শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি - "বন্ধুর বুদ্ধিতে চোর ধরা" II written by @maksudakawsarII

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম

শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি
"বন্ধুর বুদ্ধিতে চোর ধরা"

শুভ রাত্রি ভালোবাসার আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবার। সকলের সুস্থ্য জীবন, সুস্থ মন আর সুস্থ্য দেহ কামনা করে আজ আবার চলে আসলাম নতুন আরও একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে । সময় এবং স্রোত কারো জন্যই অপেক্ষা করে না। আর এ কথাটি কিন্তু চরম সত্য । জীবনের সময় গুলো যে কিভাবে দৌড়ে পালালো সেটা আর বুঝার সময়ই পেলাম না।দেখতে দেখতে হাটি হাটি পা পা করে জীবন শেষ হয়ে যাচেছ। রয়ে যাচেছ জীবেনের স্বপ্ন গুলো। রয়ে যাচেছ মনের ইচেছ গুলোও। আর তাই তো আমাদের সবারই উচিত আমাদের জীবনের প্রতিটি সেকেন্ডে কে কাজে লাগানো

জীবনের এ সময়ে এসে কিন্তু প্রায় মনে পড়ে সেই ছেলে বেলার পুতুল খেলার দিন গুলোর কথা। মনে পড়ে খেলার ছলে বন্ধুদের সাথে কাটানো সময় গুলো। খেলতে খেলতে কত যে সময় পার হয়ে যেত। সত্যি বলতে আমাদের ছেলেবেলাটা কিন্তু সত্যি স্মৃতি বিজড়িত। কেটে গেছে আনন্দ উদ্দীপনা আর উৎসাহ নিয়ে। তাই মাঝে মাঝে ছেলেবেলার সে সময় গুলোকে খুব মিস করি। আর আজ সেই স্মৃতিগুলো কে তুলে ধরার সুযোগ পেয়ে নিজেকে বেশ ধন্য মনে হচেছ। মনে হচেছ কিছুটা সময়ের জন্য মনে হয় চলে গেছি সেই দিন গুলোতে। ধন্যবাদ @rme । এত সুন্দর একটি সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। প্রিয় বন্ধুরা আজও আসলাম আপনাদের মাঝে ছেলেবেলার নতুনকিছু স্মৃতি নিয়ে। আশা করি আমার আজকের স্মৃতিগুলোও আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

thief-4173477_1280.jpg

source

বাবার চাকুরীর সুবাদে তখন আমরা কোয়াটারে থাকি। তো আমরা ছিলাম দ্বিতীয় তলায়। আমাদের পাশের ফ্লাটে আরও একটি পরিবার থাকতো। তাদের সাথে আমাদের পরিবারের বেশ ভালো সম্পর্ক। তবে উনাদের সবকিছুই ছিল গ্রাম কেন্দ্রিক, তাই এক সময়ে তারা সবাই গ্রামে চলে যায়। কেবল মাত্র যার নামে কোয়াটার উনি এবং উনার ছোট চাচা এখানে থাকতেন। তো তাদের খাওয়া দাওয়া অনেক সময় আমার মা ই দিতেন। আমাদের যা রান্না হতো সেখান থেকেই তাদের কে খাবার দেওয়া হতো। অবশ্য উনাদের কাজের মানুষ ছিল। কিন্তু সেই কাজের বুয়া যেদিন না আসতো সেদিন আমাদের বাসা হতে উনাদের কে খাবার দেওয়া হতো।

উনারা প্রতি বৃহস্পতিবারে বাড়ী চলে যেত এবং দুই তিন দিন থেকে তারপর ঢাকায় আসতো। আর সেই সময় টা আমরা ভাই বোনেরা উনাদের বাসায় পড়াশুনা করতাম। কারন সেই ফ্লাটের চাবি আমাদের কাছেই থাকতো। আমি যেহেতু একটু নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করতাম তাই আমার পড়াশুনাটা তাদের ফ্লাটেই করতাম। আমি বেশীর ভাগ সময়ই সেখানে বসে বসে পড়তাম। আর সময় পেলে গান শুনতাম। ছেলেবেলা হতেই আমি গান শুনতে বেশ পছন্দ করতাম। আর উনাদের কিন্তু এখানে অনেক আসবাবপত্র ছিল। ছিল বড় ক্যাসেট প্লেয়ারও। আমি মাঝে মাঝে সেই প্লেয়ারে গান শুনতাম।

