শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি- তিনজন ভয়ংকর শিক্ষকের গল্প II written by @maksudakawsar II

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম

ইস্ কেউ যদি আমায় বলতো কি চাই আমি? তাহলে বলতাম আবার ছোট হতে চাই। কারন ছোট মানুষের আর যাই থাকুক না কেন কোন যন্ত্রণা থাকে না। থাকে না কোন চিন্তা ভাবনা আর টেনশন। হেসে খেলে জীবন টা পার করে দেয় তারা। আমরাও যখন ছোট ছিলাম আমরাও ঠিক তেমনই ছিলাম। কিন্তু আজ বড় হয়ে হয়েছে এক যন্ত্রণা। না পারি কিছু বলতে আর না পারি সইতে। টেনশনে টেনশনে জীবন শেষ।

কেমন আছেন সবাই? বেশ ভালো আছেন নিশ্চয়। আসলে প্রিয় মানুষ গুলো ভালো থাকুক এই কামনাই করি। প্রতিদিনের মত করে আজও চলে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন করে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে সব সময়ই ভাবী যে নিজের মনের মাঝে ঘুরপাক খাওয়া কথা গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। তাই তো আজ সারাদিন ব্যাস্ততার মাঝেও চলে আসলাম একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে। আশা করি আমার আজকের পোস্টটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।

male-213729_1280.jpg

Source

শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি
তিনজন ভয়ংকর শিক্ষকের গল্প

শৈশবে আমদের জীবনের সাথে এমন ভাবে জড়িয়ে আছে যে আমরা চাইলেও সেই দিন গুলোকে ভুলতে পারি না। পারি না জীবন থেকে মুছে দিতে। আর পারি সেই সব শৈশব কে ভুলে যেতে। জীবন চলার পথে বারে বারে সেই সমস্ত শৈশব আমাদের মাঝে উকিঁ দেয় বার বার। এই যেমন আমরা যেমন ভুলতে পারি না আমাদের স্কুল জীবনের কথা। ছেলেবেলায় আমরা যারা স্কুলে পড়েছি তাদের কম বেশ সবারই স্কুল জীবনের কথা মনে আছে। সেই সাথে মনে আছে স্কুলের শিক্ষকদের কথাও। আমি কিন্তু আজও ভুলতে পারি না সেই স্কুল জীবনের শিক্ষকদের কথা। কত মাইর যে খেতাম তখন সেই শিক্ষকদের কাছে।

আমাদের স্কুলে তিনজন শিক্ষক ছিলেন। যাদের নাম যাই হোক না কেন আমরা জানতাম তাদের নাম ছিল-টল বাবু, রিতীশ বাবু আর জ্ঞানী বাবু স্যার বলে। টল বাবু স্যার ছিলেন বিশাল লম্বা একজন মানুষ। তিনি ছিলেন ইংরেজী শিক্ষক। রিতীশ বাবু স্যার ছিলেন খাটো একজন মানুষ। তিনি আমাদের অংকের ক্লাস নিতেন। আর জ্ঞানী বাবু স্যার ছিলেন মিডিয়াম গোচের একজন মানুষ। তিনি আমাদের বিজ্ঞানের ক্লাস নিতেন। নাম ভিন্ন হলেও স্বাভাবের দিক দিয়ে তিনজন ছিলেন একই রকমের। মানে তিনজনই ছাত্রছাত্রীদের বেদম পেটাতেন।

তিনজন শিক্ষকই বাড়ীতে হোম ওয়ার্ক দিতেন। তারপর স্কুলে পরদিন একজন একজন করে দাঁড় করিয়ে পড়া ধরতেন। অথবা অংক করতে বলতেন। যদি কেউ না পারতো তাহলে সেদিন খবর ছিল তার। জালী বেত আর আস্বত্ব থাকতো না। পেটাতে পেটাতে কখন যে লাঠি ভেঙ্গে যেত সেটাই তো বুঝা যেত না। আর তাই তো ক্লাসে ঢোকার আগে সবাই চেষ্টা করতো যে এই তিন শিক্ষকের পড়া মুখস্থ করে আসতে বা শিখে আসতে। যাতে করে বাঘের হাতে পড়তে না হয়।

আমি আবার ছিলাম অংক আর ইংরেজিতে বেশ কাঁচা। কাঁচা হলেও পরীক্ষার সময় বেশ ভালোই নম্বর পেতাম। তবে ক্লাসেও কোনদিন বেতের পিটানী খেতে হয়নি। কেমন করে যেন আমার ভাগ্যেই সহজ কিছু পড়ে যেত। যাই হোক একদিন টল বাবু স্যার এর ক্লাস। তো সবার আগে আমাকেই প্রশ্ন করলো ইংরেজী ১ম পত্র হতে। আমি তো কিছুই পড়িনি কি বলবো বুঝার আগেই হাতের তালুতে পড়লো বেতের পিটানী। সে যেমন তেমন পিটানী। লাল হয়ে ছিল তিন দিন।

