শুভ সকাল প্রাণপ্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবার❤️। সবাই বেশ ভালো আছেন নিশ্চয়। আজও আপনাদের সবার সুস্থ্যতা কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ❤️। চলছে বর্ষাকাল। চারদিকে চলছে ঘন বর্ষা। আর এই বর্ষার দিনে আমাদের কত জনের মনেই তো কতরকমের বাসনা জাগে। বর্ষার মেঘ যখন ঝর ঝর বৃ্ষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়ে পৃথিবীর বুকে তখন আমাদের মনে বয়ে চলে হাজারো রং এর বাহার। আমরা কেউ সুখে বাসায় ঘুমিয়ে থাকি। কেউ বা চায়ের কাপ হাতে জানালার পাশে দাড়িঁয়ে বর্ষা দেখি আর গুনগুন করে গান করি। কেউ বা বাসায় নানা রকমের বাহারী রান্না করায় ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আমাদের মনে বয়ে যেতে থাকে বর্ষার আনন্দ।

অথচ আমরা কিন্তু একটি বারের জন্যও ভেবে দেখি না সমাজের নিচু মানুষগুলোর কথা। যারা দিন আনে দিন খায় । এমন একটার বর্ষায় কি দূর্বিসহ জীবন যাপন করে তারা। সারাদিন বৃষ্টিতে ভিজে তারা তাদের দিনের খাবারের আয় যোগাড় করে। অথচ এই বৃষ্টির পানিতে ভিজেও তাদের কোন জ্বর আসে না। আজ সকালে যখন বৃষ্টির মধ্যে রিক্সায় চড়ে অফিসে আসি ঠিক তখনই এসব মানুষগুলো চলে আসে চোখের সামনে। আর তাই সেসব মানুষগুলোকে নিয়েই আমি আমার ফটোগ্রাফি সাজিয়েছি। আশা করি আপনাদেরও কিছুটা ভালো লাগবে💕।

খুব ভোরে ঘুম থেকেই উঠে দেখলাম যে বেশ বৃষ্টি হচেছ। তখন মনে হচ্ছিলো বৃষ্টি বুুঝি থামবে না। কি করে অফিসে যাবো আজ?। এই ভাবতে ভাবতেই অফিসের জন্য রওনা হলাম। বাহিরে এসে প্রকৃতির রূপ দেখে তো দিশেহারা হয়ে গেলাম। কি অপরূপ রূপে যে আজ প্রকৃতি সেজেছে তা আর বলতে। যারা আজ সকালে বাহির হয়নি তারা কিন্তু এমন সুন্দর প্রকৃতি কে মিস করলো। গাছের পাতাগুলোকে বর্ষার পানি তার ছোয়ায় দিয়েছে এক সতেজতা। তাই দেখছিলাম দাড়িয়ে কিছুটা সময়।

তো কিছুই যখন পাচ্ছিলাম না, তখন উঠে পড়লাম এক বৃদ্ধ রিক্সা চালকের রিক্সায়। খুব মায়া হচ্ছিলো রিক্সাচালক বৃদ্ধ আংকেলের জন্য। আমরা যখন বৃষ্টির জন্য অফিসে আসতে চাচ্ছিলাম না তখন এই বৃদ্ধ একজন মানুষ সংসারের মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটাতে নিজেকে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে রিক্সা চালাচ্ছে। কিন্তু তার মুখে কিন্তু হাসির কমতি নেই।কিছুদূর যাওয়ার পর মামা কে বললাম মামা একটু দাঁড়ান আপনার একটি ছবি তুলবো। সে কি হাসি তার মুখে। এর মধ্যে চোখে পড়লো আরও একজন বৃদ্ধ লোক দূর থেকে রিক্সা চালিয়ে আসছেন। যিনি এ বয়সেও পেটের দায়ে বের হয়েছে।অথচ তাদের নেই কোন রেইনকোট, আর নেই কোন ছাতা😂😂।

রাস্তায় তখনও তেমন কোন গাড়ী বা মানুষ বের হয় নি। কিছুদূর রিক্সায় যেয়ে চোখে পড়লো দুজন বয়স্ক মহিলা। তাদের একজন কাগজ টুকাচ্ছে তাও আবার বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে। আর অন্য জন বৃষ্টিতে ভিজে দারে দারে ভিক্ষা করছে। কি নিদারুন দৃশ্য বলেন তো। এগুলো দেখলে কি আর মনটা ভালো লাগে। অথচ এ সময়ে ধনীর ঘরের কত বৃদ্ধ মানুষই বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে😂😂।

রিক্সায় যেতে যেতে চোখে পড়লো জনশূণ্য রাস্তার ধারে দুটি কিশোর ছেলে দোকান খোলে বসে আছে পেটের দায়ে। অথচ সেখানে নেই কোন কাস্টমার আর নেই কোন জনগন। তবুও যদি কাস্টমার আসে সেই আশায় দোকান খোলে বসা। কিন্তু খোলা এই দোকানে কিন্তু বৃষ্টির হাত থেকে রেহায় পাওয়ার উপায় নেই।

এবার দেখেন তো এই ফটোগ্রাফিটি। পেটের দায়ে বৃদ্ধলোকটি কি করে মাথায় বোঝা নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে যাচ্ছে। আচ্ছা এই বৃদ্ধ মানুষটি যে এমন ভিজে ভিজে মাথায় বোঝা বইছে তার কি অসুস্থ্য হওয়ার ভয় নেই? তার কি কোন সন্তান নেই? তাদের কি উনার জন্য মায়া মমতা হয় না? আরও কত শত প্রশ্ন যে মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলো।

আহ্ পেটের কি দায়! একটি পেসেঞ্জারের জন্য তীর্থের কাকের মত দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে এরা। যদি পেটের কোন দায় না থাকতো। যদি তারা আপনার আমার মত মধ্যবৃত্ত বা উচ্চ বৃত্ত হতো। আর যদি তারা আমার মত সরকারি অফিসে চাকুরী করতো। তাহলে তো তাদের কে আর এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভেজা লাগতো না।

এসব খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কথা খুবই মনে পড়ছে। মনটা বেশ খারাপ লাগলো তাদের জন্য।খোঁজ করলে দেখা যাবে তাদের কারো কারো হয়তো স্বর্দি, কাশি আর জ্বর বেধেঁছে। কিন্তু এগুলো তাদের কাছে কিছুই নয়। তবুও তারা আবার আগামী কাল বের হয়ে যাবে প্রতিদিনের মত করে পেটের দায়ে😂😂।

আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে নতুন ভাবে আপনাদের কাছে। কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের ব্লগটি ? আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের আশায় রইলাম। সবাই ভালো থাকবেন এবং সাবধানে থাকবেন।