বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়ার-৫ম পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ11 days ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও কিন্তু ভালো আছি। আজ ভাবছিলাম যে কি পোস্ট লিখবো। আমি আসলে কখনও আগে থেকে ভেবে রাখি না যে আজ কি পোস্ট লিখবো। যখন পোস্ট লিখতে বসি তখন ভেবেচিন্তে বের করি তারপর একটি পোস্ট লিখে ফেলি। আর তাই আমার পোস্ট রেডী করতে কিছুটা সময় লেগে যায়। আজও লিখতে বসে ভাবছিলাম কি পোস্ট করবো। আর কি লিখবো। পরে ভাবলাম যে মোবাইলে আগের অনেকগুলো পোস্ট জমা হয়ে আছে। আগে সেগুলো শেষ করি। আর এই ভাবনা থেকে নিয়ে এলাম আমার পহেলা বৈশাখের ভ্রমণ পোস্টের আরও একটি পোস্ট। আমরা এই পৃথিবীতে চলার পথে প্রতিনিয়ত জীবনের সাথে যুদ্ধ করে চলেছি। আর এই যুদ্ধ করতে করতে আমরা যেন হাপিয়ে ও ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আর এই হাপিয়ে পড়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রভাব পড়ে মনের উপর।আর তাই মাঝে মাঝে মনে হয় মনটাকে যদি একটু প্রশান্তি দিতে পারতাম। আর এই মনকে প্রশান্তি দিতে হলে চাই প্রকৃতির কিছু আনন্দের মাঝে নিজেকে নিয়ে যাওয়া। আর তাইতো সেদিন খুব সকালে হারিয়ে গিয়েছিলাম প্রকৃতির মাঝে আর সেই প্রকৃতির মাঝে আনন্দ করার কিছু অনুভূতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম। আশা করি আমার আজকের বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়ার ভ্রমনের ৫ম পর্বটিও আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

আবারও চলে এলাম রমনা পার্কের বৈশাখী মেলায় ভ্রমন করার ৫ম পর্ব নিয়ে । এর আগে আমি এর ৪র্থ পর্ব শেয়ার করেছিলাম। আপনাদের সবার অনেক সার্পোট পেয়েছি। আর সবার ভালো লেগেছে জানতে পেরেছি। আর আপনাদের সবার ভালো লাগা থেকে আজ আবারও এর ৫ম পর্ব নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। প্রতিবছর ১৪ই এপ্রিল বাঙ্গালীদের আরও একটি উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়। গত পর্ব এ আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম রমনাপার্কে গিয়ে কি কি খেলাম। আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম খাওয়া দাওয়ার পর কি কি করলাম। তাহলে চলুন আজকে আমার বৈশাখী মেলায় ভ্রমণ পোস্টের ৫ম পর্ব দেখে আসি।

image.png

বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়ার-৫ম পর্ব

image.png

গত পর্ব -এ আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম যে খাওয়া দাওয়া করার পর কি কি করেছিলাম। এরপর আমরা আরও আমরা বলছিলাম যে এবার বাসায় চলে যাব। তাই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। কিন্তু বললেই কি বাসায় আসা যায়? এত সুন্দর সকালের প্রকৃতি তার মাঝে সবাই রঙে রঙে প্রকৃতির সাথে কি সুন্দর করে সেজেছে। দেখতে ভালোই লাগছিল। আর রমনাপার্কটিও তো অনেক বড়অ হেটে কুলানো যাচ্ছিল না। যাইহোক খাওয়া দাওয়ার পর বের হলাম আর দেখলাম যে এবারের পহেলা বৈশাখে ভালোই সিকিউরিটি দেওয়া হয়েছিল। যেমন ছিল অসংখ্য পুলিশ প্রশাসন, ঠিক সেইভাবে ছিল অন্যান্য সিকিউরিটি। বিপদ তো আর বলে কয়ে আসে না। আমার কিন্তু এত সিকিউরিটি দেখে ভালোই লেগেছিল। আর তাইতো সেদিন পহেলা বৈশাখে এত সকালেও মানুষের ঢল দেখা গেছে রমনাপার্কের প্রাঙ্গনে।

image.png

এবার ভাবছিলাম যে এত সুন্দর সুন্দর রবীন্দ্র, নজরুল আরও কত মনোমুগ্ধকর গান শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। আর এই গানগুলো পহেলা বৈশাখে বটমুলে হয়। শুনেছি সেই ভোর থেকে সকল শিল্পীরা এসে বসে থাকে। আর চারদিকে আলো ছড়িয়ে পড়ার আগেই গান গাওয়া শুরু হয়। আর এই গান কোথায় হয় না দেখে চলে যাব তা হবে না। তাই এগুতে থাকলাম সামনের দিকে। যদিও অনেক ভীড়। তারপরও আসতে আসতে সামনের দিকে গান শুনতে শুনতে যেতে থাকলাম। দেখছিলাম কত মানুষ ছবি আর ভিডিও করছে। আর তাদের সাথে পুলিশও জনগনের ভালোই সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

