গল্প পোস্ট- তোমায় যাবে না কখনও ভোলা এর ১ম পর্ব
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
আমি @maksudakawsar । আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আর বাংলাদেশী ইউজার হিসাবে আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি ভিন্ন ধরনের পোস্ট করার। আর নতুন নতুন পোস্ট করে আপনাদের কে একটু আনন্দ দেওয়াটাই যেন আমার দায়িত্ব হয়ে পড়েছে। তা যাই হোক । আজও আবার চলে আসলাম একটু বক বক করে আপনাদের কানকে ঝালা পালা করার জন্য। কানের পর্দা ফাটলে কিন্তু আমার দোষ নাই।
ভালোবাসা যে কি কেউ তা বলতে পারে না। ভালোবাসা কখন কাকে আছর করে সেটা বুঝাটাই মুশকিল। মুশকিল হবেই না বা কেন? ভালোবাসার তো কোন রং নেই। নেই কোন স্বাদ গন্ধ আর পরিমাপ করার যন্ত্র। তাইতো যুগে যুগে ভালোবেসে কেউ জিতেছে আর কেউ বা হেরেছে। তবে ভালোবাসায় যদি থাকে প্রতারনা তা কিন্তু মেনে নেওয়া যায় না। মেনে নেওয়া যায় না ভালোবাসার মানুষটিকেও যদিও সে হউক না প্রতারক। আজ আমি আপনাদের মাঝে তেমনই একটি ভালোবাসার গল্প নিয়ে আসলাম। আপনারাই বিচার করবেন ভালোবাসার মানুষটি যদি প্রতারক হয় তাহলে তাকে কি মেনে নেওয়া যায়?
ছবি সোর্স
Made By-@maksudakawsar
নীলিমা একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছোট মেয়ে। তিন বোন আর দুই ভাইয়ের সংসারে দুই বোন আর দুই ভাই বিয়ে করে আলাদা থাকলেও বাবা হারা সংসারে নীলিমা মাকে নিয়ে একাই একটি ছোট বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। বাবা হারা সংসারে মাকে নিয়ে থেকেও কয়েকটি টিউশনি করে বেশ কষ্ট করে নীলিমা আজ একজন আইনজীবি। হাইকোর্টে একজন নাম করা সিনিয়ারের সাথে নীলিমা কাজ করেন। সংসারের টানাপোড়নে প্রেম, ভালোবাসা বা বিয়ের মত বিষয়গুলো নীলিমা কে স্পর্শ করতে পারেনি। আর আজ অবদি নীলিমার এসব বিষয়ে কোন অনুভূতিও কাজ করেনি।তার চিন্তা ভাবনায় শুধু তার মা , সংসার আর ক্যারিয়ার। এভাবেই যাচ্ছে নীলিমার জীবন।
সিনিয়ার আইনজীবির সাথে কাজ করায় বেশ পরিশ্রম করতে হয় নীলিমা কে। কত শত ক্লাইন্ড যে আসে চেম্বারে। আর সব ক্লাইডকেই নীলিমা কে হ্যান্ডেল করতে হয়। তো একদিন নীলিমার কাছে তেমনি একজন ভদ্রলোক আসে। নীলিমা তাকে ক্লাইন্ড বলেই তার সিটে বসলে বলেন। ভদ্রলোক দেখতে বেশ স্মার্ট আর সুন্দর। অবশ্য নীলিমা কিন্তু দেখতে তেমন সুন্দর নয়। নীলিমার গয়ের রং কালো। সে যাই হোক। ভদ্র লোকের সাথে কথা বলে নীলিমা বুঝতে পারে যে তিনি আসলে কোন ক্লাইন্ড নয়। তিনি নীলিমার বসের ভাই। তো নীলিমা তাকে বসের চেম্বারে পাঠিয়ে দেয়। কিছুক্ষন পর বস নীলিমা কে ডেকে পাঠায় এবং তার ভাইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। নীলিমা তখন জানতে পারে ভদ্র লোকের না নাহিদ। বস নীলিমা কে