দেশি মাগুর মাছের সুস্বাদু রান্নার রেসিপি
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারও ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি মাগুর মাছের সুস্বাদু রান্নার রেসিপি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। বর্তমান আমাদের চারপাশে বিদেশি হাইব্রিড ও চাষের মাছ দিয়ে ভরে গেছে। আমাদের দেশি মাছগুলো অনেক কম, আর তাই দামও দিতে হয় অনেক। হ্যাঁ বন্ধুরা আজকে আমি দেশি মাগুর মাছের উপকারিতা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। এই দেশি মাগুর মাছে প্রচুর আয়রন ও ক্যালসিয়াম বিদ্যমান। এই মাগুর মাছে আরো রয়েছে ক্যালোরি, প্রোটিন, ফসফরাস ইত্যাদি। রক্তশূন্য রুগীদের জন্য এই দেশি মাগুর মাছ অনেক কার্যকরী।
এই মাছে তুলনামূলক কাটার পরিমাণ অনেক কম হওয়ায় ছোট ছোট সোনামনিরাও খেতে ভীষণ ভালোবাসে। যেসব মানব দেহে ক্যালসিয়ামের অভাব রয়েছে, তাদের জন্য এই মাছ খুবই উপকারী। মাগুর মাছ নিয়মিত খেলে মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক গুন বেড়ে যায়। মাগুর মাছে পুষ্টিগুণ অন্যান্য যেকোন মাছের চেয়ে তুলনামূলক অনেক বেশি থাকে। এই মাছ আমাদের দেশে প্রায় সব জায়গাতেই কমবেশি পাওয়া যায়।
আমি কিভাবে এই সুস্বাদু মাগুর মাছের রেসিপি তৈরি করেছি তার প্রতিটি ধাপ আপনাদের মাঝে সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। মাগুর মাছের রেসিপি খেতে সত্যি অনেক অনেক মজার হয়ে থাকে। আর এই মজার রেসিপি আমি খুব সহজ করে সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে আপনাদের মাঝে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস আমার রন্ধনপ্রণালীর ধাপ অনুযায়ী মাগুর মাছের রেসিপি তৈরি করে খেলে ইনশাআল্লাহ অবশ্যই অবশ্যই অনেক ভালো লাগবে। তাহলে বন্ধুরা দেরী না করে চলুন রন্ধনপ্রণালীর ধাপ গুলো দেখে আসা যাক।
ক্রমিক নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | দেশি মাগুর মাছ | ৪ টি |
২ | পেঁয়াজ | ৫ টি |
৩ | ধনিয়াপাতা | পরিমান মত |
৪ | শুকনা মরিচ গুড়া | ২ চা চামচ |
৫ | হলুদ গুঁড়া | ১ চা চামচ |
৬ | জিরার গুড়া | ২ চা চামচ |
৭ | সয়াবিন তেল | পরিমাণমতো |
৮ | লবণ | স্বাদমতো |
" ধাপ : ১ "
প্রথমে মাছগুলোকে কেটে টুকরো টুকরো করে নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। উপরে দেয়া চিত্রের মত করে।
" ধাপ : ২ "
এবার পেঁয়াজ গুলোর ছাল ছাড়িয়ে কুচি করে কেটে নিতে হবে।
" ধাপ : ৩ "
এবার ধনিয়া পাতা গুলো কুচি করে কেটে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
" ধাপ : ৪ "
এবার চুলায় কড়াই বসিয়ে দিতে হবে। কড়াই গরম হয়ে আসলে পরিমাণ মতো সয়াবিন তেল কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে।
" ধাপ : ৫ "
এবার সয়াবিন তেল গুলো গরম হয়ে আসলে, কেটে নেয়া পেঁয়াজকুচি গুলো কড়াইতে ছেড়ে দিয়ে বাদামি রং করে ভেজে নিতে হবে।
" ধাপ : ৬ "
এবার পেঁয়াজ কুচি বাদামি রঙ হয়ে আসলে এক কাপ পরিমাণ পানি কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর পানিগুলো একটু গরম হয়ে আসলে, উপকরণে নেয়া সকল মসলা কড়াইতে ছেড়ে দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে নিতে হবে।
" ধাপ : ৭ "
এবার মসলা পানি কষানো হয়ে গেলে কেটে নেয়া দেশি মাগুর মাছ গুলো কড়াইতে ছেড়ে দিয়ে চামচের সাহায্যে ভালোভাবে নেড়ে চেড়ে আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিতে হবে।
" ধাপ : ৮ "
এবার কিছুক্ষণ কষিয়ে নেবার পর (সিদ্ধ ও ঝোল রাখার জন্য) পরিমাণ মতো পানি কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে।
" ধাপ : ৯ "
এবার ঢেলে দেয়া পানি গুলো যখন শুকিয়ে ঝোলের রূপ নিবে এবং ঝোলগুলো মাখোমাখো দেখা যাবে, তখন বুঝতে হবে তৈরি হয়ে গেছে আমাদের সেই কাঙ্খিত দেশি মাগুর মাছের সুস্বাদু রান্নার রেসিপি। এবার কুচি করে নেয়া ধনিয়াপাতা গুলো মাগুর মাছের ঝোলের উপরে ছেড়ে দিয়ে আরো দু-চার মিনিট কষিয়ে নিতে হবে।
" ধাপ : ১০ "
এবার দু-চার মিনিট কষিয়ে নেয়ার পর আলাদা একটি পাত্রে ঢেলে নিয়ে ইচ্ছামতো সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন, দেশী মাগুর মাছের সুস্বাদু রেসিপিটি।
আশা করি আমার তৈরি দেশি মাগুর মাছের সুস্বাদু রান্নার রেসিপি পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
