প্রাণের প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ পরিবার সবাই কেমন আছেন? আমি কিন্তু আজ বেশ ভালো আছি। তাই আজও আবার সকলের সুস্থতা আর সুন্দর জীবন কামনা করে এবং সকল কে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানিয়ে চলে আসলাম নতুন আরও একটি ব্লগ নিয়ে। মাঝে মাঝে বেশ হাপিয়ে উঠি আমরা। মনে চায় দূরে কোথাও ঘুরে আসতে। কারন আর যাই হোক ঘুরতে গেলে অন্ততঃ পক্ষে মনের মাঝে অনেক শান্তি পাওয়া যায়। কিন্তু ঘুরতে যাওয়ার সময় কোথায়? যে ব্যস্ততার মধ্যে সময় পার করতে হচেছ আমাকে।চোখে তো শুধু সরষে ফুল দেখছি। এই যে আজ একটি বন্ধের দিন গেল কোথায় বাসায় একটু বিশ্রাম করবো, আর নয়তো একটু ঘুরতে বের হবো দূর অজানায়। কিন্তু সেই কপালও নেই। সেই সকাল থেকে বসে থাকতে হলো ডাক্তারের চেম্বারে। না অন্য কারো জন্যে নয়। নিজের জন্যই। সে যাই হোক সেই বিষয় নিয়ে অন্য কখনও কথা বলা যাবে।

সমস্ত দিন ব্যস্ততায় কাটানো পর বিকেলে বাসায় ফিরে যখন একটু বিছানায় রেস্ট নিচ্ছি তখনই আপনাদের ভাইয়ার আবদার। তার সাথে সন্ধ্যায় যেতে হবে দক্ষিন বনশ্রীতে । সেখানে নাকি কি এক স্পেশাল কফি পাওয়া যায়। আমাকে আজ সেই কফি খাওয়াবে। আচ্ছা বলেন তো কার সহ্য হয় এত জ্বালা? কিন্তু কি করবো নাছোড় বান্দা তাই বাধ্য হয়ে যেতে হলো আমায়। বাসার সামনে থেকে রিক্সা নিলাম। আর রিক্সা যে ভাবে চালাচ্ছিল, ভাঙ্গা রাস্তায় আর কোন ফটোগ্রাফি করতে মনে চাইলো না। কিন্তু স্পেশাল কফির ফটোগ্রাফি করতে কিন্তু ভুল করিনি আমি। তো চলেন তো দেখে আসি সেই স্পেশাল কফি।

প্রথমে রিক্সা হতে নেমেই আমার রাগ উঠে গেল। এ কেমন স্পেশাল জায়গায় নিয়ে আসলো আমাকে স্পেশাল কফি খাওয়াতে কি করে এর মধ্যে গাদাগাদি করে বসে কফি খাবো? তারপর আমরা কিছুটা সময় ঘুরে ঘরে সেখানের সমস্ত খাবার আইটেম গুলো দেখলাম। যেহেতু আজ পেটে জায়গা কম তাই আর সেখানের খাবার দোকান গুলোতে আর বসলাম না। তবে আমার কিন্তু জানা ছিল না যে দক্ষিণ বনশ্রীতে এত সুন্দর সুন্দর খাবারের দোকান করা হয়েছে। যাক কিছুক্ষন ঘুরাঘুরি করার পর আমরা একটি ক্যাফেতে ঢুকলাম। আর তখনই বুঝলাম যে সেই স্পেশাল কফি মনে হয় এখানেই। বাপরে ভিতরে তো কোন বসার সিটই নেই। অনেক ছেলেমেয়ে আসে এখানের কফি খেতে।

যেহেতু কোন সিট খালি নেই তাই আমাদের কে বেশ কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হলো সিট খালি হওয়ার জন্য। আর সেই সুযোগে আমি কিন্তু চুপ করে বসে থাকিনি। চেষ্টা করেছি ক্যাফেটির কিছু ফটোগ্রাফি করে নিতে। হঠাৎ একজন ওয়েটার এসে জিজ্ঞেস করলো আমি কেন এত ফটোগ্রাফি করছি। আমি বললাম আমি অনলাইনে দিবো। তখন আপনাদের দোকানের কাস্টমার আরও বেড়ে যাবে। শুনলাম আপনাদের কফি নাকি বেশ স্পেশাল। কিছুক্ষন পর ওয়েটার এসে আমাদের জন্য একটি টেবিল খালি করে দিলো। আমি যতক্ষনে বসে মেনু বুক দেখছিলাম ততক্ষনে ওয়েটার এসে কয়েকবার অর্ডারের কথা জানতে চাইলো। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা স্পেশাল কফির সাথে স্পেশাল বার্গার খাবো। তাই আমরা অর্ডার করে নিজেদের মত গল্প করছিলাম। কিন্তু আমাদের মেনুগুলো আসতে কিন্তু বেশ সময় লেগে গেল। আর লাগবেই না কেন? যে পরিমান লোক হয় এখানে।

