লাইফ স্টাইল- নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়া ব্যস্তময় একটি দিন ||lifestyle by @maksudakawsar ||
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
শুভ রাত্রি কমিউনিটির প্রিয় বন্ধুরা। আশা করি চরম সংকটময় এই সময়েও আপনারা বেশ ভালো আছেন। আমিও কিন্তু বেশ আছি। তবে হাপিয়ে উঠছি চারদিকের অস্থিকর আর অশান্ত পরিবেশ দেখে। কি যে অবস্থা চারদিকে। আজ নিজেকে অনেক অসহায় মনে হচ্ছে। কি যে হবে আমাদের। একদিকে অনাকাঙ্খিত দ্রব্যমূল্য আর অন্য দিকে দেশের অস্থিতিকর অবস্থা। আর এই দুই মিলিয়ে জীবনটাই দূর্বিসহ। তবু মানুষের আছে চরম বাচাঁর আকুতি। মানুষ বাঁচতে চায় তার শেষ সম্বলটুকু কে আকঁড়ে ধরে।
একদিকে অস্থিকর অবস্থার সাথে নিজেকে মানিয়ে চলা। আর অন্য দিকে নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়া একটি ব্যস্তময় দিন। সব মিলিয়ে আজকের দিনটি কিন্তু বেশ কষ্টের মধ্য দিয়ে পাড় করতে হয়েছে আমায়। মানুষ অনেক অসহায়। আর সে যদি হয় কোন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা করানো তাহলে তো কথাই নেই । বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। আর যদি সেখানে পরিচিত কেউ না থাকে তাহলে কিন্তু সেই মানুষের ভোগান্তি যেন আরও অনেক বেড়ে যায়। এই যেমন আজ সকালে শ্বশুড়বাড়ী হতে এক রোগী এসেছিল। আর তাকে নিয়ে বেশ ভোগান্তির মধ্য দিয়ে সারাদিন কেটে গেল। আর দিন শেষে ক্লান্ত দেহ নিয়ে ফিরে আসলাম বাসায়। আর আজ আপনাদের সাথে সেই দূর্বিসহ সময়ের কিছু কথা আজ শেয়ার করতে আসলাম। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
যেহেতু দেশের পরিস্থিতি ভালো না তাই বাধ্য হয়ে রিক্সায় করে যেতে হয় অফিসে। ভয়ে আর বাসে উঠা হয় না। কিন্তু সকাল ৯.০০ টায় যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন কিন্তু পুরো রাস্তাই খালি ছিল আজ। তেমন বাসও চলতে দেখা যায়নি। আমার জন্য কিন্তুু ভালোই হলো। কারন আমার জন্য তো একজন রোগী অপেক্ষা করছিল। যাই হোক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম অফিসে। অফিসে পৌঁছে প্রথমেই বসের কাছে জেনে নিলাম যে শ্বশুড়বাড়ী হতে পাঠানো রোগীটিকে কোন ডাক্তারের কাছে দেখাবো। তারপর চলে গেলাম সেই রোগী নিয়ে নিউরোমেডিসিন এর ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার সাহেব রাউন্ডে থাকায় বেশ আধঘন্টা অপেক্ষা করতে হলো। তারপর ডাক্তার সাহেব আসলে তাকে দেখালাম রোগীটিকে। তিনি বেশ ভালো করে রোগী দেখলেন এবং রোগীর বিস্তারিত শুনলেন। তারপর ডাক্তার সাহেব রোগীকে জরুরী ভিত্তিতে ভর্তি করতে বললেন।
অথচ এই রোগী গত দুইদিন দুই রাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং নিউরোসাইন্সে অনেক ঘুরাঘুরি করেও ভর্তি হতে পারেননি। অবশেষে আমার শ্বাশুড়ীর পরিচয়ে আমার কাছে আসে। রোগীর ঘটনা শুনে আমার কাছেও বেশ খারাপ লাগলো। হঠাৎ করে পড়ে যেয়ে ব্যাথা পায় এই রোগীটি। তারপর জ্বর আসলে ডাক্তার দেখায়। ডাক্তার ঔষুধ দিলে সেগুলো খায়। তারপর হঠাৎ করে কোমর হতে পায়ের নীচের অংশ অবস হয়ে যায়। হাটতে পারেন না। এসব শুনে বেশ মনটা খারাপ লাগলো। কি দেশে আমরা বসবাস করি। ডাক্তার দেখিয়েও শান্তি নেই। রোগী ভালো হবে তো দূরের কথা বরং খারাপই হয়ে গেল।
