বৈশাখী মেলায় ঘুরতে গিয়ে চোখ জুড়ানো কতগুলো ফটোগ্রাফি

in আমার বাংলা ব্লগ21 days ago

আসসালামু আলাইকুম

হ্যালো আমার প্রিয় কমিউনিটির ভাই বোনেরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। সবাই সবসময় ভালো থাকেন আমি এই দোয়াই করি। আমিও আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আসলে যতই দূরে থাকিনা কেন মনে হয় যেন আপনাদের সবার কাছেই আছি। কেন যেন আপনাদের মাঝে না আসলে ভালোই লাগে না।আর তাই আজও চলে এলাম আপনাদের মাঝে।আজও কিন্তু প্রতিদেনের মতো করে আরও একটি পোস্ট নিয়ে এলাম।আপনাদের মাঝে রমনা পার্ক এর বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়ার ভ্রমণ পোস্ট ও ভিডিওগ্রাফি শেয়ার করেছিলাম। আজ নিয়ে এলাম কিছু ফটোগ্রাফি পোস্ট।

আসলে আমাদের এই বাংলাদেশ অপুরূপ রূপে রূপায়িত। আর এ দেশের সকল কিছু দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। আমি গর্বিত এই দেশে জন্মগ্রহন করেছি। বিশেষ করে বাংলাদেশের মেলাগুলোতে গেলে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। আর তাইতো সেদিন হারিয়ে গিয়েছিলাম বৈশাখী রাস্তার মাঝে নিয়ে বসা মেলার কিছু দেশীয় ঐতিহ্যের ফটোগ্রাফির মাঝে। হ্যাঁ প্রিয় বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের জন্য বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়ার কিছু অপূর্ব ফটোগ্রাফি নিয়ে এলাম। আশা করি আপনাদের সবার কাছে আমার ফটোগ্রাফিগুলো অবশ্যই ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আমার আজকের ফটোগ্রাফিগুলো দেখে আসি।

image.png

বৈশাখী মেলায় ঘুরতে গিয়ে
চোখ জুড়ানো কতগুলো ফটোগ্রাফি

image.png

প্রথমে যেই ফটোগ্রাফিটি দেখতে পাচ্ছেন তা হলো এদেশের একটি বড় ঐতিহ্য। ভীষণ পছন্দের একটি জিনিস।আর এটি হলো একতারা। আমার খুব ভালো লাগে এই জিনিসগুলো। আর এই একতারাটি দেখে আমার একটি দেশাত্বকবোধক গান মনে পড়ে গেছে। একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল, আমাকে তুই বাউল করে সঙ্গে নিয়ে চল। আসলে এই একতারা নিয়ে বাউলদের গান গাইতে দেখেছি টিভিতে। বাস্তবে কখনও দেখা হয়নি। আর এই একতারা গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। কি দক্ষতার সাথে এগুলো বানানো হয়। দেখে মনটা জুড়িয়ে যায়।

image.png

এবার দেখতে পেলাম কতগুলো হাতপাখা। হাতপাখাও আমার অনেক ভালো লাগে। অবশ্য ঢাকা শহরে এখন এগুলো সেইভাবে দেখা যায় না। সেই ছোট বেলায় যখন কোয়ার্টারে থাকতাম তখন এইরকম অনেক সুন্দর সুন্দর হাতপাখা দেখা যেত। তখন কত ফেরিওয়ালাদের দেখতাম সুন্দর সুন্দর হাতপাখা বিক্রি করতে আসতো হাতে করে নিয়ে । দেখে পিছে পিছে দৌড়ে যেতাম। এখন আর হাতপাখা বিক্রি করতে দেখা যায় না।

image.png

এখন দেখতে পাচ্ছেন বিভিন্ন রং বেরং এর অনেক ডিজাইনের পুতির মালা। এগুলো আমার কাছে দেখতে অনেক ভালো লাগে। যদিও পড়া হয় না। কিন্তু কিনে জমিয়ে রাখি। এগুলো শাড়ির সাথে পরলে অনেক ভালো লাগে। বিভিন্ন মেলাতে গেলেই দেখতে পাওয়া যায় এইমালাগুলো বিক্রি করছে। শুধু মেলায় না বড় বড় মার্কেটগুলোতেও এই মালাগুলো সুন্দর করে সাজিয়ে বিক্রি করতে দেখা যায়। আমার কাছে মাল্টি কালার মালাগুলো দেখতে ভালোই লাগে। এইমালাগুলো সব কালার শাড়ির সাথে পড়া যায়।

