বিয়েবাড়ির স্বাদে মজাদার রোস্ট রেসিপি
আসসালামু আলাইকুম
আজ রোববার, ১লা জানুয়ারী ২০২৩ ইং
বাংলা ১৬ই পৌষ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
শীত যেন চারদিকে ঝেঁকে বসেছে। সত্যি বলতে শীতের দিনে একটু আধটু শীত না পড়লেও শীত শীত লাগে না। আর এই শীতের সময়েই পড়ে যায় চারদিকে বিভিন্ন ধরনের উৎসব আর আমেজের মেলা। সেসব অনুষ্ঠানে পোলাও, মাংস, রোস্ট আরও কত কি রান্না হয় তা কি আর বলতে। তবে এ সময়ে বিয়ের ধুম পড়ে চারদিকে। আর সে সব অনুষ্ঠানে মুরগীর রোস্ট ছাড়া যেন বেমানান। আর সেই রোস্টের স্বাদ যদি হয় মুখে লেগে লাগার মত, তাহলে তো আর কথাই নাই।
কিছুদিন আগে আমি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানের মুরগীর রোস্ট রেসিপিটি আমার বেশ ভাল লেগেছে। তাই বেশ কিছুদিন যাবৎ ভাবছি আমার দেখা সেই বিয়েবাড়ীর মুরগীর রোস্ট এর রেসিপিটি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আর সুযোগও পেয়ে গেলাম বাসায় মেহমান আসায়। রান্না থেকে কয়েকদিনের জন্য মুক্তি পেলেও রোস্ট আমাকে রান্না করতে হয় সবার ইচ্ছায়।
বিয়েবাড়ির স্বাদে মজাদার রোস্ট রেসিপি
ক্রমিক | বিবরন | পরিমান |
---|---|---|
১ | দেশী মুরগী | বড় ০২টি |
২ | তেল | পরিমানমত |
৩ | কাঁচা মরিচ | ৭/৮টি |
৪ | পেঁয়াজ কুচি | ২৫০গ্রাম |
৫ | হলুদ গুড়া | ১ চামচ |
৬ | মরিচ গুড়া | ১ চামচ |
৭ | রোস্টের মসল্লা | ১০০গ্রাম |
৮ | আদা রসুন বাটা | ২ চামচ |
৯ | দারচিনি | ৩/৪টি |
১০ | লবঙ্গ | ৩/৪ টি |
১১ | এলাচ | ৩/৪ চামচ |
১২ | লবন | পরিমানমত |
১৩ | তেজপাতা | ২/৩টি |
১৪ | লিকুয়েড দুধ | ১গ্লাস |
১৫ | টকদেই | ২/৩চামচ |
১৬ | পেঁয়াজ বাটা | ১০০ গ্রাম |
১৭ | গোলাপ জল ও কেওড়া জল | ১০০ গ্রাম |
ধাপ-১
প্রথমে মুরগীগুলোকে রোস্টের পিস করে কেটে ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর ধুয়ে রাখা মুরগীর মধ্যে টাকদই ও সামান্য লবন দিয়ে মেরিনেট করে রাখতে হবে। এবার রোস্টের জন্য প্রয়োজনীয় সকল মসল্লা ও উপকরন গুলোকে হাতের কাছে সাজিয়ে রাখতে হবে।
ধাপ-২
এবার চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে তাতে পরিমান মত তেল দিয়ে, তেল টা গরম করে নিতে হবে। তারপর গরম করে রাখা তেলের ভিতরে কেটে রাখা পেঁয়াজ কুচিঁ গুলোর মধ্য হতে অর্ধেক পেঁয়াজ কুচি সামান্য লবন দিয়ে ভাল করে লাল লাল করে ভেজে নিতে হবে।
ধাপ-৩
এবার লাল লাল করে ভাজা পেঁয়াজগুলো কে বেরেস্তা ভেজে নিয়ে আলাদা একটি পাত্রে তুলে নিতে হবে।
ধাপ-৪
এবার বেরেস্তা ভাজা সেই একই তেলের মধ্যে আর একটু তেল দিয়ে তাতে মেরিনেট করে রাখা মুরগীর রোস্টের পিসগুলোকে উলটিয়ে পালটিয়ে ভেজে নিতে হবে। তারপর ভেজে নেওয়া রোস্টের পিসগুলো কে আলাদা একটি পাত্রে তুলে নিতে হবে।
