লোভনীয় কিছু ভর্তার রেসিপি

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন আমার প্রিয় এপার ওপার বাংলার সকল ভাই বোনেরা? কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই অনেক হাসিখুশি সুস্থ ও নিরাপদ জীবন পার করছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় ভালো আছি। আজ ভাবলাম প্রতি সপ্তাহের মতো একটি রেসিপি পোস্ট শেয়ার করবো। আর তাই প্রতি সপ্তাহের মতো আজও একটি রেসিপি নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে গেলাম। আসলে রেসিপি পোস্টগুলো আমার অনেক ভালো লাগে। আমরা সবাই ভোজন বিলাসী। প্রতিদিন রান্নার রেসিপিতে কি রান্না করবো তা ভাবনায় থাকি। আমরা মানুষও সীমিত আমাদের চাহিদাগুলো সীমিত। গোশত পোলাও থেকে যদি মনের মতো বিভিন্ন রকমের ভর্তা সবজি মাছ আর ডাল রান্না করা যায় তাহলে পেট ভরে ভাত খাওয়া যায়। আজ আমি এমনি একটি রেসিপি নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। যেই রেসিপিটি আমাদের সবার অনেক অনেক পছন্দ। একেবারে জিভে জল চলে আসার মত। আর এই মাজাদার রেসিপি দিয়ে ভালো মত গরম গরম খিচুড়ী বা ভাত খেয়েও শান্তি পাওয়া যায়।

হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আমি সবার প্রিয় একটি রেসিপি নিয়ে হাজির হলাম। আমরা সবাই অনেক রকমের ভর্তা খেতে অনেক পছন্দ করি। আর এই ভর্তাগুলো যদি হয় গরম গরম খিচুড়ীর সাথে তাহলে তো খাওয়ার মজাদা আরও বেড়ে যায়। আমি কিন্ত ভর্তা খেতে অনেক পছন্দ করি। তাইতো মাঝে মাঝে আমার খাবার আইটেমগুলো ভর্তা রাখি। কিন্তু ভর্তা করতেও যে অনেক কষ্ট । যদি ফুলের সৌন্দয্য দেখে ফুল হাতে নিতে চাও তাহলে কাটার আঘাত তো সহ্য করতেই হবে। আর এখানে কাটা হচ্ছে ভর্তা করার পর হাত জ্বলে পুড়ে একাকার হয়ে যায়। আর তার পাশাপাশি এতগুলো ভর্তা পাটায় ডলতেও কিন্তু কষ্ট হয়। কিন্তু যখন ভর্তাগুলো খিচুড়ী বা ভাতের সাথে খেয়ে স্বাদ পাই তখন আর কষ্টের কথা মনে থাকেনা। আমি আবার ভোজন বিলাসী তাই যখন যা খেতে ইচ্ছে করে সাথে সাথে খেয়ে নেই।

কিছুদিন আগে খিচুড়ী আর ভর্তা করে রেখেছিলাম। সেদিন সকালে ঢাকা কলেজে গিয়েছিলাম তাই আস্তে দেরি হয়ে গিয়েছিল। সেদিন রিক্সায় বসে কেন যেন খুব সবজি দিয়ে গালা খিচুড়ী খেতে ইচ্ছে করছিল। ও হ্যাঁ আপনারা হয়তো ভাবছেন যে গালা খিচুড়ী কি? সেটা হলো বিভিন্ন সবজি দিয়ে একটু পাতলা করে খিচুড়ী রান্না করা। আমার এই খিচুড়ীটা ভীষণ পছন্দ। আগে প্রায় আমাদের বাসায় বন্ধের দিনে রান্না করা হতো। সাথে থাকতো ভর্তা ও আচাড়। সে কি আনন্দ ছিল সেই দিনগুলো। যাক সেই কথায় না যাই। তো কলেজ থেকে যদিও দেরী করে এসেছি তাতে কি খাবারের ইচ্ছা কি আর আটকে থাকে। একটু রেস্ট নিয়ে লেগে গেলাম খিচুড়ী আর ভর্তা রান্না করার জন্য। যে ভাবনা সেই কাজ। আর এক এক করে ঘুছিয়ে নিলাম। অবশ্য রান্না তাড়াতাড়ি হয়ে গেছে। কারন তখন চুলায় গ্যাস পর্যাপ্ত থাকে তা্ই ঝটপট করে দু চুলায় একে একে বসিয়ে দিলাম। আর ধীরে ধীরে আমার রান্নাগুলো শেষ করে নিলাম। খিচুড়ীটা আরও একদিন আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। ভাবছেন এত কথা কেন লিখছি। ভাইরে ভর্তা করার অনেক কষ্ট। আর খেতে অনেক মজা লাগে। তাই কষ্ট আর মজার অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার না করলে কার সাথে করবো? আপনারাতো হলেন আমার আরও একটি পরিবার। বুঝেছি আমার ইতিহাস পড়তে পড়তে আপনাদের ধৈর্য্য হারিয়ে যাচ্ছে হিহিহি। তাহলে চলুন কিভাবে আমি ভর্তা গুলো করলাম দেখে আসি।

