নাটক রিভিউ- শহর ছেড়ে পরানপুর ||Drama Review||

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

আসসালামু আলাইকুম

নাটক রিভিউ-শহর ছেড়ে পরানপুর

শুভ রাত্রি প্রাণপ্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবার❤️। সবার সুসাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ❤️। জীবনে যেমন অর্থের প্রয়োজন তেমনি করে প্রয়োজন বিনোদনেরও । বিনোদন ছাড়া জীবনটা কিন্তু ফ্যাকাসে লাগে। ব্যস্তময় এই জীবনে একটু সময় পেলে কিছুটা হলেও সেটা বিনোদেনের জন্য ব্যয় করা উচিত। আর জীবনে যদি বিনোদন না থাকে তাহলে তো জীবনটা নিরামিষ। কিন্তু নিরামিষ জীবন নিয়ে তো আর চলা যায় না, তাই না? তাই একটু তো বিনোদন করতেই হয়। আজ আমি আপনাদের জন্য কিছুটা বিনোদন শেয়ার করবো। আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে চাচ্ছি। চলুন তাহলে ঘুরে িআসি আমার নাটক রিভিউ তে।

Screenshot_10.png

প্রাপ্তি: YouTube

নাটকের কিছু তথ্য
নামশহর ছেড়ে পরানপুর
পরিচালকমিজানুর রহমান আরিয়ান
রচনাঅজ্ঞাত
অভিনয়নুসরাত ইমরোজ তিশা, ইয়াস রোহান, মাসুম বাশার, অপু সরকার এবং আরও অনেকে
দৈর্ঘ্য১ ঘন্টা ৮মিনিট ১৩ সেকেন্ড
মুক্তির তারিখজুলাই/২০২০
ধরননাটক
ভাষাবাংলা
দেশবাংলাদেশ
প্রচারইউটিউব
চরিত্র

★ নুসরাত ইমরোজ তিশা- টুসি
★ইয়াস রোহান- রোম্মান
★তাসরিন ফারিন-মেম্বারের মেয়ে

কাহিনী সংক্ষেপ

টুসি রোম্মান কে অনেক বকাঝকা করে। কারন রোম্মান টুসিকে ভালোবাসে এবং রোম্মান টুসির ক্লাসের সামনে যেয়ে দাড়িয়ে থাকে। টুসিকে অনেক বিরক্ত ও করে। যদিও তারা বন্ধু। এখানে বলে রাখা দরকার যে টুসি রোম্মানের চেয়ে দুই বছরের সিনিয়র। তো সে যাই হোক টুসির কাছে এত বকাঝকা খেয়ে রোম্মান বেশ ভেঙ্গে পড়ে। এদিকে টুসির পরিবার থেকে টুসির বিয়ে ঠিক করে ফেলে। ছেলে অস্ট্রেলিয়ার সিটিজেন শীপ। আর এ বিয়েতে টুসির ও ইচ্ছে আছে’। তাই রোম্মান সিদ্ধান্ত নেয় যে সে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাবে। এদিকে রোম্মানের সাথে খারাপ ব্যবহার করার পর টুসিরও খারাপ লাগতে শুরু করে। কারন টুসিও রোম্মান কে ভালোবেসে ফেলে। এজন্য সে রোম্মান কে খোঁজ করতে লাগে। কিন্তু রোম্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা ছেড়ে দেয়। অনেক কষ্ট করে রোম্মান কে খোজেঁ পায় টুসি। তারপর সে রোম্মান কে তার ভালোবাসার কথা জানায়। এদিকে যেহেতু টুসির বাবা টুসির বিয়ে ঠিক করেছে তাই টুসি তার বাবা কে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে সে এ বিয়ে করতে পারবে না।টুসির বাবা টুসির এ ধরনের কথা শুনে টুসিকে বকাবকি করে। এ পর্যায়ে সে রোম্মানের পরিচয় জানতে পেরে টুসি কে আরও বকাবকি করে এবং বলে রোম্মান কে বিয়ে করলে সে টুসিকে মেয়ে হিসাবে স্বীকার করবে না।

