ফেলে আসা সেই কোরবানীর ঈদ
আসসালামু আলাইকুম
হ্যালো কেমন আছেন আমার পরিবাবেরর সকল বন্ধুবান্দব? আশা করছি সবাই অনেক ভালোই আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় আর আপনাদের সবার দোয়ায় আলহাদুল্লিল্লাহ্ ভালো আছি। আমরা সবাই এই পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়ে এসেছি। জন্মের পর থেকে যখন আস্তে আস্তে বড় হতে শুরু করি তখন জীবনের বিভিন্ন সময় আমাদের কে পার করতে হয়। যার মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সময় হচ্ছে আমাদের শৈশব। হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে আমার ফেলে আসা শৈশব নিয়ে কিছু স্মৃতি শেয়ার করতে এসেছি। আসলে শৈশবের এত এত স্মৃতি যা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করলেও শেষ হবে না। তারপরও আপনাদের জন্য তার থেকে কিছু স্মৃতি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশা রাখি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।
Canva দিয়ে তৈরি
আজ ছেলেবেলার অনেক সৃষ্টির মধ্যে কোরবানী ঈদের কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল। এই কোরবানী ঈদ হচ্ছে ত্যাগের ঈদ। তখন তো আর বুঝতাম না। শুধু বুঝতাম যে এই ঈদে পশু আনবে। ওটা নিয়ে অনেক আনন্দ করবো। তারপর ঈদের ও তার কয়েক দিন মজার মজার রান্না করে খাবো। স্কল ছুটি হবার পর থেকে ভাবতাম যে ঈদ আসতে আর কত দিন। পশুর হাট বসবে কবে? আর পশু আনবে কবে? সারাক্ষন মাথার মধ্যে এই ঘুরপাক খেতো। আর শৈশবের এলাকার সব বন্ধুদের নিয়ে প্ল্যান করতাম যে পশু আনলে কি কি খাওয়াব। আর কি কি করবো। তারপর একসময় চলে আসতো পশু। ওমা পশু দেখতে পেয়ে যে মনে কি একটা আনন্দ লাগতো তা বলে বোঝানোর মত না।
এমনি সময় দেখা যেত কত পশু মাঠে বাধা থাকতো। সেগুলোর প্রতি কোন মোহ কাজ করতো না। কিন্তু ঈদের পশু বলে কথা। এই মোহটা হয়তো আল্লাহপাকের দেয়া। তাই সেই সময় ঈদের পশু দেখলে যে কি আনন্দ পেতাম। আর আরও আনন্দ পেতাম ওদের খাওয়াতে পেরে। ওদের খাবার আনতে কোথায় কোথায় চলে যেতাম। কেউ যেন পশুর কাছ থেকে নড়তে চাইতাম না। আর দেখতাম যে কে কত বেশী পশুর জন্য খাবার যোগার করতে পারে। অনেক সময় দেখা যেত এলাকার মানুষের গাছের থেকে এমন ভাবে গাছের পাতা বা গাছসহ ডাল ভেঙ্গে নিয়ে আসতাম। তখন তাদের হাতে অনেক বকাও খেতে হয়েছে। এমন কি দেখা গেছে গাছ ভাঙ্গতে গিয়ে দৌঁড়ানি খেয়ে অনেক আঘাতও পেয়েছি। কিন্তু পশুকে খাওয়াবো বলে নিচ্ছি । সেই ব্যাথা ব্যাথা বলে মনে হতো না। কিন্তু রাতে যখন বাসায় যেতাম তখন আঘাতের যন্ত্রনা টের পেতাম।
এরপর পশু নিয়ে এলাকা হাটাতাম আর দেখতাম যে কার পশু বেশী বড়। এই নিয়ে শৈশবের বন্ধুদের সাথে কত ঝগরা হতো। আবার মিলেও যেতাম। আসলে শৈশবের সম্পর্কটাই ছিল এটা।আর এখন একটু সামান্য কথায় কেউ কারও সাথে কথা বলাই বন্ধ করে দেয়। যাইহোক এখন আর কোরবানীর পশু দেখলে সেই অনুভূতি কাজ করে না। শুধু মনে হয় শৈশবের ঈদই ভালো ছিল। চাইলেইতো আর আমি কোরবানীর ঈদের নিয়ে সেই শৈশবের আনন্দে ফিরে যেতে পারবো না। কারন এটাই হচ্ছে আমাদের আল্লাহ্পাকের দেয়া নিয়তি। জানিনা এখনকার ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের মাঝে আমাদের সেই শৈশবের এই অনুভূতিগুলো কাজ করে কিনা।