আরে বিশ্বাস করবেন না তাদের খাবার যে এত টেস্টি। যতটুকু শুনেছিলাম তার চেয়েও অনেক বেশী। যদিও আমার ক্লোড কফি প্রিয়। যেহেতু মাত্র অসুস্থতা হতে উঠলাম তাই আপনাদের ভাইয়া হট কফিই অর্ডার করলো। সাথে তো আছে ইয়াম্মি স্বাদের বার্গার। আমার তো বেশ ভালোই লেগেছে। আর তার সাথে সাথে সমস্ত দিনের ক্লান্তি যেন দেহ থেকে নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। জিজ্ঞেস করলাম ওয়েটার কে তাদের খাবার গুলো এত স্বাদ হওয়ার রহস্য কি? কিন্তু সে বলল যে এটা তাদের মালিক বলতে পারবে। আর তাই আমারও আর জানা হলো না এত স্বাদের খাবার গুলোর স্বাদের রহস্য।

খাওয়া তো হলো এবার আসলো বিল দেওয়ার পালা। তো আপনাদের ভাইয়া আমাকে বসিয়ে রেখে বিল দিতে গেল। ফিরে আসলে আমরা বের হয়ে গেলাম বাসার উদ্দেশ্যে। জিজ্ঞেস করলাম বিলের কাগজ কোথায়? তাও আবার মেজাজ গরম করা কথা। উনি কোন বিলের কাগজই নেয়নি। কারন বুঝতে পারেনি আমি যে এই বিষয়টি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তবে তার কাছে জানতে পারলাম যে সেই স্পেশাল কফি নাকি প্রতি কাপ ২০০/- টাকা আর বার্গার এর দাম ২২০/- টাকা পিস। সব মিলিয়ে আমাদের বিল নাকি ৮৬০/- টাকা হয়েছিল। কারন পানিও তো ছিল সাথে। আমার তো মনে হয় এই টাকা দিয়ে খুব সুন্দর করে রাতের ডিনার করেই আসা যেত। কি ঠিক বলিনি? তবে সময়টা কিন্তু ৮৬০/- টাকার চেয়েও বেশী মূল্যবান ছিল।

আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো আপনাদের মাঝে নতুন করে নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সকলের সুস্থতা কামনা করে বিদায় নিচ্ছি। কেমন লাগলো আমার আজকের ব্লগটি? আপনাদের সুন্দর সুন্দর মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। আমি একজন বাংলাদেশী নাগরিক। পেশাগত জীবনে আমি একজন চাকরি জীবি এবং গৃহীনি। সেই ছেলেবেলা হতেই আমি গল্প আর কবিতা লেখার চেষ্টা করে আসছি। অনলাইন প্লাটফর্মে কাজ করা আমার যেমন সখ, তেমনি ভাবে নিজেকে কিছুটা স্বচছতার মধ্যে পরিচালিত করাও আমার প্রতিজ্ঞা। সেই ছেলেবেলা হতেই গান বেশ ভালোবাসি। গান শুনতে ও গাইতে আমি বেশ পছন্দ করি। সেই সাথে পছন্দ করি গল্প কবিতা লিখতে। আমি ভিডিও এডিটিং সহ অনলাইন প্লাটফর্মের নানাবিধ কাজ করতে পারি। মাঝে মাঝে গলা ছেড়ে গান করতে বা গান রেকডিং করা আমার এক সময়ের বেশ জনপ্রিয় সখগুলোর একটি। তবে ইচ্ছে আছে নিজের দক্ষতা কে আরও বেশী বৃদ্ধি করে নতুন নতুন কাজ নিজের আয়ত্বে আনা। অবশ্য আল্লাহ যদি চান। ভালোবাসি প্রাণপ্রিয় মাকে। ‍যিনি মহান আল্লাহর মেহমান হয়ে চলে গেছেন ওপারে। তবে জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃখ হলো আমার প্রাণপিয় মাকে নিজের ভালোবাসার কথা বলতে না পারা। সবার কাছে আমার জান্নাতি মায়ের জন্য দোয়া চাই ।