ধাপ-৫
এবার মুরগীর পিস ভাজা সেই পাত্রের মধ্যে কুচি করে রাখা সেই পেঁয়াজ কুচির বাকী অংশ আরও সামান্য তেল দিয়ে ভাল করে লাল লাল করে ভেজে নিতে হবে।
ধাপ-৬
এবার লাল লাল করে ভেজে রাখা পেঁয়াজ কুচির মধ্যে পেঁয়াজ বাটা, রোস্টের মসল্লা, হলুদ গুড়া এবং মরিচ গুড়ো দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিতে হবে।
ধাপ-৭
এবার কষানো সেই মসল্লার মধ্যে মেরিনেট করা সেই দই গুলো দিয়ে একটু নেড়ে চেড়ে দিতে হবে। তার কিছুক্ষন পর দারচিনি, লং, এলাচ আর তেজপাতা দিয়ে ভাল করে নেড়ে দিতে হবে।।
ধাপ-৮
এবার কষানো সেই মসল্লার মধ্যে আগে থেকে ভেজে রাখা মুরগীর পিসগুলো দিয়ে ভাল করে নেড়ে চেড়ে মসল্লার সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। তারপর মুরগীর পিসগুরো সেদ্ধ হওয়ার জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। তবে এরমধ্যে ঢাকনা তুলে কিছুক্ষন পর পর মুরগীর পিসগুলো উলটিয়ে পালটিয়ে দিতে হবে।
ধাপ-৯
মুরগীর পিসগুলো সেদ্ধ হয়ে আসলে তাতে আগে থেকে রেডি করা লিকুইড দুধ আর কাচাঁ মরিচ দিয়ে ভালবাবে নেড়ে আবারও ঢেকে দিতে হবে।
শেষ ধাপ
বেশ কিছুক্ষন পর ঢাকনা তুলে যখন তরকারির ঝোল শুকিয়ে আসবে তখন গোলাপজল আর কেওড়া জল দিয়ে কিছুকক্ষন অপেক্ষা করে পরিবেশন করার পাত্রে নামিয়ে নিতে হবে।
তো তৈরি হয়ে গেল আমার আজকের বিয়েবাড়ির স্বাদে রান্না করা মুরগীর রোস্টের রেসিপি।আর আজকের রেসিপিটি করার সময় আপনাদের জন্য ইউনিক এই রেসিপিটির প্রতিটি ধাপের ছবি তুলে নিয়েছি। যাতে করে আপনারাও বাসায় রান্না করতে পারেন, মজাদার বিয়ে বাড়ির স্বাদের মুরগীর রোস্টের রেসিপি। |
---|
ডিভাইস ও মডেল | Oppo A16 |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @maksudakawsar |
কেমন লাগলো আমার আজকের রেসিপি? জানাতে ভুলবেন না যেন। |
---|
আমার ইমোশন😀
এভাবে শুধু পোস্টেই দেখি,কেউ একটা পিছ দেয়না🙂।
দারুণ ছিল আপনার উপস্থাপনা।ছবি দেখে লোভ সামলাতে পারছিনা।শুভ কামনা রইলো।
বাসায় আসেন একটে কেন দশটা রেধেঁ দিব।
ঠিক বলেছেন আপনি শীতকাল মানেই চারিদিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মেলা। বিয়ে বাড়িতে দেখা সেই রেসিপি আপনি বাসায় তৈরি করলেন। নিশ্চয়ই খেতে বেশ ভালো লেগেছিল। এমনিতে মুরগির রোস্ট আমার ভীষণ পছন্দের।
হ্যাঁ খেতে বেশ মজা লেগেছিল।
হ্যাপি নিউ ইয়ার আপু। দারুন সময়ে পোস্ট দিয়েছেন।আমাদের পিকনিকে রোস্ট বানানো হবে,আর আজ আপনার রেসিপি দিয়ে বানাবো।আশা করি দুর্দান্ত হবে খেতে কারন দেখতে দারুন লাগছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর রোস্টের রেসিপি গুলো শেয়ার করার জন্য।
হা হাহা. আমাকে কিন্তু একটি পিস দিতে হবে।
