রূপনগর দ্বীপ - প্রথম পর্ব
আ মার বাংলা ব্লগের সকল বাংলাভাষী ব্লগার ভাই এবং বোনদের আমার সালাম এবং আদাপ। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভাল আছি।
![]() |
---|
ডিসেম্বর শেষ এবার ভালই শীত পড়েছে, এদিকে আমাদের ফাইনাল পরীক্ষাও শেষ হয়ে গিয়েছে বন্ধু-বান্ধব মিলে ভালই মজা করছিলাম। আমি, নিলয়, সৃজন, মাফি এবং রবিন আমরা পাঁচ জন ভালোই ঘোরাফেরা করছিলাম। আজ এ দিক তো কাল ওদিক, এই সময় আমাদের কারো মাথাতেই কোন টেনশন নেই তাই বেশ চিল মুডে সবাই ঘোরাফেরা করছিলাম আর বেশিরভাগ সময় আমরা সৃজনের বাসার ছাদে গিটার নিয়ে আড্ডা দেই।
আজ শুক্রবার দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আজ সবাই সৃজনের বাসার ছাদে চলে এসেছি। ভালোই আড্ডা জমেছে আজ। নিলয় হঠাৎ বলে উঠলো আমাদের কোথায় ঘুরতে যাওয়া উচিত, আমি তখনই প্রশ্ন করে বসলাম কোথায় ঘুরতে যাবি? তোর মাথায় কোন প্লান আছে? তখন মাফি বলল চল সবাই মিলে রূপনগর দ্বীপে ঘুরতে যাই। আমি শুনেছিলাম দিপটা অনেক সুন্দর ঠিক নামের মতই। তারপর সবাই আলোচনা করে ঠিক করলাম পরের দিন ভোরেই আমরা রূপনগরের উদ্দেশ্যে রওনা হব।
কথামতো আমরা সকলেই ভোরবেলা সুজনদার চা দোকানে হাজির হলাম, সুজনদা ভালই সকাল সকাল দোকান খুলে। সেখানে আমরা সকলেই চা খেলাম। আমরা রাতেই একটি গাড়ি ঠিক করে রেখেছিলাম। গাড়িতে চরে আমরা ঘাট অব্দি যাব সেখান থেকে একটি নৌকা ঠিক করে সোজা চলে যাব রূপনগর দ্বীপে। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টার যাত্রাপথ।
সময় মতই আমাদের গাড়ি চলে এসেছে, গাড়ির ড্রাইভার আমাদের শাকিল ভাই বেশ ভালই মজা হবে মনে হচ্ছে। গাড়ি ছাড়লো একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছিল তাই গাড়ির সব জানালাগুলো বন্ধ করে ভেতরে আমরা গান ছেড়ে ভালোই মজা করছিলাম। চন্দ্রপুর বাইপাস হয়ে আমরা ঘাটের দিকে যাব কাটে পৌঁছাতেই তিন থেকে সাড়ে তিন ঘন্টা সময় লাগবে। তাই রাস্তাতেই কোথাও ব্রেক দিয়ে আমরা আমাদের সকালের নাস্তাটা সেরে ফেলবো। কথামতো লক্ষ্মীপুরে দাঁড়িয়ে একটা হোটেলে আমরা ডাল পরোটা দিয়ে আমাদের সকালের নাস্তাটা সেরে ফেললাম এখান থেকে ঘাটে পৌঁছাতে আমাদের আরো সময় লাগবে এক ঘন্টার মত।
লক্ষ্মীপুরে যখন আমরা নাস্তা করতে নামলাম তখন হোটেলের এক লোক আমাদের রূপনগর দ্বীপে যাওয়ার গল্প শুনে আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। এসেই আমাদের জিজ্ঞাসা করে তোমরা কি সত্যিই সেই দ্বীপে যাচ্ছ। মাফি উত্তর দিল হ্যাঁ কেন কি সমস্যা। তখন সেই লোক আমাদের বলল ওখানে যেও না ওই দ্বীপের সকলেই কয়েক বছর আগে এক দুর্ঘটনায় মারা যায়। কিন্তু লোকমুখে শুনেছি তারা নাকি রাতে আবার জীবিত হয়ে যায় ওখানে যায় আর নাকি ফিরে আসে না। তাই তোমাদের বলছি ওই দ্বীপে ভুলেও পারে এখনো আর ফিরে আসতে পারবে না।
