শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি- শৈশবের চাঁদ রাতের মেহেদী উৎসব II written by @maksudakawsar II

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই বেশ ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালো আছি। আর সব সময়ই চাই ভালো থাকতে। কারন নিজে ভালো না থাকলে পাশের মানুষগুলো কে ভালো রাখাটা মুশকিল হয়ে পড়ে। আর তাই তো সব সময়ে ভালো থাকার কাজ করে যেতে হবে। আর ভালো থাকতে বা নিজেকে ভালো রাখতে যে জিনিস গুলো বেশী প্রয়োজন তা হলো নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে সমস্ত অসুস্থ্যতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা। দোয়া করি সবাই যে সুস্থ এবং সুন্দর জীবন যাপন করতে পারেন।

শৈশব আমাদের জীবনের সাথে এমন করে মিশে আছে যে আমরা হাজার চাইলেও সেই শৈশব কে ভুলতে পারি না। পারি না শৈশব কে দূরে ঠেলে দিতে। শৈশব আমাদের কে বার বার হাতছানি দেয়। চোখের সামনে মেলে ধরে হাজারও স্মৃতি। আর সেই শৈশব কে আকঁড়ে ধরে আজও আমরা বেঁচে আছি।বন্ধুরা আজও চলে আসলম সুন্দর সেই শৈশবের কিছু দূরন্ত পানার স্মৃতি নিয়ে আপনাদের মাঝে।

indian-wedding-3633796_1280.jpg

Source

শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি
শৈশবের চাঁদ রাতের মেহেদী উৎসব

দেখতে দেখতে চলে গেল পবিত্র ঈদ। আর এমন ঈদ আমাদের জীবনে বারে বারে ফিরে আসুক এমন কামনাই করি আমরা। ঈদ হলো অপার আনন্দ আর অনুভূতির । মহান আল্রাহ তায়ালা আমাদের জন্য দুটো খুশির ঈদ উপহার হিসাবে দিয়েছেন। আর এই ঈদ কে ঘিরে যে কত মানুষের কত রকমের স্বপ্ন। আর কত রকমের ইচ্ছে থাকে মনে। তবে শৈশবের ঈদ আর এখনকার ঈদের ভিত রয়েছে বিরাট ব্যবধান। এখনকার ঈদে আর শৈশবের ঈদ আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় না। খুঁজে পাওয়া যায় না সেই আনন্দ আর উদ্দীপনা।

ঈদ আসবে আর হাতে মেহেদী পড়বো না সেটা কি হয়। আর তাই তো তখনকার সময়ে এই মেহেদী কে মাথায় রেখে বেশ আয়োজন করা হতো। যদিও এখনকার সময়ে পথে পথে অনেক মেয়েরা বসে যায় মেহেদীর ডালা নিয়ে মানুষের হাত কে মেহেদীর সাজে সাজিয়ে দিতে। তাও আবার পয়ঁসার বিনিময়ে। কিন্তু আমাদের সময়ে হাতে মেহেদী পড়তে কোন টাকা পয়ঁসার দরকার পড়তো না। যেহেতু কোয়াটারে থাকতাম তাই সেখানে বেশ আনন্দ ঘন পরিবেশের মধ্যেই হাতে মেহেদী পড়ানো হতো। আর সবাই মিলে সেই আনন্দটাকে নিজেদের মত করে ভাগ করে নিতাম।

কদরের রাহ পার হলেই যে যার মত করে বাজার থেকে মেহেদী কিনে আনতো। অথবা কারও কারও বাগান থাকলে সেই বাগান হতে মেহেদী পেরে নিতো। সাথে নিত পান খাওয়ার খয়ের আর চুন। যাতে করে মেহেদীতে বেশী রং হয়। তারপর সবার বাসা হতে পাটা পুতা এনে মাঠের মধ্যে বসে সেই মেহেদী বাটা হতো। আর এসব মেহেদী ‍গুলো কলা পাতায় রাখা হতো। তবে এই কাজটি করা হতো চাঁদ রাতের আগের দিন।

তারপর লাইনে দাড়ঁ করিয়ে কোয়াটারের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের হাতে দিয়ে দিতো। আর এই দায়িত্ব পালন করতো কোয়াটারের বড় বড় আপারা। তবে তখনই বেশ মজা হতো। আমি আগে দিবো আমি আগে দিবো করে যে কত চুল ছেড়াছেড়ি হতো। তখন তো আর এত বুঝতাম না। হি হি হি। তারপর দু হাতে মেহেদী দিয়ে সারা রাত মেহেদী লাগিয়ে বসে থাকতাম। যাতে আমার হাতের মেহেদী বেশী রং হয়। সত্য বলতে তখনও বেশ ডিজাইন করে হাতে মেহেদী দিয়ে দেওয়া হতো। তবে হাতের মধ্যে চাঁদ আর তারা অঙ্কন করার ডিজাইনটিই বেশী চলতো। অনেক সময় আবার হাতের মাঝে গোল করে মেহেদী দেয়ে দেওয়া হতো।

