মা ও মেয়ের কষ্ট
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং পোষ্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে আমার প্রতিবেশী একজন মা ও মেয়ের কষ্টের জীবন যাপনকে কেন্দ্র করে। মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত। কখন যে কার জীবনে কি ঘটে যাবে তা হয়তো আমরা কেউই বুঝে উঠতে পারবো না। এই হয়তো আমাদের জীবনটা সুস্থ স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে চলছে, আবার দেখা যাবে হঠাৎ করেই আমাদের জীবনের গতিটা বিভিন্ন বিপর্যয়ে থমকে গেছে। আমরা কেউই বলতে পারব না আমাদের জীবনে যা কিছু হবে সব ভালো হবে। কেননা ভালো মন্দ নিয়েই আমাদের জীবন চলার পথকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়।
যাইহোক আজ আমি এমন দুজন মানুষের কথা আপনাদের মাঝে বলবো তারা বর্তমানে খুবই নিদারুণ ও কষ্টে দিন যাপন করছে। আর তারা দুইজন সম্পর্কে হচ্ছেন একজন মা ও একজন মেয়ে। এই মায়ের হচ্ছে তিন ছেলে এক মেয়ে। ছেলে তিন জনের নাম হচ্ছে রনি, জনি ও সানি। আর মেয়ের নাম হচ্ছে রেশমি। এই রেশমি আপার বিয়ে হয়েছিল বহু বছর আগে। সেখানে তিনি একটি কন্যা সন্তানেরও জন্ম দিয়েছিলেন। স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে রেশমি আপ া খুব ভালোভাবেই সংসার করে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই রেশমি আপার মেয়েটি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে, বাড়ি থেকে পালিয়ে তার পছন্দ সই ছেলেকে বিয়ে করে নিয়েছিল।
আর এখানেই যেন রেশমি আপার জীবনে ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছিল। যখন থেকে রেশমি আপার মেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল, তখন থেকে রেশমি আপার স্বামীর সাথে তার আর ঠিকমত সংসার করা হয়ে উঠছিল না। এভাবেই চলতে চলতে একদিন রেশমি আপাকে তার স্বামী ডিভোর্স দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। আর সেই থেকে রেশমি আপা বাবার বাড়ি এসে থাকতে শুরু করেছিলেন। বিয়ের অনেক বছর পরে রেশমি আপার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণে তার মা যেন কিছুতেই এ বিষয়টি মেনে নিতে পারছিল না।
রেশমি আপার মা তার মেয়ের শোকে একদিন হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আর সেদিনই আমরাও জানতে পেরেছিলাম রেশমি আপার মা স্ট্রোক করেছিলেন। আর সেই স্ট্রোকে রেশমি আপার মায়ের এক হাত ও এক পা অবশ হয়ে গিয়েছিল। সেই থেকে রেশমি আপার মায়ের চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সারাদিন বিছানায় শুয়ে শুয়ে মেয়ের জন্য কান্নাকাটি করত এবং নিজে চলতে না পারার কারণে হতাশাগ্রস্থ হয়ে গিয়েছিল। তবে রেশমি আপার তিন ভাই খুব ভালো ব্যক্তি ছিলেন যার কারণে তারা তাদের মায়ের খুব সেবা শুশ্রূষা করেছিলেন।
এভাবেই চলতে চলতে প্রায় বছরখানেক পার হয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ করে একদিন রেশমি আপাও অসুস্থ হয়ে যায়। তারপর তাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেছিলেন, রেশমি আপাও স্ট্রোক করেছিলেন। আর এবার রেশমি আপা স্ট্রোকের কারণে তিনিও তার মায়ের মত প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়ে রইলেন। একই বাড়িতে মা ও মেয়ে প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় যখন পড়ে থাকেন, তখন তার ভাইয়েরা মা ও বোনের এরকম পরিস্থিতি দেখে খুবই কান্নাকাটি করেছিলেন।
