ঢাকা ঘুরে আসার স্মৃতি - পর্ব ৫ || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি ঢাকা ঘুরে আসার স্মৃতি - পর্ব ৫ আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। গত পর্বে আমি আমার অর্ধাঙ্গিনী কে নিয়ে তার প্রাইমারি স্কুল ও হাই স্কুল ঘুরতে যাওয়া নিয়ে পোস্ট উপস্থাপন করে ছিলাম। আমরা সেদিন স্কুলগুলো পরিদর্শনের পরে আমার অর্ধাঙ্গিনীর বড় বোনের বাসায় ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল। যেহেতু আমরা হঠাৎ করে ঢাকা গিয়েছিলাম তাই আমরা বোন দুলাভাইকে সারপ্রাইজ দিব বলে তাদের কাছে ঢাকা যাওয়ার কথা বলিনি। কিন্তু তাদের সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে আমরা নিজেরাই সারপ্রাইজ পেয়ে গেলাম। কেননা আমরা তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখি তারা কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়েছে। তাই আমাদের আর সারপ্রাইজ দেওয়া হলো না।
আমরা পথিমধ্যে বারংবার নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করতে লাগলাম আমার বোন দুলাভাই কে নিয়ে। তাদের সাথে ফোনে আলাপ করে কথাটি যখন বলেছি তখন তারা খুবই আফসোস করতে শুরু করলো। তারা আমাদেরকে খুবই জোর করতে লাগল তাদের বাসায় থাকার জন্য। কিন্তু আমাদের হাতে সময় ছিল না আর তাই তাদের কথাও রক্ষা করতে পারলাম না। যেহেতু আমরা একদিনের জন্য ঢাকা গিয়েছিলাম সেহেতু আমাদের থাকা কোন ভাবেই সম্ভব ছিলনা। তাই তাদের কথা উপেক্ষা করে আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা চিন্তা করলাম।
যেই কথা সেই কাজ আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম বিকেলের দিকে। যতই ঢাকার দিকে এগুচ্ছি ততোই যেন আমার অর্ধাঙ্গিনীর মনটা ভীষণ খারাপ হতে লাগল। বড় আশা করে এসেছিল বোনের সাথে দেখা করবে কিন্তু সেই কাজটি আর হলো না। তাই আমি তাকে সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করলাম। আর আমার অর্ধাঙ্গিনী ও বিষয়টি বুঝার চেষ্টা করল। বোনের সাথে দেখা হয়নি তো কি হয়েছে প্রিয় প্রাইমারি স্কুল ও হাই স্কুল ভ্রমণ হয়েছে এটাই তার সান্তনা।
আমাদের চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ এতটাই সুন্দর তা হয়তো কখনোই ভাষায় প্রকাশ করে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। আমরা যখন বোনের বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হই তখন পথিমধ্যে এত সুন্দর সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল তা আর কি বলবো। রাস্তার দুই ধারে সবুজের সমারোহ দেখে আমার অর্ধাঙ্গিনীর মন অনেকটাই ভাল হয়ে গেল। এত সুন্দর মনোরম পরিবেশ যা দেখে মন ভাল না হয়ে পারেই না। তবে আমরা যতই ঢাকার দিকে এগুচ্ছি ততই যেন আমাদের ভালোলাগাটা কমতে শুরু করল। কেননা কিছুক্ষণ পরপর জ্যামে পড়ে খুবই অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। আর তাই বিকেলের হালকা-পাতলা নাস্তা খাওয়ার সময় টি পার হয়ে যায়। তাই আমরা সন্ধ্যার পরে হালকা ক্ষুধা নিবারণের জন্য ড্রাইভার ভাইকে একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে দাঁড়াতে বললাম।
ড্রাইভার ভাইটি ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ায় তার উপরে নির্ভর করে একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে উপস্থিত হলাম। আর সেই হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট এর নাম ছিল ক্যাফে শান্তি মা। এই হোটেলটি সাভারের বাইপেল খোদেজা মার্কেটে অবস্থিত। আমরা হোটেলটিতে শুধুমাত্র ড্রাইভার এর কথা অনুযায়ী হালকা খাবারের জন্য বিরতি নিলাম। আর তাই আমরা এই শান্তি মা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট এর ভিতরে গিয়ে প্রবেশ করলাম।
যেহেতু আমি আগে রেস্টুরেন্টটিতে আসিনি তাই এই রেস্টুরেন্টের খাবারের মান সম্পর্কেও জানিনা। তবে ড্রাইভার এর মুখে শুনেছি খাবারের মান খুবই ভালো। আর তাই তার কথার উপর বিশ্বাস করেই রেস্টুরেন্টে উপস্থিত হলাম। কিন্তু আমাদের প্রাইভেট কারের ড্রাইভার বোধহয় একটু ভুল পরামর্শ দিয়ে ফেলল। আমরা রেস্টুরেন্ট যাওয়া অবধি বুঝতে পারিনি এখানে খাবারের মান কি রকম। কিন্তু যখন খাবারগুলো খাওয়া শুরু করি তখন বুঝতে পারলাম ড্রাইভার এর উপর নির্ভর করা আমাদের উচিত হয়নি। খাবারের মান আমার কাছে ততটাও সন্তোষজনক মনে হচ্ছিল না। যাই হোক যেহেতু খেতে রেস্টুরেন্টে বসে পড়েছি সেহেতু আর কি করার, তাই ইচ্ছে না থাকলেও খাবারগুলো আমাদের গ্রহণ করতে হয়েছে।
খাবারের মান আমাকে সন্তুষ্ট করতে না পারলেও এই রেস্টুরেন্টের ভেতরে একটি মনোরম কেবিন রয়েছে যা আমাকে খুবই আকৃষ্ট করেছে। এই কেবিনের ভিতরে প্রবেশ করতে হলে জুতা খুলে প্রবেশ করতে হয়। কেননা এটি একটি একুরিয়ামের মত করে কেবিন তৈরি করেছে। টেবিলের নিচে পানি এবং সেই পানিতে খেলা করছে অগণিত মাছ। এই মাছগুলো খুবই কালারফুল হওয়ার দরুন পানিতে যখন খেলা করছিল তখন দেখতে দারুন লাগছিল। জুতা খুলে এই কেবিনে প্রবেশ করতে হয় বলে আমরা কেউ সেই কেবিনে বসতে রাজি হলাম না। তাই এই মনোরম কেবিনের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের একটি সেলফি তুলে নিলাম আমার মোবাইল ফোনে।