কোয়াটারে তখন প্রায় রাতে বিদ্যুৎ চলে যেত। তো একদিন রাতে ঘটে গেল একটি বিশাল ঘটনা। সন্ধ্যার নাস্তা করে আমাদের ফ্লাটে বসে আছি। কিছুক্ষণ পড়ে পড়তে যাবো। এমন সময় বিদ্যুৎ চলে গেল। তখন আর কি করার। চারদিকে নেমে এলো অন্ধকার। অবশ্য সে সময়ে মোম বাতির প্রচলন ছিল বেশী। আমি ভাবলাম যে কিছুটা সময় নীচে যেয়ে বন্ধুবান্ধবের সাথে খেলাধুলা করে আসি। আমরা অবশ্য সেই সময়ে বিদ্যুৎ চলে গেলে লুকোচুরি খেলতাম। যা বলার তাই করলাম। চলে গেলাম বন্ধুদের সাথে খেলতে। আর যাবোই না কেন। না গেলে তো এসে ধরে নিয়ে যাবে। যে বিচ্ছুর দল ছিল। তো আমরা খেলা শুরু করলাম আর যে যার মত লুকিয়ে পড়লাম।

সেদিন কেন জানি আমি আমাদের সিড়িঁতিই লুকাতে গেলাম। তো সিড়িঁতে ঢুকে ভাবতে লাগলাম যদি ধরে ফেলে তাই দুতালায় যেয়ে লুকালাম। তো আমার সাথে আমার আরও একজন বন্ধুও ছিল। আমরা দোতালায় উঠে দেখলাম যে আমাদের সেই পাশের ফ্লাটের দরজা খোলা। ভাবলাম যে মনে হয় আমার আম্মা বা বোন কেউ ভিতরে আছে। আমরা ভাবলাম যে এখানে লুকালে আর খুজেঁ পাবে না। তো ঘরে ঢুকে দেখি ঘর অন্ধকার। কিছুক্ষন পর কানের মধ্যে ভেসে আসলো কিসের যেন খচর খচর আওয়াজ। আমরা দুই বন্ধুই ভাবতে লাগলাম কিসের আওয়াজ ভিতর থেকে। একদিকে বিদ্যুৎ নেই। বাহিরের ল্যাম্প পোস্টের আলো। আমি তো ভাবলাম আমাদের বাসার কেউ হবে।

কিছুক্ষনের মধ্যে সে আওয়াজ আরও একটু বেড়ে গেল। কেমন জানি আলমারী খোলার আওয়াজ পেলাম। আমি ভাবলাম যে দেখি তো কে কি করে ভিতরে। উমা চুপি মেরে দেখি ইয়া লম্বা এক লোক ঘরের মধ্যে যা আছে উনি গাটঠি বাধঁছে। আলমারীর কাপড় চোপড়, ক্যাসেট প্লেয়ার সবকিছুই বেধেঁ নিয়েছে। এখন সুকেস থেকে কাচেঁর প্লেট গুলো বাধঁছে বিছানার চাদরের মধ্যে। আমি ভাবলাম যে এই বেটা আবার কে রে বাবা। আমি তো আর বুঝতে পারি নি যে সে চোর। তো আমার সে বন্ধুটি যেন কি করে বুঝলো। ও আমারে বলল চোর চোর। তাড়াতাড়ি যা তোর আম্মারে ডাক দে। আর ততক্ষনে আমরা বাহিরের থেকে গেইট লাগিয়ে রাখি। তো আমারা বের হয়ে বাহিরের থেকে গেইট দিলাম লক করে।

আমি মাকে যেয়ে বললে,মাও ভয় পেল। মা তারাতাড়ি আমাদের ঘরের জানালা দিয়ে বাহির হতে মানুষজন ডাক দিলো। আর সবাই দৌড়ে এলো হই হই করতে করতে। ততকক্ষনে চোর মামা তো বাহিরের চিল্লা চিল্লি শুনে বুঝে গেল। তখন সেই চোর মামা বের হওয়ার শত চেষ্টা করেও আর বের হতে পাড়লো না। আর এলাকার বড় বড় ভাইয়া ততক্ষনে চলে এলো। এর মধ্যেই চলে এলো বিদ্যুৎ। তখন সবাই মিলে সেই চোর মামা কে আমাদের কোয়াটারের বড় মাঠে নিয়ে গেল। মা আমাকে আর যেতে দিলো না। তবে বাসার জানালা দিয়ে দেখলাম। কিযে মাইর মারছে রে সেই চোর মামারে। পরে অবশ্য পুলিশের কাছে দিয়ে দিয়েছিলো।

