শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি - "খচ্চর চাচার গোলাপ বাগান শূণ্য করার গল্প " II written by @maksudakawsarII
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
"খচ্চর চাচার গোলাপ বাগান শূণ্য করার গল্প" |
---|
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই বেশ ভালো আছেন। আমিও বেশ আছি আপনাদের দোয়ায়। আসলে যতই খারাপ থাকি না কেন আপনাদের মাঝে আসলে কেন জানি ভালো লাগা কাজ করে। তাই তো আজও চলে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন করে । আরও একটি পোস্ট নিয়ে। আমরা কেউই কিন্তু আমাদের জীবনের হারিয়ে যাওয়া অতীত কে ভুলতে পারি না । যেমনটি পারি না আমাদের ফেলে আসা শৈশব কে ভুলতে। শৈশবের কথা মনে পড়লে আজও মাঝে মাঝে বেশ হাসি আসে। সেই হাসির কথা গুলো এখানে শেয়ার করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সম্মানিত ফাউন্ডার @rme দাদা কে জানাই কৃতজ্ঞতা। আজও চলে আসলাম ফেলে আসা একটি শৈশব কে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে।
খুব ছেলেবেলা হতেই আমাদের পরিবারের সকলের ভোরে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস। আর এটা শুধু আমাদের পরিবারের নয়। আমরা যে কোয়াটারে থাকতাম সেই কোয়াটারের প্রতিটি পরিবারই এমন ছিল। ভোরে ঘুম থেকে উঠে একটু মাঠে হাটাহাটি করতে হতো আমাদের কে। কারন বাবা বলতেন সকাল বেলায় হাটলে নাকি শরীর ও মন দু্টোই বেশ ভালো থাকে। তাই বাবার কথা মত মা আমাদের কে সব সময় সকাল সকাল ঘুম থেকে ঢেকে দিতেন। আর আমরা সকালের হাটা শেষে বাসায় এসে হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বসতাম।
আমাদের বাসার কাছেই এক বাড়িতে শিউলি ফুলের গাছ ছিল। একদিন আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমরা সবাই মিলে সেখান থেকে শিউলি ফুল কুঁড়িয়ে নিয়ে আসবো। তাই যা ভাবা তাই করা। আমরা একদিন কয়েকজন মিলে চলে গেলাম শিউলি ফুল কুঁড়াতে। তো সেখানে যেয়ে দেখলাম গাছে অনেক সুন্দর সুন্দর শিউলি ফুল ফুটে আছে। দেখতে কিন্তু বেশ লাগছে। ভাবলাম এমন সুন্দর শিউলি ফুল দিয়ে মালা বানালে কিন্তু খারাপ হয় না। আর শিউলি ফুলের ঘ্রাণ ও তো বেশ মিষ্টি। আবার সে সময়ে অনেকের পছন্দের একটি ফুল হলো শিউলি।
সেদিন আমাদের কপাল টাই খারাপ ছিল। সেদিন কিন্তু তেমন শিউলি ফুল ঝড়ে পড়েনি গাছ থেকে। তাই আমাদের মনটাই খারাপ হয়ে গেল। কারন আমাদের ইচ্ছে ছিল মালা বানিয়ে খোপায় পড়া। তাই আমরা সবাই বুদ্ধি করলাম যে গাছ হতে কিছু ফুল পারবো। কিন্তু কথা হল সেই বাড়িওয়ালা চরম খাচ্চর একজন মানুষ ছিলেন। তো আমরা পাহাড়ায় থেকে একজন কে দিয়ে ফুল পাড়াচ্ছিলাম এবং অপেক্ষা করছিলাম বাড়ির মেইন গেইটের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে। আর বার বার তাগাদা দিচিছলাম যেন তাড়াতাড়ি ফুল পাড়া শেষ হয়ে যায়।