আমরা সেই লোকের কথা শুনে হাসাহাসি করলাম কিন্তু নিলয় একটু ভয় পেয়ে গিয়েছে সে বলছে চল ফিরে যাই এই লোকটার কথা সত্যি হলে কিন্তু সবাইকে প্রবলেমে করতে হবে। তারপর মাফি বলল আরে টেনশন করিস না তো কিছু হবে না চল। আমরা আবার গাড়িতে উঠে বসলাম, গান শুনতে শুনতেই কখন একটা ঘন্টা পাড়ি দিয়ে ঘাটে পৌঁছে গেছি বুঝতেই পারিনি।
তারপর ঘাটে নেমে নৌকা খোঁজাখুঁজি করলাম কিন্তু কোন নৌকার চালকই সেই দ্বীপে যেতে রাজি হচ্ছিল না। তখন আমার একটু খটকা লাগতে শুরু হল কিন্তু ভাবলাম না এতদূর এসে ফিরে গেলে চলবে না। তখন একজন নৌকা চালক আমাদের কাছে এসে একটু বেশি টাকা দাবি করে বলল আমি তোমাদের ওইদিকে নিয়ে যাব কিন্তু আমি ওখানে থাকতে পারবো না আমি চলে আসবো। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তাহলে আমরা কিভাবে সেখান থেকে ব্যাক করব। আমাদের কথা শুনে ভয়ঙ্কর ভাবে শব্দহীন একটা হাসি দিয়ে নৌকায় চড়ে বসলো। আমরাও নৌকায় চড়ে বসলাম কিন্তু নৌকা চলার পর কেউই কথা বলছিলাম না সবাই যেন ভয় নিস্তব্ধ হয়ে নৌকা চেপে বসে ছিলাম।
তারপর অনেকটা পথ নৌকা দিয়ে আসার পর দূরে আমরা সেই দ্বীপটি দেখতে পাচ্ছি। তখন প্রায় বিকেল হয়ে এসেছে। ঘরের কাছে পৌঁছেতে পৌঁছাতে সূর্য প্রায় অস্ত যাবে। আমরা সেই দ্বীপে নেমে পরলাম আর সেই নৌকা চালককে বিদায় দিলাম। তারপর আমরা দ্বীপের বাহির দিকটা একটু হাটাহাটি করে ঘুরে দেখতেই অন্ধকার নেমে এলো। শুনেছিলাম এই দ্বীপে ট্যুরিস্ট হোটেল রয়েছে আমরা ঠিক করলাম সেখানেই উঠবো।
দ্বীপের ভিতরে ঢুকে আমরা যখন এগোতে থাকলাম তখন আমাদের ভয় একদমই কেটে গেল লক্ষীপুর হোটেলের সেই লোক আমাদের ভয় দেখিয়েছিল আমরা বুঝতে পারলাম। দ্বীপের ভিতরে লোকজনে গমগম করছিল, কিন্তু একটা আজব জিনিস আমার চোখে পড়ল সেই লোক গুলো কেমন যেন আজব ধরনের কেউ আমাদের দিকে তাকাচ্ছিল না যে যার নিজের মতো হাঁটছে কাজ করছে কারো মুখে কোন হাসি নেই সবাই কেমন যেন আজব ভাবে চলাচল করছিল।
YouTube |
---|
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
Twitter Link
সামনের পর্বে মনে হয় দারুন ভৌতিক কিছু ঘটতে চলেছে। ছেলেগুলোর সাহস আছে বলতে হবে 👌 রূপনগর দ্বীপ মনে হয় ভয়াবহ কিছু দেখাবে ওদের।