আর এদিকে চোর মামা কে ধরার জন্য পাশের ফ্লাটের ভাইয়া আমাকে পুরস্কৃত করলো। যদিও নিতে চাইনি। উনি বেশ জোড় করে দিলো। আর সেই পুরস্কারের টাকা দিয়ে আমরা সবাই মিলে জুলাপাতিল খেলেছিলাম। সেই গল্প আপনাদের সাথে অন্য একদিন শেয়ার করবো। তবে জীবনের প্রথম চোর দেখার এবং ধরার অভিজ্ঞতা কিন্তু আজও ভুলিনি। মাঝে মাঝেই মনে পড়ে সেই সব ফেলে আসা দিনগুলোর কথা।

আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো আপনাদের মাঝে নতুন করে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে। সকলের সুস্থ্যতা কামনা করে বিদায় নিচ্ছি। আর ও হ্যা কেমন লাগলো আমার আজকের শৈশবের কাহিনী। আপনাদের সুন্দর সুন্দর মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

image.png

Add a heading (1).png

image.png

image.png

Sort:  
 11 months ago 

আপু আপনার ছোটবেলার চোর ধরার গল্পটি পড়ে সত্যিই ভীষণ ভালো লাগলো। খেলার ছলে কিভাবে চোর ধরে ফেললেন সত্যি অবাক কান্ড ।বেশ বড় একটি কাজ করে দেখিয়েছিলেন আপনারা ।যদি ও আপনার বন্ধুর বুদ্ধি ছিল তারপরেও বেশ ভালো একটি কাজ করেছিলেন। আসলে শৈশবে আমরা কত মজার মজার স্মৃতি ফেলে রেখে এসেছি যা এখন মনে করলেও বেশ ভালো লাগে ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

হুম আপু এমন হাজারো স্মৃতি রয়েছে শৈশব কালে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

হ্যাঁ আপু শৈশবের দিনগুলো খুবই মধুর ছিল।সেই দিন আর কখনো ফিরে আসবে না। মাঝে মাঝে মনে হয় সেই দিনে ফিরে যেতে পারলে অনেক ভালো হতো। যাই হোক আপনার চোর ধরার অভিজ্ঞতা দারুন। আপনাদের জন্য বেচারা চুরি করে তো নিতেই পারলো না উল্টো আরও মার খেলো। আমি ভাবছি যখন সবাই জেনে গেল রুমের ভিতরে চোর আছে আর ধরতে আসছে তখন চোরের মনের অবস্থা কেমন ছিল? যাই হোক আরেক দিন আপনার পুরস্কৃত টাকা দিয়ে জোলাভাতি খেলার গল্প শুনবো। ধন্যবাদ শৈশবের গল্প শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

জি আপু এটাই কষ্টের বিষয় যে শৈশবের সেই দিনগুলো আর ফিরে আসবে না। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

আসলে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ছোটবেলার কিছু স্মৃতি রয়েছে সেগুলো কখনো ভোলা যায় না। আপনার বন্ধু এবং আপনি বুদ্ধি করে গেট লাগিয়ে দিয়েছিলেন না হলে তো চোরটা পালিয়ে যেত। পরবর্তীতে আপনাকে পুরস্কৃত করেছিল এবং সেই পুরস্কৃত টাকা দিয়ে আপনারা সব বন্ধুরা জুলাপাতিল খেলেছিলেন এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। সেই গল্পটা শোনার জন্য অপেক্ষায় থাকতাম।

 11 months ago 

হুম বুদ্ধি করে বাহির থেকে গেইট লাগিয়ে দিয়েছিলাম, তা না হলে তো আর চোর ধরতে পারতাম না। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

