জেনারেল রাইটিং- অতি সন্ন্যাসীতে গাজর নষ্ট ||written by@maksudakar ||
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই? আশা করি বেশ ভালো আছেন। আমিও আছি আলহামদুলিল্লাহ্ বেশ ভালো। আমি @maksudakawsar, বাংলাদেশের ঢাকা হতে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আমার লেখার যাদু দিয়ে কমিউনিটির বন্ধুদের কে মুগ্ধ করার জন্য। হয়তো বা আমি আপনাদের মত এত ভালো করে লিখতে পারি না। পারি না আমার মনের ভাষা গুলো কে আপনাদের সামনে সঠিক ভাবে লিখার যাদুতে উপস্থাপন করতে। তবুও চেষ্টা করি। তাই তো আজও আবার চলে আসলাম আপনাদের সামনে আরও একটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে। আশা করি আমার আজকের জেনারেল রাইটিংটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।
মানুষের জীবনে অনেক ভুল থাকে। থাকে অনেক না বলা অনুভূতি। আর সেই সকল ভুল নিয়েই মানুষ এগিয়ে চলে দিনের পর দিন। আশায় থাকে, হয়তো চলার পথে কোন এক সময়ে শুধরাতে পারে সেই সকল ভুল গুলো। আবার হয়তো ভুল গুলো ভুল হিসাবেই থেকে যায়। জীবন চলার পথে দুঃখ বেদনা হতাশা আর না পাওয়ার হাজারও গ্লানি থাকবে। সেই সকল গ্লানি গুলো কে মনের শক্তি দিয়ে অতিবাহিত করতে পারলেই জীবনে আসবে স্বার্থকতা আর সাফল্য। না না আমি আজ এমন কোন বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে কিছু শেয়ার করতে আসিনি। আজ তো এলাম সতর্কতা মূলক কিছু কথা জেনারেল রাইটিং হিসাবে উপহার দেব বলে আপনাদের কে।
CANVA দিয়ে তৈরি
সুস্থতা হলো সবচেয়ে বড় নেয়ামত। একজন অসুস্থ মানুষই বুঝে সুস্থতার কোনটা কদর। অসুস্থ দেহের যন্ত্রণা কেবল অসুস্থ মানুষ ছাড়া আর কেউ ভালো করে বুঝতে পারে না। আর তাই তো একজন অসুস্থ মানুষ হয়ে পড়ে দিশেহারা। নিজেকে সুস্থ করতে ছুটে যায় চিকিৎসকের কাছে। যদি চিকিৎসকের দেওয়া ঔষধে সে অসুস্থতা হতে সেরে উঠে সেই আশায় ছুটে যায় চিকিৎসকের কাছে। কিন্তু সত্যি বলতে কি সব চিকিৎসকের ঔষধে কি আর অসুস্থ মানুষ সুস্থ হয়? কেউ হয়তো বা সুস্থ হয়, আবার কেউ বা হয় না। আমরা লক্ষ্য করলে দেখবো যে আমাদের চারপাশে অনেক সময় অনেক মানুষ ভুল চিকিৎসার স্বীকার হয়ে ঢোলে পড়ে মৃত্যুর কোলে। কারন তারা তো বুঝতে পারে না কোন ঔষধের কি রিয়াকশন।
এই তো সম্প্রতি আমার সাথেও ঘটে গেল তেমন একটি ঘটনা। আমি কিন্তু ছেলেবেলা থেকেই কথায় কথায় ঔষধ খেতে একদম নারাজ। এমন কি প্রচন্ড জ্বর হলেও ঔষধ আমাকে ছুঁতে পারতো না। আমি সব সময় ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক উপায়ে সুস্থ হওয়ার উপায় খুজেঁ ফিরি। কিন্তু সেই আমার এবার যে কি হলো সেটাই বুঝতে পারলাম না। হয়তো অতি সন্ন্যাসীর সংস্পর্শে থাকতে থাকতে নিজের একটু সন্ন্যাসী হওয়ার ইচেছ জেগেছিল। হি হিহি। তাই তো এবার খেলাম ভুরি ভুরি ঔষধ। আর নিজেকে সঁপে দিয়েছিলাম ঔষধের কাছে। তাও আবার যেমন তেমন নয়। ঔষধের বাপ এন্টিবায়োটিক। হি হি হি। ঐ যে বলে না ধরবি তো ধর, বড় দেখেই ধর। তাহলে আমি কেন ছোট ধরবো?
