শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি- লোডশেডিং এর রাত গুলো II written by @maksudakawsar II
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
আমরা যারা আমাদের শৈশবটাকে ফেলে এসেছি। তারা কিন্তু প্রত্যেকেই চাই আবার সেই শৈশবে ফিরে যেতে। চাই শৈশবটাকে আবার খুব কাছ হতে উপভোগ করতে। মাঝে মাঝে হয়তো আমরা কেউ কেউ আমাদের সেই শৈশবে ফিরে যাই। ফিরে যাই হাজারও স্মৃতির মাঝে। কারন আমরা কেউ কখনও আমাদের জীবন থেকে ফেলে আসা শৈশব কে মুছে দিতে পারবো না।
কেমন আছেন সবাই? বেশ ভালো আছেন নিশ্চয়। আসলে প্রিয় মানুষগুলো ভালো থাকুক এই কামনাই করি। প্রতিদিনের মত করে আজও চলে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন করে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে সব সময়ই ভাবী যে নিজের মনের মাঝে ঘুরপাক খাওয়া কথা গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। তাই তো আজও আবার সেই ছেলেবেলার কিছু স্মৃতি কথা নিয়ে চলে আসলাম আপনাদের মাঝে। আশা করি আমার আজকের পোস্টটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।
CANVA দিয়ে তৈরি
বেশ গরম পড়েছে। আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিংও। আর এমন লোডশেডিং যে কি বলবো। একঘন্টা বিদুৎ থাকে আর এক ঘন্টা থাকে না। কিছুটা সময় যদিও একটু বাতাসে থাকি, তারপর আবার গরম। আর এমন ভাবেই চলে যাচেছ প্রচন্ড গরমের দিনগুলো। তবে এমন গরমের সময় বেশ মনে পড়ছে সেই ছেলেবেলার দিনগুলো। কত যে সুন্দর ছিল যে দিনগুলো। আর কত যে সুন্দর ছিল আনন্দময় সময়গুলো সেটা মনে হয় আমার মত আপনারা সবাই বেশ অনুভব করেন। আর তাই তো আজ ভাবছি ছেলেবেলার বিদুৎ বিহীন রাত্র গুলো কেমন করে কাটিয়েছি সেটাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো।
ছেলেবেলায় যখন রাতে বিদুৎ চলে যেত তখন আমাদের সবার কাছেই সেই সময়টা বেশ আনন্দের মনে হতো। কারন সরকারী বাস ভবনে থাকায় আমরা প্রায় সম বয়সের অনেকেই ছিলাম।আগে থেকে সবার প্ল্যান থাকতো যে আজ বিদুৎ চলে গেলে কোন খেলাটি আমরা খেলবো। আর সেই ভাবেই আমরা প্রস্তুতি নিতাম। কখনও লুকোচুরি খেলা হতো। কখনও গল্প করা হতো।আবার কখনও বা অন্য কোন খেলা হতো। কিন্তু যেই খেলা খেলতাম না কেন সব কিছুতেই বেশ আনন্দ উপভোগ করতাম। হয়তো কখনও পড়ে হাত পা ছিলে যেত। কখনও আবার মাথাও ফেটে যেত। কিন্তু বিদুৎ গেলে বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা না করে কি আর থাকা যায়। তাই তো বিদুৎ যেতে দেরী কিন্তু ঘরের বাহিরে যেতে আমার দেরী হতো না।
অনেক সময় বিদুৎ চলে গেলে কোয়াটারের মাঠে বিরাট মাদুর বিছানো হতো। আর সেই মাদুরে বসে বসে কোয়াটারের বড় বড় আপুদের কাছ থেকে কত যে ভূত পেত্নীর গল্প শুনেছি। আর ভয়ে ভয়ে থেকেছি। আবার এমন সব গল্প শোনার পরে অনেক সময় রাতে ঘুমাতেও পারতাম না ভয়ে। বিদুৎ গেলে বাদাম কিনে খেতে কিন্তু আমাদের ভুল হতো না। ভুল হতো না লুকোচুরি খেলতে গিয়ে একে অন্যের কাপড় পড়ে নেওয়ার কথাও। কতদিন যে একজন কে মনে করে আর একজন কে ধরে বসতো। আর আমরাও বেশ মজা পেতাম। পিতাম অনেক আনন্দ।
