গল্প পোস্ট-প্রথম ভালোবাসা কখনও ভুলা যায় না-১ম পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই বেশ ভালই আছেন। আমিও বেশ ভাল আছি। বেশ ব্যস্তময় সময় যাচ্ছে। তবু চেষ্টা করে যাচিছ আপনাদের সাথে নিজেকে যুক্ত রাখতে। কারন আপনারাই যে আমার পরিবার।

ভালোবাসা এমন একটি শব্দ। যে শব্দটির অর্থ সহজেই বিশ্লেষন সহজেই করা যায় না। ভালোবাসা গভীর যার গভীরতা মাপা যায় না। ভালোবাসা আসে স্বর্গ থেকে। দুনিয়ার সব কিছু ভুলে গেলেও কেউ আজও তার প্রথম ভালোবাসা কে ভুলতে পারে নি। আর পারবেও না। ভালোবেসে প্রিয় মানুষ টিকে যদি নাইবা পায় তবুও ভালোবাসা রয়ে যায় মনের গভীরে। রয়ে যায় স্মৃতিতে। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে তেমনি একটি ভালোবাসার গল্প নিয়ে চলে আসলাম। আশা করি আমার আজকের গল্পটাও আপনাদের ভালো লাগবে।

প্রথম ভালোবাসা কখনও ভুলা যায় না.png

ছবি সোর্স
Made By-@maksudakawsar

রাতুল একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। পড়াশুনায় বেশ মেধাবী একজন ছাত্র। জীবনে কোন ক্লাসে দ্বিতীয় হয়নি। সে বেশ লাজুক ছেলে। স্কুল বা কলেজ যেখানেই পড়াশোনা করেছে কোন দিন কোন মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকায়নি। সে পড়াশুনা ছাড়া অন্য কিছুকে কম প্রাধান্য দেয়। তাই এলাকায় খুব বেশী একটা বন্ধু বান্ধব তার নেই। তবে বন্ধু বান্ধব না থাকলেও আসে আশের দু চার ঘর কিন্তু রাতুল এর বেশ পরিচিত।

নিপা। রাতুলদের পাশের বাসায় থাকে। সে এবার এইচ এস সি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। রাতুল আর নিপার বেড়ে ‍উঠা এইক সাথে। কিন্তু বড় হয়ে যাওয়ায় রাতুল বা নিপা তারা কেউ কারো সাথে তেমন কথা বলে না। যদিও বা কোনদিন দেখা হয়ে যায় ঐ হায় হেলো পর্যন্তই তাদের কথা। এর বেশী নয়।তবে দুই পরিবারের মধ্যে কিন্তু বেশ ভালো একটি সম্পর্ক । এক পরিবারের মানুষ অন্য পরিবারের পাতিলের খাবার খায়। মাঝে মাঝে রাতুলের সাথে নিপার দেখা হয় কিন্তু রাতুল বা নিপা কেউ কারো দিকে ভালো করে তাকায়ও না। দুজনেই অনেক লাজুক স্বভাবের।

এদিকে রাতুলের বড় বোনের বিয়ের কথা ফাইনাল হয়ে গেছে। ছেলে বাহিরে থাকে। বিয়ের পর রাতুলের বোন কেও নিয়ে যাবে। তাই বেশ ধুমধাম করেই রাতুলের বোনের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। গায়ে হলুদ থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রোগ্রামের কাজ দিয়ে দেওয়া হয়েছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের উপর। তাই বেশ আলোক সজ্জা দিয়ে সাজানো হয়েছে রাতুলদের বাড়ী। যাই হোক আজ রাতুলের বোনের হলুদ সন্ধ্যা। সবাই বেশ সেজেছে। আবার সবাই বেশ আনন্দও করছে। হলুদের অনুষ্ঠান চলছে। হলুদ সন্ধ্যা আসা প্রতিটি মেয়েই বেশ সুন্দর সাজে সেজেছে আজ।

এদিকে রাতুললের উপর দায়িত্ব পড়েছে হলুদ সন্ধ্যার আগত মেহমানদের কিছু সুন্দর ফটোগ্রাফি করার। যারা রাতুলের বোনের গালে হলুদ ছোয়াবে তাদের প্রত্যেকের ফটোগ্রাফি করতে হবে রাতুল কে। তো রাতুল বেশ আগ্রহের সাথে তার উপর অর্পন করা দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু হঠাৎ রাতুলের ক্যামেরায় ভেসে আসলো এক অপরুপ সুন্দরী নারীর ছবি। রাতুল যেন কিছুতেই সেই মেয়েটির দিক থেকে চোখ ফেরাতে পারছে না। হঠাৎ কার ডাকে যেন রাতুল তার ধ্যান থেকে ফিরে আসলো। রাতুল পরক্ষনেই বুঝতে পারলো যে, এটা হলো নিপা। কিন্তু রাতুল তো নিপাকে এমন করে কোন দিন দেখেনি। আজ তো নিপার দিক থেকে চোখ ফেরাতেই পারছে না রাতুল।

