নিবিড় আর নীলাদ্রির প্রেম -৩
আ মার বাংলা ব্লগের সকল বাংলাভাষী ব্লগার ভাই এবং বোনদের আমার সালাম এবং আদাপ। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভাল আছি।
নিবিড় এবং নীলাদ্রি এভাবেই দিনের পর দিন কথা বলতেই থাকে। কখন যে নীলাদ্রিও নিবিড়ের প্রেমে পড়ে যায় তা নীলাদ্রি বুঝতেও পারে না। সব সময় নিবিড়ের সাথে কথা বলার জন্য নীলাদ্রির মন অস্থির হয়ে থাকে। তাদের অনলাইনে ছাড়া কথা হতো না কারণ দুই দেশ বলে কথা ফোনে তো আর কল দেওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে নিবিড় অনলাইনে থাকলে কখন নীলাদ্রি অনলাইনে আসবে সে আশায় বসে থাকে, ওইদিকে নিবিড় অনলাইনে না থাকলে নীলাদ্রিয় ঠিক সেভাবেই তার অপেক্ষাতে বসে থাকে। তারা দুজন যখন অনলাইনে একসাথেই আসে তখন তাদের কথার শেষ থাকেনা মনে হয় কত বছর থেকে যেন কথা জমিয়ে রেখেছে।
কথা বলতে বলতেই আবার সেপ্টেম্বর মাস চলে আসে। সেপ্টেম্বর মাসের ২৪ তারিখ নীলাদ্রির জন্মদিন। এই জন্মদিন নিয়ে নিবিড় আগে থেকেই অনেক পরিকল্পনা করে রেখেছিল। নিবিড় নীলাদ্রির জন্য অনেকগুলো গিফট কিনে রেখেছিল। দেখতে দেখতেই ২৪ তারিখ চলে আসে। ঠিক আগের মতই নিবিড় হাতে গিফট নিয়ে ওই একই জায়গায় সকাল ৮ টায় গিয়ে দাড়ায়।
তারা দীর্ঘক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়েই গল্পগুজব করে। গল্প গুজব করতে করতেই নিবি নীলাদ্রিকে বলে বসে আজ আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই। এটা বলে কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর নিবিড় নীলাদ্রির হাত ধরে বলেই ফেলে আমি তোমাকে ভালোবাসি। এটা শুনে নীলাদ্রি কিছু বলে না, তবে তার মুচকি হাসি দেখেই বোঝা যাচ্ছিল সেও নিবিড় কে কতটা ভালোবাসে।
এভাবেই শুরু হলো নীলাদ্রি এবং নিবিড়ের প্রেম কাহিনী। দিন যতই যাচ্ছে তারা যেন আগের থেকেও একে অপরের প্রতি আরো বেশি দুর্বল হয়েই যাচ্ছে। তাদের ভালোবাসা ছিল সত্যিই অনেক পবিত্র। একেই হয়তো বলে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। তারা দুজন দুজনকে ছাড়া কিছুই বুঝতো না। শুধু খাওয়ার সময় টা ছাড়া তাদের কথা থেমে থাকত না।
নীলাদ্রির বাবা-মা আগে থেকেই একটু অসুস্থ। তাই তারা চিন্তা ভাবনা করে নীলাদ্রির বিয়ে খুব তাড়াতাড়ি দিয়ে দেবে। এদিকে নীলাদ্রির বাসায় তার বাবা-মা একটার পর একটা বিয়ের জন্য ছেলে নিয়ে আসে। নীলাদ্রি নিবিড়ের কথা বাসায় বলতেও পারে না কারণ নিবিড় বাংলাদেশী ছিল। সে ভয় পাচ্ছিল তার বাসায় তাদের সম্পর্ক তার বাবা-মা মেনে নেবে না।
এভাবেই নীলাদ্রি অনেকগুলো বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। তারপর নীলাদ্রি বাবা-মা তার ওপর একটু রেগে যায় এবং তাকে জিজ্ঞাসা করে বসে সে কেন এমন করছে। নীলাদ্রিকে তার বাবা-মা এটাও জিজ্ঞাসা করে সে কাউকে পছন্দ করে কিনা। তখনও নীলাদ্রি তার বাবা মাকে ভয় নিবিড়ের কথা বলতে পারে না। তারপর তার বাবা বলে এরপর যেই ছেলেকে নিয়ে আসব সেই ছেলে অনেক ভালো সরকারি চাকরি করে সেই ছেলেকেই তোকে বিয়ে করতে হবে।
তারপর সেদিন রাতে নীলাদ্রি আর নিবিড়ের সাথে কথা বলেনি। অনলাইনে না আসায় নিবি এদিকে অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। সারারাত নিবিড় ঘুমোতে পারিনি। তারপরের দিন সকাল সকাল নীলাদ্রি নিবিড় কে অনলাইনে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে নীলাদ্রি নিবিড়কে সব ঘটনা খুলে বলে। এগুলো শুনে নিবিড় নীলাদ্রিকে বলে তুমি বাসায় আমাদের সম্পর্কের কথা জানাও। তারপর যা হবে দেখা যাবে।
