বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়ার-৩য় পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও কিন্তু ভালো আছি। আর এই পৃথিবীতে আমাদের সুস্থ এবং সুন্দর করে জীবন যাপন করতে হলে সকল হতাশা, দুঃখ, গ্লানি ও কষ্টগুলো দূরে ঠেলে দিয়ে মনটাকে ভালো রাখতে হবে। আর ভালো রাখার জন্য আমাদের মাঝে মাঝে সময় নিয়ে হারিয়ে যেতে হবে কাছে বা দূর দুরান্তে প্রকৃতির মাঝে বা কোন হাসি খুসি অনুষ্ঠানগুলোর মাঝে । আমি ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। মন চায় নিজেকে কোলাহল মুক্ত প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে ফেলতে। আজও তাই হারিয়ে গিয়েছিলাম আমার বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়ার আরও একটি পোস্ট লেখার মাঝে। আর হারিয়ে যেতে যেতে আপনাদের মাঝে আমি একটি ভ্রমন পোস্ট নিয়ে এলাম।আশা করি আমার আজকের এই বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়ার ভ্রমনের ৩য় পর্বটিও আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

আবারও নিয়ে এলাম রমনা পার্কের ভ্রমন পোস্টের ৩য় পর্ব। এর আগে আমি এর দুটি পর্ব আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি। আর আপনাদের সবার মাঝ থেকে ভালোই রেন্সপন্স পেয়েছি। আমি আমার প্রতিটি পোস্টে চেষ্টা করি আমার লেখা পোস্টি আপনাদের মাঝে সুন্দর করে তুলে ধরতে । তাই চলে যাই আমার মনের গভীরের থেকে আপনাদের জন্য সকল কথার ফুল ঝড়িয়ে আপনাদের জন্য সুন্দর একটি পোস্ট তৈরী করতে। সমুদ্রের গভীরে যেমন মুক্তা থাকে। ঠিক সেইভাবে আমি আমার মনের গভীর থেকে কথার মুক্তা দিয়ে আপনাদের জন্য লেখার চেষ্টা করি। জানিনা কতটুকু পারি বা পেরেছি। প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল বাঙ্গালীদের আরও একটি উৎসব ঈদের মত করে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়। আর এই দিন টিকে ঘিরে ছোট বড় ও পরিবার বর্গ সবাই যেন অপেক্ষা করে এই দিনটির জন্য। আর এই উৎসবটিকে ঘিরে আমাদের দেশের রমনা চারুকলা টিএসসি চত্তর ও শাহবাগে দেখা যায় মানুষ রঙ্গিন সাজে সেজে প্রকৃতি ও এই জায়গাগুলো সাথে মিশে একাকিত্ত হয়ে যায়। আমিও কিন্তু এবার চলে গিয়েছিলাম তাদের মাঝে কিছু আনন্দ ভাগ করে নিতে। হ্যাঁ ভাই ও তাহলে চলুন বৈশাখে রমনাপার্কে আজকের পর্বে কি করলাম দেখে আসি।

image.png

বৈশাখী মেলায় ঘুরতে যাওয়ার-৩য় পর্ব

image.png

আর এভাবে খাবারের খোঁজে সামনের দিকে হাটতে থাকলাম। এত বড় রমনাপার্ক কোথায় পানি ভাত বিক্রি করছে কে জানে? এখানেও আপুর খিদে পেয়েছে প্রচুর। কারন সেতো আবার ডায়াবেটিক্স এর মানুষ। আমিও ভাবছি আর হাটছি, আর কাউকে না কাউকে জিজ্ঞেস করছি। সবাই বলছে যে সামনে। তাদের দেখে বোঝা যাচ্ছে যে তারা আগে খেয়ে শান্ত হয়ে আছে। আর নয়তো এত খুশিতে কেউ হাটাহাটি করতে পারে? আর এভাবে আমিও ক্ষুধা নিবারন করার জন্য খাবারের আশায় হাটতে থাকলাম।

image.png

আর হাটতে হাটতে দেখতে পেলাম সামনে পুলিশ প্রশাসন এর ক্যাম্প। এই পহেলা বৈশাখে রমনাপার্কে প্রোগ্রামকে ঘিরে অনেক সিকিউরিটির ব্যবস্থা করেছে। ভাবছি পুলিশ মামাদের জিজ্ঞেস করবো তারা তো জনগনের সেবা করার জন্যই। কাছে গিয়ে দেখি তারা অনেক ব্যাস্ত। কাকে রেখে কাকে জিজ্ঞেস করবো? আমি আবার পুলিশ মামাদেরকে অনেক ভয় পাই, হিহিহি। ছোট বেলা পুলিশ দেখলেই আমার জ্বর এসে যেত। আর এখন হাত পা কাপে। আমি আবার বেশী সাহসি তো। তারপরও সাথে আপু আছে, তাই কাছে গেলাম। ভাবলাম এখানে পোস্ট লেখা যাবে আর তার জন্য কিছু ফটোগ্রাফি আর ভিডিও করতে আরও সামনে এগিয়ে যেতে থাকলাম।

