নাটক রিভিউ- ঈদের বিশেষ নাটক ‘’ দায়’’ এর রিভিউ
দায় নাটকের রিভিউ
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালো আছি। আজ আবার চলে আসলাম আপনাদের জন্য নতুন একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে আশা করি আমার আজকের নাটকের রিভিউটিও আপনাদের কাছে বেশ ভাল লাগবে।
দিন যতই যাচ্ছে আমাদের জীবনের ব্যস্ততা যেন তার চেয়েও বেশী বেড়েই যাচ্ছে। জীবন টা কেমন যেন এক ঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে। জীবনের ছন্দ গুলো যেন কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এভাবে কি আর জীবন চলতে পারে? জীবনে তো একটু শান্তি বা স্বস্তি প্রয়োজন। প্রয়োজন হয় বিনোদনের। আবার সেই বিনোদনের জন্যও কিন্তু একটু সময় দরকার হয়ে পড়ে। যেহেতু আমাদের ব্যস্তময় জীবনে সময় একদম কম। তাই বিনোদনের সময়টা ও বের করা জটিল। তবুও মাঝে মাঝ ইউটিউবে ঢুকে পরি। হয়তো শুনি গান। আর না হয় দুই একটা নাটক দেখি।
অবশ্য এ কথা সত্য যে বাংলাদেশের নাটক গুলো বেশ সুন্দর হয়। আর এ দেশের বেশীর ভাগ নাটকই হয় বিনোদন ভিত্তিক। আজ আমি আপনাদের মাঝে চলে আসলাম একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে। আমার আজকের নাটকটি কিন্তু একটি পারিবারিক গল্প নিয়ে রচনা করা হয়েছে। আর নাটকটি দেখে আমার কিন্তু বেশ কান্না পেয়েছিল। জানিনা আপনাদের কেমন লাগবে।
প্রাপ্তি: YouTube
নাটক | দায় | |
---|---|---|
পরিচালক | সকাল আহমেদ | |
অভিনয়ে | ফজলুর রহমান বাবু, মনীরা মিঠু, গায়ত্রী, সাগর মির্জা, অলংকার চৌধুরী এবং আরও অনেকে | |
দেশ | বাংলাদেশ | |
ভাষা | বাংলা ভাষা | |
প্রচার | ২০২৩ | |
সময় | ৫৪ মিনিট | |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
আমজাদ সাহেব একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের পিতা। সে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। মা স্ত্রী, এক ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে তার সুখের সংসার। আমজাদ সাহেবের ছেলে মেয়ে দুটোই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। এদিকে আমজাদ সাহেব তার সন্তানদের কে অনেক আদর করেন। তাই কোন দিন তাদের কোন চাওয়া অপূণ্য রাখেন নি। তাই তো তিন তার ছেলে কে বাইক আর মেয়ে কে আই ফোন কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
হঠাৎ করে আমজাদ সাহেবের ব্যবহারে কিছুটা পরিবর্তন হতে শুরু করে। এই যেমন- অসময়ে বাসায় চলে আসা। অফিস টাইমের পরেও বাহিরে থাকা, রাত করে বাড়ি ফেরা। এছাড়াও আমজাদ সাহেবের মেজাজও ইদানিং বেশ খিটখিটে হয়ে যাচেছ। সহজেই পরিবারের সবার সাথে রেগে যায়। এই তো একদিন তার মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বাসায় ফিরে বাইকার কে গালাগালি করলে আমজাদ সাহেব টাস করে মেয়ের গালে একটি চড় বসিয়ে দেয়। এতে করে পরিবারের সবাই অবাক হয়ে যায়। আমজাদ সাহেব এর আগে কখনও তার সন্তানদের গায়ে হাত তুলেন নি। আর এ সমস্ত বিষয় নিয়ে আমজাদ সাহেবের স্ত্রী আর তার মা তাকে বেশ বকাঝকাও করেনে। কিন্তু আমজাদ সাহেব বলেন এসব শাসন আরও আগে করা দরকার ছিল। ছোট বেলায় আমরাও বাবার হাতে অনেক মার খেয়েছি।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