এদিকে রাতুলের বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হলো। রাতুলের বোন তার স্বামীর সাথে বাহিরে চলে গেছে। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাতুলও কলেজে যাওয়া শুরু করে দিয়েছে। তো সেদিন রাতুল দেখে নিপা রাস্তায় রিক্সার সামনে দাড়িয়ে আছে। তো রাতুল একটি রিক্সা ঠিক করে নিপাকে রিক্সায় তুলে নেয়। যদিও নিপা প্রথমে ‍উঠতে চায় নাই। কিন্তু রাতুলের জোড়াজোড়িতে উঠতে হলো। রাতুল রিক্সায় যেতে যেতে নিপাকে বলে শোন কাল থেকে আমার সাথে যাবি। আমি যাওয়ার পথে তোকে নামিয়ে দিবো। নিপা রাতুল কে কিছু বলে না। বাসায় ফিরে নিপা তার মাকে সব খুলে বললে তার মাও কোন আপত্তি করে না। তারপর থেকে নিপা প্রতিদিন রাতুলের সাথে কলেজে যায়। রাতুল নিপার সাথে অনেক গল্প করলেও নিপা শুধু শোনে

এভাবেই যাচ্ছিলো দিন। তো একদিন রাতুল নিপার হাতে একটি প্যাকেট দিয়ে বলে দে ধর এখানে তোর প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর এবং হিমু আছে পড়েনিস। ওটা তোর জন্য। আর বইয়ের ভিতরে তোর জন্য আরও একটা জিনিস আছে। ওটা দেখে কাল আমায় জানাবি কেমন হলো। আবার এসব কথা আন্টিকে বলিস না বুন্দি। নিপা তো ভয়ে অস্থির।রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে নিপা সেই প্যাকেট টি খোলে। প্যাকেটের ভিতরে বইয়ের মলাটে একটি রঙিন খামও পায় নিপা। নিপা সেই খামটি আস্তে আস্তে খুলে এবং খামে রাখা চিঠিটিও পড়ে। সেদিন সেই চিঠি পড়ে নিপা কেঁদে কেঁদে অস্থির। সারারাত ঘুমতে পারেনি। (চলবে)।

কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের গল্পটি ? অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের অনূভূতি গুলো জানার।
সবাই ভাল এবং সুস্থ্য থাকবেন।

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

@maksudakawsar

image.png

Sort:  
 last year 

যে ছেলে তার ভালোবাসার মানুষকে "এবং হিমু" উপহার দেয়, সে ছেলেকে চোখ বন্ধ করে ভালোবেসে ফেলা যায়।রাতুল এবং নিপার ভালোবাসার পরিণতি জানার অপেক্ষায় রইলাম। তবে প্লিজ দিদি এইবার অন্তত গল্পে মিলনের কথা লিখবেন। আপনি বিরহ এত সুন্দর লেখেন চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে যায়। এবার কিন্তু মিলনের অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

আমি জানিনা আপু কি আছে রাতুল আর নিপার ভাগ্যে। তাই অপেক্ষা করুন পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য। ধন্যবাদ দিদি এত সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।

 last year 

আপনার গল্পটা অনেক পড়ে অনেক ভালো লাগল।সত্যি সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো ভুলা যায় না। রাতুল তার বোনের হলুদের ছবি তুলতে গিয়ে হয়তো তার ভালোবাসার মানুষকে পেয়ে গেল। রাতুল যেহেতু নিপাকে চিঠি দিয়েছে। আসলে রাতুল নিপাকে ভালোভেসে ফেলেছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি অপেক্ষা করছে।

 last year 

জানিনা তো। তবে দেখি আগামী পর্বে কি হয়। নিপা কি করে? ধন্যবাদ আপু।

 last year 

রাতুল আর নিপার গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। সামনে দুজনের পরিনতি জানার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

