নাটক রিভিউ- কাছের মানুষ নাটকের রিভিউ

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নাটক রিভিউ-কাছের মানুষ

আসসালামু আলাইকুম

আজকাল যেন সবার জীবনের আনন্দগুলো কেমন মলিন হয়ে যাচেছ। মলিন হয়ে যাচেছ সময়ের অভাবে মনের চাহিদা গুলো। আমরা প্রতিনিয়ত এত ব্যস্ততার মধ্যে থাকি যে আমাদের নিজেদের দিকে তাকানোর সময়ও যেন হয়ে উঠে না। কিন্তু আমাদের কে সুস্থ্য ভাবে বেচেঁ থাকতে হলে আমাদের জীবনে কিছু আনন্দের প্রয়োজন। কিছু বিনোদনের প্রয়োজন। আর এসব বিনোদন আমরা কখনও পাই প্রকৃতির মাঝ হতে আবার কখনও পাই বিনোদনের মাধ্যমগুলো হতে।আমি মাঝে মাঝে চেষ্টা করি বিনোদনের সেই মাধ্যম হতেই দু একটি নাকট দেখতে। তাই তো আমি @maksudakawsar আজ আবার চলে আসলাম আমাদের মাঝে আমার দেখা আরও একটি নাটকের রিভিউ করার জন্য।

Screenshot_7.png

প্রাপ্তি: YouTube

নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য

নামকাছের মানুষ
পরিচালকইমরুল রাফাত
রচনাইমরুল রাফাত
অভিনয়জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, তৌসিফ মাহাবুব, মুনীরা মিঠু, তানিয়া বৃষ্টি এবং আরও অনেকে
দৈর্ঘ্য১ ঘন্টা ৭মিনিট ২২ সেকেন্ড
মুক্তির তারিখ৩০জুন/২০২৩
ধরননাটক
ভাষাবাংলা
দেশবাংলাদেশ
প্রচারইউটিউব

চরিত্রেঃ

★ জিয়াউল ফারুক অপূর্ব-এনামুল
★তানিয়া বৃষ্টি-মাহি
★তৌসিফ মাহবুব-ইমরান
★মুনীরা মিঠু-মা

কাহিনী সংক্ষেপ

Screenshot_2.png
Screenshot_3.png

Screenshot_4.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

নাটকের প্রথম দৃশে দেখা যায় এনামুল ও মাহির হাজবেন্ড গাড়ী করে বাসার এয়ারপোর্ট হতে বাসার দিকে যাচেছ। এনামুল বাবার অসুস্থ্যতার কথা শুনে বিদেশ হতে আসে। এনামুল তার পরিবারের বড় ছেলে। মাহি এবং ইমরান এনামুলের ছোট ভাই বোন। তো গাড়ী যখন বাসার দিকে যাচ্ছে তখন এনামুল মাহির হাজবেন্ডকে জিজ্ঞেস করে হাসপাতালে না যেয়ে বাসার দিকে কেন। তখন মাহির হাজবেন্ড এনামুল কে বলে তার বাবা মারা গেছে। কথাটি শুনে এনামুল কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। তারপর বাড়িতে গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। মা ভাই বোন সবাই এনামুল কে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এদিকে এনামুলের বাবার দাফন সম্পন্ন হয়ে যায়। আর দাফন সম্পন্ন হলে মাহির হাজবেন্ড ও এনামুলের বাবার হোটেলের ব্যবসার ম্যানাজার এনামুলের সাথে হোটেলের বিষয় নিয়ে কথা বলে। তখন এনামুল জানতে পাড়ে যে এনামুলের বাবা জীবিত অবস্থায় এলাকার এক প্রভাবশালী লোকের থেকে ৩০ লক্ষ টাকা লোন করে। এসব শুনে এনামুল চিন্তিত হয়ে পড়ে। এদিকে ইমরান এনামুলদের কথার মাঝে ঢুকে পড়ে এবং হোটেলের ম্যানেজারের সাথে বেয়াদবী করে। ইমরানের এমন আচরনে এনামুল আশ্চর্য হয়ে যায়।

