"ভুলজন্ম" বাংলা নাটক রিভিউ 🎥 || 10% Beneficiaries to @shy-fox 🦊
আ মার বাংলা ব্লগের সকল বাংলাভাষী ব্লগার ভাই এবং বোনদের আমার সালাম এবং আদাপ। সবাই কেমন আছেন? অবশ্যই সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহ তায়ালার রহমতে অনেক ভাল আছি।
আজ আবার আরেকটি নতুন নাটকের রিভিউ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। আফরান নিশো এবং মেহজাবিন চৌধুরী অভিনীত এই নাটকটি ভিকি জাহেদ এর পরিচালনায় নির্মিত একটি নাটক। নাটকের সব খুঁটিনাটি বিষয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। আশা করি আমার পোস্ট পড়েই আপনারা নাটক দেখার অনুভূতি নিতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরী না করে শুরু করা যাক আজকের নাটকটির রিভিউ।
ভুলজন্ম
ছবিটি নাটক থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে Picsart দিয়ে এডিট করা
নাটকের তথ্য :
লেখক | ভিকি জাহেদ |
---|
ডিরেক্টর | ভিকি জাহেদ |
---|
অভিনয়ে | আফরান নিসো, মেহজাবিন চৌধুরি |
---|
সময় | ৫৯ মিনিট |
---|
নাটকের কাহিনি :
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
নাটকটির শুরুতে আপনারা দেখতে পারবেন শিরিন নামে একটি মেয়ের মা মারা গিয়েছে কিন্তু কেউ তার মায়ের জানাজা নামাজ পড়াচ্ছে না। অনেক হুজুরের কাছে গিয়েও শিরিন কোন ফল পায় না। কারন তার মা একজন খারাপ মহিলা ছিলেন। তাই এদিক সেদিক ছোটার ফলেও কোন হুজুর তার মায়ের জানাজা নামাজ পড়ায় না। শেষমেষ সে একজন হুজুর কে খুঁজে পায় যে তার মায়ের জানাজা নামাজ পড়ায়।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
তারপর শিরিনের মা মারা যাওয়ার পর শিরিন তার নাসরিন খালার কাছে চলে আসে, কারন তার মা বলেছিলেন তার যদি কখনো কিছু হয়ে যায় সে যেন তার নাসরিন খালার কাছে যায়। শিরিন তার মায়ের মত খারাপ কাজে লিপ্ত হতে চায়না তাই সে তার নাসরিন খালার কাছে ভালো কিছু কাজ চাই। তার নাসরিন খালা তাকে প্রতিশ্রুতি দেয় তাকে ভালো কাজ জোগাড় করে দিবেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায় তার নাসরিন খালাও খারাপ কাজের সাথে লিপ্ত এবং শিরিন কেও খারাপ কাজের সাথে লিপ্ত করতে চেয়েছিল। কিন্তু শিরিন চালাকির মাধ্যমে সেখান থেকে পালিয়ে আসে।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
শিরিন সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হলেও নাসরিন খালার লোকেরা শিরীনকে খুঁজতে থাকে। খুঁজতে খুঁজতে রকির গাড়ির কাছে গিয়ে পড়ে, যে কি না খুব নেশা করে। রকির গাড়ির পিছনেই শিরিন লুকিয়ে ছিল। নাসরিন খালার লোকেরা শিরীনকে খুঁজে না পেয়ে সেখান থেকে চলে যায়। তখনই শিরিন রকির কাছে এসে সাহায্য চায় যেন সে তার গাড়িতে তাকে লুকাতে দেয়। তারপর শিরিনের বিপদ দেখে রকি তাকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়ে যায়। তারপর শিরিন সেখানে লুকিয়ে থাকে সকাল পর্যন্ত।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
সকাল হওয়ার পর রকি শিরিনের কাছে তার ঘটনা শুনে এবং জানতে পারে সেখানে তার কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই এবং সেদিন যে টাকা বাসা থেকে এনেছিল সেটা তার খালার বাসাতেই রেখে এসেছে। তাই শিরীনকে নিয়ে আবার তার খালার বাসায় যায় এবং টাকা এবং তার কাপড়ের ব্যাগ সহ তাকে নিয়ে ফিরে আসে। তারপর তাকে নিয়ে যায় আবাসিক এলাকায় এবং তাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
শিরিন যে এলাকায় থাকে সে এলাকায় ঘুরতে ঘুরতে তার চোখে একদিন গার্মেন্টসের চাকরি নিয়োগের কাগজ চোখে পড়ে। সেই কাগজ দেখে সে গার্মেন্টসে ঢুকে পড়ে এবং গার্মেন্টসেতে চাকরি দিবে তার সাথে কথা বলে। শিরিন তার সব কাহিনী তাকে খুলে বলে এবং সেই লোকটি তাকে চাকরি দেয়। কিন্তু কিছুদিন চাকরি করার পর সেই লোকটির শিরিনের দিকে খারাপ নজরে এবং খারাপ ভাবে তাকে স্পর্শ করে তাই সে চাকরিটি ছেড়ে দেয়।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