গত কিছুদিন আগে আমার যখন হাত পুড়ে গেল তখন অফিস কলিগ সবাই বলল যে ডাক্তার দেখাতে। অবশ্য ছেলেবেলায় মাকে দেখেছি যে পোড়া ঘাঁয়ে মলম আর নারিকেল তেল লাগাতে। আমিও চেয়েছিলাম তাই করবো। কিন্তু অফিস কলিগদের জোড়াজুড়িতে গেলাম ডাক্তার দেখাতে। ডাক্তার সাহেব আমার হাত দেখে সাথে সাথে দিলেন এন্টিবায়োটিক। এন্টিবায়োটিক শুরু করলাম। দু একদিন পর হাতের চামড়া যখন উঠে গেল তখন হাতের অবস্থা আরও ভয়ানক দেখালো। তখন দৌঁড়ে গেলাম আবার ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার দিলো হাতে ব্যান্ডেস করে। আর এন্টিবায়োটিক পরিবর্তন করে দিলো। ওমা হাতে ব্যান্ডেস দেখে আশে পাশের সবাই বলে ব্যান্ডেস থাকলে তো পোড়া ঘাঁ শুকায় না। ঠিক তাই। দুদিন পরে আবার গেলাম ডাক্তার সাহেবের কাছে। উনি যখন দেখলেন ঘাঁ শুকালো না। তখন আবার দিলেন এন্টিবায়োটিক চেয়েঞ্জ করে।
কিন্তু আমার ঘাঁ আর শুকালো না। এবার আমি নিজেই ব্যান্ডেস খুলে প্রতিদিন নিজের মত করে পোড়া ঘাঁয়ের পরিচর্যা শুরু করলাম। প্রতিদিন নিয়ম করে ওয়াস করা। হাতে মলম লাগানো। এতে করে দু তিনদিনের মধ্যেই ঘাঁ শুকিয়ে গেল। তখন যখন ডাক্তার সাহেবের কাছে গেলাম তিনি আমার শুকনো পোড়া ঘাঁ দেখে বেশ খুশি হলেন এবং আমার এন্টিবায়োটিক বন্ধ করে দিলেন। ওমা এন্টিবায়োটিক বন্ধ হওয়ার দু দিন পর আমার তো শরীরে জ্বর আর সেই সাথে ঘন প্রসাব হতে লাগলো। আমি তো বুঝেই গেলাম আমার ইউটিআই হয়ে গেছে। মানে ইউরিন ইনফেকশন। খুব বেশী করে পানি খাওয়া শুরু করে দিলাম। যার ফলে সেদিন রাতেই জ্বর কমে গেল।
কিন্তু তাতে কি, পরদিন সকাল থেকে শুরু হলো পেট, কোমর আর কোমরের নীচের অংশ ব্যাথা। এমন তীব্র ব্যাথা যে এক সময় পরিচিত একজন ডাক্তার বলল যে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। ওমা আরও ভয় পেয়ে গেলাম। খুব কষ্ট করে রাতে ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তারের দেওয়া এন্টিবায়োটিক ছাড়া বাকী একটি ঔষধের মধ্যে একটি ঔষধ খাওয়া শুরু করলাম। এর মধ্যে পরিচিত সব ডাক্তার ফোন করে আমার খোঁজ নিলো। তারা সবাই আমাকে ইউরিন কালচার পরীক্ষা করে এন্টেবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দিলো। সবার সাথে ঠিক আছে, ঠিক আছে বলে সময় পার করলাম। কিন্তু আমার মনে হলো এই সময়ে কালচার করলে কোন সঠিক রিপোর্ট পাওয়া যাবে না। কারন এন্টিবায়োটিকের এ্যাকষন এখনও আছে দেহে।
যাই হোক খুব কষ্ট গেল কয়দিন। পরবর্তীতে মনে পড়লো যে, আমার তো নিজের পরিচিত একজন ডাক্তার আছে। যার কাছে গেলে অসুখ যেন কোথায় পালায়। না সে কোন বড় ডাক্তার না। তিনি হলে একজন জেনারেল প্যাকটিশিয়ান। তার কাছে গেলে তিনি সব ঘটনা শুনে বললেন যে, সত্যি কারের অর্থে এন্টিবায়োটিক খাওয়ার ফলে আমার শরীরের সব ভালো ব্যাকটিরিয়া গুলো মরে গিয়ে খারাপ ব্যাক্টেরিয়া গুলো জীবিত হয়ে গেছে। যার কারনে আমার এই অবস্থা। অবশেষে উনি একই টেষ্ট দুটো ল্যাব থেকে করতে বললেন এবং উনাকে দেখাতে বললেন। গতকাল সেই টেস্টের রিপোর্ট উনাকে দেখালে উনি বললেন রিপোর্ট সব ভালো আছে। কোন এন্টিবায়োটিক লাগবে না। তার এমন কথা শুনে আমি নিজেও একশত ভাগ ফুরফরা হয়ে গেলাম।
শেষ কথা
শেষ কথা