কিন্তু হঠাৎ দেখি আমাদের পিছন থেকে জোড়ে চিৎকার। পিছনে তাকিয়ে দেখি সেই বাড়িওয়ালা লোকটি আমাদের সেই বন্ধুটির হাত ধরে আছে। হায়রে আমরা তো দে দৌড়। এমন করে দৌড় দেই যে এক দৌড়ে বাসায় চলে আসি। সেই বান্ধুর কথা আর ভাবনা চিন্তায় আনি না। আমাদের কোয়াটারের ভিতরে আসার পর আমরা আমাদের সেই বান্ধবির ভাই কে সব ঘটনা খুলে বলি। বান্ধবির ভাই ছিল কোয়াটারের রংবাজ। তাই তিনি আমাদের সব কথা শুনে আমাদের কে সাথে করে কোয়াটারে নিয়ে যায়। তারপর ভদ্রলোকের সাথে বেশ রাগারাগির পর তিনি আমাদের সেই বান্ধুবি কে ছেড়ে দেয়।
তবে এই ঘটনার পর আমরা আর কখনও শিউলি ফুল কুঁড়াতে যাইনি। এরপর থেকে আমাদের নজর ছিল সেই বাড়িওয়ালার গোলাপ বাগানের দিকে। একদিন রাতে কোয়াটারের বিদ্যুৎ চলে গেলে আমরা বুদ্ধি করি যে ঐ খাচ্চর বেটার গোলাপ বাগানের সব গোলাপ সাভার করে দিবো। তাই তো যা বলা তাই করা। আমাদের তখন বিদ্যুৎ গেলে এক ঘন্টার আগে আসতো না। তাই সেই ফাঁকে আমরা বড় একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ নিয়ে খচ্চর চাচার গোলাপ বাগান সাভার করে দেই। আর গোলাপ গুলো এনে আমরা সবাই ভাগ করে নেই। তারপর অনেকদিন সেই গোলাপ গুলো বইয়ের ভাজে ভাজে রেখে ছিলাম। তবে শুনেছি খচ্চর চাচা নাকি বেশ খুঁজেছে চোরদের কে। আর খুঁজবেই না বা কেন ? চাচার গোলাপ বাগান যে সেদিন শূণ্য হয়েছিল সেদিন। হি হি হি। যাই বলি না কেন আমাদের ছেলেবেলা কেটেছে দূরন্ত পানায়।
আজ এখানেই রাখছি। আগামীতে আবারও ফিরে আসবো নতুন করে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে। কেমন লাগলো আমার আজকের ব্লগটি? জানার আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য দিয়ে উৎসাহিত করবেন।
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আহা ছোট বেলা মানেই মধুর স্মৃতি।খারাপ ঘটনা গুলোও এখন স্মৃতিচারণ করতে ভালো লাগে। বেশ ভাল অভ্যাস ছিল আপনাদের। যদিও আমিও ছোট থেকেই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতাম।আপনাদের ঐ বাড়িওয়ালা আসলেই খচ্চর।ফল হলে তাও না হয় বুঝতাম,ফুলের জন্য এত কিছু কেউ করে না।যাই হোক ধন্যবাদ ছোট বেলার স্মৃতিটি শেয়ার করার জন্য।
আপনি কিন্তু ঠিকই ধরতে পেরেছেন দাদা। ওই বাড়িওয়ালা আসলেই খচ্চর। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
Tweet
বেশ মজা পেলাম আপু প্রথমবার শিউলি ফুল চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন,হাহাহা।যদিও আপনাদের এই সেই বান্ধবীকে ধরে ফেলেছিল। পরবর্তীতে আবার কারেন্ট না থাকার সুযোগ ব্যবহার করেছেন এবং গোলাপ ফুল চুরি করে নিয়ে এসেছেন। সেই সময় ওই চাচা জানতেই পারল না। যাইহোক এভাবে মাঝে মাঝে দূরন্ত কাজ গুলো করতে ভালই লাগে। তবে সেই শৈশব হারিয়ে গেল। এখন ছুটছি সবাই নিজের গন্তব্যের দিকে। ভালো লাগলো আপনার ছোটবেলার সেই মজা স্মৃতি পড়ে।