image.png

এবার যতই সামনে যাচ্ছিলাম ততই দেখছিলাম যে ভীড়। একবার ভেবেছিলাম যে আর ভেতরের দিকে যাবো না। কিন্তু আমার সাথে আপু বলল যে সে কখনও দেখেনি। আর যাওয়া হয় না বা না হয় তাই দেখে যাবে। আর গান শুনতেও নাকি আপুর ভালো লাগছিল। আর আমিও মনে মনে ভাবলাম যে আমিও কখনও দেখিনি। আজ যখন এসেছি বৈশাখী রমনাপার্কের উৎসব একটু করে দেখে যাই। আর শুনেছি যে আরও বেলা হলে মানুষের ভীড় নাকি আরও বেড়ে যায়।তাই ভাবলাম আর একটু ঘুরে দেখে যাই যে বটমূলে কোথায় বসে গান করে শিল্পীরা। তবে এই গানের আসরে নাকি অনেক বছর আগে বোমা ফুটেছিল। আর অনেক মানুষ মারা গিয়েছিল। অবশ্য এই কথাটি আমার জানা ছিল না। তাহলে আমি ঐ ভিড়ের মধ্যে যেতাম না। আসলে রাখে আল্লাহ মারে কে? যার মুত্যৃ যেভাবে আছে সেইভাবেই হবে। আর আরও সামনে এগুতে থাকলাম।

image.png

এবার ঠেলাঠেলি করে গিয়ে যেন একটু কাছে যেতে পরলাম। বলে না অনেক সাধণার পরে আমি পেলাম তোমার মন। তাই একটু কাছে গিয়ে দেখি অনেক মানুষ বসে আছে বটমূলের মাঠে । অবশ্য কাছে যেতে পারছিলাম না। এই মানুষগুলো মাঝে দিয়ে চুপি দিয়ে দেখছিলাম। খুব কষ্ট হচ্ছিল। তখন ভাবছিলাম যে কিছু ফটোগ্রাফি করবো কিভাবে এত ভীরের মধ্যে/ আর তখন ভাবলাম যে সাংবাদিকরা কত সমস্যার মধ্যে কত রিক্স নিয়ে কত ধরনের ফটোগ্রাফি করে। কত কিছু লেখে জনগনের মাঝে তুলে ধরে। আর তাই আমিও আপনাদের মাঝে পহেলা বৈশাখের এই আন্দর ভরা উৎসবের কিছু অংশ শেয়ার করার জন্য হাজারো কষ্টের মাঝে বটমূলের গানের দৃশ্যটি তুলে ধরার জন্য সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। তখন বুঝতে পেরে আপুরা আমাকে জায়গা করে দিল। আমিও আপুদের একটি ধন্যবাদ দিলাম।

image.png

আর বটমূলের শিল্পীদের গানের আসর দেখে আমার কাছে ভালোই লাগছিল। এত সকালে যে এত মানুষ এই বটমূলে বসে বসে গান শুনছে তা দেখেই আমি অবক। কি সুন্দর এক একজন রঙিন সাজে সেজে বসে আছে ।তাদের সাথে ছিল অনেক ছোট ছোট শিশু আর বয়স্ক মানুষ। আর এর মাঝে গানগুলোও শুনতে আমার অনেক ভালো লাগছে। তবে এত খোলা প্রকৃতির মাঝেও ছিল প্রচন্ড গরম। কারন এবার গরম কিন্তু সেই রোজা থেকেই। তার মধ্যে আবার এত মানুষজনের একটি ভীরের গরম। যদিও ভাবছিলম যে কিছুক্ষন বসে গান শুনবো কিন্তু অস্থির লাগার কারনে বের হয়ে গেলাম ঐ ভীরের মাঝ থেকে।

