শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি- অবশেষে পাওয়া হলো না পুরস্কার II written by @maksudakawsar II
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
মানুষ যেটা পারে না সেটা হলো তার অতীত কে ভুলে যাওয়া। যেমন আমরা এখন মনে করি যে ইস্ আবার যদি ছোট হতাম তাহলে জীবন কে আবার নতুন করে সাজিয়ে নিয়ে আসতাম। জীবনে সফল হতে যা যা করা দরকার আমি ঠিকই তাই করতাম। এমন হাজারও চিন্তা ভাবনা এখনও মাথায় ঘুরপাক খায়। ছেলেবেলার সেই স্মৃতি গুলো আজও দ্বাপরে বেড়ায় প্রতিটি মূহূর্ত আর প্রতিটি স্মৃতি কে। তাই তো মাঝে মাঝে চলে আসি আপনাদের মাঝে ছেলেবেলার সেই স্মৃতি গুলো কে শেয়ার করার জন্য।
কেমন আছেন সবাই? বেশ ভালো আছেন নিশ্চয়। আসলে প্রিয় মানুষ গুলো ভালো থাকুক এই কামনাই করি। প্রতিদিনের মত করে আজও চলে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন করে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে সব সময়ই ভাবী যে নিজের মনের মাঝে ঘুরপাক খাওয়া কথা গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। তাই তো আজ সারাদিন ব্যাস্ততার মাঝেও চলে আসলাম একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে। আশা করি আমার আজকের পোস্টটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।
শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি
অবশেষে পাওয়া হলো না পুরস্কার
শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি
অবশেষে পাওয়া হলো না পুরস্কার
শৈশবে আমরা সবাই কম বেশী স্কুলে বার্ষিক খেলার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু আমি এমন একজন মানুষ যে কিনা জীবনেও এই খেলা গুলোতে অংশগ্রহণ করতাম না। কারন আমি ছিলাম অনেক মোটা । আর মোটার কারনে আমি দৌড় দিতেই পারতাম না। যদিও দৌড় দিতাম মাঝ পথেই পড়ে যেতাম। আর তখনই সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করতো। আমিও বেশ লজ্জা পেতাম। আমার মোটার কারনে সবাই আমাকে জিজ্ঞেস করতো আমি কোন গুদামের চাল খাই। হি হি হি। আর এই কারনেই আমি তেমন খেলায় অংশগ্রহণ করতাম না।
একবার হলো বেশ মজার কান্ড। সবাই মিলে আমাকে ধরলো যে আমি যাতে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করি। কিন্তু আমি তো করবো না। সে যে কি কান্না। তখন স্কুলের খেলা হতো আমাদের কোয়ার্টারের মাঠে। তাই কোয়ার্টারের সবাই ধরলো যেন আমি এবার অন্ততঃ পক্ষে একটি খেলায় হলেও নাম দেই। এক প্রকার জোড় করেই আমার নাম দেওয়া হলো তিনটি খেলার জন্য। যার মধ্যে ছিল - বিস্কুট দৌড়, চেয়ার চিটিং এবং দৌড় প্রতিযোগিতা। একে তো মোটা দেহ নিয়ে দৌড় দিতে পারি না। তার উপর তিন তিনটি খেলা বলেন তো কেমন লাগে? যাই হোক পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের অনুরোধে আমি অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
