জেনারেল রাইটিং:- গ্রামের মানুষ কি সহজ সরল?

"আসসালামু আলাইকুম" আশা করি আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো ও সুস্থ আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু আজকে আমার নতুন ব্লগ। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি গ্রামের মানুষ কি সহজ সরল এই নিয়ে কিছু কথা। তাহলে চলুন শুরু করা যাক....

গ্রামের মানুষ একটু বেশি সহজ সরল। তবে হ্যাঁ বর্তমান সময়ে আমার এই কথার বিতর্ক রয়েছে। কারণ বর্তমান সময়ে গ্রামের মানুষ গুলো বেশ বেপরোয়া। মানুষের সাথে মানুষের কানাকানি বেশি করে। আর কানাকানির জন্য মানুষের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। কারণ গ্রামের মানুষগুলো এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি খুব সহজে যাওয়া আসা করতে পারে। যেটা শহরে কখনোই সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর এর জন্য গ্রামের মানুষ বেশি ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয়। যেটা শহরে মানুষের হয় না। বলব না হয় না কিন্তুু অনেক কম হয়। সময়ের সাথে সাথে মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে গেছে এখন। গ্রামের মানুষ শহরে মানুষের মতই জীবন যাপন শুরু করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলেও গ্রামের মানুষ এখন আর সহজ সরল নয়। এদের মধ্যে হিংসা প্রতিহিংসা বেশি।

আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন দাদাদের কাছ থেকে অনেক গল্প শুনেছি। গ্রামের মানুষের মধ্যে একতা ছিল একটা সময়। যে কোন মানুষের কোন বিপদ হলে খুব সহজে তারা একে অপরের সহযোগিতা করত পাশে এসে দাঁড়াতো। মানুষের সেই সময় মানুষের ক্ষুধা ছিল আর ক্ষুধা নিবারণের জন্য খাবার ছিল না। কিন্তু মানুষ একে অপরের প্রতি খুবই পরিপূরক ছিল। চেষ্টা করত নিজের সাধ্যমত একে অপরের সাহায্য করতে। তাদের মধ্যে হিংসা ছিল না বিদ্বেষ ছিল না। তারা কখনো কোনো মানুষের খারাপ চাইতো। এক কথায় সহজ সরল বলতে যেটা বোঝায় সেটা আদিকালে মানুষের মধ্যে ছিল। সত্যি বলতে দাদার কাছ থেকে আমি একটা গল্প শুনেছিলাম। বাস্তব ঘটনা সেটা শুনে বুঝতে পারছিলাম আসলে তারা কতটা সহজ সরল গল্পটা ছিল।

তখনকার সময় বনজ সম্পদ ছিল অনেক। রাস্তার পাশে ঝড় জঙ্গল ছিল বেশি। সেই সময় মানুষের পায়ের স্যান্ডেল ছিল না।থাকলেও খুব কম সংখ্যক লোকের ছিল। আর যেটা ছিল তা হল খড়ং পায়ে দিয়ে চলত। তখন ছিল মাটির রাস্তায় মানুষজন চলাচল করতো। একজন ব্যক্তি গিয়েছিল বাজার করতে। আসতে বেস টুকু রাত হয়ে যায়। আস্তে আস্তে যে জায়গাটা আসছিলো সেখানে জঙ্গল বেশি ছিল। সেই জায়গাটায় হঠাৎ করে তার সামনে একটা ঢিল পড়ে। প্রথমে সে খুব একটা কিছু মনে করছিল না। কিন্তু বারবার যখন সে চলার পথে সেটা পড়ছিল সে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিল। এমনকি বলতে হয় ভয় পেয়েও গিয়েছিল। তার কাছে মনে হয়েছিল ঢেলা মারছে কেউ। মানুষ না ভুতে, ভূত বলে যে কিছু আছে সেটা মানতো কিন্তু বাস্তব অর্থে যে কোন কিছুই না। তখন তিনি হাঁটছিল তার পায়ে ঢিল পড়েছিল সেই ঢিল গুলো তার সামনে পড়ছিল। এটা দেখে সে ভয় পেয়েছিল। সেই সময়ের মানুষ গুলো কত সহজ সরল হলে তারা এমন চিন্তাধারা তাদের মাথায় আসে।

তবে আমার দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমানে গ্রামের মানুষ সহজ সরল। তবে এর সংখ্যা অনেক কম। মানুষ বর্তমান সময়ে যত শিক্ষিত হয়েছে তত মানুষ বুঝতে শিখেছে। একজন মানুষ অপরকে কিভাবে ক্ষতি করবে সেই সম্পর্কে তারা যথেষ্ট জ্ঞান লাভ করেছে। আমার মনে হয় শিক্ষিত বেশি হয়ে গেছে বলেই গ্রামের মানুষ গুলো এখন আর সহজ সরল নেই। সুযোগ পেলে তারা মানুষের ক্ষতি করতে একটুও সময় নেয় না। আদিকালের মানুষ এবং বর্তমান মানুষের মধ্যে অনেক তফাৎ। তাই আমি বলবো গ্রামের মানুষ গুলো এখন আর সহজ সরল নেই। এরা এখন আর স্বজনপ্রীতি বোঝে না আগের মত। নিজের স্বার্থের কাছে এরা সব কিছু বিক্রি করে ফেলেছে। শহরের মানুষের গ্রামের মানুষের মধ্যে তফাৎ করা টাকা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।

আমি মাহমুদা রত্না। আমি কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার চৌদুয়ার গ্রামের মেয়ে। আর মেহেরপুর জেলার গাংনী থানার জুগীরগোফা গ্রামের বউ। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন করছি কুষ্টিয়া গর্ভমেন্ট কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে,ক্রাফট এর কাজ করতে অনেক পছন্দ করি। বর্তমানে আমি ফ্রীল্যান্সিং সেক্টরে ডিজাইন এবং এসইও পদে কাজ করছি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (১৯ - ১১ - ২০২৩) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।