ট্রাভেল পোস্ট- "ব্যাস্ততা আমায় দেয় না অবসর" II written by @maksudakawsarII
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই? আশা করি আমার প্রিয় বন্ধুরা সবাই বেশ ভালো এবং সুস্থ আছেন। আর সুস্থ থাকাটাই যে এখন বড় নিয়ামত। আমিও বেশ আছি আলহামদুলিল্লাহ্। প্রতিদিন আপনাদের মাঝে আসা যাওয়ার মাঝেই বেশ আনন্দ খুঁজে পাই। খুজেঁ পাই প্রশান্তি। জীবনের এবং জীবিকার তাগিদে আমাদের যেন ছুটে চলার শেষ নেই। হোক সেটা শীত বা গরম। আজকাল যেন মানুষ জন ঘরেই বসে থাকতে চায় না। চায় না সময় কে অপচয় করতে। আর সবার মতই আমি। বসে থাকতে পারি না। খুঁজে খুঁজে কাজ বের করি। এই যেমন বেশ জরুরী কাজে সেদিন বেশ রাতেই চলে যেতে হলো রাতের ট্রেনে যশোর। কি আর করার এক দিনের জন্য চলে গেলাম।
" ব্যাস্ততা আমায় দেয় না অবসর "
" ব্যাস্ততা আমায় দেয় না অবসর "
Banner credit -@maksudakawsar
Source
এই তো গত কয়েকদিন আগে বিকেলে হঠাৎই ফোন আসলো যে আমার খালার শরীরটা ভালো নেই। শুনেই বেশ মন খারাপ হয়ে গেল। কারন আমার মা তো নেই। যতটুকু মায়ের আদর পাই তা সেই খালাদের কাছ থেকেই পাওয়া। আর সেই জন্যই মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেল। তাই সবার সাথে আলোচনা করেই চলে গেলাম রাতের ট্রেনে যশোর। ভাবলাম যে পরদিন যেহেতু শুক্রবার তাই বিকেলই ঢাকায় ফেরা যাবে। যদিও সেদিন কমলাপুরে ট্রেন আসতে কিছুটা দেরি করেছিল। কিন্তু তাতে কি। আমরা তো রাতের ট্রেনেই যাচ্ছি আর পৌঁছাবো সেই সকালে। তাই একটু অপেক্ষা করেই উঠে পড়লাম কমলাপুর হতে যশোর-বেনাপোলের ট্রেনে।
যেহেতু আমি ট্রেনে উঠলে সব সময় বাহিরের প্রকৃতি দেখার জন্য জানালার পাশেই সিট বুকিং দেই তাই এবারও তাই করলাম। জানালার পাশে বসে রাতের ঢাকা দেখতে কিন্তু দারুন লাগছিল। তো ট্রেন চলছে ঝপার ঝপ। বাহিরের প্রকৃতি দেখতে দেখতে যাওয়া। হঠাৎ সামনের স্টেশনের দিকে চোখ যেতেই যেন মনটা খারাপ হয়ে গেল। এই কন কনে শীতের মধ্যে স্টেশনে কি করে মানুষ খোলা আকাশের নীচে ঘুমিয়ে আছে? তাও আবার কোন রকমের কাঁথা কম্বল ছাড়া।
যেহেতু রাতের জার্নি তাই একটু ঘুমিয়েই পড়েছিলাম। শেষ রাতের দিকে ঘুম ভাঙ্গলো। তাও আবার হার্ডিজ ব্রীজে উঠার পর। আর হার্ডিজ ব্রীজ হতে যমুনা নদী দেখতে কি যে দারুন লাগছিল। সেটা হয়তো আপনারা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করবেন না। আশে পাশের হাজারও আলো গুলো নদীর পানি গুলো কে চকচকে করে দিল। যাই হোক রাতের হার্ডিজ ব্রীজ দেখতে দেখতে কখন যে ট্রেন ছেড়ে দিল সেটাই তো বুঝলাম না। আর ঝুুকুর ঝুকুর আওয়াজে ট্রেন যাচেছ তার নিজের গন্তব্যে।
কিছু দূর যেতে যেতে চোখে পড়লো কুয়াশায় ঢাকা পদ্মা সেতু। কুয়াশায় ঢাকা পদ্মা সেতু দূর থেকে তো দেখাই যাচ্ছিলো না। বেশ কিছুক্ষন পর যখন চোখে পড়লো সেই বিখ্যাত পদ্মা সেতু তখন কিন্তু ফটোগ্রাফি করতে আর ভুল করিনি। বেশ দারুন একটি ব্রীজ হয়েছে বাংলার বুকে। সেটা কুয়াশায় ঢাকা ভোরের আলোতেই বেশ বুঝা গেল। আর সাথে তো ছিল ওয়াটার প্লান্ট। ঝকঝকে আলো দিয়ে যেন ওয়াটার প্লান্ট এর সৌন্দর্য আরও বেশী বাড়িয়ে দিল। আর এসব সুন্দর সুন্দর জিনিস গুলো দেখে তো আর চোখ ফেরানো গেল না।