Screenshot_5.png

Screenshot_6.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

এদিকে এনামুল রাতে মায়ের সাথে কথা বলে। এনামুল আর তার মা অতীতের স্মৃতি নিয়ে কথা বলে। এক সময়ে এনামুল তার মাকে জিজ্ঞেস করে বাবার এত লোন এর কথা সে জানে কিনা। তারপর এনামুল তার মাকে বলে মা আমি তো কোন কুল খুজেঁ পাচ্ছি না। এনামুলের মা বলে যে তোমার বাবা বলতো যদি কোন সমস্যায় পরো তাহলে পরিবারের কাছে প্রশ্ন করো। তাহলে সব সম্যার সমাধান খুজেঁ পাবে। এদিকে ইমরান আর মাহির হাজবেন্ড ব্যাংকে গেলে দেখে যে তার বাবার একাউন্টে মাত্র দুই লক্ষ টাকা আছে। যাও আবার এনামুলের নামে নমিনী করা। এদিকে এনামুল রাতে তার বাবার হোটেলে যায়। তখন হোটেলের ম্যানেজার এনামুলের সাথে তার বাবার বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরে। তখন এনামুল জানতে চায় তাদের হোটেল না চলার কারন। ম্যানাজার সাহেব এনামুল কে জানায় যে, পাশে একটি বড় হোটেল হয়েছে, সে হোটেলের মালিকের থেকেই তার বাবা টাকা ধার নেয়। েএমন সময় যার থেকে এনামুলের বাবা টাকা ধার নিয়েছে সে হোটেলে ঢুকে এবং এনামুল কে অনেক উল্টাপ্লাটা কথা বলে। সব শুনে এক সময়ে এনামুল রেগে যায়।

Screenshot_8.png

Screenshot_9.png

Screenshot_12.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

রাতে এনামুল পরিবারের সবাই কে নিয়ে বসে। এনামুল ইমরান কে বলে ইমরান যদি হোটেলে বসে তাহলে আমি বাহিরে চলে যাই। তারপর আমি যে টাকা পাঠাবো তা দিয়ে বাবার লোন পরিশোধ হয়ে গেলে আমি ফিরে আসবো। তখন ইমরান খুব রেগে যায় এবং সে বলে দেয় আমি এসব ভাতের হোটেল চালাতে পারবো না। তোমার ইচ্ছে হলে তুমি বিদেশে না যেয়ে চালাও। ইমরানের এমন ব্যবহারে এনামুল বেশ কষ্ট পায়। এদিকে হোটেলের ম্যানেজারও ইমরান কে বুঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ইমরান তার সাথেও খারাপ ব্যবহার করে এবং হোটেল বেচেঁ দিতে বলে। তখন এনামুর তার মায়ের সাথে কথা বললে মা এনামুল কে বলে তোর সময় আছে কয়দিন। এনামুল বলে ছয় মাস। মা বলে তাহলে তুই এই ছয় মাসে এদিক টা গুছা, তারপরের টা পড়ে দেখা যাবে।

Screenshot_10.png

Screenshot_11.png

Screenshot_13.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

এরপর এনামুল মাহির হাজবেন্ড কে নিয়ে হোটেলের সবহিসাব নিকাশ করে । এক সময়ে মাহির হাজবেন্ড এনামুল কে বলে ভাইজান আমি তো কোন কুল কিনারা দেখতাছি না। আমার মনে হয় আপনে সব কিছু বেঁইচা দিয়া যার যার টা বুঝিয়ে দিয়ে বিদেশ চইল্লা যান। এ কথা শুনে এনামুল বিষণ রাগ করে। এনামুল বলে সম্ভব না। এ হোটেলের সাথে বাবার অনেক স্মুতি। বাবার স্মৃতিকে আমি হাত ছাড়া করতে পারবো না। এমন সময় সেই লোক যার থেকে এনামুলের বাবা টাকা লোক নিয়েছিল সে আসে এবং এনামুল কে একটি নোটিশ ধরিয়ে দেয়। সে এনামুল কে বলে তিন মাসের মধ্যে তার লোন পরিশোধ করতে। সে এও বলে যে তোমরা না হয় দোকানটা আমার কাছে বিক্রি করে দাও। একথা শুনে এনামুল বেশ রাগ করে।