image.png

image.png

image.png

লোভনীয় কিছু ভর্তার রেসিপি

প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ

স7.jpg

রেসিপির বিবরণ
চেপা শুটকিপরিমান মত
কাচাঁমরিচপরিমান মত
পেঁয়াজপরিমান মত
রসুনপরিমান মত
‍মিষ্টি কুমড়োর ছালপরিমান মত
শুকনো মরিচপরিমান মত
লবনপরিমান মত
ধনেপাতা কুচিপরিমান মত

প্রস্তুত প্রণালী

চেপা শুটকি ভর্তা

ধাপ-১

স3.jpg

প্রথমে চেপা শুটকিগুলো ধুয়ে চুলায় প্যান বসিয়ে একটু লবন দিয়ে টেলে নিলাম এবং পেঁয়াজ মরিচও রসুন একসাথে ভেজে নিলাম। এরপর পেঁয়াজ মরিচ রসুনগুলো পাটায় ঢেলে নিলাম।

ধাপ-২

স4.jpg

এবার প্রথমে মরিচগুসো পিসে নিলাম। এরপর শুটকিগুলো দিয়ে আবার মরিচের সাথে পিসে নিলাম।

ধাপ-৩

স111.jpg

এবার ধনে পাতাগুলো দিয়ে শুটকি আর কাচাঁমরিচের সাথে পিষে নিলাম এবংসর্বশেষ রসুন পেঁয়াজগুলো একটু পিষে তার সাথে সকল উপকরন পিসে বানিয়ে নিলাম আমার আজকের লোভনীয় ও মজাদার চেপাশুটকি ভর্তা। আমার কাছে চেপা শুটকি কাচাঁমরিচ দিয়ে ভালো লাগে। আর বাশঁপাতার শুটকী শুকনো মরিচ দিয়ে ভালো লাগে।

মিষ্টিকুমড়োর ছাল ভর্তা

ধাপ-১

স5.jpg

প্রথমে মিষ্টি কুমড়োর ছালগুলো ধুয়ে কাচাঁ মরিচ আর লবন দিয়ে সেদ্ধ দিলাম । এরপর যখন পানি শুকিয়ে এসেছে তখন সামান্য একটু তেল দিয়ে এগুলো কে ভাজা ভাজা করে নিলাম।

ধাপ-২

স6.jpg

এবার মিষ্টিম কুমড়োর ছালগুলো পাটায় দিয়ে পিসে নিলাম এবার তার মধ্যে পেঁয়াজ রসুনগুলো দিয়ে আবারও পিসে নিলাম এবং পড়ে ধনে পাতাগুলো দিয়ে আরও একটু পিসে বানিয়ে নিলাম স্বাদে ভরা ও লোভনীয় মিষ্টি কুমড়োর ছাল ভর্তা এবং প্লেটে তুলে নিয়ে অন্য ভর্তার প্রস্তুতি নিলাম।

শুকনো মরিচ ভর্তা

ধাপ-১

স9.jpg

প্রথমে ভর্তা দুটো যখন বানাচ্ছিলাম তখন শুকনো মরিচগুলো চুলার নিচে দিয়ে গরমে মচমচে করে নিয়েছিলাম। এবার মরিচগুলো পাটায় কয়েকবার পিসে মিহি করে নিলাম।

শেষ-ধাপ

222.jpg

এবার তার সাথে পেঁয়াজ রসুন ও মরিচগুলো পিসে সম্পূর্ন বানিয়ে নিলাম ঝাল ঝাল মজাদার মরিচ ভর্তা। আর এভাবে সব ভর্তাগুলো শেষ করে পরিবেশনের জন্য গুছিয়ে নিলাম।

পরিবেশন

image.png

আর এভাবেই আমার আজকের লোভনীয় কিছু ভর্তার রেসিপিটির পোস্ট রেডি করে আপনাদের সবার মাঝে শেয়ার করে দিলাম। যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলেই আমার স্বার্থকতা। আশা করি আপনাদের সবার কাছে আমার আজকের এই রেসিপিটি অনেক ভালো লাগবে। কারন এই মজাদার রেসিপিটি আমার মনে হয় সবাই অনেক পছন্দ করেন। আজ তাহলে এই পর্যন্তই। সবার সুস্থতা কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি।

