মানুষ টোকাই নাটক এর রিভিউ
আসসালামু আলাইকুম
আজ শনিবার, 24 ই , সেপ্টেম্বর,২০২২
কেমন আছেন আপনারা সবাই ? আশা করি আল্লাহর রহমতে সকলেই ভাল আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়া ও ভালবাসায় অনেক ভাল আছি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে NTV -তে ঈদ উপলক্ষ্যে প্রচারিত মানুষ টোকাই নাটকটির রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি।
প্রাপ্তি: YouTube
তাহলে চলুন শুরু করা যাক-
গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য
নাটক | মানুষ টোকাই | |
---|---|---|
পরিচালক | মাবরুর রশীদ বান্না | |
অভিনয়ে | ফারহান আহমেদ জোভান, সামিরা খান মাহি, রাশেদ আমরান, নিপুন আহমেদ,গোলাম রব্বানী মিনটু এবং আরো অনেকে | |
এপিসোড | এক পর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ | |
ভাষা | বাংলা ভাষা | |
প্রচার | পবিত্র ঈদ- উল- আযহা | |
সময় | 57 মিনিট | |
প্লাটফর্ম | এনটিভি |
নাটকটির পটভূমি
নাটকের প্রথমে দেখা যায় একজন মহিলা ক্রেতার সাথে দোকানের সেলসম্যানের তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে।তর্কের একপর্যায়ে দোকানের বরকত চলে আসে। বরকত এ দোকানের প্রধান সেলসম্যান এবং ভাল কাজ করায় তার বেতন চল্লিশ হাজার টাকা।বরকত চেষ্টা করে মহিলা ক্রেতাকে শান্ত করার জন্য। কিন্তু সেও ব্যর্থ হয়। ্রএকপর্যায়ে বরকত মহিলা ক্রেতাকে কনভেন্স করে তার কাছে পন্য বিক্রি করেন এবং বরকত অন্য সেলসম্যান টিকে বুঝিয়ে দেয় কিভাবে ক্রেতাকে কনভেন্স করে পণ্য বিক্রি করতে হবে।
নাটকের এ পর্যায়ে দেখা যায় যে বরকত রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এবং হেঁটে যাওয়ার সময় সে রাস্তার পাশে একজন বৃদ্ধ লোক বসে থাকতে দেখে। বরকত লোকটির কাছে যেয়ে বসে এবং লোকটির সাথে কথা বলে বুঝতে পারে লোকটির ছেলে তাকে রাস্তায় ফেলে চলে গেছে। বরকত লোকটিকে বলে আপনার খাওয়ার উপায় এবং থাকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে চলেন আমার সাথে। বরকত লোকটিকে তার সাথে করে তার বাড়িতে নিয়ে যায়।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
নাটকটির এ পর্যায়ে দেখা যায় যে, রাস্তায় পড়ে থাকা লোকটিকে বরকত বাড়িতে নিয়ে আসলে লোকটির জ্বর চলে আসে।এই বাড়িতে শুধু ঐ লোকটি নয় এরকম আরো তিন চার জন পুরুষ এবং দুজন মহিলা আছে। যাদের সন্তানরা তাদেরকে অবহেলা করে ফেলে রেখে গেছে। বরকত তার কাছে থাকা প্রতিটি পুরুষ লোককে বাবা এবং প্রতিটি মহিলাকে মা বলে ডাকে। বরকত লোকটিকে নিয়ে আসলে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং বলে তার সন্তান তাকে ফেলে রেখে গেছে। পরবর্তীতে বরকত তার বাসায় থাকা প্রতিটি বৃদ্ধ এবং বৃদ্বার সাথে খাবার খায়। নাটকের এ পর্যায়ে দেখা যায় বরকতরে জ্বর চলে আসে এবং তার কাছে থাকা প্রত্যেকটি মহিলা এবং পুরুষ তার সেবা-যত্ন করে দোয়া খায়ের করে তাকে সুস্থ করে তোলে।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
