বন্যার পানি নিয়ে কিছু "কথা ও অনুভূতি" || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে বন্যার পানি দেখতে যাওয়া নিয়ে কিছু "কথা ও অনুভূতি" উপস্থাপন করব। এইতো সেদিন আমি বিশেষ একটি কাজ নিয়ে ধরলা নদীর ওপারে কুড়ের পার নামক স্থানে গিয়েছিলাম, আমার ডেলিভারি ম্যান কয়েকদিন থেকে না আসার কারণে। আমার ব্যবসার কাজ (৬)ছয়দিন থেকে বন্ধ ছিলো। আর তাই ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনা করে তাকে দেখার জন্য তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি যে বন্যা কবলিত এলাকা দেখেছি তা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
আমার ব্যবসা একদিন বন্ধ থাকা মানেই আমার ইনকাম বন্ধ থাকা। আর (৬) দিন বন্ধ থাকা মানেই অনেক ক্ষতি। কারণ আমি ডিলার শিপের ব্যাবসা করি। যাক আজ আমি আমার ব্যাবসা নিয়ে কোনো কথা বলবো না। আমি অন্যকোনো একদিন আমার ব্যাবসা নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হবো। যেমন আমার নবান্ন রেস্তোরাঁ নিয়ে একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করেছিলাম ঠিক তেমনি আমার বর্তমান ডিলারশিপ এর ব্যবসা নিয়ে আপনাদের মাঝে পোস্ট উপস্থাপন করব।
যাই হোক যা বলছিলাম আর কি, আমার ডেলিভারীম্যান এর বাড়ি ধরলা নদী পার হয়ে যেতে হয়। আমাদের বাড়ি থেকে ধরলা নদী প্রায় (৬) ছয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, আর ধরলা নদী থেকে আমার গন্তব্য স্থান কুড়ের পার নামক জায়গাটি প্রায় (৫) পাঁচ কিলোমটার দূরে অবস্থিত। তাই আমাকে যেতে হবে সর্বমোট (১১) এগারো কিলোমিটার রাস্তা। অবশ্য মোটরসাইকেলের কাছে (১১) এগারো কিলোমিটার রাস্তা খুব বেশি কিছু নয়।
আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা ধরলা নদীতে গিয়ে পৌছাই। ধরলা নদীতে গিয়ে পৌঁছা মাত্রই উপলব্ধি করতে পারলাম যে নদীতে অনেক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তাই আমি আরো উপলব্ধি করতে লাগলাম আমার গন্তব্য স্থান কুড়ের পার নামক জায়গাটির কি করুন অবস্থা হয়েছে। কারণ ধরলা নদীতে যখন বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় তখন কুড়ের পার নামক জায়গাটি সম্পূর্ণ রূপে পানির নিচে প্লাবিত হয়।
দূর থেকে দেখতে দেখতে সামনের দিকে এগিয়ে চলছি আর দেখছি, চারপাশে অনেক নতুন পানি এসেছে। আর দেখতে দেখতে কুড়ের পার নামক জায়গাটিতে এসে পৌঁছাই। পৌঁছামাত্রই দেখতে পেলাম যে, যা উপলদ্ধি করেছিলাম তার বিপরীত কিছু নয়। কুড়ের পার নামক নামক জায়গাটিতে প্রবেশ করতে গেলে হাঁটু পানি পার হয়ে যেতে হয়। অথচ ধরলা নদীর পানি এখনো বিপদ সীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
হাঁটু পানি পার হয়ে যখন গ্রামটিতে প্রবেশ করলাম তখন দেখি রাস্তার দুইপাশে ঘর বাড়িগুলোর করুন পরিস্থিতি। কিছু কিছু ঘরের ভিতরে পানি উঠেছে আর কিছু কিছু ঘরবাড়িতে পানি ওঠার উপক্রম হয়েছে। সাথে আরো দেখতে পেলাম গবাদি পশু গুলোর পর্যন্ত কি করুন অবস্থা। কারণ আশেপাশের সব চর ও জমি গুলো পানি দিয়ে ভরপুর।
চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। আর এই পানি দেখে যেন কিছু কিছু মানুষের আনন্দের সীমা নেই। আর তাইতো তারা মনের আনন্দে মাছ ধরতে নদীতে জাল ফেলেছে। যদিও বা বেশি পানির কারণে মাছ ধরা খুবই কঠিন বিষয়। তবুও এই মানুষগুলো ছোট ছোট জাল নিয়ে সারাদিন অপেক্ষা করে কিছু মাছ ধরার আশায়। এরই মধ্যে কেউ পাচ্ছে ছোট বড় মাছ আবার কেউবা হতাশ হয়ে খালি থলে নিয়ে বাড়ি ফিরছে। যেহেতু পানিবন্দি মানুষের দুঃখ দুর্দশার শেষ নেই। তাই আমি আমার ডেলিভারি ম্যান কে কিছু বলতে পারলাম না। তার ঘরেও পানি প্রবেশ করেছে যার জন্য সে মানসিকভাবে অশান্তিতে রয়েছে।
এই পানি ভর্তি রাস্তা দিয়ে সামান্য এগুলেই আমাদের ডেলিভারি ম্যানের বাড়ি। তার বাড়িতেও পানি ওঠার কারণে ছয় দিন থেকে আমার ব্যবসায়িক কাজ থেকে বিরত আছে। তার বাড়িটি একদম নদীর কাছেই বলে বাড়িটি হুমকির সম্মুখীন রয়েছে। তাকে শুধু বললাম, পানি কমে যাওয়ার পরে আমার ব্যবসায় গিয়ে কাজে মনোনিবেশ করতে। তাই আমি তাকে পানি কমে যাওয়া পর্যন্ত আমার ব্যবসার কাজে আর ডেকে নিতে পারলাম না।
আশা করি বন্যার পানি নিয়ে আমার কিছু কথা ও অনুভূতির পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
![default.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmNwBDPMPvL1yaKWTYF4wxyUmxWiEJgAy1WZWTJyCha5wE/jswit_comment_initial.w320.jpg)
আপনি খুবই চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে বন্যার পানি নিয়ে কিছু কথা ও কিছু অনুভূতি শেয়ার করেছেন কিছু কিছু অনুভূতি সত্যিই নিজেকে অনেক বেশি কষ্ট দেয়। বন্যা এমন একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা মানুষকে নিঃস্ব করে দেয় নিমিষে সবকিছু হারিয়ে যায় যেমনটা আমরা দেখতে পেয়েছি সিলেটবাসীদের থেকে। ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
কথায় আছে না কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ। ব্যবসায় একদিন বন্ধ থাকা মানে ই অনেক বড় লস গুনতে হয়। আর সেখানে ছয় দিন যাবৎ আপনার ডেলিভারি ম্যান কাজে আসেনি। কিন্তু আপনি খোঁজ-খবর নিতে গিয়েছেন এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। কিন্তু দেখতে গিয়ে বিপর্যস্ত কর্মির বাড়ি এলাকা দেখে আপনার মনের অনুভূতি গুলো জানতে পারি। তবে দেখে বোঝা যাচ্ছে ওই এলাকার মানুষগুলো মনের আনন্দে মাছ ধরছে না হয়তো কর্মসংস্থানের অভাব হয়েছে বিদায় মাছ ধরার কাজে লেগে পড়েছে। আমাদের মাঝে আপনার অনুভুতি গুলো শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
চমৎকার কিছু শব্দের মাধ্যমে খুবই ছোট শব্দের পরিসরে আপনার বন্যার পানি নিয়ে মনের অনুভূতি আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন। বন্যা খুব সহজেই এক নিমিষেই অনেক মানুষকে নিঃস্ব করে দেয়। আপনার কাজে নিয়োজিত কর্মচারী ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার খোঁজ নেওয়ার বিষয়টি খুব ভালো লেগেছে। বর্তমানে মানুষের মাঝে মানুষের আন্তরিকতা খুবই কম। আপনার পোস্টটি দেখে অনেক ভালো লাগলো। সাথে বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য খুবই খারাপ লাগছে। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।