কিন্তু এখন আর বিদুৎ চলে গেলে সেই আনন্দ পাই না। বুকের ভিতরে কেমন যেন এক অশান্তির পাহাড় বয়ে যায় যখন বিদুৎ চলে যায়। স্মৃতির মনিকোঠায় বার বার উকি দেয় সেই সমস্ত দিনগুলো। যখন ছিল না কোন শাসন আর বারন। ছিল শুধু আনন্দ আর উদ্দীপনা। ছিল না গরমের তীব্রতা। ছিল প্রকৃতির দেওয়া নির্মল বাতাস। ছিল বড়দের শাসন আর বন্ধুদের ভালোবাসা। সেই সমস্ত আনন্দঘন সময় হতে কিছুটা আজ আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম। আশা করবো আমার এই স্মৃতিচারণের পর আপনারাও নিজের অতীত কে মনে করতেপারবেন।
শেষ কথা
শেষ কথা
সত্যি বলতে মুছে যাওয়া দিন গুলো আমায় যে পিছু ডাকে। তাই তো মনে ইচ্ছে জাগে একবার যদি সুযোগ পেতাম তাহলে আবার শৈশবে ফিরে যেতাম। আপনাদের ইচ্ছে কি একটু জানাবেন তো। অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের মতামতের।
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
শৈশবের স্মৃতি অনেক মধুর হয়ে থাকে।বর্তমান বিদ্যুৎ পরিস্থিতি খুবই অস্বস্তিকর যা সকলের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে।অথচ আগে আমাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ বিহীন ভাবেই থেকেছি,আমার ছোটবেলা টা পুরোটাই হারিকেন ও হাত পাখার বাতাসেই কেটেছে।তখন কিছুই মনে হতো না।খুব বেশি গরম হলে সবাই মিলে পুকুর পাড়ে গিয়ে অনেক রাত অব্দি বসে থাকতাম তখনকার সময় গুলো খুবই সুন্দর ছিলো যা চাইলেও আর ফেরত পাওয়া যাবে না।কোয়াটারের জীবনযাপন গুলো অনেকটাই পারিবারিক সম্পর্কের মতো হয়ে থাকে,বিদ্যুৎ চলে গেলে আপু আপনারা সবাই মিলে খেলাধুলা করতেন মাদুর পেতে বাদাম খেতেন সেই মুহুর্তগুলো অনেক সুন্দর ছিলো আর এই সুন্দর মুহূর্তগুলো কখনোই ভোলার মতো নয়।আপু আপনার শৈশবের স্মৃতিগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো।সুন্দর মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।
বেশ মুগ্ধ হলাম আপনার মন্তব্য পড়ে। বেশ সুন্দর করে সাহিত্যিকের ভাষায় আপনি মন্তব্য করেছেন আপু। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ফেলে আসা শৈশব আমরা চাইলেও কখনও ভুলতে পারবো না। এটা হচ্ছে অনেক মধুর একটা সময়। আর আমাদের কোয়াটারের সেই শৈশবের স্মৃতিগুলোতো কখনও ভোলার নয়। কারেন্ট চলে গেলে কোয়াটারের সবাই একটি পরিবারের মত কত আনন্দই না করতাম। বাদাম, পেটিস, আইক্রিম আরও কত কি খেতাম। আর কারেন্ট চলে গেলে শুরু হতো আমাদের কত মজার মজার খেলা। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় সেই দিনটিতে যদি আবার ফিরে যেতে পারতাম।