তবে একটি কথা না বললেই নয়। শীতের ভোরে সূর্য উদয় দেখতে যেমন দারুন লাগে, তেমনি করে দারুন লাগে ভোরের প্রকৃতি দেখতে। ট্রেনের জানালায় বসে এসব দৃশ দেখে বার বার মনে হয় হাজারও বাংলার গানের কলি। এত অপরূপ বাংলার প্রকৃত সৌন্দর্য কে উপভোগ করতে হলে আমাদের কে অবশ্যই গ্রাম বাংলার পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়াতে হবে। ভোরের সূর্য উঠা থেকে শুরু করে সেই সূর্য ডোবা পর্যন্ত সবুজ শ্যামল গ্রাম বাংলা যেন এক অপরূপ রূপে সেজে উঠে।
এমন সুন্দর প্রকৃতি দেখতে দেখতে কখন যে পৌঁছে গেলাম নিজের গন্তব্যে সেটাই যেন বুঝতে পারলাম না। তবে মাঝে যে এত সুন্দর সুন্দর ভোরের দৃশ্য গুলো স্মৃতি হিসেবে সাথে করে নিয়ে নিলাম আপনাদের জন্য। তবে একথা না বলেই নয়। কেউ যদি বাংলার সত্যিকারের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে চায় তাকে অবশ্যই ট্রেনে ভ্রমন করতে হবে।
শেষ কথা
শেষ কথা
মাঝে মাঝে কারনে বা অকারনে আমাদের ভ্রমনে বের হওয়া উচিত। তাতে করে যেমন মনটা বেশ ভালো লাগে তেমনি করে মনের ভিতর জমা থাকা কষ্ট গুলোও দূর হয়ে যায়। সেই সাথে উপভোগ করা যায় বাংলার অপার সৌন্দর্য।
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপু আপনার খালা অসুস্থ খুবই খারাপ লাগলো। আসলে ঠিক বলেছেন আমাদের মায়ের সাথে সাথে খালাও মায়ের মত আপন। তবে বেশি ভালো লেগেছে আপনি আপনার খালাকে দেখার জন্য ট্রেন জার্নি করে যশোর গিয়েছেন। বিশেষ করে ট্রেন থেকে আবার বেশি কিছু ফটোগ্রাফিও করেছেন। ভোরের সূর্য উদয় হওয়ার মুহূর্ত কখন দেখেছি মনে নেই। মনে হয় লাস্ট কক্সবাজার যখন গিয়েছিলাম তখনই দেখেছিলাম। তবে আপনার মুহূর্তটাও বেশ ভালো ছিল।
ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর এবং সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
আপনার খালার সুস্থতা কামনা করছি আপু। অসুস্থ খালাকে দেখতে যশোর গিয়েছিলেন। সেই যশোর যাওয়ার ট্রেন ভ্রমণটি অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, আপনার লিখনিতে। আপনি ঠক বলেছেন, ট্রেন ভ্রমণে জানালার পাশে বসলে গ্রাম বাংলার অপরুপ সৌন্দর্য দেখা যায়। ভালো লেগেছে আপনার ট্রেন ভ্রমণের পোস্টটি। ধন্যবাদ আপু শেয়ার দেয়ার জন্য।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
তা কত ঘন্টা ছিলে এই জার্নি? রাতে উঠলাম ন ট্রেনে কিন্তু সকালের সূর্যদয় ট্রেনে হলো। যাই হোক আপনার খেলার জন্য বেশ খারাপ লাগলো। যাদের মা নেই তাদের জন্য খালা মায়ের থেকেও বেশি হয়। যে ঠিক বলেছেন মাঝে মাঝে এমন ভ্রমনে বের হলে ভেতরের জমে থাকা কষ্টগুলো ঝরে যায়।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আপু যখন কাছের মানুষগুলো অসুস্থ হয় তখন তার থেকে খারাপ লাগার ব্যাপার আমি মনে করি আর কিছুই হয় না। আপনার মা নেই কিন্তু আপনার খালা আপনাকে বেশ আদর করে তাই খালার অসুস্থতা শুনে আপনার নিজেও অনেক খারাপ লাগলো। তাই তাড়াতাড়ি ওখানে চলে যাওয়ার জন্য রওনা দিলেন। যেতে যেতে ট্রেনের মধ্যে জানালার পাশে সিট নেওয়ার কারণে বেশ সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো উপভোগ করতে পারলেন। বিশেষ করে পদ্মা সেতুর পাশে যাওয়ার সাথে সাথে ছবি তুলতে ভুললেন না কিন্তু। এটা দেখে বেশ ভালই লাগলো। যাইহোক আপনার খালার জন্য দোয়া রইল যাতে উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।