শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি- শৈশবের মাছ ধরার গল্প II written by @maksudakawsar II

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago

আসসালামু আলাইকুম

আমরা যারা আমাদের শৈশবটাকে ফেলে এসেছি। তারা কিন্তু প্রত্যেকেই চাই আবার সেই শৈশবে ফিরে যেতে। চাই শৈশবটাকে আবার খুব কাছ হতে উপভোগ করতে। মাঝে মাঝে হয়তো আমরা কেউ কেউ আমাদের সেই শৈশবে ফিরে যাই। ফিরে যাই হাজারও স্মৃতির মাঝে। কারন আমরা কেউ কখনও আমাদের জীবন থেকে ফেলে আসা শৈশব কে মুছে দিতে পারবো না।

কেমন আছেন সবাই? বেশ ভালো আছেন নিশ্চয়। আসলে প্রিয় মানুষগুলো ভালো থাকুক এই কামনাই করি। প্রতিদিনের মত করে আজও চলে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন করে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে সব সময়ই ভাবী যে নিজের মনের মাঝে ঘুরপাক খাওয়া কথা গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। তাই তো আজও আবার সেই ছেলেবেলার কিছু স্মৃতি কথা নিয়ে চলে আসলাম আপনাদের মাঝে। আশা করি আমার আজকের পোস্টটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।


অলির কথা শুনে বকুল হাসে কই, তাহার মতো তুমি আমার কথা শুনে হাসো না তো!.png

CANVA দিয়ে তৈরি

শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি-শৈশবের মাছ ধরার গল্প

এই তো কয়েকদিন আগের কথা। নিজের খুব জরুরী কাজে গিয়েছিলাম পুরানো এক বন্ধুর কাছে। সেই গল্প আমি আপনাদের সাথে অন্যদিন করবো। কিন্তু সেখানে যেয়ে দুপুরে লাঞ্চ করলাম গুড়া মাছ দিয়ে। আর সেই গুড়া মাছ দেখে কয়েকদিন যাবৎ আমার ছেলেবেলার কয়েকটি কথা মনে পড়ে গেল। মনে পড়ে গেল মায়ের হাতের ছোট মাছের চচড়ীর কথা। একটু ভাজা ভাজা পাচঁমিশালী ছোট মাছের চচড়ী যে কি স্বাদের সেটা যারা না খেয়েছে তারা কখনওই বুঝবে না।আসলে নতুন পানির মাছের স্বাদই আলাদা। একবার খেলে অনেকটা সময় মুখে লেগে থাকে এর স্বাদ।

বাবার সরকারী চাকরির পর ছোট এক টুকরো জায়গা কেনা হয়েছিল। আর সেই জায়গায় মাথা গোজার জন্য একটি বাড়িও তৈরি করা হয়েছিল।কিন্তু বর্ষা মৌসুম আসলে আমাদের বাড়ীর চারপাশ দিয়ে বেশ পানি হতো। এমন পানি হতো যে দশ বার জন মানুষ একের উপর এক উঠলেও ডুবে যাবে। যাই হোক বেশ কিছু সময় আমরা সেখানে ছিলাম। পরবর্তীতে আমরা সেই বাড়ী বিক্রি করে দিয়ে চলে আসি। কিন্তু যতদিন ছিলাম ঐ বাড়ীতে এই বর্ষার ম,য় আসলে যথন পানি নেমে যেত তখন আমরা ছোট ছোট জাল পেতে দিয়ে মাছ ধরতাম।আর মাছ ধরার জন্য বাবা আগে থেকেই বেশ কিছু জাল বুনে রাখতো।

তখন সেই জালে ধরা পড়তো পাঁচমিশালী নানা রকমের মাছ। পুটি, কাঁচকি, মলা, চান্দা, টাকি আরও যে কত কি সেটা আমার মনে নেই। শুধু মনে আছে যখন মাছ ধরতে নামতাম তখন এই মাছগুলো জালে ঝাকেঁ ঝাঁকে ধরা পড়তো। আর সেই মাছ আমরা বালতি করে ভরে ভরে ঘরে তুলতাম। তখন মা সেই মাছ গুলো আমাদের কে ভূনা করে দিতো। এবং বাকী মাছ গুলো কে খুব সুন্দর করে ধুঁয়ে শুটকী বানাতো। বেশ কিছুদিন ধরে আমরা আবার সেই শুটকী মাছ খেতাম।আবার আত্মীয় স্বজনকেও দিতাম।

সেই মাছগুলো যখন ঝাল ঝাল করে ভূনা করা হতো তখন শুধু মাছ দিয়েই দু তিন প্লেট খাদ থাওয়া যেত অনায়াসে। বেশ স্বাদ ছিল সেই মাছগুলোতে। তবে একটি কথা আপনাদের সাথে শেয়ার না করলেই কিন্তু না। আমার কিন্তু দারুন লাগতো মাছ ধরতে। জাল বিছিয়ে এমন করে মাছ শুধু তখনই ধরে ছিলাম। তবে শুধু কিন্তু আমরা না। আসে পাশে যত বাড়ীঘর ছিল এই সময় আসলে সবাই কিন্তু মাছ ধরার জন্য প্রস্তুতি নিত আর মাছ ধরে নিজের ঘরে তুলতো। তাই তো এমন বর্ষার সময় আসলে কেন জানি সেই মাছ ধরার স্মৃতিগুলো ভুলতে পারি না।