image.png

এবার কাছে গিয়ে দেখলাম যে তারা তাদের দায়িত্বগুলো সুন্দর মতই পালন করে চলেছে। কতক্ষন পর পর সিসি ক্যামেরায় চোখ রাখছে। কখনও টেলিফোনে বা তাদের ওয়ারলেছে বিভিন্ন ফোন রিসিভ করছে। সবাই যেন অনেক ব্যাস্ত ডিউটি পালন করছে। আর তাদের ক্যাম্পগুলোও অনেক সুন্দর করে বানানো হয়েছে। আমি ভিডিও আর ফটোগ্রাফি করছি আর মনে মনে ভয় পাচ্ছি।কারন তাদের এত ব্যাস্ততার মাঝে তাদের এমনিতেই মাথা গরম। কখন কি বলে বসে ভাবছিলাম। কারন একবার পুলিশদের ফটোগ্রাফি করতে গিয়ে তাদের কাছে অনেক কৈফত দিতে হয়েছিল আমার। ওমা কি ভয় না পেয়েছিলাম সেদিন। আর এভাবেই মনে ভয় নিয়ে হাটছি আর কিছুক্ষন ফটোগ্রাফি আর ভিডিও করছি। আর মাঝে মাঝে থামছি।

image.png

আর এভাবে আমিতো ভেবেছিলাম যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়। কারন আমি একটু তাদের ভেতরের বসার দিকে ফটোগ্রাফি করতে লাগছিলাম। হঠাৎ দেখি এক আপু আর ভাইয়া পুলিশ আমাকে ফ্লো করছে যা ভয় পেয়েছিলাম। কারন শুনেছি বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা। আর পুলিশ ছুলে ১৩২ঘা। আর এই ঘাতে জীবন শেষ। তারপর দেখলাম যে না কিছুই বলেনি। বরং আমার দিকে তাকিয়ে একটি মিষ্টি হাসি দিলো তারা। আর তারা ভেবে নিয়েছে যে, আমি বড় কোন ব্লগার। তাই তারা একটু সুন্দর করে আমার দিকে তাকিয়ে একটা সুন্দর লুক দিল। কিন্তু আফসোস হলো যে ছবিটা অন্ধকার হয়েছে। আপুর মিষ্টি হাসিটা ক্যামেরায় আলোর ঝলমলে বন্দি করতে পারিনি। আর তখনি আমিও একটু মিষ্টি হেসে আপুকে খাবার কোথায় পাওয়া যায় জিজ্ঞস করলাম। তখন আপু সুন্দর করে বলে দিল আর দেখিয়ে দিল।

image.png

এরপর যখন হাসতে হাসতে আমিও চলে আসছিলাম। তখন দেখতে পেলাম সাইটে আরও একটি রুম খুবই সুন্দর করে গোছালো পেজেন্টটেশন করা। দেখে খুবই ভালো লাগলো। মন চেয়েছিল যে, একটু ভেতরে গিয়ে বসি। মন চাইলেতো আর হবেনা। পুলিশ বলে কথা। তাদের থেকে যত দূরে থাকা যায় ভালো। বাপরে দেখেতো মনে হচ্ছে যে, বড় কনো পুলিশ কর্মকর্তা অফিসাদের জন্য এই রুমটি করা হয়েছে। তারা এখানে বসে গল্প করবে রেস্ট নিবে আর বৈশাখী প্রোগ্রাম সুন্দর মত উপভোগ করবে। রুমটি দেখছিলাম আর ফটো তুলছিলাম। হঠাৎ আপু বলল কিরে খাবি না? কত ছবি তুলতে পারছ তুই? আর এবার রওনা দিলাম পান্তা ভাতের উদ্দেশ্যে।

image.png

এরপর খাবারের সন্ধানে যাচ্ছিলাম। আর রঙ্গে রঙ্গে মানুষগুলো দেখছিলাম। আমার আবার মানুষের আনন্দ দেখলে অনেক ভালো লাগে। বিশেষ করে এই পহেলা বৈশাখে সবাই কি সুন্দর সুন্দর রঙ্গিন পোশাকে সাজে আর ইনজয় করে দেখে ভালো লাগছিল। আর তার পাশাপাাশ তো কানে আসছিল সেই রমনাপার্কের শিল্পীদের মনমুগ্ধকর বৈশাখী গান আর নজরুল রবীন্দসংগীত। খুবই অসাধারন লাগছিল