এদিকে আমজাদ সাহেবের ছেলে মেয়েদের বন্ধু তাকে রাস্তা হতে সুন্দরী মেয়ে কে বাইকে তুলে নিয়ে যেতে দেখে। তাও আবার অফিস টাইমে। এসব কথা বন্ধুরা আমজাদ সাহেবের ছেলে মেয়েদের কে বলে। কিন্তু তারা বলে হতেও তো পারে বাবার অফিস কলিগ। একদিন রাতে আমজাদ সাহেব বাসায় দেরীতে ফিরলে ছেলেমেয়েরা খাবার টেবিলে মায়ের কাছে এসব কথা খুলে বলে। কিন্তু আমজাদ সাহেবের স্ত্রী কথাগুলো গায়ে না মাখলেও তার মা কিন্তু বউ কে সাবধান করে দেন। এবার আমজাদ সাহেবের স্ত্রীর মধ্যে সন্দেহ ঢুকে তাই সে আমজাদ সাহেবের সকল কাপড় চোপড় আর ব্যাগ চেক করে দেখেন।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
আমজাদ সাহেব বুঝতে পারে যে তার স্ত্রী তাকে সন্দেহ করা শুরু করেছে। তাই এসব বিষয় নিয়ে তার এক বাইকার বন্ধুর সাথে কথা বলে যে, সে বাসায় সব কিছু বলে দিবে। কারন তার স্ত্রী তাকে সন্দেহ করা শুরু করেছে। পরে সংসারে আরও অশান্তি বাড়বে। আমজাদ সাহেব অনুভব করেন যে তার শরীর টা বেশী ভালো যাচেছ না। ইদানিং তার বুক বেশ ব্যথাও করে। তাই বন্ধু তাকে ডাক্তার দেখাতে বলেন। এদিকে আমজাদ সাহেবের বাড়িতে পাশের বাসার ভদ্র মহিলা এসে বলে যান যে আমজাদ সাহেব কে শপিং এ দেখেছে যে এক সুন্দরী মহিলা কে বাইকে তুলতে। এসব কথা শুনে তার স্ত্রী বেশ রেগে যায়।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
রাতে আমজাদ সাহেব বাসায় ফিরলে স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করেন মেয়েটি কে। আমজাদ সাহেব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন যে , কোন মেয়ে। এবার স্ত্রী আমজাদ সাহেব কে অনেক বকাঝকা করেন। এমন নি তার সাথে সংসার না করার কথাও বলেন। আমজাদ সাহেব স্ত্রী কে বলেন যে তুমি বসো আমি তোমাকে সব খুলে বলছি। কিন্তু তার স্ত্রী তার কোন কথাই শুনেন না। বরং ঘর থেকে বের হয়ে যায়। আমজাদ সাহেবের স্ত্রী তার সন্তানদের কে জিজ্ঞেস করেন যে তোমরা কার সাথে থাকবা সিদ্ধান্ত নাও। এসব কিছু নিয়ে পরিবারের মধ্যে অন্ধকার নেমে আসে। ঐ দিকে আমজাদ সাহেব বুকের ব্যথায় বিছানায় বসে পড়েন।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
ভোর বেলায় আমজাদ সাহেবের মা, স্ত্রী আর সন্তানরা তার রুমে আসে। তারা রুমে এসে দেখে আমজাদ সাহেব ঘুমাচ্ছে। তারা সবাই তাকে জোড়ে জোড়ে ডাকে। উঠো উঠো কথা আছে। কিন্তু আমজাদ সাহেব আর জেগে উঠে না। একসময় তার স্ত্রী তার হাত ধরে টান দিলে হাত নিস্তেজ হয়ে পড়ে যায়। তখন আমজাদ সাহেবের ছেলে বুঝতে পারে যে তাদের বাবা আর বেচেঁ নেই। কান্নাকাটির এক সময়ে ছেলেটি টেবিলের উপরে একটি চিঠি পায়।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
সেই চিঠিতে আমজাদ সাহেব লিখে যান গত দুই বছরে তার জীবনের বিভিষিকাময় সময়ের কথা। গত দুই বছর হলো আমজাদ সাহেবের চাকুরী চলে গেছে। কিন্তু সেটা তিনি তার স্ত্রী মা আর সন্তানদের কে বুঝতে দেন নি। প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করে দই বেলা বাইক চালিয়ে সংসার চলাতো। ছেলে মেয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ যোগাতো, ছেলের বাইক আর মেয়ের আই ফোনের জন্য টাকা জমাতো। বাড়ির ভাড়া দিতো। কিন্তু এতো কষ্ট সে পরিবার কে বুঝতে দেয় নি। চিঠিতে তিনি একথাও বলে যান এখন তোমার সন্তানেরা বাইক আর আইফোন পেয়ে যাবে। কিন্ত আমায় তোমরা কেউ বুঝলে না। সব কষ্ট বুকে নিয়ে আমি শুধু তোমাদের কে সুখী করতে চেয়েছিলাম।
(ইউটিউব হতে লাইট শর্টে স্কিনশর্ট)
নাটকটিতে একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের পিতার সত্যিকারের চরিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন পরিচালক সকার আহমেদ। একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা বা স্বামী যতই কষ্ট হউক সকল কষ্ট গুলো নিজের বুকের মধ্যে জমা রেখে পরিবারের সবার চাহিদা গুলো পূরন করে তাদের মুখে হাসি ফুটাতে হাসতে হাসতে জীবন দিতে পিছ পা হয় না। আর মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবার ভূমিকায় ফজলুর রহমান বাবুর অভিনয় ছিল অসাধারন।
