প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি রাতের নিস্তব্দতার মাঝে সবাই বেশ ভালো আছেন। আমি কিন্তু আছি কোন রকম। কারন ব্যাস্ততা মনে হয় আমায় বেশ ভালোবাসে। আর তাই ব্যস্ততা কেন জানি আমার পিছু ছাড়তে চায় না। জানি না এটা আমার ভাগ্য না কাজের ফলাফল। তবে এতটুকু বলতে পারি ব্যস্ততায় আমি এতটুকু বিচলিত হইনা। বেশ ঝামেলায় কেটে যাচেছ দিন গুলো। আজ এটা তো কাল সেটা। এর মধ্যে তো আছে অফিসের ঝামেলা্। আর এই জন্যই তো প্রতিদিন একবার করে চাকরি ছাড়ি। আর ছাড়বো নাই বা কেন? একদিকে যেমন রাস্তার পরিবেশ, আর অন্য দিকে তো আছে সরকারি অফিসের বসদের কে তোষামোদ। সব মিলিয়েই চলছে জীবন। কিন্তু সব কিছুর মধ্যেও আমাকে চলে আসতে হয় আপনাদের কাছে। নিজের মনের কথা গুলো কে শেয়ার করতে। আর তাই তো আজ আবার চলে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল ব্লগ শেয়ার করার জন্য। আশা করি আমার আজকের ব্লগটি পড়ে আপনাদের বেশ ভালো লাগবে।

সুখেরী পৃথিবী, সুখেরী অভিনয়, যতই আড়ালে রাখো, আসলে কেউ সুখী নয়- সত্যি কিন্তু তাই। প্রতিনিয়ত আমরা আমাদের চারপাশে কত মানুষ দেখি। যাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছে সারাটি জীবন শুধু সুখে থাকার অভিনয় করেই তার জীবনটা পার করে দিল। পৃথিবীর কোন মানুষেরই বুঝার উপায় নেই যে কে আসলে প্রকৃত সুখী, আর কে নয়। কারন আমাদের কে প্রতিনিয়ত সুখে থাকার অভিনয় করে যেতে হয় পরিবার আর সামাজের কাছে। পৃথিবীতে যে যত বেশী ভালো অভিনয় করতে পারে সে তত বেশী ভালো ভাবে বাঁচতে পারে। তবে এ সুখে থাকার অভিনয় শুধু নিজের জন্য নয়, সবার জন্যই করে যেতে হয়।

আমরা লক্ষ্য করলে দেখবো যে আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছে বেশ হাসি খুশি। কিন্তু আমরা শুধু তার হাসি মাখা মুখটাই দেখি। তার উচ্ছ্বাস আর উদ্দীপনাকেই দেখি। আর দেখি তার বাহ্যিক ভালো থাকাটা । কিন্তু আমরা কিন্তু একবারও ভেবে দেখি না সেই মানুষটির হাসির আড়ালে থাকতে পারে এক বিশাল কষ্ট। একবারও ভেবে দেখি না সেই মানুষটি হয় তো বা বুকে নিয়ে বেড়ায় হাজারও কষ্ট বা বেদনা। প্রতিটি মানুষের এমন কিছু কষ্ট থাকে যা সে পৃথিবীতে কারো সাথে শেয়ার করতে পারে না। কষ্টগুলো নিজের ভিতর লালন পালন করে সন্তানের মত। কারন এই কষ্ট যে শুধু তার একান্ত মনের গভীরের। এর অনুভূতি গুলো কাউকেউ বুঝানো যাবে না। কিন্তু দিন শেষে সে সব মানুষ কে দেখলে মনে হয় কতই না সুখী আর হাসি খুশি।

এমন অনেক মানুষ আছে যারা সারাটিক্ষন তার চার পাশের মানুষ গুলো কে হাসি খুশিতে মাতিয়ে রাখে। অথচ পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টটাই সে বয়ে নিয়ে বেড়াচেছ। যা তার চারপাশের মানুষগুলোর বুঝার উপায় নেই। অথবা কেউ বুঝতেও চায় না। আমরা অনেক সময় না বুঝে অন্য মানুষ গুলো বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন করে বিব্রত করে ফেলি। কিন্তু আমরা যাকে প্রশ্ন করি সে কি আমাদের সেই প্রশ্নের উ্ত্তর দিতে বাধ্য? না বাধ্য নয়। কারন হতে পারে সেই মানুষটির জীবন কষ্টে ভরা। হতে পারে আমার করা প্রশ্নটিই তার কষ্টের কারন। কারন ঐ যে একটি বিখ্যাত গানই তো আছে- হাসতে দেখ গাইতে দেখ, অনেক কথার মুখোর আমায় দেখ, দেখ না কেউ হাসি শেষে নীরবতা।