নাটকের এ পর্যায়ে দেখা বরকতের দোকানে হঠাৎ রোকাইয়া আসে এবং বরকতকে বকাবাদ্য করে। একপর্যায়ে সে বরকত কে তার সাথে করে বাহিরে নিয়ে যায়। বরকত কে রোকা্ইয়া জিজ্ঞেস করে কেন বরকত রোকাইয়াকে কোন ফোনও দেয়না এমন কি দেখাও করে না। বরকত বলে আমি ব্যাস্ত ছিলাম। কারন নতুন আব্বা এসেছে। এ কথা শুনে রোকাইয়া বলে এভাবে আর কত জনকে নিয়ে আসবেন? আপনার নিজের সামর্থের কথা চিন্তা করতে হবে।রোকাইয়া আরও বলে তার বাবা তার জন্য পাত্র ঠিক করছে এবং বরকত কে তার বাবার কাছে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এ কথা শুনে বরকত বলে ভাল ছেলে পেলে তো বিয়ে দিবেই। এবার রোকাইয়া রাগ করে চলে যায়। এদিকে রাস্তায় বরকতের বাড়িওয়ালার সাথে দেখা হয়ে যায়। আর বাড়িওয়ালা বরকত কে পূর্বের বাসা ভাড়া পরিশোধ করার জন্য প্রেশার দেয়। কিন্তু বরকত বাড়ি আলাকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তার থেকে কেটে পড়ে।
এদিকে বরকত আর রোকাইয়া বরকতের বাড়ীর বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধাদের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠে। এক পর্যায়ে দেখা যায় যে, বরকতের কাছে থাকা বাবাদের একজন বরকত কে বিয়ে করতে বলে। কিন্তু বরকত বিয়ে করতে রাজী হয় না। এদিকে দেখা যায় বরকত প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ে।এজন্য রোকাইয়া বরকত কে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে কিন্তু বরকত টাকা খরচ করে ডাক্তার দেখাতে অস্বীকার করে। এদিকে বরকত রোকাইয়ার বাবার কাছে যায়। কিন্তু রোকা্ইযার বাবা বরকত কে বিভিন্ন ভাবে অপমান করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং রোকাইয়া কে নিষেধ করে দেয় যে বরকতের সাথে তাকে বিয়ে দিবে না।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
অন্য দিকে বরকত সবার জন্য পাড়ার মুদির দোকানে বাজার করতে গেলে দোকানদার তাকে বিভিন্ন ভাবে অপমান করে এবং তার দোকানের খাতা দেখায়ে যে বরকতের কাছে সে 7500 টাকা পাবে। তারপর বরকত অনেক অনুনোয় বিনয় করে দোকানদার কে 2000 টাকা দিয়ে কোন রকমে সদায় নিয়ে আসে। বাড়িতে এসে বরকত দেখে বৃদ্ধাশ্রম এর এক বাবার সন্তান এসেছে তাকে নিতে কিন্তু বরকত কোনভাবেই সেই লোকটিকে তার সন্তানের সাথে যেতে দিবে না। একপর্যায়ে লোকটি বরকত কে বুঝিয়েশুনিয়ে তার সন্তানের সাথে চলে যায়। বরকতের সেই বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে বরকত খুব ভেঙ্গে পড়ে এবং দিনে দিনে বরকত অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
এদিকে রোকাইয়া আসে, সে বরকতের সাথে বিয়ের ব্যাপারে কথা বলে কিন্তু বরকত বিভিন্ন কথা বলে রোকাইয়াকে বোঝায় যে, সে রোকাইয়ার যোগ্য নয়। হঠাৎ বরকত অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। সে সময় বরকত কে তাড়াতাড়ি করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালেরডাক্তার বরকত কে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেন যে, বরকতের ব্রেন টিউমার হয়েছে। বরকত জ্ঞান ফিরে আসার পর তার কি হয়েছে এ কথা রোকাইয়ার কাছে জানতে চাইলে রোকাইয়া তাকে বলে দিতে বাধ্য হয় যে, তার ব্রেন টিউমার হয়েছে। একথা শুনে বরকত রোকাইয়া কে জিজ্ঞেস করে তার হাতে আর কতদিন সময় আছে? রোকাইয়া তাকে বলে আপনার হাতে এক বছর সময় আছে। এদিকে বরকত তার কাছে যে বৃদ্ধ পিতা এবং মাতা ছিল তাদেরকে নিয়ে অন্য বৃদ্ধাশ্রমে রেখে দিয়ে আসে।