"ঘুণ" বাংলা নাটক রিভিউ
আ মার বাংলা ব্লগের সকল বাংলাভাষী ব্লগার ভাই এবং বোনদের আমার সালাম এবং আদাপ। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভাল আছি।
নাটক থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
কয়েকদিন থেকে আমার বাংলা নাটক দেখার প্রতি আগ্রহটা কেন জানি একটু বেশি কাজ করছে। আজ সারাদিন বাসায় বসে দুটো বাংলা নাটক দেখেছি দুটোর মধ্যে এই ঘুন নাটকটি আমার কাছে খুব ভালো লাগলো তাই ভাবলাম নাটকটি রিভিউ আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করা যাক। ভিকি জাহেদের নাটক বলে কথা ভালো তো হবেই। ভিগি জাহেদ আমার খুবই পছন্দের একজন পরিচালক যার প্রত্যেকটা নাটক আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। তেমন তার এই নাটকটি আমার কাছে এক কথায় অসাধারণ লেগেছে।
আমি চেষ্টা করবো আমার এই পোস্টে আমি নাটকের মূলভাবটা আপনাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলতে। নাটকের পুরো ঘটনা আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব না কারণ এখানে যদি আপনারা পুরো নাটকটি পড়ে ফেলেন তাহলে নাটকটি দেখার সময় খুব একটা উপভোগ করতে পারবেন না। তাই আমি অল্প করে সেই নাটকের স্টোরি লাইন আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
"ঘুণ"
নাটক | ঘুণ |
---|---|
পরিচালক | ভিকি জাহেদ |
লেখক | ভিকি জাহেদ |
অভিনয়ে | মেহজাবিন চৌধুরী, খায়রুল বাসার, নাজিব বাসার |
সময় | ৫৩ মিনিট ২২ সেকেন্ড |
এই নাটকের মূল চরিত্রে আমরা দেখতে পারবো মেহজাবিন চৌধুরী এবং খাইরুল বাশার কে। তারা দুজন ফুড ব্লগিং করে। তারা মোটামুটি ভালই জনপ্রিয় ফুড ব্লগার। তাদের youtube চ্যানেলে ১০ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার রয়েছে, এটা দেখে বোঝা যায় তারা কতটা জনপ্রিয়। ফুড ব্লগিং এর পাশাপাশি তারা ফেসবুক অথবা সোশ্যাল মিডিয়ার লাইভে এসে ভালোবাসা সম্পর্কিত বিভিন্ন এডভাইস মানুষদের দেয়। তাদের দুজনের মধ্যে ছিল অনেক বেশি ভালোবাসা তাই হয়তো তারা এতদূর পৌঁছাতে পেরেছে দুজন দুজনের পাশে দাঁড়িয়ে।
এর মধ্যেই আমরা দেখতে পারি মেহজাবিনের একটা সমস্যা রয়েছে সেটা হল সে ঘুম থেকে ওঠার পর স্লিপিং প্যারালিজড হয়ে যায়। এর মানে হলো ঘুম ঠিকই ভাঙ্গে কিন্তু সে শরীর নাড়াচাড়া করতে পারে না। যাকে আমরা এক কথায় বলে থাকি বোবা ধরা। অনেকেই হয়তো এই বোবা ধরা সম্পর্কে জানেন খুব মারাত্মক একটি জিনিস এটা।
তো একদিন রাতে মেহজাবিন শুয়েছিল তখন খাইরুল বাসার সেখানে চলে আসে বুকে হাত দিয়ে। মেহজাবিনের ঘুম তখন ভাঙ্গে কিন্তু সে কোনভাবেই নড়াচড়া করতে পারছিল না। তারপর খাইরুল বাশার তার বিছানার সামনে বুক ধরে বসে পড়ে। মেহজাবিন চেয়েও কিছু করতে পারছিল না এটা দেখে বেশ খারাপ লাগছিল আমার কাছে। তারপর খাইরুল বাশার সেখানে হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যুবরণ করে।
