নাটক রিভিউ- ভিতরে বাহিরে ||Drama Review|

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম

নিজেকে নতুন রূপে তুলে ধরার মত এত আনন্দ হয়তো বা অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না। আমরা প্রত্যেকেই চাই যে আমাদের ক্রেয়েটিভিটি গুলো অন্যের মাঝে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে। হয়তো এর জন্যই কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের কে সাজাই নতুন রূপে। আমিও প্রায় সকল সময়ই চেষ্টা করে যাই যে আমি যেন নতুন নতুন ব্লগগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করে যেতে পারি। হয়তো ব্যাস্ততার কারনে তা হয়ে উঠে না। তবে আজ কিন্তু আবার কিছুটা ভিন্ন রকমের ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের মাঝে।

নাটক আমরা সবাই দেখি। তার উপর আমাদের দেশের নাটক গুলো কিন্তু বেশ দারুন হয়। কিছু কিছু নাটক কিন্তু একেবারে মানের সাথে মিশে যায়। বার বার দেখতে ইচ্ছে করে। বর্তমানে আমাদের দেশে যে কজন অভিনয় শিল্পী আছে তাদের মধ্যে অনেক জুটি কিন্তু বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আজ আমি তেমনি একটি জুটির নাটক রিভিউ আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। আশা করি আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।

নাটক রিভিউ-ভিতরে বাহিরে

Screenshot_9.png

প্রাপ্তি: YouTube

নাটকের কিছু তথ্য

নামভিতরে বাহিরে
পরিচালকমিজানুর রহমান আরিয়ান
রচনাএস কে শাহেদ আলী
অভিনয়ফারহান আহমেদ জোভান, তটিনী, জাহেদ বাগদাদী আরও অনেকে
দৈর্ঘ্য১ ঘন্টা ৭ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড
মুক্তির তারিখ২০ই জানুয়ারী/২০২৪
ধরননাটক
ভাষাবাংলা
দেশবাংলাদেশ
প্রচারইউটিউব

চরিত্র

★ জোভান- নয়ন
★তটিনী - তারা

কাহিনী সংক্ষেপ

Screenshot_1.png

Screenshot_2.png

প্রাপ্তি: YouTube

নাটকের মূল চরিত্র হলো নয়ন এবং তারা একই গ্রামে থাকে এবং ছোট বেলা থেকে একজন অন্যজন কে অনেক ভালোবাসে। এমন ভালোবাসা যে বৃষ্টির রাতে অন্ধকারের মধ্যেও একজন আর একজন কে দেখতে ছুটে আসে। এ দিকে নয়নের ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা। নয়নের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে তারার অনেক চিন্তা। আবার নয়ন ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করলে কি করে পড়ালেখার খরচ চালাবে সেটা নিয়েও নয়নের অনেক চিন্তা। এদিকে নয়নের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ আসলে সে ঢাকায় যায় পরীক্ষা দিতে। পরীক্ষা দিয়ে ফিরার সময় সে তারার জন্য খুব সুন্দর এক জোড়া কানের ঝুমকা নিয়ে আসে। যেটা পেয়ে তারা অনেক খুশি হয়।

Screenshot_3.png

Screenshot_4.png

Screenshot_7.png

প্রাপ্তি: YouTube

কয়েকদিন পর নয়নের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নয়ন ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। আর নয়নের এমন সাফল্যে শুধু তারা নয় পুরো গ্রামই বেশ আনন্দিত হয়। তাই গ্রামের স্কুল থেকে নয়ন কে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। নয়ন ঢাকায় যাওয়ার সময় তারা অনেক কিছু নয়নের জন্য দিয়ে দেয়। নয়ন খুব ভালো করে তার পড়াশুনা চালিয়ে নিতে থাকে। মাঝে মাঝে গ্রামে আসে। আবার মাঝে মাঝে তারার জন্য উপহারও আনে। নয়ন প্রতিদিন তারার সাথে মোবাইলে কথা বলে। এক সময় জানতে পারে তারা অসুস্থ। তারা কে ডাক্তার দেখাতে বলা হলেও সে ডাক্তার দেখায় না। আর এমন করে চলতে থাকে নয়ন আর তারার ভালোবাসার দিন গুলো।

Screenshot_5.png

Screenshot_6.png

প্রাপ্তি: YouTube

এক সময় গ্রামে নতুন সরকারি অফিসার আসে। যদিও ভদ্র লোক প্রথম দিকে গ্রামে থাকতে চায়নি। তবে তারা কে দেখার পর তার গ্রামের প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যেতে থাকে। এদিকে সেই সরকারি অফিসার একদিন হুন্ডা চালাতে গিয়ে গ্রামের পুকুরে পরে ডুবে যেতে নেয়। আর সেখান থেকে তারা তাকে বাঁচিয়ে তুলে। এরপর তারার প্রতি ভদ্রলোকের প্রেম আরও বেড়ে যায়। এক সময়ে ভদ্রলোক তারার প্রতি উইক হয়ে পড়ে সে তারা কে ভালোসতে শুরু করে। আর তারার কথা তার পরিবারের কাছে বলে। এমনকি তারার জন্য এ গ্রামে থেকে যেতেও রাজি হয়।

