নিবিড় আর নীলাদ্রির প্রেম -২
আ মার বাংলা ব্লগের সকল বাংলাভাষী ব্লগার ভাই এবং বোনদের আমার সালাম এবং আদাপ। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভাল আছি।
![]() |
---|
সেদিন নিবিড় এবং শৈশব সেখানে আর কিছুক্ষণ বসে থাকার পর বাসার দিকে রওনা হয়। রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসার সময় শৈশব নিবিড়কে অনেকবার প্রশ্ন করল, ব্যাপার কি তোর? নীলাদ্রির প্রেমে প্রেমে পড়লি নাকি আবার? এটা বলেই শৈশব হেসে উঠলো। আর এদিকে তো নিবিড়ের মুখে মুচকি হাঁসি আছেই।
বাসায় ফিরে নিবিড় শৈশবকে জিজ্ঞাসা করে সে কিভাবে নীলাদ্রি কে চেনে। শৈশব বলে কাঁটাতারের এদিকে নীলাদ্রির চাচার বাসা নীলাদ্রি সেখানে মাঝে মাঝেই আসে সেখানেই তাকে দেখেছিল আর নীলাদ্রির চাচাতো ভাই শৈশবের বন্ধুর মতোই সে সূত্রেই শৈশব নীলাদ্রি কে চেনে। এখন আর শৈশবের বুঝতে বাকি থাকলো না যে নিবিড় নীলাদ্রির প্রেমে পড়েছে। তারপর শৈশব নিবিড় কে বলে সত্যি করে বল ব্যাপার কি তাহলে তোকে একটা ব্যাপার বলবো। তখনো শৈশব মুচকি হেসে অস্বীকার করল।
তারপর শৈশব বলে আচ্ছা তাহলে কি আর করার ভেবেছিলাম প্রেমে পড়েছিস তোর জন্য কিছু একটা করা দরকার, আমার কাছে নীলাদ্রির ফেসবুক আইডি ছিল যেহেতু কোনো ব্যাপার নেই সেহেতু থাক। ফেসবুক আইডির কথা শুনে নিবিড় অনেকটা চমকে যায়। এটা ছিল খুশি হয়ে চমকে যাওয়া। ফেসবুক আইডির কথা শুনে নিবিড় শৈশবের কাছে স্বীকার করে বসে হ্যাঁ সে নীলাদ্রির প্রেমে পড়েছে।
তারপর শৈশব নিবিড় কে নীলাদ্রির ফেসবুক আইডি দেয়। আইডি পেয়ে সাথে সাথেই নিবিড় নীলাদ্রির আইডিতে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। তারপর অনেকটা সময় দেখার পর যখন নীলাদ্রি ফেসবুক রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করলো না তখন নিবিড় তাকে হাই দিল। কোনভাবেই নীলাদ্রি তার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট তো দূরের কথা মেসেজের রিপ্লাই দিচ্ছিল না। তার পরের দিন সকালে নিবিড় এবং শৈশব আবার সেই রাস্তার কাছে গিয়ে দাঁড়ায় নীলাদ্রি কে রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করার কথা বলবে জন্য। কিন্তু সেদিন নীলাদ্রি আসেনা। এভাবে দুই তিন দিন কেটে যায় দুই তিন দিন নীলাদ্রির কোন দেখা নেই।
এদিকে নিবিড়ের বাসায় যাওয়ার দিন ঘনিয়ে আসে। সে ফিরে আসতে চাচ্ছিল না তবুও কি আর করার তাকে ফিরতে তো হবেই। তারপরও সে আর একদিন চেষ্টা করল নীলাদ্রির সাথে দেখা করার কিন্তু সেদিনও সে নীলাদ্রির দেখা পেল না। তারপর সে মন খারাপ করে পরের দিন সেখান থেকে চলে আসলো।
এভাবে দীর্ঘদিন কেটে গেল এদিকে নিবিড় আশা ছেড়ে দিয়েছে যে তার সাথে নীলাদ্রির আর কথা হবে না। চলতে চলতে হঠাৎ একদিন নিবিড় তার ফেসবুকের নোটিফিকেশন ঘাটতে গিয়ে দেখে নীলাদ্রিতা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেছে। সে সময় নিবিড়ের খুশি দেখার মত ছিল। নোটিফিকেশনটি দেখেই নিবিড় সাথে সাথেই শৈশবকে ফোন দেয় এবং এই সংবাদটি জানায়।
তারপর রাতে নিবিড় আবার নীলাদ্রি কে একটি ম্যাসেজ পাঠায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিলাদ্রি তার মেসেজের উত্তর দেয়। কিন্তু নীলাদ্রির কথার ভাব-ভঙ্গি অন্যরকম ছিল। এটা দেখে নিবিড় একটু কষ্টই পেল।
নীলাদ্রি খুবই ভাববতী একটি মেয়ে। তবুও নিবিড় হাল ছাড়লো না বিভিন্নভাবে এসে নীলাদ্রি কে কথা বলায় বাধ্য করে চলেছে। নিবিড় খুব মজার মজার কথা বলে তাই এভাবে চলতে চলতে নীলাদ্রিও কিছুটা স্বাভাবিক ভাবে কথা বলা শুরু করে। আস্তে আস্তে নীলাদ্রি এবং নিবিড়ের বন্ধুত্বটা অনেক গাঢ় হয়ে যায়। তারা ঠিক করে তারা দেখা করবে। বর্ডার এর কাছে একটা ফাঁকা জায়গা আছে যেখানে দুইদেশ এর লোক চাইলেই দেখা করতে পারে। সেখানে সীমান্তরক্ষী বাহিনী যায় না বললেই চলে তাই তেমন রিস্ক ও নেই।