প্রথমে হলো বিস্কুট দৌড়। এই খেলাটি আপনারা সবাই নিশ্চয় চিনেন। এটি হলো ঝুলন্ত বিস্কুট যে আগে মুখে নিয়ে দৌড়ে আসতে পারবে সেই প্রথম। সবার মত আমিও সেদিন লাইনে দাড়িয়েছিলাম। বাশিঁ বাজার সাথে সাথে দিলাম দৌড়। মোটা দেহ নিয়ে যতটুকু দৌড় দেওয়া যায়। আমি মোটামুটি সবার পরই পৌঁছলাম। সবাই তো বিস্কুট নেওয়ার জন্য লাফালাফি করছে। আমিও সবার মতই করছি। কিন্তু বুঝতে পারলাম না বিস্কুট কি করে আমার মুখে এসে পড়ে গেল? আমি তো বিস্কুট নিয়ে দৌড়। দৌড় দিয়ে সবার আগে চলে আসলাম। আর প্রথম হয়ে গেলাম। অবশ্য পরে জানতে পেরেছি যে আমাকে প্রথম করার জন্য একজন কে রাখা হয়েছিল কোয়ার্টারের বড় ভাইদের পক্ষ থেকে। যে কিনা বিস্কুট ছিড়ে আমার মুখে দিয়ে দিয়েছে। হি হি হি।
আমি তো মহা খুশি। আমায় আর পায় কে। বেশ খুশি হয়ে চেয়ার চিটিং খেলা খেলতে গেলাম। ওমা একি আমি যখন চেয়ারের কাছে যেয়ে পৌঁছাই তখনই মিউজিক থেমে যায়। এমন করতে করতে সবাই হয়ে গেল ডিসকোয়ালিফাইড। আর আমি হলাম প্রথম। পরে শুনলাম এবারও নাকি কোয়াটারের বড় ভাইদের হাত ছিল। যাতে করে আমি খেলাধুলায় আগ্রহী হই। আমি তো মহা খুশি দুই দুই টা প্রাইজ পাবো। আমাকে আর পায় কে। সবাই তো আমাকে মহা আদর করা শুরু করলো। কিন্তু সবার কপালে কি আদর সয়?
এবার যখন এলো দৌড় প্রতিযোগিতা তখনই হলো মুশকিল। আমি তো মোটা দেহ নিয়ে দৌড় দিতে পারি না। তবুও দুটো পুরস্কার পাওয়ার আনন্দে দৌড় দিতে লাগলাম। ভাবলাম এবার ও প্রথম হবো। সবাই তো চিৎকার করে বলছে দৌড় দে, দৌড় দে। আমি কি আর মোটা দেহ নিয়ে দৌড় দিতে পারি। যা হওয়ার তাই হলো। আবার অবস্থা হলো মারবো এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে এই রকম। দৌড় দিয়ে যেই না মাঠের অর্ধেক টা গিয়েছি সেই জুতার ফিতা বেজে ধাপাস করে পড়ে গেছি। সে কি যেমন তেমন পড়া। যেখানে পড়েছি সেখানে তো ছিলাম না। চলে গিয়েছিলাম বহু দূর। আর এর মধ্যেই যা হওয়ার তাই হলো। মাথা তো ফাটলোই। সাথে সাথে হাত আর পা ছিলে শেষ। সে যে আমার কি চিৎকার আর চেঁচামেচি। সেই থেকে আর জীবনেও কোন খেলায় অংশ গ্রহণ করিনি। আর সেই বিজয়ী হওয়ার পুরস্কার দুটো প্লেট তো আর আমি পেলাম না। শুনেছি কোয়ার্টারের বড় ভাইরা নাকি নিয়ে গেছে।< /p>
শেষ কথা
শেষ কথা
আপনারাই এটার বিচার করেন। খেলাধুলা করলাম আমি । বিজয়ী হলাম আমি। ব্যাথাও পেলাম আমি। আর আমার পুরস্কার খেলে আর একজনে। তখন যদি মোটা না থাকতাম। আজকের মত স্লিম থাকতাম তাহলে কি আমার পুরস্কার অন্যে খেতে পারে?
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Tweet
ছোট বেলার অনেক সুন্দর কিছু স্মৃতি নিয়ে আজ সন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করলে আপু। হ্যাঁ আপু তুমি ছোট বেলা অনেক মোটা ছিলা। আর তাই সবাই তোমাকে মুটকি বলে ডাকতো। আর তুমি যে পড়ে গিয়েছিলা এটার এখনও চিহ্ন রয়ে গেছে। তবে আপু দুংখ করোনা খেলায় কিছু হতে পারতে না তাতে কি পড়া লেখায় প্রতি ক্লাসে তুমি সব সময় ফাস্ট ক্ল্যাস থাকতে। আমি সব সময় তুমার সকল প্রতিভার প্রসংশা করি। ধন্যবাদ আপু
ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।