পৃথিবীর এক এক জন মানুষের কষ্ট এক এক রকমের। কেউ হয় প্রিয় মানুষটির জন্য হাহাকার করে পার করে দিচ্ছে জীবন। কেউ হয়তো ভালোবাসার মানুষটিকে পেয়েও সুখী নয়। কারো হয়তো সন্তানের অভাব ইত্যাদি ইত্যাদি। কোটি টাকার বিছানায় ঘুমিয়েও কিন্তু অনেকে বুক ভরা কষ্ট নিয়ে জীবন পার করছে। কিন্তু সেটা বোঝার মত ক্ষমতা কারও নেই। আমরা শুধু মানুষের বাহিরের চাকচিক্য দেখেই তাকে বিচার বিশ্লেষণ করতে শুরু করে দেই। কিন্তু একবারও কি তার ভিতর টা বুঝার চেষ্টা করি? না করি না। আর করার চেষ্টা ও করি না। কেবল হাসি খুশি হলেই যে তার কোন কষ্ট বা বেদনা নেই তা কিন্তু সঠিক নয়।

আবার পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা তার জীবনের সবটুকু বিলিন করে দেয় অন্যের সুখের জনে। অনেক মানুষ আছে শুধু চায় তার চারপাশের মানুষগুলো ভালো থাকুক। ভালো থাকুক তার ভালোবাসার মানুষগুলো। আর ভালোবাসার মানুষগুলো কে সুখী করতে গিয়ে সব কিছু বিলিয়ে দিয়ে নিজে যে নিঃশ্ব হয়ে গেছে তার কোন খবর তার নেই। আর এই বিষয় নিয়ে নেই তার কোন দুঃখ বা হাহাকার। শুধু আছে বুক ভরা কষ্ট। যা হয়তো পৃথিবীর কেউ দেখে না। আর সেই মানুষটি কাউকে দেখাতেও চায় না সে। সারাটা জীবন হাসি ‍মুখে থেকে নিজেকে উজার করে দেয় ভালোবাসার মানুষ গুলোর জন্য।

কিন্তু দিন শেষে সেই মানুষটিই হয়ে পড়ে নিঃস্ব। তার কষ্ট আর কেউ দেখে না বা দেখতেও চায় না। সবাই শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত জীবন কাটায়। আর নিজের কষ্ট নিজের বুকে চেপে রেখে কাটিয়ে দেয় হাসি খুশিতে সেই মানুষটি। মানুষের হাসির মাঝে যে কত দুঃখ লুকিয়ে থাকে সেটা আমরা বুঝতে চাই না। আমরা ভেবেও দেখি না দিন শেষে সেই মানুষটি কতটা নীরব আর কতটা একাকীত্ব। তাই আমাদের বুঝতে হবে সব হাসিই কিন্তু সুখের নয়। হাসি শেষে থাকে এক নীরব আ নিস্তব্দ একাকীত্ব।

সর্বোপুরি আমি একটি কথাই বলবো যে আমাদের চারপাশে আমরা এমন অনেক মানুষ দেখি যারা প্রাণঞ্চল, উচ্ছ্বল, প্রাণোবন্ত, হাসি খুশি। কিন্তু আসলে কি তারা তাই? তাদের কি কোন কষ্ট নেই? আমার মনে হয় তাদের সেই হাসির পরে হয়তো এক বুক কষ্ট আর নিরবতাই তাদের সম্বল। যা হয়তো বা আমরা আমাদের চোখে দেখি না । বা দেখার চেষ্টাও করি না কখনও। আর তাই তো বলি- হাসতে দেখ, গাইতে দেখ, অনেক কথার মোখর আমায় দেখ , দেখ না কেউ, হাসি শেষে নীরবতা।

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।