তারা মা ও মেয়ে দুজনেই এখন ঠিকমতো ঘর থেকে বের হতে পারে না। ভালোভাবে চলাচল করতে পারে না। সারাদিন একটি ঘরেই তাদের মা ও মেয়ের খুব কষ্টের দিন কাটাচ্ছে। আর এরকম দৃশ্য দেখে শুধু তাদের বাড়ির লোকজনই নয় বরং আমরা যারা প্রতিবেশী আছি তারাও খুবই কষ্ট পাচ্ছি। কেননা একই বাড়িতে মা ও মেয়ে দুজনে সারাদিন বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে থাকেন। আর এরকম ঘটনা সত্যিই আমরা কখনো চিন্তাও করতে পারিনা।
আমার তো মনে হয় আমার যিনি চরম শত্রু তার কপালেও যেন এরকম ঘটনা না ঘটে। মা ও মেয়ের এরকম কষ্ট প্রতিবেশী হিসেবে আমাদের কাছেও খুবই কষ্টদায়ক। গতকাল যখন আমি তাদের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে বাড়িতে আসছিলাম, তখন মা ও মেয়েকে একসাথে হুইল চেয়ারে বসে থাকতে দেখে আমি যেন একদম বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভীষণ কষ্ট পাচ্ছিলাম তাদের এমন পরিস্থিতি দেখে। তাই আমার কষ্টের কথাগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
একজন অসুস্থ রোগীর সেবা করা কি যে কষ্টকর তা যে করে সেই জানে এজন্যই তো রেশমি আপা নিজেও অসুস্থ হয়ে গেলেন। আসলে একই পরিবারের দুজনে একই রকম অসুস্থ হলে সেই পরিবারের দুর্গতির আর কোন সীমা থাকে। মা মেয়ের জন্য আমার নিজেরই খারাপ লাগছে। আর আপনারা তো সামনাসামনি দেখছেন। না জানি কত খারাপ লাগছে। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদেরকে সুস্থতা দান করেন।
আপু প্রায় সময় এই মা ও মেয়েকে একসাথে হুইল চেয়ারে বসে থাকতে দেখে আমাদের কারো কাছেই ভালো লাগেনা। তাদের মা ও মেয়ের এই পরিস্থিতি দেখে সত্যিই খুব কষ্ট লাগে।
এরকম একটা সুখের সংসারের অন্ধকার নেমে এসেছে এবং মা মেয়ে দুজনে খুবই কষ্টে জীবন যাপন করছে, এটা ভাবতেই আমার কাছে কেমন জানি খারাপ লাগছে। রেশমি আপার মেয়ের জন্যই ওনার সংসার ভেঙেছে এবং তিনি এরকম অবস্থার মধ্যে রয়েছে। আর উনার মায়েরও একই অবস্থা হয়েছে। এরকম পরিস্থিতি যেন অন্য কাউকে না দেখতে হয় এটা আমিও কামনা করি।
রেশমী আপার মেয়ের সাথে এখন পর্যন্ত কোন যোগাযোগ নেই। মায়ের এরকম অবস্থা দেখেও রেশমি আপার মেয়ে এখন পর্যন্ত তাকে দেখতে আসেনি। আর এই বিষয়গুলো আমার কাছে খুবই কষ্টকর মনে হয়। যাইহোক আপু, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
একটা ফ্যামিলিতে মা মেয়ে দুজনেই অসুস্থ এটা জেনে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে ভাই। রেশমি আপার মা এবং রেশমি আপা দুজনেই অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাদেরকে উনার তিন ভাই দেখাশোনা করেছে এটা জেনে ভালো লাগলো। কিছু কিছু ভাইরা রয়েছে এসব কিছু দেখলে আরো বেশি ঘৃণা করে এবং কি অবহেলা করে এড়িয়ে যায়। কিন্তু ওনার ভাইরা খুবই ভালো। আমার তো বিষয়টা পরেই খারাপ লেগেছে জানিনা আপনি সরাসরি দেখে কি রকম খারাপ অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা যেন ওনাদেরকে সুস্থ করে দেয় এটাই কামনা করি।
রেশমি আপার ভাইয়েরা সত্যি খুব ভালো। যার কারণে দুজন ব্যক্তি একই পরিবারের অসুস্থ হওয়ার পরও তারা দুজনেই ভালো সেবা সশ্রূষা পাচ্ছেন। আপনার সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসলে একটা ফ্যামিলিতে মা মেয়ে দুজনের এভাবে অসুস্থতার কথা শুনে আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। ঠিকই বলেছেন এরকম পরিস্থিতি যাতে কোন শত্রুর কপালেও না হয়। তবে রেশমি আপুর ভাইয়েরা তাদের দেখাশোনা করছে এটা জেনে একটু ভালো লাগলো। দোয়া করি আল্লাহ পাক উনাদেরকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেন । এবং নেক হায়াত দান করেন।
সত্যিই আপু একটা পরিবারে দুজন ব্যক্তি যদি প্যারালাইজড হয় তাহলে হয়তো সেই পরিবারের দুঃখ কষ্ট অনেকটাই বেড়ে যায়। আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।