গার্মেন্টসের চাকরি ছাড়ার পর সেদিন আরেক জায়গায় চাকরি নেয়ার জন্য যায় কিন্তু সেখানে তার পূর্ব কাহিনী শোনার পরে তাকে একটু অন্য চোখে দেখে চাকরিদাতা। এবং তাকে অন্যভাবে স্পর্শ করে খারাপ ইঙ্গিত দেয়। তাই শিরিন সেখানেও চাকরি করে না।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
এদিকে রকি এবং শিরিন একসাথে সময় কাটাতে কাটাতে কখন যে একে অপরের প্রেমে পড়ে যায় তারা বুঝতেই পারেনা। একে অপরের সাথে সময় কাটাতে কাটাতে তারা দুজন দুজনকে ভালোবেসে ফেলে।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
রকির বাবা শিরিন এবং তার বিষয়টি জানতে পারে এবং রকি কে বলে সে যদি তাকে ভালোবেসে থাকে তাহলে তাদের বিয়ে করাবে তবুও সে যেন আর নেশা না করে।
তাই এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শিরীনকে বাসায় ডাকে রকির বাবা। বাসায় আসার পর রকিব ছোটবেলার রুম দেখার কথা বলে রুমে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে এবং তার সাথে খারাপ আচরণ এবং তার সর্বনাশ করে।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
এগুলো শোনার পর রকি শিরিন কে পাগলের মত খুঁজতে থাকে কিন্তু কোথাও খুঁজে পায় না। তারপর রকি তার বাবার লোকেদের কাছে যায় এবং সেখানে তার বাবার লোকেদের সাথে হাতাহাতি হয় এবং সে মার খায়।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
তারপর সে যখন শিরিন কে খুঁজে পায় তখন তাদের দুজনেরই জীবনের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল তারা কেউ বাঁচতে চাচ্ছিল না। তাই দুজনেই ঠিক করে একসাথে মারা যাবে। তাই দুজনে একসাথে বিষ খেয়ে নেয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখা যায় শিরিন মারা যায় কিন্তু রকি বেঁচে থাকে। কারণ শিরিন হাতে যে বোতলটি দিয়েছিল সেটাতে আসল বিষ ছিল না। শিরিন মারা যাওয়ার পর রকি যেন তাঁকে স্মরণ করে তাই সে রকির হাতে বিষ দেয় নি।
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
ছবিটি YouTube থেকে স্ক্রিনশট নেয়া
শিরিন মারা যাওয়ার পর রকি একদম ভালো হয়ে যায় সে নেশা করা ছেড়ে দেয় এবং সে খারাপ মহিলাদের ভালো পথ দেখানোর একটি প্রতিষ্ঠান খোলে। এবং রকি প্রত্যেকদিন শিরিনের কবরে গিয়ে শিরিনের জন্য দোয়া করে।
নাটক থেকে শিক্ষনীয় বিষয়
পৃথিবীতে এধরনের অনেক সন্তান আছে যাদের বাবা মা খারাপ কাজের সাথে লিপ্ত। কিন্তু সন্তান তাদের বাবা-মার কাজে সন্তুষ্ট নয়। সন্তান ভালো কাজ করতে চায়। কিন্তু তাদের বাবা-মার কর্মের কারণে তারা কোথাও ভালোভাবে দাঁড়াতে পারে না তাদের যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পারেনা। তারা যখন কোনোখানেই তাদের যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পারবে না তখন তারা খারাপ টাই বেছে নেয়।
তাই আমাদের উচিত কারোর বাবা-মার কর্মে কাউকে বিচার না করা। হয়তো এভাবে বিচার না করলে বেঁচে যাবে একটি প্রাণ ।
নিজস্ব মতামত
নাটকটি আমার কাছে মোটামুটি ভালো লেগেছে। নাটকটির মধ্যে আমি কিছুটা শিক্ষণীয় বিষয় লক্ষ্য করেছি। এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি যে কখনোই কারোর বাবা-মার কর্মের ফলে কোন সন্তানকে বিচার করা উচিত নয়। আর আফরান নিশোর এবং মেহজাবিন চৌধুরীর অভিনয় সহ নাটকের বাকি অভিনেত্রীদের অভিনয় অনেক সুন্দর ছিল।
তাই আমার কাছে মোটামুটি নাটকটি ভালো লেগেছে। আপনারা দেখবেন আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে।
নাটক থেকে শিক্ষাটা খুব ভালো ছিলো কারণ ব্যাপারটি সম্পূর্ণই বাস্তব ধর্মী।
অনেকেই আছে যারা সন্তান কে বাবা মা এর কর্ম দিয়ে বিচার করে, নিজ যোগ্যতায় বিচার করেনা।
তবে ভাইয়া একটা প্রশ্ন আমার।
প্রত্যেকদিন শিরিনের কবরে গিয়ে শিল্পের জন্য দোয়া করে। - এটি রিভিউ এর শেষ লাইন।
এখানে শিল্পী মানে কাকে বুঝিয়েছেন?
শিল্পীর জন্য দোয়া করে নাকি শিরিনের জন্য?
জি আপু নাটকটা থেকে শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছুই রয়েছে।
আর শেষের লাইন এর ব্যাপারটা ওখানে শিরিন হবে টাইপিং মিসটেক , অনেক অনেক দুঃখিত। আর আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।