image.png

এবার দেখেন আমরা বের হচ্ছিলাম এখানেও ঠেলালেঠি করে বের হচ্ছি ।আর এত মানুষের ভীড়ের জন্য দুটো সিরিয়াল করেছে। একটি হলো আসার আর একটি হলো বের হবার। আমরা যখন বের হচ্ছিলাম তখন প্রায় ৭.৩০ বাজবে। অথচ এত সকালে রমনাপার্কে এত মানুষরের ভীড় দেখা যাচ্ছে। আরও আসছে ছোট বড় সবাই। আর সবাই যেন এবারের বৈশাখে অনেক আনন্দ করছে । একে তো ঈদের আমেজ ছিল। আর তার সাথে বৈশাখের আনন্দ। এক কথায় আমারও কেন যেন ভালো লাগছিল। যদিও মনে চাইছিল যে রমনাপার্কে আরও কিছুটা সময় বসে থাকতে। কিন্তু গরমে অনেক ক্লান্তি লাগছিল। তবে আমার সাথে আপু কিন্তু অনেক আনন্দ পেয়েছে। আর আমাকে খুশি হয়ে ধন্যবাদ দিচ্ছে। যাক যদিও আমিও আমার পরিবারের মানুষ ছাড়া কখনও আসিনি এই প্রথম আসলাম। তারপরও কাউকে একটু আনন্দ দিতে পেরেছি ভেবে অনেক ভালো লাগলো।

image.png

এবার সেখান থেকে বের হয়ে রমনাপার্ক থেকে বের হবার উদ্দেশ্যে হাটছি। আর মাঝে মাঝে যা দেখছি ভালো লাগছে তা মোবাইলে ক্যাপচার করার চেষ্টা করছি। কি সুন্দর দৃশ্য দেখেই যেন মন ভরে যায়। রমনাপার্কে অনেক সুন্দর সুন্দর বড় বড় গাছ আর পুরো রমনাপার্ক জুড়ে পুকুর রয়েছে। যা দেখলে আমার অনেক ভালো লাগে। আমি কয়েকবার গিয়েছি আপুর সাথে। নদীর ওপারে দূর থেকে গাছের ফাঁক দিয়ে রঙিন সাজে সাজা কত মানুষ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। দূর থেকে দৃশ্যটি দেখতে অনেক ভালো লাগছিল। আর আমিও চাইছিলাম যে একটু সেখানে যাই। কিন্তু অনেক বড় এরিয়া রমনাপার্ক। মাঠ ঘুরে শেষ করা যাবে না। আর তাই আজকের মত একটু বসে নিলাম। আমার আজকের ভ্রমণ পোস্ট পর্বটি এখানে শেষ করার জন্য। পরবর্তীতে এর বাকি পোস্টগুলো নিয়ে আবার আসবো।

আর এভাবেই একটু বসে শেষ করে নিলাম আমার আজকের পহেলা বৈশাখে ঘুরতে যাওয়ার ভ্রমণ পোস্টের ৫ম পর্ব। এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আমি আমার মত করে আমার পোস্টি গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন। আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিলাম। সবাই ভালো ও সুস্থ থাকুন। আপনাদের সবার জন্য এই কামনাই করি।

পোস্টের বিবরন
পোস্টের ধরনভ্রমন
ডিভাইসVIVO
মডেলVIVO-Y22S
স্থানরমনা, ঢাকা

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা আমার ইউজার নাম @mahfuzanila আমার পছন্দ ঘোরাঘুরি ভ্রমন করা ,ছবি আঁকা, বিভি ন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি,ডাই প্রজেক্ট বানাতেও দারুণ পছন্দ করি। আর বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে,মন খারাপ থাকলে গান শুনতে ও গান গাইতে আর সবচেয়ে বেশী ঘুমাতে।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 11 days ago 

বৈশাখী মেলাতে ঘুরতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে আজ আপনি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। এর আগেও আপনি বেশ কয়েকটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছিলেন ভিডিও শেয়ার করেছিলেন সেগুলো দেখেছি। যাইহোক খুবই ভালো লাগলো আজকের পোস্ট দেখে। এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 10 days ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 10 days ago 

আপু আপনি বৈশাখী মেলায় ঘুরতে গেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। আপনি এর আগেও বৈশাখী মেলাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সেগুলো আমি দেখেছি। বৈশাখী মেলাতে গিয়ে আপনি যে ফটোগ্রাফি করেছেন সেগুলো দেখতে অনেক চমৎকার হয়েছে। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোষ্ট শেয়ার করার জন্য।

 9 days ago 

ধন্যবাদ আপু সব সময় সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।

 9 days ago 

আমার করা মন্তব্য আপনার অনেক পছন্দ হয়েছে জেনে ভালো লাগলো।

 10 days ago 

আপনার করা প্রতিটি পর্ব দেখছি আর আফসোস করে মরছি। কি মজাই না করেছেন আপনারা। আমাকে নিলে কি বেশী সমস্যা হতো? যাই হোক আপনি বেশ আনন্দের সময় কাটিয়েছেন তাতেই আমি খুশি। আমি তো আপনার পোস্ট দেখেই বেশ মুগ্ধ। দারুন সুন্দর করে উপস্থাপনা করেছেন আপু।

 9 days ago 

ধন্যবাদ আপু সব সময় এমন করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 58867.32
ETH 3223.11
USDT 1.00
SBD 2.30