শেষ কথা

সত্যি বলতে মুছে যাওয়া দিন গুলো আমায় যে পিছু ডাকে। তাই তো মনে ইচ্ছে জাগে একবার যদি সুযোগ পেতাম তাহলে আবার শৈশবে ফিরে যেতাম। আপনাদের ইচ্ছে কি একটু জানাবেন তো। অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের মতামতের।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

Twitter_Banner_24.webp

Sort:  
 4 days ago 

ঠিক বলেছেন আপু পাঁচমিশালী মাছের চচ্চড়ির স্বাদ অন্যরকম হয়।ছোট মাছগুলো খেতে আমার খুবই ভালো লাগে। আপনাদের বাড়ির পাশে চারদিকে পানি জমতো।আর যখন সেই পানি কমে কমে যেত এখন আপনারা মাছ ধরতেন জাল দিয়ে এবং আপনাদের বাসায় ঝাল ঝাল করে সেই রান্নাও করা হতো এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 3 days ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 4 days ago 

বাড়ির আশেপাশে জাল দিয়ে মাছ ধরতে কিন্তু বেশ ভালই লাগে। ছোটবেলায় আপনাদের বাড়ি আশেপাশে পানি জমতো আর সেখানে বাবার সাথে অনেক সুন্দর ভাবে মাছ ধরতেন। তবে এই পোস্টে আপনি যে পাঁচমিশালি মাছের নাম বললেন এই মাছগুলো এখন খুব কমই পাওয়া যাচ্ছে। বলতে পারেন এগুলো পাওয়া যায় কিন্তু সবগুলোই চাষ করা আগেকার মতো খাল বিলের পানির মধ্যে থাকা মাছ খুবই কম। তবে গ্রাম অঞ্চলগুলোতে এখনো বেশ ভালো পাওয়া যায়। খুবই ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্ট পড়ে ধন্যবাদ।

 3 days ago 

আসলেই এখন আগের মাছগুলো খবই কম পাওয়া যাচেছ। ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 4 days ago 

আবারো ছোটবেলার কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন। ছোটবেলা থেকে এভাবেই মাছ ধরা অনুভূতি আমারও রয়েছে। স্বামী ও বেশ অনেকদিন মাছ ধরেছি ছোটবেলায় আব্বুর সাথে। যাহোক অনেকদিন পর অতীতের বেশ কিছু স্মৃতি স্মরণ করার সুযোগ পেলাম আপনার গল্প পড়ে।

 3 days ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।

 4 days ago 

সত্যি আপু বর্ষার পানি যখন নেমে যেত তখন নদীতে অনেক মাছ পাওয়া যেত। আর ছোট ছোট জাল দিয়ে মাছ ধরার সেই সুন্দর স্মৃতি গুলো এখনো চোখে ভেসে ওঠে। আপু আপনার শৈশবের স্মৃতি সম্পর্কে জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো।

 3 days ago 

ধন্যবাদ আপু এমন স্মৃতিচারনমূলক মন্তব্যের জন্য।

 4 days ago 

আপু আপনার শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি ও শৈশবের মাছ ধরার গল্প পড়ে আমারও সেই ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেল। যখন বন্যা হত বাড়ির উঠোনে গামছা দিয়ে এরকম ছোট ছোট মাছ ধরেছি অনেক। তবে এরকম ছোট ছোট পাঁচমিশালী মাছের চচ্চড়ি আমাদের শিপু দারুণ পছন্দ করে। আপনার মায়ের মত আমার মা ও খুবই চমৎকার রান্না করে এই গুড়া মাছের চচ্চড়ি।

 3 days ago 

আপু ভালো লাগলো আপনার এমন সুন্দর শৈশবের কথা জেনে। ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তবের জন্য।

 2 days ago 

আমার মনে হয় শুধু আপনি না আপনার মত আনাদের সবারই মনে হয় শৈশবের দিনগুলো পিছুটানে। মন চায় বারবার আবার শৈশবের দিন গুলোতে ফিরে যাই। কিন্তু সেটা সম্ভব না কারণ যেটা অতীত হয়ে গেছে সেটা আর কখনোই বর্তমানে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। শৈশবের মাছ ধরার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো আমি অনেক এই ভাবে মাছ ধরেছি। ধন্যবাদ আপু দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 days ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 days ago 

শুকরিয়া আপু।

 2 days ago 

ইস্ আপু সেই কথা আবার মনে করিয়ে দিলেন। কি দারুন মজা লাগতো তখন মাছ ধরতে। আর মা ও সেই মাছগুলো কে বেশ সুন্দর আর ঝাল ঝাল করে রান্না করতেন আমাদের জন্য। এমন সুন্দর করে সে দিনের কথা স্মরন করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

 2 days ago 

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 60736.77
ETH 2370.72
USDT 1.00
SBD 2.63