একটি মর্মান্তিক ঘটনা
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারও ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে ছোট্ট একটি শিশু বাচ্চার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। এইতো কিছুদিন আগে আমি আমাদের খলিলগঞ্জ বাজার সংলগ্ন পনির পাম্প এর কাছে অনেক ভিড় দেখেছিলাম। আর সেই ভিড় দেখে অনেকটা কৌতূহলবশত ভিড়ের কাছে গিয়ে ঘটনাটা জানার চেষ্টা করেছিলাম। আর সেখানে গিয়ে ঘটনাটি শুনে আমি তো একদম বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।
সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম, ঢাকা থেকে আগত একটি বাসে এক দম্পতি তাদের তিন বছরের একটি শিশু সন্তানসহ আমাদের কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। যখন তারা ঢাকা থেকে রওনা হয়েছিল, তখন থেকেই নাকি তিন বছরের ওই শিশু সন্তানের গায়ে প্রচন্ড জ্বর ছিল। আর এই জ্বরের তাপে সারা রাস্তায় শিশু সন্তানটি ভীষণ কান্নাকাটি করে ছিল। এমনকি মাঝে মাঝে সে গাড়ি থেকে নেমে যাওয়ার জন্য ভীষণ অস্থির হয়েছিল।
কিন্তু বাবা মা যেহেতু কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল, তাই তারা আর পথিমধ্যে নামতে পারেনি। আর মনে করেছিল তাদের সন্তানের তো জ্বর এসেছে, ওষুধ খাইয়েছে হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্বর থেমে যাবে। কিন্তু তাদের ভাবনাটা একদম ভুল ছিল, কেননা ঢাকা থেকে একদম কুড়িগ্রাম পর্যন্ত তাদের শিশু সন্তানের গায়ে প্রচন্ড পরিমাণ জ্বর ছিল। আর এই জ্বরের তাপে ঝাঁকুনি দিয়ে গাড়ির মধ্যে তাদের শিশু সন্তানটি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছিল।
এরকম পরিস্থিতি দেখে সেই শিশু সন্তানের বাবা ও মা তাদের সন্তানের মৃত্যু যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। আর তাই তার মা বারবার গাড়িতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিল। যখন গাড়ি আমাদের বাড়ির সামনে খলিলগঞ্জ বাজারের কাছে পনির পাম্পে এসে দাঁড়িয়েছিল, তখন সেই বাবা-মা তাদের মৃত সন্তানকে নিয়ে পাম্পের কাছে নেমে গিয়েছিল। গাড়ি থেকে নামার পরও বাবা মা তাদের কান্না কিছুতেই থামাতে পারছিল না, তাই সেখানে অনেক লোকের ভিড় জমে গিয়েছিল। আর সেই ভিড় দেখেই আমিও সেখানে গিয়েছিলাম।
এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা আমারই যেন সহ্য হচ্ছিল না, তাহলে সেই ছোট্ট শিশু সন্তানের বাবা মার কিভাবে সহ্য হবে, তা ভেবে যেন কুল পাই না। হয়তোবা বাবা-মার ভুল ছিল শিশু সন্তানটিকে জ্বর অবস্থায় এতটা পথ জার্নি করা। আবার ভুল ছিল শিশু সন্তানটিকে হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়া। আর এই ভুলগুলোর কারণেই হয়তো তাদের ছোট্ট শিশু সন্তানটিকে তারা হারিয়ে ফেলেছিল। তবে হয়তো বাবা-মা না বুঝেই কাজটি করেছিল।
যদি তাদের ধারণা থাকতো অসুস্থ অবস্থায় তাদের শিশু সন্তানটিকে নিয়ে এতটা পথ জার্নি করলে এরকম পরিস্থিতি হতে পারে, তাহলে হয়তো তারা কখনোই ভুল করেও কাজটি করত না। যাইহোক ভুল হলে তো সবাইকেই মাশুল দিতে হয়, আর তাই হয়তো সেই শিশু সন্তানের বাবা-মাকেও মাশুল দিতে হলো তাদের একমাত্র সন্তানটিকে হারিয়ে। শুধু মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে বলবো, সেই শিশু সন্তানটি যেন পরপারে গিয়ে বেহেস্ত নসিব করেন।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