কিন্তু ঐসব বৃদ্ধারা কেউই বরকত কে ছাড়তে চায় না। একপর্যায়ে বরকত তাদের সবার সাথে খারাপ আচরণ করে, যাতে তারা বরকত কে ভুল বুঝে। বরকত বলে আমার টাকা নাই, আমি আপনাদের খাওয়াতে পারিনা, বাড়ীওয়ালা আমার কাছে টাকা পায়, পাড়ার দোকানদার আমার কাছে টাকা পায়। আমি আর আপনাদের রাখতে পারবো না, আমি অপারগ আমি আর আপনাদেরকে চালাতে পারবো না। এদিকে বরকত রোকাইয়ারে নিষেধ করে দেয় যাতে তার রোগের কথা ঐ সকল বৃদ্ধাদের কাউকে না বলে। কয়েক মাস পর যখন বরকত জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে তখন হাসপাতালে তার সেই আশ্রিত বৃদ্ধ পিতা-মাতা সবাই তাকে দেখতে আসে। এক পর্যায়ে বরকত চোখ বন্ধ করে ফেলে এবং শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
রিভিউ
নাটকটির বরকতের নাম ভূমিকায় ছিলেন ফারহান আহমেদ জোভান আর রোকইয়ার নাম ভূমিকায় ছিলেন সামিরা খান মাহি। নাকটিতে বুঝাতে চেয়েছে যে সমাজের বিত্তবান না হয়েও কিভাবে সামান্য একজন দোকানে সেলসম্যান তার সামান্য বেতনে এতগুলো বাবা মায়ের দায়িত্ব নিতে পারে। আর এই দায়িত্ব আর মায়ার বন্ধনে জড়িয়ে পরিশেষে নিজের মৃত্যু কে আলিঙ্গন করে নিলো। যেখানে আজকাল সমৃদ্ধ পরিবারের ছেলে মেয়েরা তাদের পিতা-মাতা কে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে, সেখান বরকতদের মত এতিম ও অর্থহীন একটি ছেলের বাবা মায়ের প্রতি ভালবাসা আমাকে সত্যি মুগ্ধ করেছে।
রেটিং
পরিচালনা | 8 |
---|---|
কাহিনী | 8 |
অভিনয়ে | 8 |
ভাল থাকবেন , সুস্থ্য থাকবেন।
নাটকের শেষটা এমন হবে কখনো ভাবতে পারেনি। শেষ পযর্ন্ত বরকত মারা যায় 😢। নাটকের কাহিনী টা বেশ দারুণ ছিল। যদিও নাটক টা আমার দেখা হয় নাই। ভালো রিভিউ দিয়েছেন আপু নাটক টার।।
নাটকটির শেষ দৃশ্য কয়েকবার দেখেছি নাটকটি শেষ দৃশ্য দেখে কান্না চলে আসে
মানুষ টোকাই নাটক এর রিভিউ অনেক সুন্দর হয়েছে। আমি ইউটিউব এ নতুন দেখলাম তবে নাটকটি এখনো দেখিনি। আপনার রিভিউ দেখে অনেক ভালো লাগলো। এভাবেই এগিয়ে যান আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
ধন্যবাদ ভাইয়া আমার জন্য দোয়া করবেন এভাবে যেন আমি সব বিষয়ে এগিয়ে যেতে পারি রেসিপি ফটোগ্রাফি ট্রাভেলস আর গল্প সব বিষয়ে আমি এড়িয়ে যেতে চাই।
রিভিউটি পড়ে বুঝতে পারলাম নাটকটি বেশ শিক্ষণীয় । যেহেতু ঈদ উপলক্ষে প্রচার করা হয়েছে যেহেতু কিছুদিন আগেরই। জোভান এবং সামিরা খান মাহি খুব ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী। যাইহোক আপু নাটকটির রেটিং পাওয়ার দিলে আরো ভালো হতো।
ধন্যবাদ আপু। ঠিকই বলেছেন সরটিংটা দিলে ভালই হতো। তবে আপনার কথামত আমি আমার পোস্টটি এডিট করে রেটিং দিয়ে দিয়েছি।
খুব ভালো লাগলো আপু, শুভকামনা জানূই আপনার জন্য।
Hi, @maksudakawsar,
Thank you for your contribution to the Steem ecosystem.