Screenshot_5.png

Screenshot_1.png

এদিকে টুসি আর রোম্মন কাজি অফিসে যেয়ে বিয়ে করে ফেলে। কিন্তু বিয়ের পর দুজনের পরিবারের কেউ মেনে না নেওয়ায় তারা রাস্তায় হাটতে থাকে। এমন সময় তাদের এক বন্ধু মিথ্যে পরিচয় দিয়ে তার বাসায় নিয়ে গেলেও বন্ধুর মা রাতে টুসি ও রোম্মান কে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে। তাই পরদিন তিনি তাদের কে বাড়ি হতে বের করে দেন। কিন্তু টুসি আর রোম্মান কোথায় যাবে তাদের কাছে তো আর কোন টাকা পয়সা নেই। যা আছে তা দিয়ে তো বাড়ি ভাড়া করে থাকা যাবে না। তাই ‍টুসি তার পরনের গহনা গুলি বিক্রি করে দেয়। যদিও রোম্মানের সেটা পছন্দ হয়নি। তারপর তারা সিদ্ধান্ত নেয় তারা শহর ছেড়ে গ্রামের চলে যাবে। আর অনলাইনে খোঁজ করে তারা পরাণপুর নামের এক গ্রামে চলে যায়। সেখানে যেয়ে ছোট একটি বাসা ভাড়া করে। এভাবে হাসি আর আনন্দে তাদের সময় পাড় হতে লাগে। একসময়ে টুসি মা হতে চলে। কিন্তু এদিকে তাদের কাছে যে জমানো টাকা ছিল সেটাও প্রায় শেষের দিকে। এসব নিয়ে রোম্মান বেশ চিন্তায় পড়ে যায়। গ্রামের চায়ের দোকানে চা খেতে গেলে হঠাৎ রোম্মান শুনতে পায় গ্রামের মেম্বারের মেয়ের জন্য একজন ভালো শিক্ষিত শিক্ষক লাগবে। তাই সে পরদিন খোজঁ নিয়ে সেই মেম্বরের বাড়িতে যায় এবং মেম্বারের মেয়ে কে পড়ানোর ফাইনাল করে ফেলে। এভাবেই যাচিছল দিন।

Screenshot_3.png
Screenshot_4.png

এক সময়ে মেম্বারের মেয়ে রোম্মানের উপর দূর্বল হয়ে পড়ে। আর রোম্মানও তাকে তার বিয়ের কথা বলতে পারে না। দিনে দিনে রোম্মানও যেন কেমন হয়ে যায়। এখন আর রোম্মানের কাছে টুসির রান্না ভালো লাগে না। টুসি কে সময় দেওয়ার মত সময় রোম্মানের নেই। রোম্মান যেন দিনের পর দিন কেমন হয়ে যাচেছ। রোম্মান এখন মেম্বারের মেয়ে কে নিয়ে বাহিরে ঘুরে। মেম্বারের মেয়ের প্রতি যেন তার দূর্বলতা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। একদিন রোম্মান বাসায় আসলে ভুলে তার মোবাইলটি টেবিলে রেখে হাতমুখ ধুতে যায়। তখন তার মোবাইলে মেম্বরের মেয়ের একটি ম্যাসেজ আসে। যেটা টুসি দেখে ফেলে। কিন্তু টুসি রোম্মান কে এ বিষয়ে একটি কথাও বলে না। রোম্মানের এমন আচরণে টুসি দিনের পর দিন অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এদিকে রোম্মান যেন আরও ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সে শুধু মেম্বারের মেয়ের কাছেই ছুটে যায়।

Screenshot_7.png

Screenshot_8.png

একদিন টুসির ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা। ‍টুসি রোম্মানকে বলে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। কিন্তু রোম্মানের সময় নেই। সে টুসিকে বলে পাশের বাড়ির খালাকে নিয়ে যেতে। টুসি তাও রোম্মান কে কিছু বলে না । হাসি মুখে সব মেনে নেয়। তবে রোম্মান চলে যাওয়ার সময় তাকে কাছে ডাকে টুসি। কিন্তু ‍টুসি রোম্মান কে কিছু বলে না। শুধু রোম্মানের মুখে দিকে তাকিয়ে হাসে আর বলে সাবধানে যেও। কিন্তু তবুও রোম্মান টুসিকে বুঝতে পারে না। সে দৌড়ে চলে যায় মেম্বারের মেয়ের কাছে। এদিকে টুসি তার মায়ের কাছে ফোন করে এবাং রোম্মানের বিষয়ে বলে যে রোম্মান তার অনেক টেক কেয়ার করে এবং মা কে কথা দেয় সে রোম্মান কে নিয়ে তাদের বাড়িতে যাবে।