আপনার এই পোস্ট টি পড়ে আমিও বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। এত ছোট শিশুর এহেন মৃত্যুর স্মৃতি তার বাবা-মা জীবনেও ভুলতে পারবে না। মহান সৃষ্টিকর্তা সেই বাবা-মা কে এই শোক সহ্য করার ক্ষমতা দিক। জ্বর থেকে এমন মারাত্মক ঘটনা ঘটে যাবে তা যদি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারতো তবে সেই বাবা মা নিশ্চয়ই এমন ভুল করতো না। খুবই খারাপ লাগছে পরিবারটির জন্য।
আমার কাছেও তাই মনে হয় আপু, বাবা-মা কোনদিনই তার সন্তানের এমন মৃত্যু ভুলতে পারবেনা। আপনার সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমার তো চোখে জল চলে এসেছে এই মর্মান্তিক ঘটনাটা পড়ে। তিন বছরের একটা শিশুর এরকম মৃত্যু বাবা-মা কোনভাবেই মেনে নিতে পারবে না। আসলে ওই বাবা-মা দুজন যদি ছোট বাচ্চাটাকে হসপিটালে নিয়ে যেত তাহলে ভালো হতো। প্রচন্ড রকম জ্বর কিন্তু একটা শিশুর জন্য অনেক ক্ষতিকারক। আর এই অবস্থায় হসপিটালে না নিয়ে যাওয়া, এত দূর জার্নি করা ঠিক হয়নি। অনেক খারাপ লেগেছে পুরোটা পড়ে।
আপু, আপনার মত আমারও খুবই খারাপ লেগেছিল ঘটনাটি জেনে। মৃত্যুটা সত্যিই মর্মান্তিক ছিল। যাইহোক আপু, আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনার পোস্ট পড়ে অনেক খারাপ লাগল। সত্যি ভাইয়া এমন ঘটনা কোন বাবা মা মেনে নিতে পারে না। আসলে ভাইয়া আমরা বলছি বাবা মার ভুল হয়েছে। সত্যি বলতে বাচ্চাটা হায়াত এই পর্যন্তই ছিল, তাই হয়তো বাবা মা তাকে হসপিটালে নিয়ে যায়নি।আল্লাহ বাচ্চাটাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন,আমিন।
ঠিক বলেছেন আপু, সন্তানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নেয়া বাবা মার জন্য খুব কঠিন হয়ে পরে। আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমার কাছে অনেক অনেক খারাপ লেগেছে ভাই এরকম মর্মান্তিক ঘটনা শুনে। বাচ্চাটার জন্য সত্যি অনেক খারাপ লেগেছে। এত অল্প বয়সে মায়ের কোল ছেড়ে চলে গিয়েছে না ফেরার দেশে। আসলে অসুস্থতা এমন একটা জিনিস, যার জন্য ছোট বড় সবাই এরকম পরিস্থিতির শিকার হয়। তাদের উচিত ছিল সন্তানকে ভালো একটা ডাক্তার দেখানো তারপরে লং জার্নিতে আসা।
ভাই শিশু সন্তানটির এমন মৃত্যুর কথা শুনে আমার কাছেও খুবই খারাপ লেগেছিল। যাইহোক ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। পোস্টটি পড়ে অনেক খারাপ লাগছে বাচ্চাটির জন্য। ইস!! তার মা বাবার না জানি কতো কষ্ট হচ্ছে একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে। বাচ্চাটির জ্বর অবস্থা নিয়ে এতদূর জার্নি করা মোটেও ঠিক হয়নি তার বাবা-মার। তার বাবা-মার দোষ দিয়েও লাভ নাই। সৃষ্টিকর্তা বাচ্চাটির বাবা-মাকে ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা দিক।
ঠিক বলেছেন আপু, শিশু সন্তানটির এমন তীব্র জ্বর অবস্থায় জার্নি করাটা মোটেও ঠিক হয়নি। আর তার কারণে হয়তো এমন করুন মৃত্যু হয়েছে।