আর ঐদিকে রিতীশ বাবু স্যার এর পড়া না পারলে তো নীল ঢাউন হয়ে থাকতে তো পুরো ক্লাস। আমিও ছিলাম একদিন নীল ঢাউন হয়ে। কি যে কষ্ট। দু হাত দু পায়ের নীচে দিয়ে কানে ধরে থাকা। হি হি হি। সবাই শুধু হাসতো। এও কি সহ্য করা যায়? কতদিন যে এমন নীল ঢাউন হয়েছি সেটাই গুনে রাখলে বলা যেত। তারপর তো জ্ঞানী বাবুর কথায় আশি। উনি তো ছিল আর এক ডিগ্রী বেশী। পড়া না পারলে ক্লাসের বাহিরে নিয়ে রোদের মধ্যে কান ধরিয়ে মাঠের মাঝ খানে দাঁড় করিয়ে রাখতো। যাতে অন্যান্য ক্লাস হতে সবাই দেখে আর হাসে। বলেন তো কেমন লাগে?লজ্জায় মরে যেতাম।

শেষ কথা

আপনারাই এটার বিচার করেন। পড়া না পারলে কি এমন করতে হয়? লজ্জা বলে তো একটি কথা আছে। আপনাদেরও কি এমন হতো। জানার অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি আমার মত আপনাদের ও মজার মজার কাহিনী রয়েছে।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

Screenshot_1.png

Sort:  
 2 months ago 
 2 months ago 

বেশ ভালোই তো পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু। নিজের শিক্ষকদের নিয়ে বেশ দারুন পোস্ট শেয়ার করেছেন। আসলে আমিও শুনেছি ঐ শিক্ষকদের কথা। আপনি কিন্তু বেশ মজা নিয়ে আজকের পোস্ট শেয়ার করেছেন। আমার কাছে বেশ ভালোই লেগেছে।

 2 months ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 months ago 

আজ তিনজন আজব শিক্ষকের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন ।আসলে আমার লাইফে এমন একজন শিক্ষক ছিলেন যার হাতে প্রচুর মার খেয়েছি তবে শেষ পর্যন্ত এখন মোটামুটি মানুষ হয়ে গেছি হাহাহা, অনেক মজাদার একটা পোস্ট করেছেন ভাই ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

যাক আপনার ও তাহলে পিটানি খাওয়ার অভ্যাস আছে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

না এখন অবশ্য শিক্ষকদের ছাত্রদের ওপর শাস্তির ধরণ পরিবর্তন হয়েছে বেশ। তা সরকার কর্তৃক আরোপিত কিছু বিষয়ের সাথেও মেলবন্ধন রাখে। কোমলমতি শিশু কিশোরদের কখনোই শারীরিক কিংবা মানসিক নির্যাতন রাখার অধিকার একজন শিক্ষক কিংবা মা বাবারা রাখেন না।

কারণ, উন্নত ধারণা অনুসারে শিশুরা হলো রাষ্ট্রীয় ভবিষ্যতের কর্ণধার, এবং তাদেরকে জোর করে শেখানো যাবে না। এটি অবশ্য নতুন একটি ধারণার সৃষ্টি করেছে যা বেশ কাজে দেবে।

শিক্ষা ও গবেষণায় বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে বুঝতে পেরেছি যে পাস ও ফেলও প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বাইরে নিয়ে আসা যায়। এটি পাইলট প্রকল্পে আছে এখনো।
ফেল করিয়ে একটি শিশুকে নিরুৎসাহিত করা হয়, আর শাস্তি তো আরো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

যা হোক, আপনার ছোট বেলার এই অভিজ্ঞতা শুনে বেশ ভালো লাগলো। অনেক কিছু স্মরণে চলে আসলো। 💐

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার বিশ্লেষণ মূলক মন্তব্যের জন্য।

 2 months ago 

নীল ঢাউন হয়ে থাকার তেমন কোন অভিজ্ঞতা আমার নেই। তবে ব্যাপারটি কিন্তু বেশ হাস্যকর। সত্যি আপু আমাদের জীবনে এমন কিছু টিচার ছিল যারা সব সময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আপনার ছোটবেলার সেই অভিজ্ঞতার কথা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।

 2 months ago 

আসেন নীল ঢাউন কি আপনাকে বুঝিয়ে দেই। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

ছেলেবেলার স্মৃতি নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করলেন আপু।আসলে আমাদের সকলের জীবনে এমন কিছু স্যার ও ম্যাডাম আছেন যারা আমাদের স্মৃতিতে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন আজীবন।তবে আপু আমাদের স্কুলে কখনও নীল ডাউন করে রাখেনি।তবে দাঁড় করিয়ে রাখতো, হিহিহি।এমন কি। বেঞ্চের উপরে ও।😂

 2 months ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 67002.47
ETH 3459.18
USDT 1.00
SBD 2.65