এরপর রোগী কে সিটে তুলে দিয়ে ঔষুধ পত্র সব ঠিক করে দিয়ে করে দিয়ে নেমে গেলাম নিচে। রোগীর টেস্ট করার জন্য। ততক্ষনে আমার অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে গেছে। কারন ততক্ষনে দুপুর ১.০০ টা বেজে গেছে। ক্ষুধায় পেট শেষ। কিন্তু যখন ছয়তলা বেয়ে নীচে আসলাম তখন এসে দেখি পরীক্ষার জন্য ফি জমা নেওয়ার কাউন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। আবার আড়াই টায় খুলবে। যা বাবা কই বৃহস্পতিবারে একটু তাড়াতাড়ি বাসায় আসবো তারও কোন জোড় নেই। আর কি করার? নিজের রুমে যেয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। আর টেবিলের উপর রাখা একটা সিংগারা, পেয়ারা আর এক গ্লাস পানি খেয়ে বসকে বলে বের হয়ে গেলাম অফিস থেকে। বসও কিছু বলল না। কারন আমাকে দেখতে বেশ ক্লান্ত মনে হচ্ছিল।
ততক্ষনে বেলা ২.২০ বেজে গেছে। যেহেতু প্রায় অনেক মানুষই আমার পরিচিত তাই একটু আগেই আমরা টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ পেলাম। আর ৫টি পরীক্ষার জন্য মোট ৯,৫০ টাকার রশিদ কেটে নিলাম।যার মধ্যে একটি এক্সরেও আছে। অবশ্য সরকারি হাসপাতলে পরীক্ষার খরচ অনেক কম। কিন্তু কথা হলো এখানে ডাক্তার দেখানো থেকে শুরু করে সব কিছুই বেশ ভোগান্তির বিষয়। আর যদি নিজেদের কোন পরিচিত লোক না থাকে তাহলে তো কথাই নেই। এই যেমন আজকে আমি যে রোগীটিকে খুব সহজেই একটি সিটের ব্যবস্থা করে দিতে পেরেছি, তার এই সিট পেতে হয়তো ১০০০-১৫০০ টাকা পড়ে যেত যদি দালালের হাতে পড়তো। অবশেষে তাদের কাজ শেষ করে দি/যে আজকের মত বিদায় নিয়ে চলে আসলাম। আবার আগামী শনিবার এই রোগী নিয়েই আবার শুরু হবে আর এক ধাপের দৌড় ঝাপ।
পোস্টের ধরন | লাইফ স্টাইল |
---|---|
ডিভাইস | VIVO-Y22S |
ফটোগ্রাফার | @maksudakawsar |
স্থান | মোহাম্মদপুর , ঢাকা, বাংলাদেশ |
আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো আপনাদের মাঝে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে । সে পর্যন্ত সকলেই ভালো থাকবেন। আর কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের ব্লগটি ? আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের আশায় রইলাম। সবাই ভালো থাকবেন এবং সাবধানে থাকবেন।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Tweet
বর্তমান দেশের অবস্থা সত্যিই খুব খারাপ।কিন্তু এর মাঝে কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে হাসপাতালগুলোতে ভীষণ ঝামেলায় পরতে হয়।এমন সিরিয়াস রোগী ডাক্তার দেখাতে গিয়েও দেখাতে পারেননি।তাই আপনার কাছে গিয়ে স্বস্তি পেলো।আসলে সরকারী হাসপাতাল গুলোতে সব খরচ কম হলেও অসুস্থ রোগীরা ডাক্তারের অপেক্ষায় থেকে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যায়। এজন্য পরিচিত জন থাকলে অনেক সুবিধা হয়।সারাদিন ব্যস্ততার মাঝে কাটলো আপনার।তবে শারীরিক কষ্ট হলেও মানসিক শান্তিটুকু কিন্তু পেলেন।একজন অসহায় রোগীর পাশে থেকে।ধন্যবাদ আপু।এভাবেই সকলের পাশে থাকবেন এমনটাই আশাকরি।
দোয়া করবেন এভাবেই যেন মানুষের পাশে থাকতে পারি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।