Screenshot_9.png

Screenshot_10.png

এদিকে রোম্মান মেম্বারের মেয়ের কাছে আসলে মেম্বারের মেয়ের মন খারাপ থাকে। তখন রোম্মান তাকে কারন জিজ্ঞেস করলে সে বলে, সে একটি সিনেমা দেখেছে। যেখানে একটি মেয়ে একটি ছেলে কে অনেক ভালোবেসে। তাদের রিলেশনশীপ ভালোই যাচিছল। হঠাৎ তাদের মাঝে একটি মেয়ে চলে আসে। তখন ছেলেটি সেই মেয়েটিকে ভুলে নতুন মেয়েটিকে ভালোবাসে। আসলে কেউ যদি কাউকে ভালোবাসে তাহলে তাকে ফেলে আসতে হয় না। আর যদি ফেলে আসে তাহলে সে ভালোবাসতেই জানেনা। একবার ভালোবাসা পেলে তা হারাতে হয় না। এসব কথা শুনে রোম্মানের মন অনেক খারাপ হয়ে যায়। সে সেখান থেকে দ্রুত বের হয়ে যায়। এবার রোম্মান একটি খালি জায়গায় বসে টুসির কথা ভাবতে থাকে। ভাবতে থাকে টুসি তার জন্য কি করেছে। এক সময় রোম্মান তার ভুল বুঝতে পেরে মেম্বরের মেয়ের কাছে ছুটে যায়। তাকে সব খুলে বলে যে সে বিবাহিত। তার স্ত্রী আছে। এমনকি এটাও বলে যে সে তাকে একথা বহুবার বলতে চেয়েছে। কিন্তু পারেনি। কিন্তু এখন আর তার পক্ষে এ সম্পর্ক কনটিনিউ করা সম্ভব নয়। তারপর মেম্বরের মেয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে রোম্মান ‍টুসির কাছে ছুটে যায়।

Screenshot_11.png

Screenshot_12.png

Screenshot_13.png

টুসি কে রোম্মান অনেকবার ফোন করে। কিন্তু টুসির মোবাইল বন্ধ পায়। এদিকে রোম্মান দৌড়ে বাড়িতে এসে দেখে টুসি বাড়িতে নেই। তাই সে পাশের বাড়ির খালার কাছে যায়। উনে বলেন টুসির পেইন উঠলে তার ছেলে আর ছেলের বউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। তখন রোম্মান দৌড়ে হাসপাতালে যায়। হাসপাতলে যেয়ে সে ‍টুসি কে অনেক খোঁজাখুজি করে। কিন্তু কিছুতে পায় না। হঠাৎ রোম্মান টুসির হাত দেখতে পায় তাও একটি ট্রলির মধ্যে সাদা কাপড়ে ঢাকা। রোম্মান কাছে যেয়ে কাপড় তুলে দেখে টুসি। কিন্তু ততক্ষনে টুসি আর তার সন্তান কেউ আর বেচেঁ নেই। তখন রোম্মান হাউমাউ করে কাঁদে। এদিকে ডাক্তার এসে রোম্মান কে বলে হাসপাতালে আনতে দেড়ি হয়েগিয়েছিল তাই আরা মা আর সন্তান কাউকেই বাচাঁতে পারিনি। তখন রোম্মান শুধু কাদেঁ আর টুসির অবদান গুলো মনে করে। আর এর মধ্য দিয়েই শেষ হয়ে যায় নাটকটি।