image.png

image.png

এরপর পেয়ে গেলাম সেই খাবারের সন্ধান। কাছে গেলাম, দেখতে পেলাম যে মোরগ পোলাও কিন্তু আমরাতো খেতে গিয়েছি পান্তা ইলিশ। শুনেছি রমনাপার্কে বটমুলে মাটির হারিপাতিলে করে পানি ভাত ইলিশ ভাজা আর বিভিন্ন ভর্তা বিক্রি করে। কিন্তু ওমা একি দেখছি। এ দেখি মোরগ পোলাও, অবশ্য তার কাছেও দেখছি সব শেষ হয়ে গেছে। দেখেছি পাশে বড় বড় পাতিল ছিল। সারারাত হয়তো রান্না করে প্যাকেট করেছে। আর ইতি মধ্যে বিক্রিও হয়ে গেছে। দাম জিজ্ঞেস করতেই বলল যে আপু এগুলো শেষ, বিক্রি হয়ে গেছে। তারপর ভাইয়াকে বললাম যে ভাইয়া আর কোথাও কি খাবার পাওয়া যাবে। দেখিয়ে দিল পাশে একটি হোটেল আছে, সেখানে যা খেতে চান সব পাওয়া যাবে। তো তাকে একটি ধন্যবাদ দিয়ে সেখানের উদ্দ্যেশ্যে গেলাম।

image.png

image.png

এরপর কাছে যেতেই দেখি একটি আপু হোটেলের ভেতরে ঢুকছে। এরপর দেখলাম যে আরও একটি ভাইয়া বের হচ্ছে। দেখেই বুঝে গেলাম যে ,এখানেই পাবো খাবার। তখন মনে মনে ভাবলাম যে এখান তো সব পোলাও কোরমা পাওয়া যাবে। এগুলো তো খাবার জন্য আমরা আসিনি। তারপরও ভেতরে গেলাম দেখি কি পাওয়া যাবে। এখানে আর দেরি না করে দৌড়ে ঢুকে গেলাম খাবারের জন্য কারন পেটে যে আর মানছে না।

আজ আর লেখতে পারবো না। খিদায় পেট চো চো করছে। আগামী পর্বে দেখাবো আমরা সেখানে কি পেলাম আর কি খেলাম।আজ এখানেই আমার আজকের ব্লগটি শেষ করে দেই। আর এভাবেই শেষ করে নিলাম আমার আজকের পহেলা বৈশাখে হঠাৎ ঘুরতে যাওয়ার ৩য় পর্ব। এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আমি আমার মত করে আমার পোস্টি গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন। আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিলাম। সবাই ভালো ও সুস্থ থাকুন। আপনাদের সবার জন্য এই কামনাই করি।

পোস্টের বিবরন
পোস্টের ধরনভ্রমন
ডিভাইসVIVO
মডেলVIVO-Y22S
স্থানরমনা, ঢাকা

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা আমার ইউজার নাম @mahfuzanila আমার পছন্দ ঘোরাঘুরি ভ্রমন করা ,ছবি আঁকা, বিভি ন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি,ডাই প্রজেক্ট বানাতেও দারুণ পছন্দ করি। আর বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে,মন খারাপ থাকলে গান শুনতে ও গান গাইতে আর সবচেয়ে বেশী ঘুমাতে।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 months ago 

যদিও আপনার শেয়ার করা আগের পর্বগুলো দেখা হয়নি। তবে আজকের এ পর্বটা দেখে বেশ ভালো লাগলো। রমনা পার্কের বৈশাখী মেলা খুব সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছেন। আপনার কাটানো মুহূর্তগুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো। ছোটবেলায় আমরা কমবেশি সবাই পুলিশ ভয় পেতাম। তাদের জন্য তৈরি করার রুমটা তো খুবই সুন্দর লাগছে দেখতে।

 2 months ago 

আপু ধন্যবাদ এমন সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

আমরা ইতোমধ্যে আপনার মাধ্যমে বৈশাখী মেলার মধ্যে ঘোরাঘুরি করার দুটি পর্ব দেখতে পেরেছি। আজকে আপনি তৃতীয় পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বাংলাদেশের মধ্যে সব থেকে রমনা পার্কের মধ্যে বৈশাখী মেলা খুবই সুন্দর ভাবে উদযাপন করা হয়। আপনি দেখছি মেলার মধ্যে বেশ ভালোই ঘোরাঘুরি করেছেন। অসাধারণ একটি সময় উপভোগ করেছেন মেলার মধ্যে।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া এমন সুন্দর করে মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।

 2 months ago 

বৈশাখী মেলায় গিয়ে খুবই সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটিয়ে ছিলেন। সত্যি কথা বলতে মেলায় ঘুরতে আমারও ভীষণ ভালো লাগে। দারুন একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। যা দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 months ago 

আপু এটা কোন কথা? প্রতি সপ্তাহেই তো দেখছি এমন করে একটি করে পোস্ট করে লোভ ধরাচ্ছেন। আচ্ছা বলেন তো এটা কোন কথা? কি মজা করে ঘুরে বেডিয়েছেন আর আমাকে নিলেন না। মনে থাকবে আমার। যাই হোক পোস্টটি পড়ে বেশ মজা পেয়েছি।

 26 days ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার ‍সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 66794.56
ETH 3501.55
USDT 1.00
SBD 2.71