প্রথম দিকে রোস্ট আমি খুব একটা খেতে পছন্দ করতাম না কিন্তু বিয়ের পরে রোস্ট যেন প্রতিদিনের খাবার হয়ে গেছে। এখন খাবারে রোস্ট পেলে আর অন্য কোন খাওয়া খেতে ইচ্ছে করে না। আপনা তৈরিকৃত রোস্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে রোজটি অনেক সুস্বাদু হয়েছে এবং অনেক লোভনীয় দেখাচ্ছে। তবে আমরা রোস্ট তৈরি করলে গোলাপ জলটি ব্যবহার করিনা। আপনি খুব সুন্দর ভাবে ধাপে ধাপে দেখেছেন রোজ তৈরি করার প্রক্রিয়াটি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। তবে আপনার বানান কিছু ভুল আছে। আশা করি সংশোধন করে নিবেন।
আপনি বিয়ে বাড়ি থেকে মুরগির রোস্ট খেয়ে এসে সেটার স্বাদ ভুলতে না পেরে।বাসায় নিজেই মুরগির রোস্ট তৈরি করেছেন। জেনে ভালো লাগলো। আপনি রোস্ট রান্নার দারুন একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। দেখে মনে হচ্ছে খেতেও বেশ সুস্বাদু হয়েছিল। ধন্যবাদ আপনাকে এই সুন্দর বিয়ে বাড়ির স্বাদে রোস্ট রান্নার রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য।
সত্যিই ভুলতে পারিনি ভাইয়া।
আসলে এই সপ্তাহ জুড়েই প্রচন্ড শীত পড়ছে। সকাল দশটা পর্যন্ত কুয়াশায় একদম অন্ধকার হয়ে থাকে। আপনি বিয়ে বাড়ি থেকে মুরগির রোস্ট খেয়ে সেটার স্বাদ ভুলতে পারছেন না আর তাই বাসায় নিজেই মুরগির রোস্ট তৈরি করেছেন। আপনার তৈরি মুরগির রোস্ট অনেক লোভনীয় লাগছে আপু। পর্যায়ক্রমে প্রতিটা ধাপ তুলে ধরে কিভাবে এমন মজাদার রেসিপি তৈরি করতে হয় সেটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাইয়া প্রচুর শীত পড়েছে বোঝাই যাচ্ছে ।
মুরগির রোস্ট দেখে তো জিভে জল চলে এসেছে আপু। রোস্ট আমার খুবই পছন্দের একটি খাবার। বিশেষ করে রোস্টের ঝোল আমার কাছে অনেক ভালো লাগে খেতে। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। সুস্বাদু রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আরে কি বলেন, আমার পেটে ব্যথা করবে তো।
বাসায় মেহমান আসাতে সেই সুযোগে মজাদার একটি রেসিপি তৈরি করে ফেলেছেন দেখে ভালো লাগলো। আমাকে একটু দাওয়াত দিলেই হত। খেয়ে দেখতাম কেমন হয়েছে খেতে🤭। তবে মনে তো হচ্ছে রোস্ট খেতে একেবারে পারফেক্ট হয়েছে। আপু আপনি সত্যিই একজন সেরা রাঁধুনী। আপনার রন্ধন প্রণালী দেখলেই বোঝা যায় আপনি দারুন রাঁধুনী। অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো আপু।
দাওয়াত তো করতেই চেয়েছিলাম। কিন্তু আপনার ফোন তো বন্ধ ছিল।
ডিসেম্বরের শেষের দিকে বিয়ের ধুম একটু বেশি পড়ে। কারণ এই সময় মোটামুটি সবার ছুটি থাকে। আপনি বিয়ে বাড়ির স্টাইলে রোস্ট রান্না করেছেন। দেখতে খুবই চমৎকার হয়েছে। খেতেও নিশ্চয়ই মজা হয়েছে। সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এইরকম একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।