খাওয়ার পর্ব শেষ করে আমরা আবারও প্রাইভেটকারে গিয়ে উঠে বসলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য। এখন আমরা ঢাকায় গিয়ে আবারও আমাদের অসুস্থ দুলাভাইকে বিদায় জানাব। পথিমধ্যে যাওয়ার সময় রাতের ঢাকা শহরের দু-চারটি ফটোগ্রাফি করে নিলাম আমার মোবাইল ফোনে।
আজ আর নয় দেখা হবে আগামী ও শেষ পর্বে। আগামী পর্বে আমি ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামে ফিরে আসা নিয়ে আপনাদের মাঝে পোস্ট উপস্থাপন করব।
আশা করি আমার ঢাকা ঘুরে আসার স্মৃতি - পর্ব ৫ পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Great post, we've upvoted and shared it
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ঢাকা ঘুরে আসার স্মৃতি গুলো শেয়ার করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। আর রেস্টুরেন্টা দেখতে অনেক সুন্দর। অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে উপস্থাপনা করেছেন। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।
মিতা রেস্টুরেন্টটি দেখতে সত্যিই অনেক সুন্দর ছিল। সব সময় সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সারপ্রাইজ দেওয়ার ব্যাপারটা দারুন লাগলো ভাই 😉। এমন ঘটনা মাঝে মাঝে আমার সাথেও হয়েছে। আর আমি বাইরে খুব একটা খেতেই পারি না ভাই, গ্যাস্ট্রিক এর প্রবলেম হয় খুব। আপনি তো তবু জোর করে হলেও খেয়েছেন ,আমি হলে একদম পারতাম না। যাই হোক, যাত্রা পথের গল্প গুলো ভালই লাগছিল । অনেক ভালো থাকবেন ভাই
আমার সবাইকে সারপ্রাইজ দিতে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে কারো জন্মদিনে আমি সব সময় একটু ভিন্নভাবে সারপ্রাইজ দিয়ে থাকি। কিন্তু সেদিন বড় বোনদের না জানিয়ে যাওয়াটা সারপ্রাইজ দেওয়ার চাইতে নিজেই সারপ্রাইজ পেয়েছিলাম। আর বাইরের খাবার তারতো কোন তুলনাই হয়না। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের সুস্বাদু খাবার খেতে আমার খুবই ভালো লাগে। আপনিও অনেক অনেক ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনা করি।
আপনি সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে গেছেন, এই ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লেগেছে😂। বেশ ভালো লাগলো আপনার লেখা পড়ে। যদিও আগের পর্ব গুলো দেখা হয়নি। তবে সময় পেলে অবশ্যই দেখে নেবো। শেষ পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আমার পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ঢাকা ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা খুব চমৎকারভাবে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন । আপনার পুরো পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। রেস্টুরেন্টে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। এত অসাধারন পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
রেস্টুরেন্টে সুন্দর মুহূর্ত পার করেছি ঠিক কিন্তু খাবারের মান গুলো একটুও ভালো লাগেনি আর তাই যখনি মনে করি তখনই খুব খারাপ লাগে। এত সুন্দর রেস্টুরেন্টের খাবারের মান অবশ্যই ভালো হওয়া উচিত ছিল। যাইহোক ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ঢাকা ঘুরে আসা স্মৃতি গুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। মজার বিষয় হলো আপনি সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে নিজেই সারপ্রাইজড্ হয়ে এসেছেন। খুবই সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। ঢাকার রাতের ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর করেছেন। রাতের ঢাকা খুব সুন্দর ভাবে আপনার ফটোগ্রাফিতে ফুটে উঠেছে। এভাবেই কাজ চালিয়ে যান। আপনার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।
সত্যি ভাই রাতের ঢাকা শহরে ঘুরতে আমার কাছেও অনেক অনেক ভালো লাগে। আপনার সুন্দর মন্তব্য পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে নিজেই সারপ্রাইজ পেয়েছ এ ঘটনাটি জেনে খুব হাসি পেলো।
আসলে কারোর কথার ভিত্তি করে কোথাও খেতে যাওয়া যায় না। প্রত্যেকের উচিত আর একরকম হয় না।
পুরো পোস্ট এর উপস্থাপনা দারুন ছিল। সেই সাথে প্রাকৃতিক দৃশ্যের ও রাতের ঢাকার ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে।্য ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
সারপ্রাইজ দিতে গিয়ে সারপ্রাইজ পাওয়াতে ভিন্ন রকম অনুভূতি আছে। আর সেই অনুভূতি হয়তো প্রকাশ করার মত নয়। সুন্দর মন্তব্য করেছো পড়ে বেশ ভালই লাগলো। ধন্যবাদ।