লাইফ স্টাইল- অবশেষে স্টিমিটে কাজ করার অর্থ দিয়ে নিজের ঘর সাজানো || lifestyle by @maksudakawsar ||

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই বেশ ভালো আছেন। আমিও কিন্তু বেশ ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ্। আর ভালো থাকবোই না কেন বলেন তো? এত সুন্দর একটি প্লাটফর্মে কাজ করি। আর শুধু কি কাজ করি? কাজ করতে যেয়ে দুই একটি পয়ঁসা তো ইনকামও করি। সেই সাথে তো অনেক মজার মজার আনন্দ আর উদ্দীপনা। সব মিলিয়ে খারাপ থাকার উপায় নেই। তবে গত কিছুদিন যাবৎ ব্যস্ততা কেমন করে যেন আমায় খপ করে ধরে ফেলেছে। কোন কিছুতেই যেন আর কাটিয়ে উঠতে পারছি না। তবুও চেষ্টা করি আপনাদের সাথে একটু সময় কাটাতে।

সত্যি বলতে অর্থ বা টাকা আমরা যে যেই নামেই বলি না কেন, সেটা কিন্তু আমাদের সকলের কাছেই প্রয়োজনীয়। এই অর্থ ইনকামের উপায়টি যেমন আলাদা তেমনি করে অর্থ ইনকাম হওয়ার পর এর তৃপ্তিও কিন্তু আলাদা। বন্ধুরা গত দেড় বছর যাবৎ আমি এই প্লাটফর্মে কাজ করে যাচিছ। আর মোটামুটি আমার একাউন্টও দিনে দিনে ভারী হচ্ছে। কিন্তু গত দেড় বছরে একাউন্ট থেকে কোন অর্থই আমি তুলিনি। যদিও কিছু স্টিম আমি আমার ছোট বোনকে ডোনেট করেছিলাম। অবশ্য আমি টাকা উত্তোলনের নিয়ম কানুন ও তেমন ভালো করে জানতাম না। তবে আশার বানী হলো এই সপ্তাহে অনেক সাধনার পর কিছু টাক আমি তুলতে পেরেছি। যে অনুভূতিটুকু আজ আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করতে যাচ্ছি। আশা করি আমার অনুভূতি গুলো আপনাদের কে ছুঁয়ে দিবে।

অবশেষে স্টিমিটে কাজ করার অর্থ দিয়ে
নিজের ঘর সাজানো |

Add a heading.png

Banner credit --@maksudakawsar

দীর্ঘ দেড় বছর যাবৎ আমার বাংলা ব্লগে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিটি মানুষই চায় কাজের ফল বক্ষন করতে। সবার মত আমিও চাই। সেই ছেলেবেলা হতে আমি কেন জানি একটু খোলা হাতের মানুষ। টাকা পয়ঁসা ধরে রাখার মত মানুষ আমি নয়। দীর্ঘ সময় সরকারি চাকুরী করার পরও আমি নিজের জন্য তেমন কিছু সঞ্চয় করতে পারিনি শুধুমাত্র হাত বড় থাকার কারনে। তবে যতদিন যাবৎ আমি আপনাদের সাথে কাজ করছি আমি কিন্তু একটি টাকাও তুলতে মন চায়নি। কারন কেন জানি পাওয়ার আপ দেখতে এবং করতে আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। আর তাইতো এখন পর্যন্ত কোন টাকাই আমি তুলতে পারিনি।

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

তবে বেশ কয়েকদিন ভাবছি গাছে যেহেতু ফল লাগিয়েছি একটু খেয়েই দেখি না টক নাকি মিষ্টি। আর তাই তো কদিন যাবৎ এর কাছে তো তার কাছে টাকা তুলার জন্য ঘুরাঘুরি করা। কিন্তু কোথাও তেমন কোন সন্তোষজনক সাড়া না পেয়ে অবশেষে নিজেই নেমে পড়লাম যুদ্ধে। কারন আমি আবার জীবনে কখনও যুদ্ধে হেরে যেতে শিখিনি। শিখিনি পরাজিত সৈনিকের স্বাদ গ্রহণ করতে। যখন যেটা অর্জন করার ইচ্ছে হয়েছিল সেটা করে নিয়েছি। তাই ছোট ভাইয়ের এক বন্ধুকে ডেকে নিয়ে আসলাম বাসায়। ও আবার এসব বিষয়ে বেশ পারর্দশি। আর ওর থেকে শিখে নিলাম পুরো প্রসেস। কি করে নিজ একাউন্ট থেকে খুব সহজেই অর্থ উত্তোলন করা যায়।