খাইরুল বাশার এর মৃত্যুর পরেই সব কিছু শেষ হয় না। সেদিন খাইরুল বছরের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে একটি মেয়ে কান্না করছিল। এটা দেখে মেহজাবিনের মনে কিছুটা সন্দেহ জেগে যায় কেন মেয়েটি কান্না করছে কিবা সম্পর্ক ছিল খায়রুল বাসার সাথে সেই মেয়েটির। যতই দিন যায় মেহজাবিনের মনের ভিতর ততই এই সন্দেহটা বাড়তেই থাকে। তাই মেহজাবিন ঠিক করে এর রহস্য সে উদঘাটন করেই ছাড়বে।
প্রথমের দিকে মেহজাবিনের কথা কেউ বিশ্বাস করছিল না যে সেখানে কোন মেয়ে ছিল সবাই তাকে একটাই কথা বলছিল যে এটা তার হ্যালুসিনেশন ছিল। কিন্তু মেহজাবিন এর বান্ধবী একদিন তার বাসায় আসার পর মেহেজাবিনকে বলে সেও সেই মেয়েটিকে দেখেছে। তখন মেহজাবিনের সন্দেহটা আরো তীব্র হয়ে যায়। তারা খাইরুল বাশারের মোবাইল ফোন ল্যাপটপে প্রবেশ করার চেষ্টা করে কিন্তু পাসওয়ার্ড এর কারণে তারা এ কাজ করতে ব্যর্থ হয়।
খাইরুলের ফোনে কি এমন আছে যে সে এত স্ট্রং পাসওয়ার্ড দিয়ে ফোন লক করে রেখেছে। এটা জানার জন্য মেহজাবিন প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। তারপর নাজিবার কথা অনুযায়ী মেহজাবিন একটি মোবাইল রিপেয়ার এর দোকানে যায় সেখানে গিয়ে মোবাইলের তথ্য বের করার চেষ্টা করে কিন্তু সেখানে গিয়েও মেহজাবিন ব্যর্থ হয়।
যতই দিন যায় ততই মেহজাবিন আস্তে আস্তে ভেঙ্গে পড়ে। এত চেষ্টা করার পরেও সে কোনোভাবেই সে মেয়েটির বিষয়ে কোন তথ্য জোগাড় করতে পারছিল না। তার খুব জানার ইচ্ছা ছিল সেই মেয়েটি কে ছিল। তার মনের সন্দেহ সে কোনভাবেই দূর করতে পারছিল না। তার মনে সন্দেহ দূর করার একটাই উপায় ছিল সেটা হল সেই মেয়েটির সাথে কথা বলা অথবা খাইরুলের ল্যাপটপ কিংবা মোবাইলে প্রবেশ করা।
তারপর আবার মেহজাবিন এর হ্যালুসিনেশন হয় যে খাইরুল রুমে বসে সেই মেয়েটির সাথে সময় কাটাচ্ছে, এগুলো দেখে মেহজাবিন ভীষণভাবে রেগে যায় এবং কিছু একটা কাচের দিকে ঢিল মেরে ভেঙ্গে ফেলে। এরকম হওয়াটা স্বাভাবিক, কারন সে কোনভাবেই তার এই সন্দেহ দূর করতে পারছিল না।
তারপর নাজিবা এবং মেহজাবিন কারের ভেতর বসে এসব নিয়ে আলোচনা করছিল। তখন নাজিবা মেহজাবিনকে বলে আমরা তো বুঝেই গেলাম খাইরুল একজন চিটার ছিল। এখন এসব বাদ দিয়ে নিজের জীবন নিজের মতো করে শুরু কর। তখনই একজন ছিনতাইকারী এসে মেহজাবিনের ব্যাগটি চুরি করে নিয়ে যায় যেখানে অয়নের সেই ফোনটি ছিল। এরপর মেহজাবিন আরও ভেঙ্গে কারণ সেই ব্যাগে খাইরুলের ফোনটি ছিল এবং সেই ফোন দিয়েই তারা খায়রুলের সব রহস্য উদঘাটন করতে পারতো।
তারপর নাজিফার কথা অনুযায়ী মেহজাবিন তাদের ফেসবুক লাইভে যায় এবং অয়নের ব্যাপারে সব খুলে বলে। অয়ন তার সাথে চিট করেছিল এসবও বলে বলে পোস্ট করে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই ভিডিওটি ভাইরালও হয়ে যায়।
পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে , কথা থেকেই সে অয়নের ফোনের পাসওয়ার্ডটি বের করে ফেলে। অয়নের ফোনে প্রবেশ করার পর মেহজাবিন সেই মেয়েটির মেসেজ দেখে যেখানে লেখা ছিল অয়ন এবং মেহেজাবিনকে একসাথে খুব সুন্দর মানিয়েছে। এটা দেখে মেহজাবিন অনেক খুশি হয়ে যায় কারণ অয়ন তার সাথে কোন চিট করেনি। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল মেহজাবিন যে ভিডিওটি আপলোড করেছিল সেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় এবং সবাই জেনে যায় যে অয়ন মেহেজাবিন এর সাথে চিট করেছিল। আর এখানেই নাটকটি শেষ হয়ে যায়।
ভিকি জাহেদের নাটক বরাবরই আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। আর এই নাটকটি ও আমার কাছে মোটামুটি ভালই লেগেছে। খুব সুন্দর কনসেপ্ট ছিল এই নাটকটি যা আপনাদের কাছে ভালো লাগবে বলে আমি মনে করি। আশা করি আপনারা সবাই এই নাটকটি দেখবেন।
৮.৫/১০ |
---|
YouTube |
---|
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
https://twitter.com/mahir4221/status/1548033066798440448?t=rfH3G2n_uS_IdDFH87onNY1DqbO45QKZnlu8-rLwaoQ&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ঘুণ" বাংলা নাটক রিভিউ বাহ্ বাহ্ দারুন হয়েছে। আপনার নাটক রিভিউ গুলো আমার ভীষণ ভালো লাগে। অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে উপস্থাপনা করেছেন। সময় করে নাটকটি দেখবো। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া
নাটকটার সঙ্গে আমাদের বাস্তব জীবনেরও অনেক মিল রয়েছে। আসলেই সামান্য ভুল বোঝাবুঝির জন্য অনেক বড় একটা সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিন্তু মানুষ যখন সেটা বুঝতে পারে আর কিছু করার থাকে না। এই নাটকেও ঠিক এমনটাই দেখা গেছে। নাটক টা আমার দেখা হয়নি। কাহিনী টা ভালো ছিল।।
এজন্য কারো নামে কিছু না জেনে পাবলিশ করা উচিত না । মেহজাবিনের উচিত ছিল কিছু না জেনে পাবলিশ না করা । তাহলে হয়তো সবাই জানতে পারতো যে অয়ন মেহজাবিনের সাথে চিট করেনি । ভালো রিভিউ দিয়েছেন আপনি । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
খুবই চমৎকার একটি নাটক রিভিউ আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ।নাটক দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে ,তবে কিছুদিন আগে সময়ের অভাবে তেমন একটা নাটক দেখা হয়ে উঠতো না কিন্তু এখন আবার পর্যাপ্ত সময় যার কারণে প্রায় সব সময় নাটক দেখি। তবে আপনার এই নাটক এখন পর্যন্ত দেখা হয়নি। সংক্ষিপ্ত আকারে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
নাটকের রিভিউ দেখলে আমার ভীষণ ভালো লাগে। ভালোলাগার একমাত্র কারণ হলো আমি যে নাটকগুলো দেখি না সে নাটকে রিভিউ দেখলে পরবর্তীতে নাটকগুলো দেখার চেষ্টা করি। এজন্য সুন্দর একটি নাটক করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক চমৎকার একটি নাটক, আসলে আপনি রিভিউ না দিলে জানতেই পারতাম না এত সুন্দর একটি নাটকের কথা।ধন্যবাদ আপনাকে খুব শীঘ্রই নাটকটি দেখে নেব ভালো থাকবেন।