ভাইরাস জ্বরে কাটানো সেই দিনগুলি 10% Beneficiary To @shy-fox 🦊 & 5% @ abb-school📚

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা। সবাই কেমন আছো? আশা করি তোমরা সকলেই ভাল আছো? আমিও তোমাদের দোয়ায় ও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি।
বেশ কিছুদিন যাবৎ অসুস্থ্যতা আর ব্যস্ততার পর আজ আবার তোমাদের মাঝে আসলাম । কারন তোমাদের ভালবাসায় আমি সিক্ত। যাক বেশি বক বক না করে আমি তোমাদের সাথে আজ আমার সাথে ঘটে যাওয়া বিগত কয়দিনের কিছু গল্প শেয়ার করব।

fever-310721_1280.png
কপিরাইট ফ্রি ছবি সোর্স

সেদিন কেন যেন শরীরটা সকাল হতে অসুস্থ্য বোধ করছিলাম। তবুও প্রতিদিনের মতই আমি সেদিনও অফিসে গেলাম। সকাল সকাল অফিসে পৌছে নিয়ম মত এক কাপ চা খেয়ে নিলাম। কিছুক্ষন পর অনুভব করলাম কেন যেন শরীর টা ভেঙ্গে নিয়ে আসছে। বুঝতে পারলাম ভাইরাস মহোদয় আমাকেও ছেড়ে কথা বলবে না। অফিসে আর বেশীক্ষন বসতে পারলাম না। তাড়াতাড়ি অফিস হতে বাসায় আসলাম। বাসায় পৌছেঁ কোন রকমে কাথাঁ পেচিয়ে শুয়ে পড়লাম।

fever-3590869_1920.jpg
কপিরাইট ফ্রি ছবি সোর্স

বাবাগো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। থার্মোমিটারে তখন 104 ডিগ্রী জ্বর ছুঁই ছুঁই। সাথে আবার শুরু হলো ঠান্ডা আর কাশি। ভাবলাম কোন রকমের কোন এন্টিবায়োটিক আমি সেবন করবো না। আগে জ্বর দেখি দুই তিন দিন। এদিকে স্বামী মহোদয় আমার জ্বর দেখে অস্থির হয়ে আছে। কখনও লেবুর শরবত, গরম পানি, আদা, ফলমুল দিয়ে আমার সেবা করতে লাগলো। আবার এরই মধ্যে জ্বর বেড়ে গেলে শরীর তো মুছে দেওয়ার বিষয় তো আছে।
আহারে বেচাঁরা দিন নাই রাত নাই কি সেবা টাই না আমাকে করছে। বাসায় মাত্র আমরা দুইটা মানুষ। আর কেউ নেই । তাই গভীর রাতে যখন শরীরে জ্বর বেড়ে যায় তখন মানুষটি ঘুম ভেঙ্গে আমার সেবা করা শুরু করে। আবার এর মধ্যে রান্না বান্না ও করতে পারছি না। কখনও বোনের বাসার খাবার, কখন ও বা হোটেল হতে আনা খাবার । এই ভাবে কেটে যাচ্ছে আমার জ্বর নিয়ে অসুস্থ্য অবস্থায় কাটানো দিন গুলি।
এরই মধ্যে জ্বর না কমায় চিকিৎসকের পরামর্শে কোভিড-19 টেস্ট করি। কিন্তু কোভিড-19 ও নেগেটিভ আসে। জ্বর আর কাশিতে হঠাৎ একদিন আমার শারীরিক অবস্থা অনেকটা খারাপ হয়ে যায়। পাশেই আবার খিদমাহ্ হাসপাতাল, তাই কোন রকম দেরী না করে চলে গেলাম হাসপাতালের ইর্মাজেন্সীতে । ডিউটি ডাক্তার ভালভাবে চেকাপ করে আমাকে নিবুলাইজড করল। তারপর প্রয়োজনীয় সব ঔষুধপত্র দিয়ে দিলো।

clinical-thermometer-1935504_1920.jpg
কপিরাইট ফ্রি ছবি সোর্স

কি যে দূর্বিসহ ছিল সেই সময়গুলো। এখনও মনে পড়লে মনটা খারাপ হয়ে যায়। এই ভাইরাস জ্বর অনেক খারাপ, জ্বরের সাথে সাথে সমস্ত শরীর কে নিস্তেজ করে দিয়ে যায়। মুখের স্বাদ চলে যায় মেজাজ টাও খিট খিটে হয়ে যায়।
তবুও সব কিছুর পড়ে যেটা অনেক ভাল লেগেছে আর যেটা খুব অনুভব করছি সেটা হলো আপনজনের সেবা। বিশেষ করে যাদের কথা না বললেই নয়।
সবার আগে বলতে হয় আমার স্বামীর কথা। যে মানুষটি সারাটা রাত দিন কাটিয়েছে আমার সেবায়। অস্থিরতা প্রকাশ করছে আমার অসুস্থ্যতায়। যার কয়েকটি রাত কেটেছে আমার সেবায় নিয়োজিত থেকে। সত্যিই মহান আল্লাহর এ এক অমূল্য উপহার আমার জীবনে।
এরপর যাদের কথা না বললে আমার নিজের সাথে বেঈমানী করা হবে। হ্যাঁ তারা হলো আমার ভাই বোন। আমার বাবা মা বেচেঁ নেই। তাই ভাই বোন গুলোও আমাকে অনেক ভালবোসে। এই ভাইরাস জ্বর আজ আমাকে বুঝিয়ে দিল যে, আমার ভাই বোনেরা আমাকে কতটা ভালবাসে।

আজ আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ।

আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।

আমার পরিচিতি

আমি মাকসুদা কাউছার, ঢাকার খিঁলগাও এলাকায় বসবাস করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 60855.42
ETH 3369.56
USDT 1.00
SBD 2.50