আপনাদের সাথে সেই সোনারগাঁ জাদুঘরে কাটোনো কিছু সময়ের কথাই শেযার করার জন্য চলে আসলাম। আশা করি সোনারগাঁ জাদুঘরের অপরূপ সৌন্দর্য আপনাদের মু্গ্ধ করবে। তো চলুন ঘুরে আসা যাক সোনারগাঁ জাদুঘর হতে।

image.png

image.png

image.png

মামা শ্বশুড়ের বাড়িতে দুপুরের খাবার খেয়ে বেলা ৩-০০ টায় আমরা সোনারগাঁ জাদুঘরে যাই। অবশ্য বাসা থেকে সোনারগাঁ জাদুঘরের দূরত্ব মাত্র দশ মিনিট। মোট ৫০/- টাকা করে ৪টি টিকেট কাটা হয় ভিতরে প্রবেশের জন্য। তো আমরা টিকেট নিয়ে ভিতরে চলে যাই। অবশ্য আমি এর আগেও একবার গিয়েছিলাম এখানে। তখন আমরা সকাল ১০.০০ টায় গিয়েছিলাম। এবার যখন গেলাম তখন তো চারদিকে ঈদের আমেজ তাই টিকেটের দাম একটু বেশীই পড়েছে। আমরা যখন ভিতরে প্রবেশ করলাম তখন চোখে পড়ল সুবিশাল এখানা জমিদার বাড়ি। আর ঘোড়ার উপর রাজার টকবগ করে চলার ছবি। অবশ্য ঘোড়ার উপর বসে থাকা রাজা আর ঘোড়ার সম্পূর্ণটাই মাটি বা সিমেন্টের তৈরি। সুন্দর ঘাটলা বাধাঁনো পুকুরের চার পাশে অপরূপ প্রকৃতি যেন মানুষ কে মুগ্ধ করে দিয়েছে। সেখানে আশা মানুষগুলো খুব উৎসাহি হয়ে ফটো সেশনে ব্যস্ত। আমরা কিন্তু জমিদার বাড়িরর ভিতরে প্রবেশ করলাম না। আর করবোই বা কি করে এক এক জনের জন্য ৩৫০/ টাকা করে লাগবে। বাপরে কি দরকার।আর চুরি করে যাওয়ার ও উপায় নেই সামনে আবার দারোওয়ান মামা। বাহিরের থেকে দেখলেই শান্তি। তাই বাহিরের থেকে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম।

image.png

image.png

তারপর আমরা আস্তে আস্তে জাদুঘরের মূল ভবনের দিকে আগাতে থাকি। কিন্তু যাওয়ার পথেই চোখে পড়ে শিল্পচার্য জয়নুল আবেদীনের সেই ভাস্কর্য। যেখানে একজন লোক গরুর গাড়ী ঠেলছে। তো সেখানে দাড়িঁয়ে গাইতে থাকলাম আমার গরুর গাড়ীতে বউ সাজিয়ে, ধুকুর ধুকুর ধুকু ধু সানাই বাজিয়ে। হি হি হি। কি যে এক আনন্দ লাগছিল তখন। তারপর সেখানে কিছু ফটোগ্রাফি আর ভিডিওগ্রাফি করে নিয়ে সামনে চলে গেলাম। ওমা সামনেও তো দেখি আমাদের জাতির পিতার বিশাল এক ভাস্কর্য। তো তার ফটোগ্রাফি কি আর না করলে হয়। এখানেও গাইলাম প্রতিদিন তোমায় দেখে সূর্য উঠে। যাক কিছু টা সময় এখানেও সময় কাটালাম। বেশ ভালোলাগা কাজ করছিল তখন।

image.png

image.png

image.png

তারপর আমরা ধীরে ধীরে আরও সামনের দিকে এগোতে থাকি। সামনে যেয়ে আমাদের চোখে পড়ে গ্রাম বাংলার কৃষকের ঘর, কুড়ে ঘর আর শিল্পচার্য্য জয়নুল আবেদীনের ভাস্কর্য্য। হাজারও মানুষ দুর দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে এসেছে বাংলার মোঘলদের সাম্রাজ্য দেখতে। তবে একটি কথা কি যদিও আমরা এসব কথা বইয়ের পাতায় ইতিহাস হিসাবে পড়েছি, তবুও এসব প্রাচীন কালের ইতিহাস এ ‍যুগের ছেলে মেয়ে দের কাছে তুলে ধরা উচিত। আর গ্রাম বাংলার এরকম কৃষকের ঘর কিন্তু আমার পর্যন্ত চোখে পড়েনি।