image.png

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

অবশ্য মনে মনে ভেবেছিলাম যে এখান থেকে কিছু অর্থ তুলে নিয়ে সমুদ্রের পাড়ে। একটু ঘুরে ফিরে আসবো। কিন্তু কপাল বলে কথা। তাই আর যাওয়া হলো না সেই সমুদ্রের পাড়ে।কারন নতুন বাসায় ঢুকার সাথে সাথে ঘরের অনেক টুকিটাকি পুরানো জিনিস ফেলে দিতে হয়েছে। তাই ভাবছিলাম যে কিছু টাকা তুলে ঘরের কিছু কেনাকাটা করে নিয়ে আসি। আর যেই ভাবনা সেই কাজ। দৌড় দিয়ে চলে গেলাম পাশের শপিং এ ঘরের কিছু কেনাকাটা করার জন্য। কিন্তু হায় আল্লাহ! কেনাকাটা কি আর শেষ হয়। সেখানে যেয়ে তো দেখি সব কিছুই আমার প্রয়োজন। কোনটা থুয়ে কোনটা নিবো।

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

প্রথমে এক চাচার ক্রোকারিজ এর দোকানে ঢুকলাম। অনেক দামাদামি করে সেখান থেকে কিনে নিলাম কিয়ামের একটি ননস্টিক প্যান এবং একটি এ্যালমুনিয়ামের তাওয়া। যদিও দুটো জিনিসই কিয়ামের তবুও আমি কিন্তু বেশ কম দামে কিনে নিয়েছিলাম। দুটো প্যানই ছিল ২৪ সাইজের। আর ভদ্রলোক আমার কাছে দাম চাইলো মোট ২৪৫০ টাকা। আমি প্রথমেই দেখে নিলাম খুদাই করে নাম লেখা নাকি। তারপর আমি দাম বললাম ১০০০/- টাকা। অবশেষে বেশ দামাদামি করে দুটো প্যান আমি নিলাম ১২৫০ টাকায়।

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

তারপর গেলাম একটি ঝুড়ি কেনার জন্য। ওরে বাপ রে বাপ কি যে দাম। মাথা ঘুরে যায় দামের কথা শুনলে। একটি প্লাস্টিকের ঝুড়ি নাকি ১১৫০ টাকা। আর এ হচ্ছে আর এফ এল এর ঝুড়ি। কোন ভাবেই দাম কমানোর কোন উপায় নেই। আর তাই তো দামাদামি করে বেশী ফায়দা হলো না। নিলে নিবো না নিলে নাই একদাম ১০৫০ টাকা। কিন্তু কি আর করার লাগবে তো আমার। তাই তো কিনে নিলাম। কিন্তু বেশ চিন্তায় ছিলাম কোনটি নিবো। অনেক ভেবে চিন্তে ছেলেবেলার মত করে ওবু দশ বিশ গুনে নিয়ে নিলাম একটি ঝুড়ি।

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

গত কয়েকদিন আগে আমার পানি খাওয়ার মগ দুটো ভেঙ্গে গেছে। বাসা প্লাটানোর ঝামেলায় প্রিয় দুটো মগের এমন ভাঙ্গা দেখে মনে বেশ কষ্ট পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার কষ্ট কি আর কেউ বুঝে। তাই ভেবেছিলাম টাকা তুলে সবার আগে দুটো মগ কিনবো। আর নিয়ে নিলাম নিজের জন্য দুটো মগ। কিন্তু দাম কত জানেন? দাম হলো ৪৫০টাকা। আমি বুঝতে পারছি না আমি কি কান্না করবো নাকি হাসবো? এমন দুটো মগ তাও নাকি আবার ৪৫০টাকা। কিন্তু কি আর করবো? কিনতে তো হবে।

image.png

image.png

picture credit --@maksudakawsar
Camera-Vivo-Y22s

অবশেষে প্রয়োজন ছিল বাসার জন্য একটি কড়াই আর কিছু ক্লিপ। তাই বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে একটি দিল্লি এ্যালমুনিয়ামের কড়াই কিনে নিলাম। তার সাথে কিনে নিলাম কয়েকটি দেয়াল ক্লিপ। তবে আমার মনে হয়েছে যে কড়াইয়ের দাম বেশ কমই নিয়েছে। কারন অনেক গুলো দোকান ঘুরলেও কড়াই টি কেউ ৫০০ টাকার নিচে দিতে রাজি হলো না। তবে একটি মাত্র দোকানই যে কিন্তা কড়াইটি আমায় ৪০০ টাকায় দিলো। জানিনা জিতলাম নাকি হারলাম। আর সাথে কিনে নিলাম ১০০ টাকায় দেয়াল ক্লিপ। যদিও আরও অনেক কিছুই কেনার প্রয়োজন ছিল কিন্তু টাকা পয়ঁসা না থাকায় আর কিছুই কেনা হলো না।