ফজলুর রহমান বাবু এর নাটক আমার কাছ থেকে অনেক ভালো লাগে। দায় এই নাটকটি আমার দেখা হয়নি কিন্তু আপনার পোস্টটি পড়ে দেখার ইচ্ছে জাগলো আমার। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ।
জি ভাইয়া সময় করে দেখে নিবেন। একটি পারিবারিক গল্প। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
এই নাটকটি আমি দেখেছিলাম। যখন আমি নাটকটি দেখেছিলাম তখন আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছিল। আজকে আবারো আপনার রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে নাটকটি নতুন করে দেখতে পেয়ে আরো বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। খুবই সুন্দরভাবে নাটকটির রিভিউ শেয়ার করেছেন আমাদের সকলের মাঝে। ভাগ করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
নাটকটি দেখে আমার বেশ মনটা খারাপ লেগেছে। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
ফজলুর রহমান বাবু মুভি বা নাটক সব জাগায় সুন্দর অভিনয় করে। দায় নাটকটি আমার দেখা হয়নি তবে আপনার রিভিউ পড়ে দেখার আগ্রহ পেলাম। ধন্যবাদ আপু।
জি ভাইয়া। আমার মতে উনি একজন লিজেন্ড অভিনেতা। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য।
আসলে আমাদের ব্যস্ত জীবনে সময়ের খুব অভাব। আপনার মত আমিও মাঝে মাঝে ইউটিউবে ঢুকে পড়ি দু একটা নাটক দেখি। ভীষণ ভালো লাগে আমার কাছে এভাবে বিনোদন নিতে। খুবই সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ ছিল এই নাটকটা আমি দেখিনি। সর্বপ্রথম আপনার রিভিউ পোস্ট এর মাধ্যমে দেখে ভালো লেগেছে। তবুও ভাবছি সময় পেলে একবার দেখে নেব।
আপু সময় পেলে একবার দেখে নিবেন আশা করি আপনার কাছে বেশ ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
https://twitter.com/maksudakawsar/status/1656193102577811457?s=20
যাক রিভিউ পরে পুরো নাটক মাথায় চলে আসলো। ভালোই লাগতেছে এখন। এটা দারুণ ছিলো। মধ্যবিত্ত অনেক পরিবারের নিত্যদিনের গল্প এ যেনো। অনেক ছেলে মেয়ে আছে ফ্যামিলির কারো কথা বুঝতে চায়না। আমজাদ সাহেব এর কষ্ট কিছুটা হলেও অনুভব করা যায়।
জি ভাইয়া মধ্যবিত্ত পরিবারের নিত্য দিনের গল্প দায় নাটকটি।।আর আজকালকার ছেলে মেয়েরা কেন যেন পরিবারের কষ্ট বুঝতে চায় না। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
বর্তমানে যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের বসবাস করে তারা খুবই কষ্টে রয়েছে। কখনো কাউকে বলতে পারেনা আবার সইতেও পারে না। নাটকটির রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। এই ধরনের নাটক দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে সময় পেলে দেখব আপু।
আসলেই নাটকটি অনেক সুন্দর। আশা করি সময় করে একবার দেখে নিবেন। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
হ্যাঁ আপু ইদানিং বাংলাদেশের নাটক গুলো খুব সুন্দর হচ্ছে। আমার কাছে এখন এই নাটকগুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে। যাই হোক আপনি খুব সুন্দর নাটক রিভিউ দিয়েছেন। আপনার রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। এই নাটক এখনও দেখা হয়নি তবে সময় পেলে অবশ্যই দেখবো। ধন্যবাদ।
আমি তো দেখলে বাংলা নাটকটি দেখি আপু। ধন্যবাদ বেশ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।