লাইফ স্টাইল- দায়িত্ব পালন করেও অনাহারে থাকা একটি দিন ||lifestyle by @maksudakawsar ||
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
দায়িত্ব পালন করেও অনাহারে থাকা একটি দিন
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে দেখি চারদিকে কেমন যেন অন্ধকার। নেই সূর্যের দেখা। আবার কেমন যেন শীত শীত ভাব। সব মিলিয়ে আজকের আবহাওয়া কিন্তু দারুন। শীতের প্রান্তি লগ্নে শীতল একটি দিন মন করে দিল বেশ প্রাণবন্ত। আবার যখন অফিসের উদ্দেশ্যে বাহিরে বের হলাম তখন তো দেখি রাস্তা ভিজে আছে। বুঝতে পারলাম যে বৃষ্টি হয়েছে। শুধু কি তাই বৃষ্টির কয়েক ফোঁটা যেন আমার শরীরেও পরলো। যাই হোক বেশ সুন্দর একটি পরিবেশে আজ অফিসে আসলাম। একদিকে সমগ্র রাস্তা খালি, নেই কোন যানজট। আবার অন্য দিকে শীতল এবং মেঘলা আবহাওয়া। আর তখনই ভাবতে লাগলাম যে, ইস্ এমন যদি সব সময় থাকতো। রাস্তায় যদি কোন যানজট না থাকতো! কিন্তু আমার চাওয়া পাওয়ায় আর কি যায় আসে।পৃথিবীর নিয়মে পৃথিবী চলবে। আমি চলবো আমার মত।
তাই তো সব ভাবনা চিন্তা বাদ দিয়ে চলে আসলাম আপনাদের কাছে। আমার আজকের ব্লগ নিয়ে। বেশ ভাবছি সকাল থেকে কি শেয়ার করা যায়? ভেবে কোন কুল কিনারা পাচিছলাম না। অবশেষে মোবাইল ফোনের গ্যালারিতে চোখ পড়তেই মনে পড়ে গেল অভুক্ত থাকা একটি দিনের কথা। হুম সত্যি। সারাদিন খেটেখুটেও যদি অভুক্ত থাকতে হয় তখন কেমন লাগে বলেন তো আপনারা? তাই ভাবলাম যে সেদিনটি নিয়ে আপনাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করি।
নতুন কর্মস্থলে আসার পর থেকে এক ব্যস্তময় সময় আমায় কাটাতে হয়। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে রওনা হতে হয় অফিসে। আর যেতে যেতে সেই বিকেল। তারপর তো আছে সংসার আর আপনারা। সব মিলিয়ে আমি যেন প্রতিদিন হিমশিম খাই বার বার। তবুও চলে যেতে হচেছ জীবনের তাগিদে। সে যাই হোক। নতুন অফিসেও কিন্তু দায়িত্বের আকাল নেই। যেহেতু এটা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাই এখানের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আমাদের কাজ। না ছোট ছোট ছাত্রছাত্রী নয়। এরা আবার এমবিবিএস ছাত্র-ছাত্রী। তো কিছুদিন পূর্বে হয়ে গেল তাদের কালচারাল প্রোগ্রাম। সেই প্রোগ্রামের দায়িত্বও আমাদের কে পালন করতে হলো।
প্রোগ্রামের জন্য করা হলো বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান। যেখানে রাখা হয়েছে বিজ্ঞান ভিত্তিক স্টল, ঘোড়ার গাড়ি চড়া, ডিভেট প্রোগ্রাম এবং ব্যান্ড পার্টি। আর এ কারনেই কলেজ কে সাজানো হয় রঙিন সাজে। তিনদিন ব্যাপি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে আমাদের কেও করতে হয় সাহার্য্য আর সহযোগীতা। তাই বিভিন্ন কাজে বেশ ব্যস্ত থাকতে হয় বেশ কয়েকদিন। আমাদের কে ভাগ করে দেওয়া হয় অনুষ্ঠানের কাজ। যার কারনে সেদিন ছুটির দিন থাকালেও আমাদের কে সকাল সকাল অফিসে চলে আসতে হয়।