সত্যি বলতে আমাদের জীবনে এমন কিছু সময় আসে যখন কিছু ভুল সিদ্ধান্তের জন্যই আমাদের কে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এমন কি জীবনের হুমকিও চলে আসে। তাই নিজেদের ভালোর জন্য আমাদের সবারই সর্তক থাকা উচিত। অতি সন্ন্যাসীর হাতে পড়ে জীবন তছনছ করা থেকে আমাদের কে সাবধানে থাকতে হবে।
ধন্যবাদ সকলকে
@maksudakawsar
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Tweet
হ্যাঁ আপু দেখলাম তো আপনি বেশ কিছুদিন ভোগলেন। আশা করি এর পর হতে ঔষধ খাওয়ার বিষয়ে সাবধান হবেন। আসলে কথায় কথায় ঔষধ খাওয়াটাই একটি বদ অভ্যাস। আমাদের সকলের সেই বদ অভ্যাস হতে বের হয়ে আসা উচিত। ধন্যবাদ সুন্দর এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
একদম বাস্তব কথাগুলো লিখেছেন আপনি। কথায় কথায় ওষুধ খাওয়া একটা বদ অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। আমি তো কথায় কথায় নাপা এক্সটা না খেলেই না ,আর এমন একটা বদ অভ্যাস হয়ে গেছে, একটু হাত পা ব্যথা বা একটু জ্বর যাই হোক না কেন নাপা এক্সট্রা না খেলেই না। কিন্তু এটা বুঝতে চায় না এর পরবর্তী প্রক্রিয়া যে কত কঠিন হতে পারে। আপনি ঠিক বলেছেন আপু এই ধরনের বদঅভ্যাস থেকে বের হয়ে না আসলে পরবর্তীতে জটিল সমস্যা ধারণা হতে পারে। এমন একটি সতর্কমূলক পোস্ট শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।।
আপু গুছিয়ে সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সুস্থতা ঈশ্বরের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ যা সকলের জীবনে থাকে না,যেমন আমার নেই।চিকিৎসার কারণে কি কি হতে পারে তার জলোৎজ্যান্ত প্রমান আমি নিজেও আপু।ওষুধ আমাদের জন্য যেমন ভালো ঠিক তেমনি তার চেয়ে দ্বিগুণ বেশি খারাপ প্রভাব ফেলে আর এটা আমি প্রতিনিয়তই দেখে আসছি।আপু আপনার অসুস্থতার কথা শুনে খুবই খারাপ লাগলো এবং ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে আপনি আবারও বেশি অসুস্থ হয়ে গেলেন শুনে আরো বেশি খারাপ লাগছে।ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি আপনি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আবারও স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করেন।আপনার পোস্টটি পড়ে যেমন ভালো লাগলো তেমনইশিক্ষনীয় কিছু বিষয় ছিলো যা সকলের জানা দরকার।ভুলভাল ওষুধ খেলে কি হতে পারে এখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।ধন্যবাদ আপু।
ঔষধ যে কত ক্ষতিকর সেটা কেবল আমি নিজেই বুঝি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।
বেশ দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেনএবং বাস্তবসম্মত কিছু কথা লিখেছেন।
আমাদেরকিছু হলেই আমরা দৌড়ে চলে যাই ডাক্তারের কাছে। তবে কিছু কিছু ডাক্তারের পরামর্শ অনেক ভালো আবার কিছু ডাক্তারের পরামর্শে আমাদের নানা রকমের সমস্যা হয়। তবে আপু এটা আমি বিশ্বাস করি নিজের ঘরোয়া কিছু টোটকা যদি জানা থাকে এবং নিজের বিশ্বাস থাকে যে আমি এটাতে সুস্থ হব
সেক্ষেত্রে সেটাতেও সুস্থ হওয়া সম্ভব। আমি অবশ্য আপনার মত বেশি ওষুধ খাওয়ার পক্ষ বাদী না।কথায় কথায় ঔষধ খাওয়াটাও একটি বদঅভ্যাস।সাবধানে থাকবেন আপু আপনার জন্য দোয়া রইল। ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপু সত্যি বলতে আপনার মন্তব্য পড়ে বেশ মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এবং কয়েকবার পড়ার চেষ্টা করলাম আপনার মন্তব্যটি। ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।