তবে আমি তাদের মাঝে নিজের এই শৈশবের স্মৃতিগুলো খোঁজার চেষ্টা করি। আর আমাদের মত করে এখন কোন বাচ্চাকে আর এইভাবে আনন্দ করতে দেখাও যায় না। আমরাতো এক এলাকা থেখে আরেক এলাকায় পশু দেখাতে নিয়ে যেতাম। আবার অনেক সময় দেখা যেত তেজী পশু হলে পশুতে পশুতে মারামারি হতো। আর সেটা দেখে আনন্দ পেতাম।
যাইহোক সবমিলিয়ে বলবো কোরবানী ঈদের পশু নিয়ে শৈশবের সেই স্মৃতিগুলো আজও মিস করি। মনে হয় সেই দিনগুলোতে ফিরে যেতে পারতাম। আবার সেই আনন্দ করতে পারতাম। তাহলে হয়তো জীবনটা অন্য রকম হতো। কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব নয়। তা্ই এখন শুধু এখনকার শিশুদের আনন্দ দেখে কিছু আনন্দ উপভোগ করি।
পরিশেষে আর কি লিখবো ?এই অনুভূতি লিখে শেষ করা যাবে না। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি। ভালো থাকবেন সবাই । এই রকম আরও হাজারও ফেলে আসা স্মৃতি রয়েছে যা লেখে শেষ করা যাবে না। আর কিছু লেখলাম না। আপনারা সবাই যেন ভালো থাকেন কামনা করে ও আপনাদের সবার সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের ব্লগটি এখানেই শেষ করছি।
পরিচিতি
আমি মাহফুজা আক্তার নীলা আমার ইউজার নাম @mahfuzanila আমমি পছন্দ করি ঘোরাঘুরি ও ভ্রমন ছবি আঁকা, বিভি ন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে দারুণ পছন্দ করি। আর বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে,মন খারাপ থাকলে গান শুনতে ও গান গাইতে ঘুরতে যেতে আর সবচেয়ে বেশী ঘুমাতে।
কোরবানির আগে আমরা কোরবানির পশু নিয়ে ঘিরে থাকতাম। অনেক ভালো লাগতো সবার বাড়িতে কোন ধরনের গরু কিনে আনলো তা আমরা ঘুরে ঘুরে দেখতাম। তাদেরকে খাওয়াতাম তাদের গায়ে হাত বুলিয়ে দিতাম। বেশ অনুভূতি কাজ করতো আপু। আপনি আপনার ফেলে আসা সেই ঈদের অনুভূতিগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। অনেক ভালো লাগলো আপু এমন স্মৃতি পড়ে।
ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ছোট বেলার কোরবানির ঈদ নিয়ে তো দেখছি দারুন স্মৃতিচারন করেছেন। আপনার এমন স্মৃতিচারন দেখে তো আমার একেবারে ছেলেবেলার কথা মনে হয়ে গেল। আমরাও ছেলেবেলায় কোরবানীর পশু আসলে সেটা নিয়ে বেশ আনন্দ উদ্দীপনায় মেতে থাকতাম। দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
খুব সুন্দর লাগলো আপু আপনার কোরবানি ঈদের শৈশবের স্মৃতিচারণ। আসলে ছোটবেলায় থাকে না কোন কাজের চাপ,দায়িত্ব, চিন্তা।কোরবানির পশুর প্রতি অন্যরকম অনুভূতি ও তাকে খাওয়ানোর চিন্তাভাবনা সব গুলো কথাই বেশ ভালো লাগলো।আসলে ঈদ ছোটদের জন্য খুব আনন্দের হয়ে থাকে। তাই ছোট বপলার মতো আর কোরবানিতে আনন্দ নেই। ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্ট টি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
ধন্যবাদ দিদি মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।