তারপর পরের দিন সকালবেলা নীলাদ্রির বাবা বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নীলাদ্রি তার মায়ের কাছে গিয়ে বসে। এবং আমতা আমতা গলায় তার মাকে নিবিড়ের কথা খুলে বলে। নিবিড়ের কথা শুনে নীলাদ্রির মা প্রথমে একটু রেগে গিয়েছিল। তারপর নিবিড় এবং নিবিড়ের পরিবারের সম্পর্কে নীলাদ্রি সবকিছু খুলে বলে।
নীলাদ্রির মা নিবিড়ের পরিবারের মানুষদের চেনে। নিবিড় অনেক ভালো পরিবারের একটা ছেলে তাই নীলাদ্রির মা এটা শুনে কিছুটা রাজি হয়। তারপর নীলাদ্রির মা নীলাদ্রিকে বলে তোর বাবা আসলে আমি আজ তোর বাবার সাথে এটা নিয়ে কথা বলবো।
সেদিন রাতে নীলাদ্রির বাবা বাসায় আসার পর নীলাদ্রির মা তার সাথে নিবিড়ের বিষয়ে কথা বলে। প্রথমের দিকে তার বাবা রাজি হয় নি। নিবিড়ের কথা জানার পরেও নীলাদ্রির বাবা বাসায় পরপর আরো অনেকগুলো ছেলেকে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু কোনভাবেই নীলাদ্রি সেই বিয়েগুলোতে রাজি হচ্ছিল না। কারণ নীলাদ্রির মনে শুধু নিবিড় এর নামই লেখা ছিল।
এদিকে নীলাদ্রির বাবা নীলাদ্রির বিয়ে নিয়ে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ে। নীলাদ্রির খালামনির বাসা বাংলাদেশে ছিলো অনেক চিন্তা ভাবনা করার পর নীলাদ্রির বাবা নীলাদ্রির খালাকে বলে নিবিড় এর বাসায় কথা বলতে। বাংলাদেশে নীলাদ্রির খালা নিবিড় এর সম্পর্কে অনেক খোঁজ খবর নিয়ে দেখে ছেলেটা অনেক ভালো তবে এখনো সে পড়াশোনা করছে।
এরপর নীলাদ্রির খালা নিবিড়ের বাসায় কথা বলে , তার বাসায় একটাই কথা বলে নিবিড় তো এখনো পড়াশোনা করছে সে বউকে খাওয়াবে কি। তখন নীলাদ্রির খালা এটা শুনে বলে নীলাদ্রির বাবা মা অসুস্থ তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে চাচ্ছে, এখন বিয়ে টা দিয়ে রাখুন দুজনই পড়াশোনা করুক পড়ে যখন নিবিড় কিছু একটা করবে তখন নীলাদ্রিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসবে। এটা শুনে নিবিড় এর পরিবার বলে তাদের এটা নিয়ে ভাবার জন্য দুয়েকদিন সময় লাগবে। তখন নীলাদ্রির খালা বলে আচ্ছা আপনারা তাহলে এটা নিয়ে একটু ভালোভাবে ভেবে দেখবেন, এটা বলে নীলাদ্রির খেলা সে দিনের মতো সেখান থেকে চলে আসে।
নিবিড়ের পরিবার সবকিছু চিন্তা ভাবনা করার পর রাজি হয়ে যায়। তারপর তাদের দুজনের পরিবার ভিডিও কলে কথাবার্তা বলে। বিয়ের জন্য নিবিড় এবং নীলাদ্রি পাসপোর্ট করতে দিয়েছে। খুব শীঘ্রই পাসপোর্ট চলে এলেই তাদের বিয়েটা হয়ে যাবে।
সমাপ্ত
YouTube |
---|
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
https://twitter.com/mahir4221/status/1542877790650785792?t=CDJKvWc7q2FeiU_psE5YOQ&s=19
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই আপনার আজকের এই প্রেমের গল্পের তৃতীয় খন্ডটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। আসলে এই ধরনের গল্প পড়তে ভালো লাগে আমার। আপনার গল্পটির মধ্যে নীলাদ্রি এবং নিবিড়ের সম্পর্ক টি তাদের দুই পরিবার খুব চমৎকারভাবে সমাধান দিয়েছেন এতে করে সবাই তাদের অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন আমি মনে করি। কারণ পরিবারের হুটহাট সিদ্ধান্ত কিন্তু এরকম প্রেমিক যুগলদের অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
এটাই আমার গল্পের শেষ পর্ব ছিল ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনারা এত সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য। চেষ্টা করব ভবিষ্যতে এরকম আরো অনেক গল্প আপনাদের মাঝে করার। শুভকামনা রইল।
আপনার রচিত নিবিড় আর নীলাদ্রির প্রেম গল্পটির তৃতীয় পর্ব আগের দুটি পর্বের মতোই অনেক সুন্দর হয়েছে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকবো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।