ছোটবেলায় সন্ধ্যার সময় কারেন্ট যাওয়া মানে লুকোচুরি খেলা আর আনন্দ করা ছিল। এর জন্য যে কত বকা খেতে হয়েছে। যাই হোক আপনার সেদিনকার লুকোচুরি খেলাতে বেশ উপকারী হয়েছিলো। লুকানোর জন্য দোতলায় না উঠলে তো চোরকে ধরতে পারতেন না। আপনাদের সাহস আছে রাতের অন্ধকারে চুপিচুপি করে আবার শব্দ শুনে দেখতে গিয়েছেন। কারেন্ট চলে যাওয়াতে চোর এই সুযোগটা নিয়েছিল আপনাদের জন্য তাও সম্ভব হলো না।

 11 months ago 

ওমা দেখবো না, কিসের আওয়াজ হচেছ? তা না হলে কি আর চোর ধরতে পারতাম?

 11 months ago 

ছোটবেলার এরকম স্মৃতির কথাগুলো পড়তে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। অনেক স্মৃতি রয়েছে ছোটবেলাকে জুড়ে, আর সেগুলো সব সময় মনে থাকে আমাদের। ছোটবেলার সেই দিনগুলো অনেক বেশি মধুর ছিল। বন্ধুর সাথে বুদ্ধি করে তাহলে চোর ধরেছিলেন, এই বিষয়টা সত্যি অনেক বেশি দারুন ছিল। কারেন্ট চলে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে ছিল চোর বেটা, কিন্তু সবশেষে আপনাদের বুদ্ধির কারণে সে ধরা পড়ে গিয়েছিল।

 11 months ago 

এটা কিন্তু একদম সত্য কথা যে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ছেলেবেলায় হাজার টা স্মৃতি রয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

যখনই কখনো কারোর ছোটবেলার ঘটনা জানতে পারি, তখনই নিজের অতীতের অনেক কিছু স্মরণে এসে যায় আর এই সমস্ত বিষয়গুলো পুনরায় ভাবতে আমার বেশ ভালো লাগে। কারণ ফেলে আসা দিনগুলো ফিরে পাবো না তবে সেই স্মৃতিগুলো স্মরণ করলে যেন সেই অতীতের সুখ সুন্দর সোনালী দিনের মুহূর্তটা ফিরে পাই। সুন্দর এই পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 11 months ago 

আরে অতীতের সেই দিন কি আর ফেরত আসবে? ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

ঐ অবস্থায় যে কারো ভয় পেয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি ভয় না পেয়ে সাহসিকতার সঙ্গে চোরকে ধরেছেন। আর ঐসময় টাতে কারেন্ট চলে গেলে সত্যি বলে চোরের উৎপাত বেড়ে যেত। চমৎকার লাগল আপনার ছোটবেলার এই চোর ধরার কাহিনী টা শুনে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

আরে আমি তেমন ভয় পাই না। চোর ধরেছি এটাই বড় কথা। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

চোর দুটি মনে হয় আগে থেকেই খবর নিয়েছিল, সেই ফ্ল্যাটের লোকজন প্রায়ই গ্রামে যায়। তাইতো সুযোগ বুঝে চুরি করতে গিয়েছিল। আবার কারেন্টও ছিলো না। সবমিলিয়ে চোরেরা ভেবেছিল চুরি করার জন্য দারুণ একটি সুযোগ। লুকোচুরি খেলে কিন্তু বেশ উপকার হয়েছিল। চোর ধরিয়ে দিতে পেরেছিলেন। তবে আপনাদের কিন্তু বেশ সাহস ছিলো, এটা বলতেই হয়। দারুণ লাগলো পোস্টটি পড়ে। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

আমারও তাই মনে হয়। কিন্তু ভাইয়া চোর তো দুটো ছিল না। একজন চোর ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 11 months ago 

ওহ্ আচ্ছা আমি দেখতে ভুল করেছিলাম। যাইহোক বেশ সাহসিকতার সহিত চোরটিকে ধরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।

 11 months ago 

আরে ভাই সাহস না থাকলে কি চলে?

 11 months ago 

না আপু সাহস অবশ্যই থাকতে হবে। আর আপনি তো খুবই সাহসী একজন মেয়ে। দারুণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন আপু। ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59695.98
ETH 2665.47
USDT 1.00
SBD 2.48