image.png

শেষ কথা

এতটুকু জীবনে অনেক টাকাই ইনকাম করা হয়েছে। কিন্তু স্টিমিট প্লাটফর্মের প্রথম ইনকামের টাকা গুলো হয়তো অনেক দিন আমার কাছে স্মৃতি হয়ে রয়ে যাবে। রয়ে যাবে আমার ঘরের প্রতিদিনের কাজের মাঝে আপনাদের সাথে কাটানো হাজারও স্মৃতি।

image.png

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

image.png

Screenshot_1.png

Sort:  
 6 months ago 

যেহেতু আপু আপনি সরকারি জব করেন এজন্য টাকার প্রেসারটা সেভাবে হয়নি। তবে অনেকদিন ধরে যেহেতু কাজ করছেন এবং টাকা জমিয়েছেন টাকা তুলতে পেরে নিশ্চয় ভালো লাগছে। আমাদের এডমিন ভাইয়েরাও কিন্তু আপনাকে সাহায্য করতে পারতো টাকা উত্তোলনের ব্যাপারে। যাক, স্টিমিটের টাকা দিয়ে বেশ কিছু জিনিস কিনেছেন দেখছি

 6 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 6 months ago 

জানতে পেরে খুবই খুশি হলাম এই প্লাটফর্মে কাজ করে বেশ কিছু টাকা উঠেছেন এবং তা দিয়ে রুম সাজিয়েছেন সুন্দরভাবে। আর প্রথমত বাজার থেকে কেনাকাটা করেছেন, সেগুলোই আমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। দীর্ঘ হোক আপনার এই প্লাটফর্মে পথ চলা।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 6 months ago 

বাসা শিফট করে কোন এলাকায় গেলেন আপু? এবার তো আমাদের কাছাকাছি আসতে পারতেন.. তাহলে বেশ মজা হতো!
যাই হোক, প্রিয় কমিউনিটিতে দীর্ঘ সময় নিয়ে কাজ করে সেই ইনকাম দিয়ে নতুন বাসার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনেছেন দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। এরপর তো আমার প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গেলে আপনাকে সাথে নিতে ইচ্ছে করবে! আমি বা আমার হাসবেন্ড কেউই দরদাম করতে পারি না আপু! বাসায় এসে আফসোস করি যে এত বেশি নিলো, ঠকে গেলাম!

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

এরপর বাসা শিফট করলে চলে আসবো ঐদিকে। তবে ভাবছি আপনার আইডিয়াটি কিন্তু খারাপ না। এমন করে যদি প্রত্যেকের জিনিস পত্র ফি এর বিনিময়ে কম দামে কিনে দিতে পারি তাহলে আমারও কয়টা টাকা আসে। হি হি হি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 6 months ago 

🤣🤣🤣
আমি কি আর খারাপ আইডিয়া দিতে পারি! 😎

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

বাহ আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আপনি স্টিমেটে দেড় বছর যাবত কোন টাকা তোলেননি জানতে পেরে আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো। তবে এখান থেকে আপনার ছোট বোনকে কিছু স্টিম ডোনেট করেছিলেন। অবশেষে স্টিমেটের টাকায় নিজের ঘর সাজাচ্ছেন দেখে সত্যি বেশ ভালো লাগছে। আসলে নিজের ইনকামের টাকায় ঘর সাজানোর অনুভূতি সত্যি বলে বোঝানো যাবে না। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

ভাইয়া বেশ সুন্দর এবং সাবলীল একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

 6 months ago 

সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি পড়ে আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। এতদিন কাজ করার পর এই প্রথম টাকা তুলেছেন আপনি। এবং তা ভাল কাজেই লাগিয়েছেন। সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনেছেন দেখে আমার কাছে আরো বেশি ভালো লেগেছে। ঠিকই বলেছেন আপনি এই ধরনের কেনাকাটার মধ্যে দিয়ে আপনার স্টিমেটের প্রথম টাকাগুলো স্মৃতির মত হয়ে থাকবে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

হুম স্মৃতি হয়েই তো থাকবে। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 6 months ago 

বাহ চমৎকার। আপনি দেখেছি এস্টিমেটেড কাজ চলছে আপনার করে টাকা অর্জন করে সে টাকা দিয়ে খুব সুন্দর কিছু কেনাকাটা করেছেন যে আমি ঘর সাজালেও ভালো লাগছে গো ব্যবহার করলে আরো বেশি ভালো লাগবে। ধন্যবাদ অর্জন করা অর্থ দিয়ে খুব সুন্দর কেনাকাটা করেছেন সাজানোর জন্য দেখে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 6 months ago 

অবশেষে নিজের উপার্জিত টাকা তুলেছেন আর শখের জিনিস কিনেছেন দেখে সত্যিই ভালো লাগলো আপু। যদিও আমার প্রতি মাসে টাকা তুলতে হয় তাই সেভাবে জমা হয়ে থাকে না। যাইহোক আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

 6 months ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58639.60
ETH 3167.30
USDT 1.00
SBD 2.43