মাগুর মাছ আমাদের বাড়ীতে কেউ খেতে চায় না, কিন্তু আমি বেশ খাই এবং এই রকম একটু ঝোল ঝোল হতে বেশ তৃপ্তি সহকারে খাই। সত্যি বলছি আপনার রান্নাটাও অনেক দারুণ হয়েছে। যদিও নিয়মিত খাওয়ার সুযোগ পাই না আমি, আপনার রান্নাটি দেখে বেশ লোভ লাগছে।
একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই, মাগুর মাছের ঝোল ঝোল রেসিপি খেতে সত্যি দারুন লাগে। অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মাগুর মাছ আমি কবে খেয়েছি আমার মনেও নেই। কারণ আমাদের বাসায় এই মাছ টি একদমই আনা হয় না। কারণ আমার আম্মু এই মাগুর মাছ একদম পছন্দ করে না। তবে আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। দেখে খুব লোভনীয় লাগছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুস্বাদু রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপু রেসিপি দেখতে যতটা সুন্দর হয়েছে ঠিক তেমনি খেতেও ততোটাই সুস্বাদু হয়েছিল। ধন্যবাদ
আপনি অনেক সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। রেসিপিটি দেখে লোভ সামলাতে পারছিনা। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।
আমার তৈরি রেসিপি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জানতে পেরে খুবই খুশি হলাম। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া চাষের মাছ আর দেশি মাগুর মাছের ভিতরে অনেক পার্থক্য ।মাগুর মাছ আমার কাছেও অনেক ভালো লাগে আমিতো প্রায়ই খায় মাগুর মাছ। বেশি করে পেঁয়াজ দিয়ে মাগুর মাছ ভুনা করলে খেতে আসলেই অনেক ভালো লাগে ।আপনি খুব সুন্দর করে মাগুর মাছের রেসিপিটি শেয়ার করেছেন।
যথার্থই বলেছেন আপু, বেশি করে পেঁয়াজ দিয়ে মাগুর মাছ ভুনা করে খেলেও অনেক অনেক মজার হয়ে থাকে। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
দেশি মাগুর মাছের সুস্বাদু রান্নার রেসিপি দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। আসলে মাগুর মাছ খেতে খুবই মজাদার লাগে। দেশি মাগুর মাছের রেসিপি আপনি খুবই সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার জন্য রইল শুভকামনা।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন ভাই এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
মাগুর মাছ আমার খুব পছন্দের একটি মাছ।মাগুর মাছ খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। কিছুদিন আগেও একবার মাগুর মাছ খেয়েছিলাম। আপনি খুব সুন্দর করে মাগুর মাছের ঝোল রেসিপি করেছেন। যেহেতু এটি দেশি মাগুর মাছ ছিল তাই সুস্বাদু হওয়ারই কথা। লোভনীয় একটা রেসিপি ছিল ভাইয়া। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
দেশি মাগুর মাছ তাই স্বাদটাও অনেক বেশি ছিল। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
জি ভাইয়া আমাদের দেশে মাছগুলো একদমই কম পাওয়া যায়। তবে এটি শহরাঞ্চল একটু কম পাওয়া যায়। কিন্তু আমার প্রায় এই মাছটি খাওয়া হয়। গ্রামে এটি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। আর তাছাড়া মাগুর মাছে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। বিশেষ করে অসুস্থ রোগীদের জন্য এই মাছ খুব উপকারী। যাইহোক ভাই আপনার রেসিপিটি দেখে আমার লোভ লেগে গেল। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য শুভকামনা রইল।
আপু অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন যা পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনি দেশি মাগুর মাছের সুস্বাদু রান্নার রেসিপি করেছেন। সত্যি অসাধারণ। আমার খুব প্রিয় একটি খাবার। বিশেষ করে আপনার রেসিপি কালার খুবই চমৎকার লাগতেছে। আমার তো জিভে জল এসে গেলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন আপু, এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
দেশী মাছ মাছের স্বাদ অন্য রকম খেতে খুবই দারুণ লাগে। আর মাগুর মাছ দেশে থাকতে বেশি একটা খেয়েছি বেশ ভালোই লাগে। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে এতো সুন্দর একটা লোভনীয় মাছের রেসিপি তৈরি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।
দেশি মাছের স্বাদ সত্যিই অনেক অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে।আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।