Screenshot_15.png
Screenshot_16.png

Screenshot_17.png

image.png

❤️ব্যক্তিগত মতামত❤️

নাটকটির মধ্যে পরিচালক কয়েকটি ম্যাসেজ পৌছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বাবা মায়ের কথার অবাধ্য হতে নেই। আর আবেজ্ঞের মোহে কোন সিদ্ধান্তই নিতে হয় না। এতে করে পরবর্তীতে সমস্যার সৃষ্টি হয়। আজ যদি মেম্বরের মেয়ে সিনেমার কাহিনী বলে রোম্মানের ভুল না ভাঙ্গাতো তাহলে কি রোম্মান ফিরে আসতো? আসলে ছেলেরা এমনই হয়। যে নারী তার জন্য নিজের সমস্ত সুখ ত্যাগ করলো আজ আর একজন নারীর মোহে পড়ে কি করে ভুলে যেতে পারলো টুসি কে। তাহলে এটা কি ভালোবাসা ছিল নাকি আবেগ। আমার তো তো মনে হয় এখানে ভালোবাসা নয় বরং আবেগটাই কাজ করেছে। যদিও শেষ পর্যন্ত রোম্মান তার ভুল বুঝতে পেরেছে। কিন্তু ততক্ষনে একজন টুসি পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছে। বিদায় নিয়েছে তার স্বপ্ন।তবে নাটকটির গানটিও কিন্তু অসাধারন ছিল।

❤️ব্যক্তিগত রেটিং❤️

১০/১০

❤️নাটকটির লিংক❤️

image.png

Add a heading (1).png

image.png

image.png

Sort:  
 last year 

নাটকটির গল্পটা আমার কাছে অনেকটা বাস্তবধর্মী মনে হয়েছে। আসলে এধরনের ঘটনা বর্তমান সময়ে ঘটে চলেছে। তবে অভাগা মেয়েটার জন্য ভীষণ খারাপ লাগলো। যাক এখানে শিক্ষনীয় কিছু বিষয় রয়েছে। চমৎকার নাটকটি রিভিউ করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

জি ভাইয়া নাটকটির মধ্যে শিক্ষনীয় অনেক বিষয় রয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

শহর থেকে পরানপুর নাটক টার রিভিউ পড়ে খুব ভালো লেগেছে তো আমার কাছে। মেম্বারের মেয়ে যদি সিনেমার কথা না বলতে তাহলে রোম্মান মনে হয় কখনোই তার নিজের ভুল বুঝতে পারত না। সিনেমার কথা বলার কারণেই রোম্মান নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিল। কিন্তু ততক্ষণে তো টুসি সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল সেই সাথে তার সন্তান। এই নাটকটা এখনো আমার দেখা হয়নি তাই ভাবছি নাটকটা দেখে নেব।

 last year 

আপু তাড়াতাড়ি দেখে নেন। বেশ ভালো নাটকটি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আমি নাটক দেখতে যেমন পছন্দ করি তেমনি নাটকের রিভিউ পড়তেও ভালোবাসি। রোম্মান যদি সঠিক সময় আসতো তাহলে টুসি এবং তার মেয়ে অবশ্যই বেঁচে থাকতো বলে আমি মনে করি। টুসির মৃত্যু দেখে আমার কাছে তো খুবই খারাপ লেগেছে। এই নাটকটার মধ্যে কিন্তু আমরা অনেক শিক্ষা অর্জন করতে পারব। খুব সুন্দর হয়েছে অবশ্যই নাটকটা দেখব আমি।

 last year 

জি নাটকটি দেখে অনেক কিছুই শিক্ষার আছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

এই নাটকটি আমি দেখেছিলাম কয়েকমাস আগে।নাটকটি থেকে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে।মেয়েটি নিজের চেয়ে ছোট বয়সের ছেলের সাথে বিয়ে করার শেষ পরিণতি মৃত্যু হলো।পরিবারের থেকে দূরে গিয়ে ঠিকঠাক চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেল মেয়েটি।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আসলেই এটি একটি শিক্ষনীয় নাটক। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

অনেক সুন্দর একটি নাটক আজ আপনি আমাদের মাঝে রিভিউ করে দেখিয়েছেন আপু। আপনার এই অসাধারণ নাটক টা আমার বেশ ভালো লেগেছে। আর এ নাটকের মধ্যে রয়েছে অনেক সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি। বর্তমান সময়ের বাস্তবতা। হয়তো এভাবে আবেগে পড়ে অনেকের প্রাণ ঝরে যাচ্ছে দুনিয়ার বুক থেকে। যেগুলো কখনোই প্রেম ভালোবাসা নয় সেগুলো শুধুমাত্র আবেগ আর মিথ্যা ছলনার ফাঁদে পড়া।

 last year 

খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন তো ভাইয়া । ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.031
BTC 81815.05
ETH 3185.92
USDT 1.00
SBD 2.79