মানুষের জীবনের সকল চাওয়া গুলো কখনই নিজের মত করে পূরণ হয় না। কিছু না কিছু চাওয়া থেকে যায় অস্পূর্ণ । শত চেষ্টা করলেও কেন জানি স্বপ্ন গুলো ধরা দিতে চায় না। তাহলে এখানে দোষটা কার স্বপ্ন দ্রষ্টার নাকি ভাগ্যের নির্মমতার? মাঝে মাঝে একই প্রশ্ন নিজেকে করে চলি বার বার। কখনও উত্তর মেলে তো কখনও মেলে না। জানিনা আপনাদের বেলায়ও তেমন হয় কিনা। আমার মত যদি আপনাদেরও কিছু স্বপ্ন অস্পূর্ণ থেকে যায় তাহলে আপনাদের কে চিমটি। হি হি হি।

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন বলেন তো? আমি কিন্তু বেশ দারুন আছি। আর তাই তো প্রতিদিনের মত করে আজও চলে আসলাম আপনাদের মাঝে। আপনাদের মনে আছে গত সপ্তাহে আপনাদের সাথে ঠেলাঠেলি করে একুশে বই মেলায় প্রবেশের গল্প শেয়ার করেছিলাম। আপনারা যারা সেদিন আমার পোস্টটি পড়েছিলেন তাদের অনেকেরই বেশ কৌতহল ছিল যে যে ঠেলাঠেলি করে আমাদের সবার প্রিয় @salinashathi আপুর বই সংগ্রহ করার জন্য বই মেলায় যাওয়া, সেই স্বপ্ন কি আমার পূরন হয়েছিল? আর তাই তো আজ আমি চলে আসলাম আপনাদের সেই অপেক্ষার পালা শেষ করতে। তবে আপনারা যারা আমার গত পোস্ট টি মিস করে গেছেন তাদের জন্য সেই পর্বটির লিংক নিচে সংযোজন করে দিলাম।

তো ঘুরছি আর বিভিন্ন রকমের বইয়ের স্টল গুলো ঘুরে ঘুরে দেখছি। ভাবলাম আপুর স্টলে পরে যাবো। তাই বিভিন্ন স্টল ঘুরতে ঘুরতে দেখতে লাগলাম। অবশ্য সে দিন বই মেলায় ছিল অসম্ভব ভিড়। কে যে কোন দিক চলে যাচ্ছে সেটাই কিন্তু বুঝতে পারছি না। একে খুঁজে পাই তো ওকে হারাই। এভাবেই সময় কেটে যাচেছ। এদিকে দু একটি স্টল ঘুরে গালিভারস আরও দু একটি বই সংগ্রহ করে নিলাম। যদিও বই মেলায় বই গুলোর দাম কিছু বেশীই রেখেছে। কিন্তু বহুদিন যাবৎ আমার গালিভারস পড়ার বেশ সখ ছিল। সেই সখটাই পূরন করা হলো আর কি।

বিভিন্ন প্রকাশনার স্টল ঘুরে ঘুরে দেখতি কিন্ত বেশ ভালো লাগছিল। তার উপর ভালো লাগছিল এই কথা ভেবে যে যদি আমাদের সাথী আপুর সাথে দেখা হয়ে যায়। বলেন তো তখন অনুভূতিটা কি রকমের হবে। আর তাই তো কয়েকটি বই সংগ্রহ করার পর সিদ্ধান্ত নিলাম সাথী আপুর স্টলের দিকে যাওয়ার। কিন্তু কি বলেন তো ঐ যে কথায় বলে না কপালে নাই কো ঘি ঠুক ঠকাইলে হইবো কি? আমার দশাও ছিল তাই। আমি সাথী আপুর সাথে দেখা করবো কি করে? আমার কাছে তো উনার কোন নাম্বার নেই। আর মোবাইলেও নেট নেই যে আমি ডিসকোডে যোগাযোগ করবো। হায় আল্লাহ একি হলো? মনটাই গেল ভেঙ্গে। কেন যে বাসায় থাকতে থেকে যোগাযোগ করলাম না। আরে ভেবেছিলাম তো যোগাযোগ করবো। কিন্তু ঐ যে ইদানিং সব কিছু ভুলে যাই। মোবাই নিয়ে ফ্রিজে রেখে দেই। হি হি হি। তাহলে জাতি আমার থেকে কি আশা করবে?

ভাবলাম ঘুরতে ঘুরতে দেখা হয়ে যাবে আপুর সাথে। আর সেই উদ্দেশ্য নিয়েই সমস্ত একুশে বই মেলা প্রাঙ্গন খুঁজতে লাগলাম। এক সময় ভাবলাম যে যদি আপু কে কফি হাউজের ঐ জায়গায় পাওয়া যায়। গেলাম সেখানে। সমস্ত মানুষের ভিড়ে খুঁজতে লাগলাম। আর প্রকাশনীর নামটি ও মনে ছিল না। তবে বেশ কিছু স্টলে খোঁজ করেও কোন সূরাহা করতে পারিনি। এক সময় খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হয়ে যেয়ে কফি হাউজের পাশের মাঠে বসে রইলাম।

হঠাৎ দেখলাম পাশেই একটি স্টলে বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করা হচ্ছে। দৌড়ে গেলাম সেখানে। ভাবলাম যে ঐখানে যদি আপু কে পাই। কিন্তু না সেখানেও এত মানুষের ভিড়ে আর সাথী আপু কে খুঁজে পেলাম। না। বেশ মনটাই খারাপ হয়ে গেল। এত সখ করে বই মেলায় গেলাম, কিন্তু সখটাই আর পূরণ হলো না। আর তার জন্য আমি বকাও খেলাম বেদম। কার বকা বুঝলেন না? যাদের সাথে গিয়েছিলাম তাদের।

অবশেষে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে হাটতে হাটতে বাসায় চলে আসলাম। হাটবো না কেন? গাড়ী তো আর কপারে জোটেনি। না জুটলো সাথী আপুর বই, আর না জুটলো বাসায় আসার জন্য কোন গাড়ী। তবে বাসায় এসে মনে হলো এখানেও ভুল করেছি। সেটা কি জানেন। সেই মোড়ক উম্মোচনের জায়গায় অথবা অনুসন্ধ্যানে খোজঁ করলেই তো হয়ে যেত। তাই না? কপাল রে আমার কপাল।

সত্যি বলতে সেদিন ঠিকই বই মেলায় ঘুরে বেড়িয়েছি। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে বেই মেলায় যাওয়া সেটা পূরণ না হওয়ায় বেশ কষ্ট ছিল মনে। তাই দেরী করেই বই মেলায় ঘুরে বেড়ানোর গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।