মাংসের জন্য কেউ দরজা খোলে না

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম

ঈদমোবারক ঈদমোবারাক কেমন আছেন সবাই? আশা করছি এই পবিত্র ঈদ-উল আযহায় সবাই ভালোই আছেন।আমিও চাই এই ঈদ হোক আপনাদের সকলের পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দের।আর তাই আপনাদের আর আপনাদের পরিবারেরর সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে এই ঈদের মধ্যে আপনাদের সবার মাঝে চলে এলাম। দেখতে দেখতে ঈদুল ফিতরের পরে আবারও চলে এলো ঈদ-উল-আযহাঠ মানে কুরবানী ঈদ। আর এই কুরবানী ঈদ আমাদের সবার জন্য একটি ত্যাগের ও আত্মসংযমের ঈদ। এই ঈদে আমরা যার যার সামর্থ অনুযায়ী পশু কুরবানী করে থাকি। আর তাই এই ঈদকে বলা হয় ত্যাগের ঈদ।

eid design.png

Canva দিয়ে তৈরি

এই যে আমরা এই ঈদটিকে কুরবানী ঈদ বলি। কুরবানী হলো আত্মত্যাগ। আসলে আমরা যে পশুকুরবানী করি সেইটাতো মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে পৌঁছায় না । তার দরবারে পৌঁছায় আমাদের মনের আত্মত্যাগ। আমরা কে মনের থেকে কতটুকু ত্যাগ করলাম সেটাই হলো মূল বিষয়। তাই আমি মনে করি আত্মত্যাগই হলো আসল কুরবানী। কিন্তু আমরা এ যুগে কে কতটুকু আত্মত্যাগী হতে পেরেছি জানিনা। এই যে আজ একটি পবিত্র দিন গেছে আর এই দিনটি শুধু আনন্দ উৎসব বা পশু জবাই দিয়ে আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধব নিয়ে কাটানোর নয়। এটি হলো সবাইকে নিয়ে বিশেষ করে আমরা যারা সমাজে প্রতিষ্ঠিত রয়েছি তাদের সামর্থ অনুযায়ী পশুকুরবানী দিয়ে আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধ পারা প্রতিবেশী বিশেষ করে যাদের সামর্থ নেই একদম গরীব দরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া ও তাদের সাথে এই সুখটুকু ভাগ করে নেয়টাই হলো এই কুরবানীর মূল উৎস। কিন্তু আসলে কি তাই?

আসলে এখনের ঈদগুলোর সাথে আমি আগের ঈদগুলোর কোন মিল পাচ্ছি না। আজ আমি সারাদিন যা দেখতে পেলাম যে প্রতিটা গরীব দরিদ্র মানুষগুলো বলছে যে কেউ দরজা খুলছে না। দরজায় এত নক করছি তাদের কানে কি আমাদের এই নক পৌঁছায় না। কিন্তু কেউ দরজা খুলছে না আমাদের কি মাংস দিবে না। তাহলে এই কুরবানী কাদের জন্য? কিন্তু এই কথাটি শুধু এই ঈদেই যে শুনেছি তা নয়, এর আগেও এই কথাগুলো আমি আরও অনেকবার শুনতে পেয়েছি।তারা এসে দরজা নক করে আর বলে যায় যে এ্ই মাংস আমাদের জন্য নয়, এটা হলো বড় লোকদের দেখানো কুরবানী। এটি হচ্ছে বড় লোকদের একটি ফ্যাশন।

লোক দেখানো কুরবানী।আসলে সমাজে এমনও কিছু মানুষ আছে যারা বড় বড় পশু আবার কেউ বা সামর্থ অনুযায়ী আরও অনেকগুলো পশু কুরবানী দিয়ে থাকে। আর তার বেশীর ভাগ রাখে তাদের বাড়িতে থাকা বড় বড় ডীপ ফ্রিজগুলোতে। আর বাকিগুলো যায় তাদের বড়লোক আত্মীয় বা বড়লোক বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে। যা না দিলে তাদের কাছে তাদের প্যাকটিস ও স্টাটাস থাকে না। কিন্তু দরিদ্র অসহায় মানুষ যাদের মাংস খাওয়ার সামর্থ নেই, নেই কোন থাকার ঘর ,কোন বাসস্থান , মানে যাদের জন্য এই ত্যাগের কুরবানী তাদের ঘরে বা ব্যাগে একটুকরোও মাংস জোটে না। যদিও কেউ দেয় তাও আবার হাড্ডি বা তেল। আর এটাই হলো লোক দেখানো কুরবানী

পরিশেষে আশা করবো আমার এই আজকের লেখাগুলো আপনাদের কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আপনাদের মন্তব্য পেলে খুশি হবো।

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা আমার ইউজার নাম @mahfuzanila আমমি পছন্দ করি ঘোরাঘুরি ও ভ্রমন করতে ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে আমি দারুণ পছন্দ করি। আর বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে,মন খারাপ থাকলে গান শুনতে ও আর নতুন নতুন অনেক কিছু শিখতে পছন্দ করি। আরও পছন্দ করি বেশী ঘুমাতে।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

Sort:  
 2 months ago 

অনেক সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট লিখেছেন আপনি। আপনার এই পোস্ট পড়ে আমার অনেক অনেক ভালো লেগেছে। আসলে ঈদের সময়টা সবাইকে খুশি করার প্রয়োজন। ঈদ আসে সবার বাড়িতে খুশির বন্যা নিয়ে। আর তাই এই বিষয়টা আমাদের সকলের মাথায় রাখা প্রয়োজন।

 2 months ago 

ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

সুন্দর কিছু কথা লিখেছেন আপু। কোরবান হচ্ছে ত্যাগ করা। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ‌ কোরবানি দেওয়া হয় তবে বর্তমান সমাজে লোক দেখানোর জন্যই কোরবানি দেওয়া হয়। যেহেতু কোরবান দেওয়া সামর্থ্যবানদের উপর ওয়াজিব তাই আমাদের উচিত অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের মাঝে কোরবানির মাংস বিলিয়ে দেওয়া। লেখাগুলো খুব সুন্দর লিখেছেন আপনি।

 2 months ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

 2 months ago 

আসলে এই ঈদ এমন আনন্দের, তেমনি করে বেদনারও। এই মূহূর্ত গুলো আমার কাছে অনেক খারাপ লাগে। তবে আপনি কিন্তু আমাদের সমাজের সুন্দর চিত্র অনেক সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

আপু আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.031
BTC 60794.44
ETH 2623.30
USDT 1.00
SBD 2.62