image.png

এবার দেখতে পাচ্ছেন অনেকগুলো ঝুড়ি। আর এই ধরনের জিনিস দেখলে আমি সবসময় লোভে পড়ে যাই। এই ছোট ছোট ঝুড়িগুলোতে প্রয়োজনীয় অনেক কিছু রাখা যায়। আর দেখতেও অনেক সুন্দর লাগে। যখন ফটোগ্রাফি করছিলাম তখন দাম জিজ্ঞেস করলাম। দামও চেয়েছে অনেক। আর হাতেও টাকা ছিল না। কারন রমনাপার্কে খাবার খেয়ে সব টাকা শেষ। কেনার মতো এতটা টাকা ছিল না। আর তাই কেনার লোভ থাকলেও টাকা ছিল না।

image.png

এবার দেখতে পাচ্ছেন একটি ফুলের গাড়ি। কি অসাধারণ লাগছিল দূর থেকে দেখেই কাছে গেলাম। দেখতে পেলাম এক আঙ্কেল সুন্দর সুন্দর তাজা তাজা ফুল আর অনেক ফুল দিয়ে মালা বানিয়েও বিক্রি করছে। কি সুন্দর হলুদ লাল গোলাপ আবার গোলাপের কলিও রয়েছে।আর ওপরে ঝুলানো মালাগুলোও দেখতে অপূর্ব সুন্দর লাগছে।কি সুন্দর সাদা গোলাপী হরেক রকমের ফুল আর মালা নিয়ে বসেছে। জিজ্ঞেস করলাম বেচাঁ কেনা কেমন ? বলল মা ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ কি আছে। আর এই ফুলকে ভালোবাসার টানেই আমার বেচাঁ বিক্রিও ভালো। কথাটি শুনে ভালোই লাগলো।আমিও ফুল অনেক ভালোবাসি।

image.png

এবার দেখেছি আরও সুন্দর কিছু অসাধারণ ডিজাইনের ঝুড়ি। আমি এই ঝুড়িগুলো একসময় অনেক কেনাকাটা করতাম। এগুলো এমন একটি জিনিস হাজারও বাসায় থাকলেও দেখলেই আরও কিনতে ইচ্ছে করে। আমি সবসময় মার পান রাখার জন্য মাকে কিনে দিতাম। এখনও এই ঝুড়িগুলো আমার বাসায় রয়েছে কিন্তু আগের মতো সেই ঝুড়িটি খালি পড়ে আছে। শুধু ঝুড়িতে নেই মার সেই স্বাদের পান। কি সুন্দর আমাদের এই বাংলাদেশের ঐতিহ্য ভরা জিনিসগুলো । এগুলো বাংলার চিরন্তন রূপ ধরে রাখে।

image.png

এবার দেখতে পেলাম সুন্দর কিছু সোফার কুশনকভার।অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে বিক্রি করছে। কুশন কভারগুলো দেখে কাছে গেলাম। আমার সাথে আমাদের ওপর তলার আপু বলল কিনবে।তাই দাম জিজ্ঞেস করতে গেলাম। আপু বলল মার্কেট থেকে তাদের কাছে নাকি একটু কম দামে পাওয়া যায়। কিন্তু সমস্যা হলো দেখতে সুন্দর লাগছিল আবার দামেও কম। কিন্তু কোন প্রবলেম হলে চেঞ্জ করার জন্য তাকেতো আর খুঁজে পাওয়া যাবে না তাই আর কেনাও হলো না।

image.png

এখন দেখতে পাচ্ছেন আরও কিছু পাখার ফটোগ্রাফি।আসলে সেই রোজা থেকেই এবার প্রচন্ড গরম পরেছে। আর তাই প্রতিটি জায়গায় এত সুন্দর সুন্দর হাতপাখা নিয়ে বসতে দেখা গেছে। এমন কি যারা রমনাপার্কে যাচ্ছে তাদের হাতেও দেখলাম যে পাখা। সবাই এই গরমে হাত পাখা নিয়ে এবার বৈশাখ পালন করছে। কাউকে দেখলাম রাস্তায় সেজেগুজে হাটতেছে আর পাখা দিয়ে বাতাস করছে। সব মিলেয়ে এই গরমে হাত পাখাও ভালোই বেচাঁকেনা হয়েছে। আমার মাকে দেখেছি ছোট বেলা এইভাবে হাত পাখা বানাতে। কি সুন্দর করে পাখার চারিকিনারে কাপড় দিয়ে কুচি ডিজাইন করতো। আমার কাছে হাতপাখা দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। আগেতো এই হাতপাখাই বেশী চলতো। ছিলনা এমন ডিজিটাল যুগের ফ্যান আর এসি । আর এসি ফ্যান থাকলেও ছিলনা কারো কেনার সামর্থ। তাই সবাই এই হাতপাখাই ব্যাহার করতো।