Screenshot_1.png

Screenshot_15.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

রাতে মাহির হাজবেন্ড মাহি কে বলে দেখ এত টাকা লোন পরিশোধ করা সম্ভব নয়। তাই তোমার ভাইকে বল হোটেল টা বিক্রি করে লোন পরিশোধ করে যার যার অংশ তাকে বুঝিয়ে দিতে। এদিকে ইমরানও মাহির কাছে আসে এবং মাহিকে একই কথা বলে। এছাড়াও ইমরান বলে বাবা তো এত টাকা তোর বিয়ের জন্য লোন করেছে। মাহি সবার এসব কথা শুনে রাতে মায়ের কাছে যায় এবং মাকে বলে যে হোটেল টা বিক্রি করে সবার টাকা বুঝিয়ে দিতে এমন কি মাহির অংশও বুঝিয়ে দিতে। এদিকে হোটেলের ম্যানেজারের মেয়ের সাথে এনামুলের বিয়ে ঠিক করে রাখে তার বাবা। তাই এনামুল তাকে জানিয়ে দেয় যে, বিদেশে এনামুলের কোন নাগরিকত্ব হয়নি। তাই এনামুলের অনিশ্চিত ভবিষতের সাথে তাকে জড়াতে না।

Screenshot_14.png

Screenshot_16.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

এদিকে এনামুল হোটেলের জন্য কিছু করতে হলে পরিবারের সবার হতে তাকে ক্ষমতা পত্র নিতে হবে। ইমরান কে সেই ক্ষমতা পত্রে সই করতে বললে ইমরান এনামুলের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করে। ইমরান এনামুল কে বলে যে, আমি সই করি তারপর তুমি সব বেচেঁ ত্রিশ লাখ টাকা লোন পরিশোধ করে তারপর বাকী বিশ লাখ নিয়ে বিদেশ চলে যাও। তুমি কি বুঝবা আমাদের কষ্ট। তুমি তো বিদেশের সিটিজেনশীপ। তোমার তো ভবিষত আছে। ইমরানের মুখে এসব কথা শুনে এনামুল বিষন কষ্ট পায়। তাই এনামুল সিদ্ধান্ত নেয় নিজের অংশ টুকু সে ইমরান এবং মাহি কে লিখে দিয়ে সে বিদেশ চলে যাবে এবং এনামুল এই কাজটিই করে। এরপর এনামুল ইমরানের ঘরে যেয়ে ইমরানের সাথে কথা বলে । এনামুল বলে আমি আমার অংশটুকুও তোদের নামে লিখি দিয়ে গেলাম। আর আমি যে টাকা পাঠাবো তা দিয়ে লোন পরিশোধ করে নিস।এরপর এনামুল তার মা আর মাহিকেও বলে যে আমার অংশ আমি মাহি আর ইমরানের নামে দিয়ে দিলাম। এখন সম্পত্তি চারভাগ হবে- ইমরান ২ভাগ মা ১ ভাগ আর মিহি ১ভাগ। একথা শুনে এনামুলের মা এবং মাহি অনেক আঘাত পায়।

Screenshot_17.png

Screenshot_17.png

Screenshot_19.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

পরদিন সকালে এনামুল সবার কাছ হতে বিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়। মা কে সালাম করে ইমরান এবং মাহিকে ভালো করে চলতে বলে। এক সমযে এনামুল ঘর হতে বের হতে যাবে এমন সময় ইমরান এসে পিছন থেকে এনামুলের হাত ধরে। ইমরান বলে না ভাইয়া তুমি যাবানা। সবকিছু আমরা একত্রে সমাধান করবো। আমাদের মাঝে একতা থাকলে সব কিছু সহজ হয়ে যাবে। আমি আমার বাইকটা বেচেঁ দিবো।তখন মাহি বলে আমি আমার গহনা বেচেঁ দিবো। তখন এনামুল বলে আমারও কিছু জমানো টাকা আছে। সন্তানদের এমন একতা দেখে তাদের মাও বেশ খুশি হয়। আর এর মাঝেই নাটকটি শেষ হয়ে যায়।

Screenshot_20.png

Screenshot_21.png

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

ব্যক্তিগত মতামত

নাটকটির মধ্যে পরিচালক একটি পরিবারের পারিবারিক বন্ধন কে বুঝাতে চেয়েছেন। আসলে পরিবারে দন্দ থাকবেই । কিন্তু যদি সবাই নিজেদের ভুল গুলো বুঝতে পেরে একত্রে পথ চলতে পারে তাহলে কোন সমস্যাই পরিবারের কাছে সমস্যা নয়। আর পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ভাইবোনের একতা। তাই সকল সমস্যার সমাধানই কিন্তু আমাদের পরিবারের কাছেই খোঁজা উচিত।

ব্যক্তিগত রেটিং

১০/১০

নাটকের লিংক

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

image.png