হ্যাঁ ভাইয়া সামনের করবে আসলেই ভৌতিক কিছু ঘটবে। দেখার জন্য দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ❣️
পুরোটা পড়ে খুবই ভালো লাগছে। যখন লোকটা ভয় দেখালো এবং নৌকাতে করে যাওয়ার জন্য লোকটা প্রস্তুত ছিল না তখনই তো ভয়টা আরো বেড়ে যায়। তার পাশাপাশি রূপনগর দ্বীপে আজব লোকেদের আচরণ দেখেই তো ভয় আরও বেশি বেড়ে যায়। যাই হোক খুব ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বে হয়তোবা আরো ভয়ংকর কিছু দেখবো।
জি আপু পরবর্তী দেখার জন্য অপেক্ষা করুন খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব পোস্ট করে দেব। ধন্যবাদ পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া। আসছে ডিসেম্বর মাস শীত একটু বেশি পড়ে। তবে আমাদের এদিকে এখনও তেমন শীত পড়েনি। এখনো হালকা একটি কম্বল গায়ে দেই।শীতের পোশাক এখনো বের করি নাই।আপনার গল্পটি পড়ে মনে হলো আগামী পর্বে ভৌতিক কিছু ঘটতে চলছে।তবে সত্যিই ছেলেগুলো বেশ সাহসী। মনে হচ্ছে রুপনগর দ্বীপে ভয়াবহ কিছু ঘটবে। আগামী পর্ব পড়ার প্রত্যাশায়,,,,♥♥
আমি তো শীতের পোশাক লেপ সবকিছুই বের করে ফেলেছি আপু 😁
গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু খুব শীঘ্রই দ্বিতীয় পর্ব পোস্ট করে দেব।
গল্পটা কি ভৌতিক দিকে টার্ন নিতে চলেছে? আমি আসলে কিছুটা পড়লাম পড়ার পরে একটু থেমে গেলাম। মনে হলো একটা ভৌতিক গল্প।যেহেতু রাত্রে একা ঘুমাই ওই কারণে ভালো করে পড়ার সাহস টা পাচ্ছিলাম না শুরু তে। তবু আমি তারপরে পড়লাম।ভাবলাম প্রথম পর্বে নিশ্চয়ই ভূত আসবে না। যাই হোক আমারও মনে হচ্ছে কিছু একটা গন্ডগোল আছে। না হলে একটা মানুষ গেলে কেউই তার দিকে তাকালো না, কেউ হাসেও না,এটা আমার বড্ড অবাক লাগছে।
হুম দিদি এটা ভৌতিক গল্প। নেক্সট এপিসোড টায় দেখতে পারবেন আসল কাহিনী। ধন্যবাদ দিদি।
আপনার গল্পগুলো বেশ অদ্ভুত। পড়তে পড়তে প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তোবা আপনি আর আপনার বন্ধুদের কাহিনী বলছেন। শেষে গিয়ে জানতে পারলাম সবকিছুই আসলে কাল্পনিক ছিল। আমি এর আগেও একটা কাল্পনিক গল্প পড়েছিলাম আপনার। প্রথম থেকে ভালই লেগেছে সকল বন্ধুরা মিলে রূপনগর দ্বীপে ঘুরতে বেরিয়েছে। এমনকি একটা হোটেলে নাস্তা ও করল। শেষের দিকটা একটু ভয় লেগেছিল। যদিও দেখলাম দ্বীপে লোকজনের সমাগম রয়েছে। কিন্তু সবাইকে কেমন আজব মনে হচ্ছে। কেন এরকম হলো এটা জানার জন্য পরবর্তী পর্ব অবশ্যই দেখার চেষ্টা করব।
ধন্যবাদ আপু আমার পুরো গল্পটি পড়ার জন্য আর আমি খুব শীঘ্রই দ্বিতীয় পর্বটি পোস্ট করব।