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।

❤️❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️❤️

Sort:  
 3 days ago 

এই ধরনের ভর্তা গুলো আসলেই অনেক লোভনীয় হয়ে থাকে আপু। আমি এমন ভর্তা খুবই বেশি পরিমাণে পছন্দ করি। গরম ভাতের সাথে ভর্তা খেতে আসলেই অনেক বেশি ভালো লাগে

 yesterday 

হ্যাঁ ভাইয়া গরম ভাতের সাথে ভর্তা খেতে ভালো লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 3 days ago 

ভর্তা গুলো দেখিয়ে তো লোভ লাগিয়ে দিলেন আপু। মাঝে মাঝে পোলাও মাংসের থেকেও এরকম ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়া যায় বেশি। প্রত্যেকটা ভর্তার রেসিপি দেখে খুব লোভনীয় লাগছে। শুটকি ভর্তা এবং শুকনো মরিচের ভর্তা গুলো অনেক বেশি ভালো লেগেছে দেখে। আপনাকে ধন্যবাদ আপু এত মজার কয়েকটা ভর্তা রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

 5 hours ago 

হ্যাঁ আপু পোলাও মাংসের থেকেও ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়া যায় ভালো।সবসময় সাপোট করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

 3 days ago 
 3 days ago 

প্রতিটি ভর্তাই খেতে বেশ মজার। আমিও বানাই। তবে ভর্তা বানানো বেশ সময় সাপেক্ষ। আর এ রকম ভর্তা দিয়ে অনায়েসেই কয়েক প্লেট ভাত খেয়ে নেয়া যাবে। আর কিছুই লাগবে না। মজাদার ভর্তার রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 5 hours ago 

ঠিক আপু এমন ভর্তা দিয়েই অনেকগুলো ভাত খেয়ে নেওয়া যাবে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 3 days ago 

ভাবছি তিনটি ভর্তার রেসিপি এক সাথে দেওয়ার কথা মাথায় আসলো। আমাকে কি একটি রেসিপি দেওয়া যেত না? কিপটা জানি কোথাকার । যাই হোক আমিও সেদিন এই ভর্তা খেয়েছিলাম । স্বাদে গুনে ভরপুর ছিল আপনার প্রতিটি ভর্তা। বেশ সুন্দর করে আজে আপনি ভর্তার রেসিপি শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 hours ago 

নিজের রেসিপি নিজে করেন। ধার দেওয়ার মধ্যে আমি নেই। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 3 days ago 

যে কোন ভর্তা আমার ভীষণ পছন্দের। আপনি দেখছি তিন প্রকাশ লোভনীয় ভর্তা করেছে ও ভর্তা তৈরি পদ্ধতি চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। চ্যাপা শুটকি ভর্তা,মিষ্টি কুমড়ার খোসা ভর্তা ও শুকনো মরিচ ভর্তা সব গুলোই অনেক সুস্বাদু ও লোভনীয়। ধাপে ধাপে সব গুলো ভর্তা রেসিপি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 hours ago 

দিদি আমার বানানো ভর্তা আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ দিদি।

 3 days ago 

মজার কিছু ভর্তা পেলে মাছ-মাংস কিছুই লাগে না। তা দিয়েই পেট ভরে ভাত খেয়ে নেওয়া যায় ।আজ আপনি তিনটি চমৎকার ভর্তার রেসিপি শেয়ার করেছেন দেখেই তো গরম ভাতের সঙ্গে খেয়ে নিতে ইচ্ছে করছে ।দারুন ছিল আপনার রেসিপিগুলো ।ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

 yesterday 

আপু এখান থেকেতো খেতে পারবেন না। বাসায় আইসেন আরও মজার মজার ভর্তা করে খাওয়াবো। ধন্যবাদ প্রশংসা করার জন্য।

 3 days ago 

ওয়াও আপনি লোভনীয় কয়েকটি ভর্তার রেসিপি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু।এককথায় বলতে গেলে জিভে জল আনার মত রেসিপি।ছবি দেখে বুঝতে পারলাম খেতে খুব ভালো হয়েছিল রেসিপিটি।আপনি ধাপগুলো খুব সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 yesterday 

আপু আসলে ভর্তাটি খেতে অনেক ভালো লেগেছিল। ধন্যবাদ আপু।

 3 days ago 

ভর্তা রেসিপি দেখে আমার জিভে এখনই জল চলে আসলো।আপনি গলানো খিচুড়ি দিয়ে এই সুস্বাদু ভর্তা খেয়েছেন।আমি অবশ্য ভাত দিয়েই খেতাম যদি পেতাম।আমিও ভর্তা করবো ভাবছি।দারুন সুস্বাদু ভর্তার রেসিপি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।

 yesterday 

আপু ভর্তা করলে আমাকে দাওয়াত করবেন। সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 59488.68
ETH 2538.17
USDT 1.00
SBD 2.52