তারা দীর্ঘদিন পরিকল্পনা করে তারা কিভাবে দেখা করবে কোথায় দেখা করবে এগুলো নিয়ে। দেখতে দেখতেই তাদের দেখা করার দিন ঘনিয়ে আসে। নিবিড় সকাল সকাল উঠেই গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা দেয়। পরের দিন সকালে তারা দেখা করবে। এইটা ভেবে সে অনেক খুশি এবং উত্তেজিত। তারপর সে বাসায় পৌঁছে শৈশব সহ পরিকল্পনা করে কাল সকাল সকাল সীমান্তে যেতে হবে। কিভাবে কি করবে না করবে তারা সারারাত এটা নিয়েই পরিকল্পনা করতেই থাকে।
তারপর সকাল সকাল শৈশব এবং নিবিড় ঘুম থেকে উঠে সেই জায়গায় যাই যেখানে নিবিড় এবং নীলাদ্রি দেখা করবে। নীলাদ্রি নিবিড়কে রাতেই বলে দিয়েছিল সকাল ৮ টায় সেই স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতে। নিবিড় এবং শৈশব ৮ টার আগেই সেখানে গিয়ে দাঁড়ায়। অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর অনেক দূরে একটি মেয়েকে দেখা যাচ্ছিল। দূরের মেয়েটিকে দেখেই নিবিড় এর হার্ট বিট অনেক গুনে বেড়ে যায়। প্রথম সামনাসামনি সাক্ষাৎ বলে কথা।
তারপর নীলাদ্রি নিবিড় এর সামনে আসে, নিবিড়ের খুশি আর কে দেখে। তারা তখন অব্দি বন্ধুত্বের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তবুও নিবিড়ের অনুভূতিটা ছিল অন্যরকম। প্রথম দেখায় প্রেমে পড়েছিল বলে কথা। তারা অনেকক্ষণ গল্পগুজব করে। অল্প কিছু করতে করতেই তারা আগের থেকে অনেক কাছের হয়ে যায়। এভাবেই তারা সেখানেই আরো দুই-তিন দিন দেখা করেছিল। তারপর নিবিড় গ্রামের বাড়ি থেকে চলে আসে। কিন্তু তাদের কথা বন্ধ হয় না বরং আগের থেকেও অনেকটা বেড়ে যায়। প্রায় সারাদিন তারা একে অপরের সাথে কথা বলে। নীলাদ্রির মনেও নিবিড়ের জন্য কিছুটা অনুভূতির জন্ম নিয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে।
চলবে
YouTube |
---|
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
https://twitter.com/mahir4221/status/1541084346437685250?t=voev2VhTsVhee_J_ZoOyJw&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
![default.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmNwBDPMPvL1yaKWTYF4wxyUmxWiEJgAy1WZWTJyCha5wE/jswit_comment_initial.w320.jpg)
ভাইয়া অসাধারন হয়েছে আপনার এই পোস্ট। আসলে আমি সবসময় উপভোগ করি এরকম লেখা ধরনের পোস্ট। আর সাথে আপনার লেখার প্রশংসা করতেই হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
নিবিড় আর নীলাদ্রির প্রেম ২ পরে খুবই ভালো লাগলো। তবে এর আগের পর্বটি আমার দেখার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। কিন্তু আজ যখন নিবিড় আর নীলাদ্রির প্রেম পড়ছিলাম তখন সত্যিই গল্পটি হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। অনেকক্ষণ দুজনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে নিবির আর নীলাদ্রির দেখা হওয়াতে বেশ ভালো লাগলো। তাদের এই প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ার গল্পটা সত্যিই দারুণ লেগেছে। তাদের এই মধুর সম্পর্কটা পরবর্তী পর্যায়ে কোন পরিণতিতে গিয়ে দাঁড়ায় তা জানার খুবই কৌতুহল হচ্ছে। আর তাই পরবর্তী পোস্টের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ
প্রথম পর্বের মত দ্বিতীয় পর্ব ও আপনি আকাঙ্খা দিয়ে শেষ করেছেন। এরপর তৃতীয় পর্বের অপেক্ষায় আছি আমি ভাই। আপনার গল্পটি দিন দিন আরো রহস্যের দিকে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি নিয়ে আসেন পরবর্তী পর্বগুলো।ধন্যবাদ