Screenshot_8.png

Screenshot_9.png

Screenshot_11.png

প্রাপ্তি: YouTube

এদিকে নয়ন ঢাকা হতে পরীক্ষায় পাশ করে গ্রামে আসে। সেই খুশি তে তারা অনেক খুশি হয়। এখন মাত্র নয়নের একটি চাকরি হলেই তারা আর নয়নের বিয়েতে কেউ বাধা দিতে পারবে না। এ যেন এক মহা খুশির বন্যা বয়ে যায় তারা আর নয়নের মাঝে। এদিকে সেই সরকারি অফিসার বেশ মন খারাপ। সেও এক সময় এই গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে চায়। এদিকে নয়ন আর তারার জীবনে সুখ এসেও আর আসলো না। হঠাৎ তারা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা কে শহরের হাসপাতালে নেওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। ডাক্তার তারার সকল পরীক্ষা করে জানিয়ে দেয় তারার দুটো কিডনীই নষ্ট। এখন একমাত্র কেউ তাকে একটি কিডনী ডোনেট করলে সে বেচেঁ যাবে।

Screenshot_12.png

Screenshot_10.png

Screenshot_12.png

প্রাপ্তি: YouTube

তারাকে কিডনী দেওয়ার জন্য তারার মা বাবা এবং নয়ন রক্ত পরীক্ষা করে কিন্তু কারো সাথে তারার রক্ত মিলে না। বেশ চিন্তায় পড়ে যায় সবাই। হঠাৎ ডাক্তার সাহেব জানায় তারা কে কিডনী দেওয়ার মত একজন ডোনার পাওয়া গেছে। যার সাথে তারার রক্তের গ্রুপ মিল আছে। সবাই বেশ খুশি হয়। কিন্তু ডাক্তার সাহেব জানান যে নিজের পরিবার ছাড়া বাহিরের কারও কিডনী নেওয়া আইনগত অপরাধ। তাই যিনি তারা কে কিডনী দিতে চান একমাত্র তার সাথে বিয়ে হলেই তারার বাচাঁ সম্ভব। কিন্তু তারা এই প্রস্তাবে রাজি হয় না। এইদিকে নয়ন কে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা নয়ন কে খোঁজতে তার বাসা অফিস সব জায়গায় যায়। কিন্তু তারার এমন বিপদের দিনে নয়ন কে ছেড়ে চলে যায়। তারা বেশ কষ্ট পায়। এক সময় কোন উপায় না দেখে তারা বিয়েতে রাজি হয়ে যায়, তাও তার বাবা মায়ের কথা চিন্তা করে।

Screenshot_13.png

Screenshot_14.png

প্রাপ্তি: YouTube

তারা বিয়ে করে একটি কিডনী নিয়ে বেচেঁ থাকে এবং সুখে শান্তিতে সেই সরকারি অফিসারের সাথে সংসার করতে থাকে। কিন্তু তারার মন থেকে মুছে ফেলতে পারে না নয়ন কে। কিভাবেই পারবে নয়ন যে তার জীবন। তাহলে নয়ন কেন এমন করে চলে গেল তারা কে রেখে। নাটকের শেষ দৃশ্যে নয়ন কে দেখা যায়। দেখা যায় নয়ন সেই জায়গায় যেখানে নয়ন আর তারা দেখা করতো সেই জায়গায় ঝুম বৃষ্টির মধ্যে বসে কাঁদছে। আর মাটিতে নয়ন তারা গাছ লাগাছে। সত্যি বলতে এত ভালোবাসা যার প্রতি তাকে কেন ছেড়ে গেল নয়ন? আর নয়নের এমন কান্নার দৃশ্যের মাঝেই নাটকটি শেষ হয়ে যায়।