বলে আমি না থাকলে ও আসলে যাতে কোন অযত্ন না হয়। তো নীলিমা বসের সাথে কথা শেষ করে নিজের চেম্বারে এসে বসে। এদিকে নাহিদ ভদ্রলোক কয়েক দিন পর পর পারিবারিক কাজে ভাইয়ের সাথে দেখা করার জন্য চেম্বারে আসেন। সেই ফাঁকে মাঝে মাঝে ভাই না থাকলে নীলিমার সাথে গল্প করে সময় কাটায়। নীলিমা অবশ্য কম কথা বলে। আর অন্যদিকে নাহিদ বেশ চটপটে একটি ছেলে। এভাবেই কেটে যাচ্ছিলো নীলিমার জীবন।
হঠাৎ একদিন নাহিদ চেম্বারে আসে সেদিন নাহিদের হাতে ছিল একটি ব্যাগ। নীলিমা ভাবে হয়তো ভাইয়ের জন্য কিছু এনেছে। কিন্তু না নাহিদ ভাইয়ের চেম্বারে ঢোকার আগে নীলিমার ডেস্কে কিছুক্ষন বসে। তারপর নাহিদ নীলিমার সাথে অনেক কথা প্রসঙ্গে নীলিমা কে ব্যাগটি এগিয়ে দেয়। নাহিদ বলে এটা আপনার জন্য। কিন্তু নীলিমা বলে কেন এটা আমার জন্য কেন? নাহিদ নীলিমা কে বলে এই যে ভাইয়া না থাকলে আমি বসে বসে অযথা আপনার সময় নষ্ট করি তো, তাই ভাবলাম আপনাকে কিছু একটা দেওয়া দরকার। নীলিমা নিতে না চাইলেও নাহিদ তাকে জোড় করে ব্যাগটি নিতে বলে। একসময়ে অনেক জোড়াজড়ি করলে নীলিমা ব্যাগটি নিতে বাধ্য হন। ভদ্রলোক চলে গেলে নীলিমা ব্যাগ খুলে দেখে বেশ সুন্দর একটি বক্স। আর বক্সের মধ্যে বেশ দামি একটি ঘড়ি। ঘড়িটা বেশ সুন্দর। একবার তাকালে আর চোখ ফেরানো যায় না। নীলিমা ভাবে ভদ্রলোক দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তার পছন্দও অনেক সুন্দর। এরপর থেকে কেন জানি ভদ্রলোকের সাথে নীলিমার গল্প করতে বেশ ভালো লাগে। আর নাহিদ ও এখন আগের চেয়ে একটু ঘনঘন আসে আর নীলিমার সাথে গল্পও করে।মাঝে মাঝে নীলিমা কে বেশ সুন্দর সুন্দর আর দামি দামি গিফটও করেন।
ইদানিং কেন জানি নীলিমার নাহিদের সাথে গল্প করতে বেশ ভালো লাগে। নাহিদ একদিন না আসলে নীলিমার মন যেন কেমন করে। ভিতরে ভিতরে শূণ্যতা অনুভব করে। আর নাহিদের প্রতি নীলিমার এই দূর্বলতা নাহিদও টের পায়। তো দিনে দিনে নীলিমা আর নাহিদ এর সম্পর্ক আরও গভীর হতে শুরু করে। নাহিদ এখন নীলিমা কে নিয়ে মাঝে মাঝে বাহিরে যায়। বাহিরে তারা বেশ ভালো সময় কাটায়। এক সময় দুজনের মধ্যে মধুর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এখন যেন কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারে না। এক সময় নীলিমা এবং নাহিদ দুজনেই অনুভব করে যে তাদের এখন দুজন দুজন কে বেশ প্রয়োজন। তাই নাহিদ নীলিমা কে বিয়ের প্রস্তাব করে। কিন্তু নাহিদ এর কিছু শর্ত থাকে। আর তা হলো নাহিদের পরিবারের সবাই বেশ ধনী। তাদের ঢাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ী আছে। আর সব ভাই বোনেরা বেশ শিক্ষিত। তাই এই মূহূর্তে পরিবারের কাছে বিয়ের কথা বলা যাবে না। পড়ে এক সময় নাহিদ তার পরিবারের সাথে সব আলোচনা করে নীলিমা কে তাদের বাড়ীতে নিবে। আপাততঃ নীলিমাকে সে তার নিজের জায়গায় বাড়ী করে দিবে। অবশ্য বিয়েতে নাহিদের এক চাচা থাকবে। নাহিদের এসব কথায় নীলিমা আর না করতে পারেনি। জীবনের প্রথম ভালো লাগা আর প্রথম ভালোবাসা। তা হউক না যে ভাবেই বিয়ে। সে তো বিয়ে করতে চাচেছ? তাকে নিয়ে তো অন্য কিছু করতে চাচ্ছে না। তাই নীলিমা নাহিদের করথা আর ফেরাতে পারেনি। নীলিমা তার পরিবারের কাছে সব কিছু ভেঙ্গে বলে। পরিবারের সবাই ভাবে যেহেতু নীলিমা তাদের জন্য অনেক সেকরিফাইস করেছে তাই হউক না যেমন করে বিয়ে, তার ভালোবাসার মানুষটিকে তো পাবে।
এরপর নির্ধারিত সময় আর তারিখে তাদের বিয়ে হয়। অবশ্য বিয়েতে নাহিদ নীলিমা কে অনেক দামী দামী গহনা, শাড়ী এবং বিয়ের সব কেনাকাটা করে দেয়। বিয়ের পর নাহিদ আর নীলিমা, নীলিমাদের বাসায় থাকে। নাহিদের বাড়ী তৈরি করা হলে নীলিমা কে নিয়ে সেখানে থাকবে এমনটাই কথা নাহিদের সাথে নীলিমার। বেশ সুন্দর ভালোবাসায় কেটে যাচেছ তাদের জীবন। নীলিমার মাকে নাহিদ মা ডাকে। অনেক সম্মান করে। নীলিমা কে বেশ আদর যত্ন আর ভালোবাসায় রাখে। নীলিমা কে যেন নাহিদ চোখে হারায়। নীলিমার কিছু হলে যেন নাহিদ ব্যাথা পায়। তবে এরই মধ্যে নাহিদ মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়ীতে যায়। নাহিদ নীলিমা কে বলে তাদের গ্রামে বিশাল সম্পদ আর এসব কিছু নাহিদ কেই দেখতে হয়। গ্রামের বিশাল কাঠের স মিল টি নাহিদের ই দায়িত্বে। অবশ্য এসব কথা নীলিমা জানে। কারন নাহিদ যখন তার ভাইয়ের সাথে কথা বলতে যেত তখন এসব বিষয় নিয়েই কথা হতো। তাই নাহিদ কে কোন রকম সন্দেহ করার কোন অপশন নেই। নাহিদ মাসে দুই একবার বাড়ীতে যায় আর সেখানে যেয়ে ১০-১৫দিন করে থেকে আসে। নাহিদ যখন নীলিমার কাছে ফিরে আসে, তখন মনে হয় নাহিদ এর ভালোবাসা নীলিমার জন্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা। তো এভাবেই যাচ্ছিলো নাহিদ আর নীলিমার সংসার জীবন।এর মধ্যে তারা বাচ্চা কাচ্চার জন্য ডাক্তার দেখায়। ডাক্তার বলে সময় লাগবে।
নীলিমা এখন আর কোটে যায় না। কারন নাহিদ এসব পছন্দ কেরে না। তাই নীলিমা বাসায় সময় কাটায়। অবসর সময়ে কিছু টিউশনি করে নীলিমা। এভাবেই চলতে থাকে নাহিদ আর নীলিমার জীবন। হঠাৎ একদিন নীলিমার ফোনে একটি অচেনা নম্বর হতে ফোন আসে। ওপার হতে নীলিমা কে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি কি নীলিমা। নাহিদের উয়াইফ? নীলিমা উত্তর দেয় হ্যাঁ। তারপর ফোনের ওপারের সেই মানুষটির সাথে নীলিমার বেশকিছুক্ষন কথা হয়। একসময় নীলিমার হাত থেকে ফোনটি কখন যে মাটিতে পড়ে যায় সেটা নীলিমা বুঝতে পারে না। তার আগেই নীলিমা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। মেয়ের এ অবস্থা দেখে নীলিমার মা পাশের ঘর হতে দৌড়ে আসে। নীলিমার মা মেয়ের এ অবস্থা দেখে ভেবে নেয় হয়তো মেয়ে কনসিভ করেছে। কিন্তু ততক্ষনে নীলিমার জ্ঞান ফিরে আসে। যখন নীলিমার জ্ঞান ফিরে আসে তখন স্তব্দ নীলিমা শুধু কেদেঁ কেঁদে বুক ভাসায়( চলবে)।
কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের গল্পটি ? অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের অনূভূতি গুলো জানার। আর নীলিমা কেন ফোন পেয়ে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসায় তা জানার জন্য চোখ রাখুন পরবর্তী পর্বের দিকে।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
https://twitter.com/maksudakawsar/status/1665246839279599616?s=20
"তোমায় যাবেনা কখনো ভোলা" গল্পটি ভালো লিখেছেন আপু! ১ম পর্ব পড়ে,২য় পর্বের জন্য আগ্রহ জন্ম নিল! কি হবে নীলিমার? নীলিমা কি নাহিদের ফাদে পড়েছে? তর সইছেনা কিন্ত আপনি ২য় পর্বের পোস্ট না দেওয়া পর্যন্ত তো পাঠক হিসেবে আমাদের জানার উপায় নাই। অপেক্ষায় রইলাম ২য় পর্বের। সুন্দর গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
জ্বী আপু । একেবারে আগামী পর্বে সবকিছু জানতে পাবেন। একটু ধৈর্য ধরুন প্লিজ। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আপনার লেখা পড়ে বুঝতে পারলাম নীলিমা একজন খুব সংগ্রামী মেয়ে ছিল। তার মায়ের সংসার এবং নিজের জীবনকে খুব সুন্দর করে গড়ে তুলেছেন। কিন্তু এক সময় নাহিদ আসলো তার ভালোবাসার মানুষ হয়ে দুইজনের ঘর সংসার হল। কিন্তু হঠাৎ করে টেলিফোনের মধ্যে কি আলাপ হলো নিলিমা জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। সেই গল্পটি পড়ার জন্য অপেক্ষায় রইলাম। আপনার শেয়ার করা গল্পটি অনেক ভালো লেগেছে পড়ে।
আপু হঠাৎ করে টেলিফোনে কি কথা হলো? কেনই বা নীলিমা অজ্ঞান হয়ে গেল। সব উত্তরগুলো না হয় একসাথে দিয়ে দিব আগামীতে। মন্তব্য করার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
গল্পটি খুব সুন্দর লিখেছেন।নীলিমাকে কে কল দিল?? কি বলল? কেনই বা নীলিমা জ্ঞান হারিয়ে ফেললো?? এত এত প্রশ্ন রেখে গল্পটি শেষ করে দিলেন কিছু হইলো?? 😂যাক পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু প্রশ্ন তো রাখতেই হবে। একটু অপেক্ষা করেন। আগামীতে সব প্রশ্নের উত্তর একসাথে দিয়ে দিব।
খুবই চমৎকার একটি গল্প লিখেছেন আপু। আপনার লেখা গল্পটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে নাহিদ ও নীলিমার দাম্পত্য জীবনের কথাগুলো খুবই চমৎকার ভাবে আপনি উপস্থাপন করেছেন। নীলিমার মোবাইল ফোনে অচেনা নাম্বার থেকে কল এসে কি কথা বললো, সেটা জানতে খুব ইচ্ছে করছে। আপনার গল্পের পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
নীলিমার ফোনে অচেনা মানুষটি কি কথা বলল, অপেক্ষা করতে হবে সে রহস্যময় ঘটনা জানার জন্য। ধন্যবাদ ভাইয়া।