সকাল সকাল অফিসে এসেই দেখি কি বিশাল আয়োজন। সব কিছু হাজির। ঘোড়ার গাড়ি, ব্যন্ড পার্টি সব কিছু। ব্যান্ড পার্টির ব্যান্ড বাজানোর মিউজিকে মুখরিত পুরো কলেজ প্রাঙ্গন। তবে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ার ইচেছ থাকলেও কিন্তু উপায় নেই। কারন সেই ঘোড়ার গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল ছাত্রছাত্রীদের জন্য। তো আমরা সবাই যেহেতু প্রোগ্রামের জন্য এত এত পরিশ্রম করলাম তাই আমরা একটু ঘুরে ঘুরে সব কিছু দেখছিলাম। বেশ সুন্দর করে বিজ্ঞান ভিত্তিক স্টল গুলো সাজানো হয়েছে। সেখানে আমরা ঘুরে ঘুরে স্টল গুলো দেখলাম। তারপর শুরু হলো সবাই মিলে ব্যানার হাতে কলেজ চত্বর ঘুরে আসা। আমার উপর দায়িত্ব পরলো ভিডিওগ্রাফি করার। তাই করলাম আমি।
এরপর চলে গেলাম ছয়তলা। যেখানে কলেজের কালচারাল প্রোগ্রামের উদ্ভোধন করা হবে। সেখানে প্রায় এক ঘন্টা থেকে সব কিছু তদারকি করতে হলো। সবার বসার ব্যবস্থা করা, অতিথিদের রিসিভ করা ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা সেখানে এটেন্ড করার পর নেমে আসলাম নিচে। তখন বাজে বেলা তিনটা। ততক্ষনে ক্ষুধায় পেট ফেটে যাচেছ। অবশ্য কালচারাল প্রোগ্রামে সবার জন্য দুপুরের লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই আর বাহিরে খেলাম না। ভাবলাম সব কলিগরা একত্রে বসে দুপুরের লাঞ্চটা সেরে নিবো। তাই বুকে আশা বেধেঁ রেখে নিচে নেমে আসলাম অভুক্ত অবস্থায়।
ঐ যে কথায় বলে না কপালে নাই কো ঘি, ঠুকঠুকাইলে হইবো কি? তাই হলো আমাদের অবস্থা। তখন বাজে বেলা ৩.৩০। আমরা তো খাবারের অপেক্ষায় বসে বসে দিন গুনছি। কিন্তু বেশ কিছু পর খবর আসলো যে আমাদের কে লাঞ্চের তালিকায় রাখা হয়নি। তার কারন ছিল সেদিন আমাদের ছুটির দিন ছিল তাই ভেবেছে আমরা আসবো না। আচ্ছা বলেন তো দায়িত্ব পালনকারী মানুষ কখনও কাজে না আসে? কি আর করার? বুকের মধ্যে বিশাল কষ্ট নিয়ে সবাই মিলে বাহিরে খেয়ে নিয়ে যার যার মত করে বাসায় চলে গেলাম। আর শাস্তি হিসাবে তিন দিনের প্রোগ্রামের পরবর্তী দুদিন আমি অসুস্থতার কথা বলে বাসায় রয়ে গেলাম। হি হি হি। কি ভালো করিনি?
আজ এখানেই রাখছি। আগামীতে আবারও ফিরে আসবো নতুন করে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে। কেমন লাগলো আমার আজকের ব্লগটি? জানার আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য দিয়ে উৎসাহিত করবেন। |
---|
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Tweet
জি আপু আসে সারাদিন খুব পরিশ্রম করার পর সময় মতো খেতে পারেন নি জেনে খুব খারাপ লাগলো। এর পরে ঠিক করেছেন অসুস্থতার কথা বলে পরে আর জাননি। আপনার লেখা গুলো পড়ে ভালো লেগেছে ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
হি হি হি । মাঝে মাঝে এমন না করলে কি হয়? ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।