image.png

এবার যেগুলো দেখছেন তা হলো ঢোল। আর ঢোল তবলা একতারা এগুলো আমার ছোট থেকেই ভালো লাগতো। দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছিলাম যে ঢোলগুলো ছোট বড় সবাই কিনছিল। আর রাস্তা দিয়ে ঢোল বাজাতে বাজাতে রমনাপার্কে যাচ্ছে। আর এই ঢোল বা তবলার আওয়াজগুলো শুনতে আমার অনেক মিষ্টি লাগে। আসলে ঢোল বাংলাদেশের সংস্কৃতির এক প্রাচীন ঐতিহ্য। আর এই বাংলাদেশের জারিগান, বাউলগান,নৌকাবাইচ, গ্রাম দেশের বিয়ে বাড়ি বিভিন্ন মহরমের শোভাযাত্রায় ঢোল বাজিয়ে থাকে। আর বিশেষ করে দূর্গা আর কালী পূজার প্রোগ্রামে ঢোলের বাজনা ছাড়া চলেই না। আবার টিভিতে বা ছোট বেলায় দেখতাম যে কোন কোন আদেশ বা কোন কিছুর ঘোষনা দিতেও এই ঢোল ব্যবহার করতো। অনেক দূর থেকেই এই ঢোলের আওয়াজ শুনলে সবাইকে দেখতাম দৌড়ে গিয়ে দেখতো যে কি বলছে।

আর এই হলো আমার আজকের বৈশাখী মেলায় গিয়ে অপূর্ব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি। আশা করি আপনাদের সবার কাছে আমার আজকের ফটোগ্রাফিগুলো ভালো লাগবে। পরিশেষে আপনাদের সবার সুস্থতা ও মঙ্গল কামনা করে আমার আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি। আবার আগামীতে আবারও নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

ফটোগ্রাফির বিবরন
বিষয়ফটোগ্রাফি
ডিভাইসOPP-A16
ফটোগ্রাফার@mahfuzanila
ভৌগলিক অবস্থানঢাকা, বাংলাদেশ

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুননি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।

ধন্যবাদ সকলকে

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 21 days ago 

বাহ্ দারুন তো । প্রতিটি ফটোগ্রাফিই কিন্তু আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আপনি খুব সুন্দর করে ফটোগ্রাফির সাথে সাথে বর্ণনা তুলে ধরেছেন। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। সব মিলিয়ে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপু।

 20 days ago 

আপনার কাছে আমার ফটোগ্রাফি গুলো ভালো লেগেছে জেনে আমার কাছেও বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 21 days ago 

বৈশাখী মেলায় ঘুরতে গিয়ে দারুন সব ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনার প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি ছিল খুব সুন্দর। আপনার ফটোগ্রাফির মধ্যে বেতের দুই রকমের ঝুড়িগুলো দেখতে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করে নেয়ার জন্য।

 20 days ago 

যাক আমার ফটোগ্রাফি গুলো আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে আমারও অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 21 days ago 

বৈশাখী মেলার সবগুলো ছবিই দারুণ হয়েছে আপু! প্রত্যেকটা ছবিই অনেক সুন্দর ছিলো। একতারাগুলো দেখে অনেক ভালো লেগেছে আমার। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 20 days ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে এমন সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 19 days ago 

বৈশাখী মেলায় ঘুরতে গিয়ে দারুন কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলেন আপু।আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো। খুবই চমৎকার হয়েছে প্রতিটা ফটোগ্রাফি। বেশ সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি বৈশাখী মেলায় গিয়ে ধারণ করেছিলেন।প্রতিটা ফটোগ্রাফি আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 19 days ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65248.25
ETH 3471.40
USDT 1.00
SBD 2.51