সারারাত মেহেদী পড়ে থাকার পর যদি সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতাম যে হাতের মেহেদী লাল হয় নাই। তাহলে তো খবর ছিল। কি যে কান্না করতাম। মাটিয়ে লুটিয়ে পড়তাম কান্না করতে করতে। কেন আমার হাতের মেহেদী লাল হলো না? তারপর আবার নতুন করে হাতে মেহেদী পড়তাম। আর যদি হাতের মেহেদী লাল হয়ে যেত তাহলে তো কথাই নেই। দৌড় দিয়ে চলে যেতাম সেই লাল করা হাত সবাই কে দেখাতে। আর ঈদের দিনে মনে হতো মনে হয় হাতে আলতা পড়েছি। হি হি হি

অথচ শৈশবের এমন সুন্দর স্মৃতি গুলো এখন শুধু স্মৃতিই হয়ে রয়েগেছে। এমন স্মৃতি গুলো তখনই মনে পড়ে যখন দেখি ঈদের চাঁদে সবাই দল বেধেঁ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে অর্থের বিনিময়ে হাতে মেহেদী লাগানোর জন্য। তখন মনে হয় কি যে মিস করছে এরা সেই সময় গুলো কে।

শেষ কথা

আমরা চাইলেও কিন্তু আমাদের অতীত কে জীবন থেকে মুছে ফেলতে পারবো না। আর তাই তো আজ আবার জীবন থেকে কিছু স্মৃতি আপনাদের মাঝেও ছড়িয়ে দিলাম। আশা করি আমার শৈশবের এমন ঘটনা আপনাদেরও বেশ ভালো লাগবে।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

Screenshot_1.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 3 months ago 
 3 months ago 

ঈদুল ফিতরের মধ্যে চাঁদ রাতের আনন্দ আসলেই অন্যরকম। ছোটবেলায় এই রাতে অনেক আনন্দ করতাম। এখনো করি অবশ্য। সারা রাত ধরে সবাই মিলে হাতে মেহেদি দেওয়া এ ব্যাপার গুলো আসলেই দারুণ। আপনারা কোয়াটারে থাকার কারণে অনেক বেশি আনন্দ করতে পারতেন সবাই মিলে। সবাই মিলে একসাথে মেহেদি পড়তেন। ভালো লাগলো আপনার শৈশবের স্মৃতিগুলো পড়ে। ধন্যবাদ আপু।

 3 months ago 

ভালো লাগলো আপু আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়েও। ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।

 3 months ago 

চাঁদ রাতের মেহেদী উৎসব আজো ভুলতে পারিনি। সময়ের সাথে সাথে আনন্দ গুলো হারিয়ে গেছে। তবে সেই পুরনো স্মৃতি গুলো এখনো মনে পড়ে। আপু আপনার লেখা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 3 months ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।

 3 months ago 

ঈদের দুইদিন আগে থেকেই সবাই মেহেদী হাতে দিতো। আমিও ছোট বেলায় মেহেদী দিতাম আপু। আজকে আপনার পোস্ট পড়ে ছোট বেলায় সোনালী স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গেলো। সত্যি বলতে এধরনের পোস্ট গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগে। চমৎকার লিখেছেন ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

 3 months ago 

জি ভাইয়া এখনও পুরানো সেই স্মৃতিগুলো ভুলতে পারিনা। তাই তো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 3 months ago 

চাঁদ রাতের মেহেদী দেয়ার অনুভূতি গুলো পড়ে আমার সেই ছেলেবেলার মেহেদী দেয়ার অনুভূতি গুলো মনে পরে গেলো। আমার বড় কাজিন আমাদের হাতে মেহেদী পরিয়ে দিতো।ওই যে বললেন হাতের মাঝে বড় গোল গোল করে দিয়ে দিতো।তখন খুশী ই হতাম।কিন্তু পরেই যখন আপুর হাতে সুন্দর ডিজাইন মেহেদী দিতে দেখতাম তখন বলতাম আমাকে কেন এভাবে দিয়েছে।তখন আপু বলতো বাচ্চাদের এভাবেই দিতে হয়।🤣সেই সব অনুভূতি আজও মনে পরে।ধন্যবাদ আপু চমৎকার কিছু অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 61839.57
ETH 3411.37
USDT 1.00
SBD 2.52