হ্যাঁ একটু অপেক্ষা করুন। সামনে অনেক বড় কিছু অপেক্ষা করছে। ধন্যবাদ আপু।

 last year 

প্রথমেই বলি এটা কিন্তু আপনি ঠিকই বলেছেন প্রথম ভালোবাসা কখনো ভুলা যায় না। রাতুল ছিল খুবই লাজুক একটা ছেলে। সে ছোটবেলা থেকে কোন মেয়ের দিকে তাকায়নি। তার বোনের হলুদ সন্ধ্যায় নিপাকে দেখে সে চোখ ফেরাতে পারছিল না। এরপর থেকে রাতুল নিপাকে বলে তার সাথে যাওয়ার জন্য। একদিন রাতুল নিপাকে একটা গিফট বক্স দেয় যেখানে বলেছিল হুমায়ুন আহমেদ এর এবং হিমু আছে পড়তে। এরপর বলেছিল আরও একটা জিনিস আছে বইয়ের মধ্যে। বইয়ের মধ্যে খামের ভেতর একটা চিঠি ছিল সেই চিঠিটা পড়ে নিপা কেন কান্না করেছিল তা ভাবছে। পরবর্তী পর্বে কি হবে তা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।

 last year 

জি ভাইয়া নিপার কষ্ট আর কান্না দেখে আমিও হতবাক কেন কাঁদলো? তাই অপেক্ষা করুন গল্পটির পরবর্তী পর্ব দেখার জন্য।

 last year 

খুব সুন্দর একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প লিখেছেন আপু। আপনার লেখার হাত ভালো মনে হচ্ছে। কারণ গল্পটির উপস্থাপনা খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। নিপা এবং রাতুলের প্রেমের শুরু হল মনে হয়। কিন্তু নিপা চিঠিটি পড়ে কাঁদলো কেন। সেও কি মনে মনে রাতুলকে পছন্দ করত। যাই হোক পরবর্তী অপেক্ষায় রইলাম। খুব ভালো লেগেছে গল্পটি।

 last year 

সেটা তো আমিও ভাবছি। নিপা চিঠিটা পড়ে কাঁদলো কেন? দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি আছে নিপার ভাগ্যে। ধন্যবাদ আপু।

 last year 

ঠিক বলছেন আপু আসলেই প্রথম প্রেম কখনো ভুলার মত নাই। সেটা তো আপনিও জানেন আমিও জানি সবার জীবনে প্রেম আসে কিন্তু অনেক বার আসে সেটা স্বাভাবিক প্রথম প্রেমকে কখনো ভুলা সম্ভব না। দেখি রাতুল আর নিপার জীবনে কি ঘটে। রাতুল তো নিপাকে প্রেমপত্র দিল কিন্তু সেটার পরিবর্তে কি উত্তর দেয় সেটা জানা হলো না পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

 last year 

আমি কি করে জানবো। আমার জীবনে কি প্রেম এসেছে নাকি? ধন্যবাদ আপু।

 last year 

আসলেই এটা কিন্তু সত্যি যে প্রথম ভালোবাসা কখনোই ভোলা সম্ভব না। মনের গভীরে আজীবন থেকে যায়। ভালোবাসার মানুষ কাছে থাকুক বা না থাকুক তার স্মৃতি আজীবন রয়ে যায়। আপনি খুবই সুন্দরভাবে নিপা এবং রাতুলের গল্পটি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। অনেক কিছুই বুঝতে পারলাম আমি তো শুধু ভাবছি কেন রাতুলের দেওয়া চিঠিটি পড়ে নিপা সারারাত কান্না করেছিল এবং ঘুমায়নি। তাদের ভালোবাসার শেষ পরিণতি কি হবে তা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম আপু। আশা করছি শেষে খুবই ভালো হবে।

 last year 

আপু আমিও ভাবছি নিপা কেন সারারাত কান্না করেছিল? তাইতো একটু অপেক্ষা করতে হবে।

 last year 

ভালোবাসা গভীর যার গভীরতা মাপা যায় না।

আমার ও এমন মনে হয় আপু,আসলেই ভালোবাসার কোনো নির্দিষ্ট পরিমাপ নেই।প্রথম ভালোবাসা পরিপূর্ণতা না পেলে ও তা অনেক স্মৃতিময় ও ভালো লাগার।যাইহোক আপনি খুব সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন।চিঠির রহস্য পরের পর্বে জানা যাবে ,ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

 last year 

জ্বি আপু চিঠির বিষয় আগামী পর্বেই জানা যাবে। ধন্যবাদ প্রসঙ্গে একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 67108.48
ETH 3477.28
USDT 1.00
SBD 2.72