Your post was picked for curation by @rex-sumon.
Please consider voting for our witness, setting us as a proxy,
or delegate to @ecosynthesizer to earn 100% of the curation rewards!
3000SP | 4000SP | 5000SP | 10000SP | 100000SP
নাটকটি সম্পর্কে শুনে খুবই ভালো লাগলো। বরকত রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় যে বৃদ্ধ লোকটি সাথে দেখা হয় তার সাথে কথা শুনে বুঝতে পারলে তার সন্তান তাকে রেখে চলে গেছে। আসলে সম্পূর্ণ নাটকের সম্পর্কে জেনে আমার অনেক ভালো লাগলো আমি সময় করে দেখে নেব।
আপু নাটকটি সময় করে দেখে নিবেন। অনেক অনেক সুন্দর। আমি কয়েকবার দেখেছি।
খুবই চমৎকার একটি নাটক রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। জোভান এর নাটক আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। যদিও এখন পর্যন্ত এই নাটকটা সম্পূর্ণ দেখা হয়নি তবে ফেসবুকের মাধ্যমে খন্ড খন্ড কয়েকটি অংশ দেখেছি। খুব শীঘ্রই নাটকটি দেখব আশা করি সুন্দর উপস্থাপনার জন্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া সত্যি বলেছেন জোভানের নাটক আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। তবে নাটকটি খণ্ড খণ্ডভাবে না দেখে পুরোটা দেখলে আপনার কাছে ভালো লাগবে আশা করি।
আগেই ঈদের সময় এনটিভিতে কত নাটক দেখেছি এনটিভির একটা নাটকও মিস দিতাম না কারণ এই চ্যানেলের নাটক গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগতো। এখন তো নাটক দেখার সময়ই পায় নাই বাংলা ব্লগে কাজ করার পরে। আপনি খুব ভালো একটি নাটকের রিভিউ দিয়েছেন নাটকটি যদিও দেখা হয়নি তবে আপনার রিভিউ পরে দেখার ইচ্ছা রইলো। শুধুকি বিত্তবান হলেই সব দায়িত্ব নেয়া যায় ইচ্ছাশক্তি থাকলেও অল্প টাকার ভিতরে অনেক দায়িত্ব পালন করা যায়।
আপু আপনার সত্য কথা বলেছেন, আমরা আগে টিভিতে নাটক সিনেমা দেখার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতাম আর এখন আমাদের ব্যস্ততার জন্য সেই সময়টুকু হয়না
আপনি অনেক সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। ঈদের এই নাটকটি আমি দেখিনি। তবে আজকে আপনার নাটকের রিভিউ দেখে ইচ্ছে করছে দেখতে। আমি অবশ্যই এই নাটকটি একবার হলেও দেখার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ আপনাকে আপু
সত্যি বলছি আপু আমি নাটকটি কয়েকবার দেখেছি আমার মনে আপনি দেখলে আপনার বেশ ভালো লাগবে