Screenshot_16.png

Screenshot_15.png

প্রাপ্তি: YouTube

image.png

ব্যক্তিগত মতামত

আমি জানিনা আমার রিভিউ করার পর আপনারা কেউ নাটকটি দেখবেন কিনা। তবে আমি কিন্তু এ পর্যন্ত নাটকটি ১০ বারের মত দেখেছি। আমার কাছে নাটকটি অসাধারণ লেগেছে। তাই তো আমি যতবার নাটকটি দেখেছি ততবার কান্নায় বুক ভাসিয়েছি। পরিচালক নাটকটিতে একদম বাস্তবতার ছোঁয়ায় ভরে দিতে পেরেছে। দুজন মানুষের মধ্যে সত্যিকারের ভালোবাসা থাকলে এবং তারে মধ্যে কেউ বাধাঁ হয়ে দাঁড়ালে যে কি ঘটতে পারে সেটাই ফুটিয়ে তুলেছেন এখানে।একজন মানুষ কতটা ভালোবাসলে তার ভালোবাসার মানুষটির বেচেঁ থাকার জন্য এত বড় ত্যাগ স্বীকার করতে পারে সেটা নাটকটি না দেখলে বুঝা যাবে না।

ব্যক্তিগত রেটিং

১০/১০

নাটকটির লিংক

image.png

শেষ কথা

কিছু কিছু নাটক থাকে একেবারে মনের সাথে মিশে যায়। সাদিয় আজকের নাটকটিও কিন্তু আমার কাছে তেমন লেগেছে। নাটক টিতে পরিচালক শেষে তুলে ধরেছে সেদিন নয়ন কেন চলে গিয়েছিল। আজ আমি আপনাদের কে বলছি নয়ন কেন চলে গিয়েছিল সেটা জানার জন্য নাটকটি আপনারা একবার দেখেন। আশা করি নাটকটি দেখে সুন্দর একটি মন্তব্য করতে ভুল করবেন না।

image.png

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

Screenshot_1.png

Sort:  
 2 months ago 

আপু আপনি খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দিয়েছেন। যদিও এই নাটক এখনও দেখা হয়নি তবে আপনার রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। সময় পেলে অবশ্যই দেখবো। আমার কাছে নাটক দেখতে অনেক ভালো লাগে। জোভান ও তটিনীর অভিনয় খুব সুন্দর হয়েছে। সম্পূর্ণ নাটকের রিভিউ যখন সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয় তখন আর কষ্ট করে দেখার প্রয়োজন হয় না। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।

 2 months ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

আপু আপনার রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে নাটকটি একবার দেখা উচিত। কারন এতে করে নাটকের শেষ দৃশ্যে কি ঘটনা ঘটেছিল সেটা আমরা জানতে পারবো। আপনিও কিন্তু পরিচালকের মধ্যে নাটকের রিভিউতে সাসপেনশন রেখে দিয়েছেন। ধন্যবাদ এমন সুন্দর করে নাটকের রিভিউ করার জন্য।

 2 months ago 

আপনার এমন সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 2 months ago 

আপনার শেয়ার করা এই নাটকটার রিভিউ সত্যি খুব সুন্দর ছিল। আমার কাছে নাটকের পুরো কাহিনীটা ভালো লেগেছে। তবে নাটকটার রিভিউ পড়ার সময় চোখে জল চলে এসেছে। নয়ন এবং তারা দুজন দুজনকে অনেক বেশি ভালোবাসত। তবে শেষ পর্যন্ত এরকম কিছু হয়েছে দেখে অনেক খারাপ লেগেছে। আসলে সত্যি কারের ভালোবাসার মানুষ, তার ভালোবাসার মানুষটার জন্য যেকোনো কিছুই ত্যাগ করতে পারে। এই দৃশ্যটাকে অনেক বেশি সুন্দর করে নাটকটার মধ্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এটা পড়েই বুঝতে পারলাম।

 2 months ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্য পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

 2 months ago 

ভালোবাসার সম্পর্ক গুলো সব সময় এরকমই হয়ে থাকে। আমার কাছে অনেক ভালো লাগে এরকম নাটক গুলো দেখতে। এমনকি নাটকগুলোর রিভিউ পোস্ট পড়তেও আমি অনেক বেশি পছন্দ করি। আপনার আজকের শেয়ার করা নাটকের রিভিউ এত সুন্দর ছিল যে, আমার কাছে পুরোটার রিভিউ পড়ে জাস্ট অসাধারণ লেগেছে। আমার কাছে রিভিউ পড়তে যদিও ভালো লেগেছে, তবুও আমি ভাবতেছি সময় পেলে নাটকটা দেখে নেবো।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 months ago 

আপু আপনি অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। জোভানের অভিনয় গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আপনার শেয়ার করা নাটকটি এখনো দেখা হয়নি। তবে আপনার নাটকের রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 months ago 

খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার কাছ থেকে এই সুন্দর নাটকটির রিভিউ দেখে খুবই ভালো লাগলো৷ যেভাবে আপনি এই সুন্দর নাটক এর রিভিউ শেয়ার করেছেন তা খুবই সুন্দর হয়েছে৷ একের পর এক নাটকের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে৷

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.033
BTC 63773.27
ETH 2738.52
USDT 1.00
SBD 2.59