image.png

image.png

image.png

image.png

image.png

image.png

image.png

এরপর আমরা জাদুঘরের ভিতরে প্রবেশ করি। সম্পন্ন জাদুঘরটি চার তলা। আর প্রতিটি ফ্লোরে রয়েছে দেখার মত অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস। নকশী কাথা, গ্রামীন দৃশ, প্রাচীন রাজা বাদশাহদের নানা প্রকার ব্যবহার করা জিনিস। রাজা বাদশাদের তরয়ারী সহ কত যে জানা অজানা প্রাচীন দৃশ এই জাদুঘরে স্থান পেয়েছে তা কি আর বলেতে। আমাদের কিন্তু পরোটা জাদুঘর ভালো করে ঘুরে দেখা হয়ে উঠেনি। আর উঠবেই বা কেমন করে। গেলামই তো মাত্র ৩টায়। তাই প্রতি ফ্লোরে উকিঝকিঁ মেরে কোন রকম ফটোগ্রাফি করেছি মাত্র।

image.png

image.png

image.png

image.png

image.png

এখানে কিন্তু আবার প্রাচীন কালের অনেক মূল্যবান কিছু মূর্তিও রাখা আছে। আছে আগের দিনের ব্যবহার করা পিতলের কলসিও। এতো ফটোগ্রাফি কি আর দুই ঘন্টায় করা যায়? বলেন তো আপনারা। তবে এখানে কিন্তু ঢাকা জাদুঘরের মতো করে কেউ ফটোগ্রাফি বা ভিডিও গ্রাফি করতে নিশেদ করে না। আপনি যত খুশি ফটোগ্রাফি করতে পারবেন। তবে যেহেতু ৫ টায় জাদুঘর বন্ধ হয়ে যায় তাই আর মনের মত করে ঘুরতে পারলাম কই😹😹। তবে এই সময়টুকুর মধ্যে প্রাচীন কালের যে জিনিস দেখেছি তা কিন্তু অনেক। আপনারাও চাইলে কিন্তু ঘুরে আসতে পারেন আমার মতো।

image.png

পোস্টের বিবরন
পোস্টের ধরনভ্রমন পোস্ট
ডিভাইসVIVO-Y22S
ফটোগ্রাফার@maksudakawsar
স্থানসোনারগাঁ জাদুঘর, নারায়ণগঞ্জ, বাংলাদেশ

আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে নতুন ভাবে আপনাদের কাছে। কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের ব্লগটি ? আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের আশায় রইলাম। সবাই ভালো থাকবেন এবং সাবধানে থাকবেন।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

image.png

Add a heading (1).png

image.png

image.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সোনারগাঁ জাদুঘর এর ভ্রমণ পোস্ট। আসলে প্রত্যেকজনের টিকিটের দাম নিয়েছিল ৫০ টাকা করে। আপনারা চারটি টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন। আসলে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জাদুঘরের বিভিন্ন জিনিস দেখতে পেলাম। পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনি সেখানে বেশ সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last year 

সেদিন কিন্তু আমার বেশ ভালোই লেগেছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া। সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আপু সোনার গাঁ যাদুঘরে বেশ ভালই ঘোরাঘুরি করেছেন। আসলে দুপুর বেলা মামা শশুরের বাসা থেকে খেয়ে বেশ ভালোই ঘুরেছেন। সত্যি আপু সেই পুরানো ইতিহাস আমাদের, ঐতিহ্য আমাদের বাচ্চাদের মাঝে তুলে ধরা উচিত। যাইহোক আপু যাদু ঘরের ভিতরে মূর্তি গুলো দেখে বেশ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর কাটানো মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

হুম পুরানো ইতিহাস আমাদের বাচ্চাদের মাঝে তুলে ধরা উচিত। ধন্যবাদ ‍সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

বেশ কিছু দিন আগে সোনারগাঁ গিয়েছিলাম। তখন জাদুঘর ও অনেক কিছু দেখেছিলাম।আবার আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

জি আপু সোনারগাঁ কিন্তু অনেক অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে। সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আমার ইচ্ছা রয়েছে সোনার গায়ের এই জাদুঘরে ঘুরতে যাব কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই আশা পুরনো হয়নি। তবে ভবিষ্যতে সেখানে যাব ইনশাআল্লাহ। আজকে আপনি সেখান থেকে বেশ সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন পাশাপাশি তার বর্ণনা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে খুশি হলাম।

 last year 

ভাইয়া সময় করে একদিন চলে আসেন দেখবেন ভালো লাগবে।ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58447.11
ETH 2624.03
USDT 1.00
SBD 2.45