কত যে এরকম দুরন্তপানা স্মৃতি আছে, সেগুলো বসে বসে মনে করতে হবে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আরে আপনারা সবাই তো দেখছি ছোটবেলায় অনেক বেশি দুষ্টু ছিলেন। আর এজন্যই তো আপনার ওই খচ্চর চাচার গোলাপ বাগান একেবারে শূন্য করে দিয়েছিলেন। শিউলি ফুল আনতে গিয়ে দেখছি আপনার ওই বন্ধুটা ধরা পড়ে গিয়েছিল, আপনারা যদিও দৌড়ে চলে এসেছিলেন। যাই হোক পরবর্তীতে তাকে ছাড়িয়া আনা হয়েছে এটা জেনেই ভালো লেগেছে। তবে গোলাপ বাগানটা একেবারে শূন্য করে দিয়েছিলেন এটা কিন্তু অন্যরকম ছিল। নিশ্চয়ই অনেক মজা করেছিলেন সবাই মিলে গোলাপ আনার সময়।
বলেন তো ভাইয়া আমরা কি বেশি নিতাম? অল্প কিছু ফুল হলে আমাদের হয়ে যেত। তার জন্য কি বেঁধে রাখতে হবে? তাই দিয়েছি অন্ধকারে গোলাপ বাগান সাবার করে। ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ছোটবেলায় এমন ঘটনা অনেক আছে আপু আমারও। কারো গাছের পেয়ারা খাওয়া কারো কাছে আম বা কারো বাগানের ফুল। সত্যি ছেলেবেলা কত ভালো ছিল। সুন্দর একটি পোস্টের মাধ্যমে আমার ছেলেবেলাকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ভাবি আপনার ছেলেবেলার সে সমস্ত ঘটনা জাতি জানতে চায়। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আমার কিন্তু আপু এমন ঘটনা নেই। যাই হোক খচ্চর চাচা শিউলি ফুল নিয়ে এমন করলো তাই বুদ্ধি করে তার গোলাপ বাগান শূন্য করার ঘটনা বেশ ভালোই লাগলো।চোর খুজলেও সে আর চোরকে পায়নি,হিহিহি।ধন্যবাদ আপু ছোটবেলার স্মৃতিতে এই সুন্দর অনুভূতি গুলো আজ ও অম্লান হয়ে আছে।ধন্যবাদ আপু শেয়ার করার জন্য।
চোর পাবে কোথায়? আমরা তো সেদিন বলেছিলাম আর জীবনে কোনদিন তার বাগানে চুরি করবো না। চুরি করিনি। শুধু বাগানটাকে খালি করে সবগুলো গোলাপ ফুল নিয়ে এসেছি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপু।
এমন লোক সব জায়গাতেই কম বেশি আছে ।একটি জিনিস আপনি চাইবেন সহজে দিবে না যখন এভাবে নেয়া হবে তখন সে সইতে পারবে। ছোট্ট বেলার এই দুষ্টামি সবার জীবনেই রয়েছে কম বেশি। আপনার বান্ধবীকে লজ্জিত করায় তার গোলাপ বাগানের গোলাপ ফুল সাবার করে দিয়েছেন সত্যি অনেক মজার ছিল খুবই ভালো লাগলো পড়ে। কোয়াটারে থেকে তো ভালই দুষ্টামি করেছিলেন তাহলে।
এটা কিন্তু সত্য কথা ভাইয়া ছেলেবেলায় অনেক দুষ্টুমি করেছি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
এমন খচ্চর টাইপের লোক কমবেশি সব জায়গায় রয়েছে। এসব লোকেরা নিজেদেরকে খুব চালাক মনে করে,কিন্তু দিনশেষে ঠিকই ধরা খায়। যেমনটা আপনারাও ধরা খাইয়ে দিলেন সেই লোকটাকে। প্রথমে শিউলি ফুল চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়ে, পরবর্তীতে গোলাপ বাগান একেবারেই শূন্য করে দিলেন 😂। আপনাদের মনে তো মায়াদয়া একেবারেই ছিলো না দেখছি। অন্তত কয়েকটা গোলাপ রেখে দিলেও পারতেন। খচ্চর চাচা সেই গোলাপ তার বউকে ভালোবেসে দিতে পারতো🤣। যাইহোক গল্পটি পড়ে বেশ হাসলাম। এতো মজার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বুঝলাম না ভাইয়া চুরি করতে গেলে কি মায়া দয়া থাকলে চুরি করা যায়? হি হি হি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।